Monday, June 2, 2014

খুলনা হার্ডবোর্ড মিল চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে?

খুলনা হার্ডবোর্ড মিল চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে?
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ গত নবেম্বর মাস থেকে খুলনা হার্ডবোর্ড মিলের উৎপাদন বন্ধ। ফেব্রুয়ারি মাসে মিলের শ্রমিকদের বিদায় দেয়া হয়। রবিবার এ শিল্প প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কী ঐতিহ্যবাহী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান খুলনা হার্ডবোর্ড মিল চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে? যদিও কর্তৃপক্ষ মিলটি চালুর ব্যাপারে আশাবাদী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নগরীর খালিশপুর ভৈরব নদের তীরে ৯.৯৬ একর জমির ওপর ১৯৬৫ সালে স্থাপিত খুলনা হার্ডবোর্ড মিলটি দেশের একমাত্র হার্ডবোর্ড উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। বিসিআইসি নিয়ন্ত্রিত এ মিলটি এক সময় লাভজনক ছিল। একাধিকবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও লাভ করেছে। ২০০২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার লোকসানের অজুহাতে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়। পরে ২০০৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক মজুরি চুক্তিতে শ্রমিক নিয়োগ করে পুনরায় মিলটি চালু করা হলেও সেই থেকেই সমস্যা চলে আসছে। ঢিমেতালে চলার পর ২০১১ সালে আবারও আর্থিক সঙ্কটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সঙ্কট থেকে মিলটিকে রক্ষার জন্য সরকারের কাছে ৫৪ কোটি টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু শর্তসাপেক্ষে দেয়া হয় মাত্র ১০ কোটি টাকা। ওই টাকা দিয়ে মেইনটেন্যান্স করে মাত্র ৬০ হাজার পিস হার্ডবোর্ড উৎপাদন করার পর আবারও আর্থিক সঙ্কটে পড়ে মিলটি। গত বছরের ২৫ নবেম্বর থেকে মিলের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি অস্থায়ী শ্রমিকদের বিদায় দেয়া হয় এবং বকেয়া বিদ্যুত বিল পরিশোধ না করায় রবিবার দুপুরে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এখন এ মিলটি পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে। রাতের আঁধারে মিলের নিরাপত্তা বিঘিœত হতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
সূত্র জানায়, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৩ বকেয়ার দায়ে রবিবার মিলটির বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, এ মিলের কাছে মে মাস পর্যন্ত গত সাত মাসে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা বিদ্যুত বিল বকেয়া হয়েছে। এজন্য একাধিকবার চিঠি দিয়ে বকেয়া পরিশোধের জন্য তাগিদ দেয়া হলেও মিল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। হার্ডবোর্ড মিলের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুত বিভাগের বকেয়া পরিশোধের তাগাদার বিষয়টি বিসিআইসি কর্তৃপক্ষকে যথারীতি জানানো হয়েছে। কোন অর্থের যোগান না দেয়ায় বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। মিলের সার্বিক বিষয় নিয়ে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রুহুল আমিন ঢাকায় অবস্থান করছেন। মিল কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার পর মিলটি পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।
খুলনা হার্ডবোর্ড মিলের বেকার শ্রমিকরা জানান, বিদায়কালে তাদের জানানো হয়েছে গত বছরের নবেম্বর মাসের ২৫ দিনের বেতন ছাড়া পরবর্তী সময়ের কোন বেতন দেয়া হবে না। কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের পর মিলের শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। অর্থাভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=89&dd=2014-06-03&ni=174837

No comments:

Post a Comment