Monday, June 30, 2014

মেয়ে হওয়ায় রাগ, আছড়ে মারল বাবা

মেয়ে হওয়ায় রাগ, আছড়ে মারল বাবা

bloody-hand-print-crime-sce
এই সময়: প্রথম বার কন্যাসন্তান হয়েছিল৷ মাস দেড়েক আগে দ্বিতীয় বারও কন্যাসন্তান হওয়ার পর থেকেই গোলমাল চলছিল স্ত্রীর সঙ্গে৷ শেষমেশ দ্বিতীয় সন্তানকে আছাড় মেরে খুনই করলেন মদ্যপ বাবা৷ সোমবার সকালে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় তারাতলা থানার ব্রেসব্রিজ রেল কলোনি এলাকায়৷ অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ যুগ্মকমিশনার (অপরাধদমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, 'ধৃতের নাম অমর বিশ্বাস৷ বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে৷ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, আর্থিক সমস্যার জন্যই তিনি মেয়েকে খুন করেছেন৷ ময়না-তদন্তের রিপোর্টের পরেই শিশুটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরিষ্কার হবে৷'

পুলিশ সূত্রের খবর, অমর রিকশাচালক৷ বেশ কয়েক বছর আগে মীনা বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়৷ তাঁরা আদতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা৷ কয়েক মাস আগে তাঁরা ব্রেসব্রিজের কাছে ঝুপড়িতে এসে ওঠেন৷ স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দম্পতির দেড় বছরের একটি মেয়ে আছে৷ অমর প্রতি রাতেই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরতেন৷ স্ত্রীর সঙ্গে বচসাও হত নিয়মিত৷ এর মধ্যেই আরও এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মীনাদেবী৷ তার পর থেকে গোলমাল চরমে ওঠে৷ মীনাদেবী বলেন, 'ওর বাবা (অমরবাবু) বলেছিল, এই মেয়েটাকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে৷ আমি বলেছিলাম, কাউকে দিয়ে দিতে হলে এমনিই দেব৷ এ নিয়ে আমার সঙ্গে প্রতি দিনই গোলমাল হত৷'

পুলিশ জানতে পেরেছে, রবিবার রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড বচসা হয়৷ ভোরে মীনাদেবী কোনও কারণে বাড়ির বাইরে গেলে ঘুমন্ত শিশুটিকে মাটিতে আছাড় মেরে খুন করেন অমর৷ মীনাদেবীর কথায়, 'আমি ফিরলে ও কাঁথায় মুড়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেয়৷ বলে, ওকে নিয়ে স্টেশনে যেতে৷ আমি স্টেশনে গিয়ে কাঁথা খুলে দেখি, মেয়ের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে৷ গালে আঁচড়ের দাগ৷ কোনও সাড় নেই৷' মহিলার চিত্‍কারে পড়শিরা দৌড়ে আসেন৷ তাঁরাই হাতেনাতে ধরেন অমরকে৷ মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে৷ কাঁথায় মোড়া শিশুটির দেহ বেশ কিছুক্ষণ স্টেশনের সামনেই পড়ে থাকে৷ পুলিশ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়৷ ব্রেসব্রিজে যিনি ওই দম্পতিকে ছোট্ট ঘরটি ভাড়া দিয়েছিলেন, সেই মালা দাস বলেন, 'সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি, বাচ্চাটাকে খুন করে দিয়েছে বলে মা চিত্‍কার করছে৷ এ রকম যে ঘটতে পারে, তা ভাবতে পারিনি৷' রূপা মোতি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'কাল রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল হয়েছিল বলে শুনেছি৷ তবে কেন নিষ্পাপ শিশুটিকে খুন করা হল, জানি না৷'

No comments:

Post a Comment