এবার আর্জেন্টিনার পালা, চোখ রাঙাচ্ছে সুইসরা
ভাগ্য আর খেলে-যেভাবেই হোক পার পেয়ে গেল পেলের ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ঘরের মাঠের নকআউটে হারিয়েছে একই মহাদেশের চিলিকে। এবার পালা ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার। তবে প্রতিপক্ষ মহাদেশীয় চেনা দল নয়। ইউরোপের সুইজারল্যান্ড। দুই মহাদেশের দু’দলের ‘ডু আর ডাই ম্যাচ।’ সাও পাওলোর আকাশটা কি আজও নীল-সাদায় রঙ্গিন হয়ে উঠবে? নাকি কেবলই লালে আর লাল। তবে গোটা বিশ্বে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ফুটবল মাঠমুখী হওয়ার ব্যাপারটা মায়াবী উচ্ছ্বাসে রঙ্গিন হওয়ার কথাই বলে। রূপসী ঝর্ণার অপার সৌন্দর্যের কলরবে আজও তারা অবগাহন করে, মেসিদের বলবে- এগিয়ে যাও। আমারা তো তোমাদের সঙ্গেই আছি। নাকআউটের ম্যাচ সামনে রেখে চিরাচরিত আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উজ্জ্বল উপস্থিতি চেহারাই পাল্টে দিয়েছে আয়োজক শহরটির। এখন মেসিদের পালা ম্যাচের চিত্রটায় নিজেদের আল্পনা এঁকে নেয়া। যার দীর্ঘ অপেক্ষায় গত দু’দিন ধরেই নেচে-গেয়ে স্টেডিয়াম চত্বরটায় এমন দৃশ্য তৈরি করেছেন দর্শকরা, যার অনাবিল সৌন্দর্য চোখে না দেখলে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। গায়ে আকাশী-সাদা জার্সি। মাথায় শিং লাগানো অদ্ভুত টুপি। তবে লালের মিশেলও চোখে পড়ার মতো। প্রিয় দলের সাফল্য কামনা আর খেলা দেখতে ইউরোপ থেকে ছুটে এসেছেন প্রায় পনের হাজার নারী-পুরুষ দর্শক। সে তুলনায় আর্জেন্টাইনরা অবশ্য কয়েকগুণ বেশি। পাশের দেশ বলে কথা। ব্রাজিলের সঙ্গে আর্জেন্টিার মূল সীমান্ত পোর্তো আলেগ্রে দিয়েই সড়ক পথে ছুটে আসা দর্শকের পদভারে মুখরিত সাও পাওলোর সড়ক, রেস্তরাঁ, আবাসিক হোটেল, রেলপথ-সবই। মনের খোরাক, তৃপ্তি আর প্রিয় দলের সাফল্যের জয়মাল্য নিয়ে ঘরে ফিরতে চান তারা। আর্জেন্টিনা-সুইজারল্যান্ডের ‘অঘোষিত ফাইনাল’ নিয়ে ব্রাজিলের আমজনতা আবার তাকিয়ে লিওনেল মেসির দিকে। তাদের কাছে আর্জেন্টিনা কি করল সেটা বড় নয়। মেসির জাদুমাখা পা দুটো আজ কি করবে এ নিয়েই যত উৎসাহ-উদ্দীপনা।
ইউরোপীয়দের মোকাবেলায় প্রস্তুত মেসিবাহিনী। বিকেলের প্রাণবন্ত অনুশীলনে পর আর্জেন্টিনার মায়াবী মহানায়কের উজ্জ্বল চেহারা প্রমাণ করছিল আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকার মহাকাব্যের কথা। যদিও মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ‘এল এম টেন’ বলছিলেন নকআউটের মঞ্চের সবদলই সমীহ জাগানো। কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এমন কি ভুল করারও। এ ধরনের ম্যাচে ভুলের মাসুুল মানেই বিদায়। বিপক্ষ সুইজারল্যান্ডকে সমৃদ্ধ প্রতিপক্ষ হিসেবেই মনে করছি। দর্শক-ভক্তরা যাই ভাবুক সুইসদের বিরুদ্ধে ম্যাচটা তত সহজ হবে না। তবে মানুষের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে মেসির দু’পাায়ের শৈল্পিকতা। প্রতি ম্যাচেই গোল করছেন। গোল করে দলকে জেতাচ্ছেন আর্জেন্টিনার সাদামাটা খেলার সময়েও। তাতেই যেন মেসি নির্ভরতা প্রচ-ভাবে সামনে এসে পড়েছে। এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে ক্লান্ত কোচ সাবেলা বলছিলেন, কি আর করা? অন্যরা এখনও নিজের সেরাটা তুলে ধরতে পারেনি। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ লীগের শেষ ম্যাচের ‘ক্লোজ’ জয়ে মেসি একাই করেছেন দুই গোল। আর রোজোর পা থেকে এক। কিন্তু হিগুয়াইন এখনও গোল খুঁজে চলেছেন। তার ওপর চিন্তা বাড়িয়েছে এ্যাগুয়োর চোট। সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ক্ল্যাশে এ্যাগুয়েরোর জায়গায় লাভেজ্জিকে খেলানোর পরিকল্পনা সাবেলার। এ্যাটলেটিকো মিনেইরোর বেসক্যাম্পে অনুশীলনের সময় হিগুয়াইন ও লাভেজ্জির সঙ্গে মাঠে আলাদা একটা পাঠশালা খুলতে দেখা গেল আর্জেন্টিনা কোচকে। সম্ভবত মেসির ওপর সারা ভুবনের ভারের চাপ কমাতে। আর তা কতটা কমল এ্যারেনা কোরিন্থিয়ান্সের মাঠে আজ সুইস ডিফেন্সের সামনে পড়লেই জানা যাবে। কোচ ওতমার হিজফিল্ডের দল অবশ্য এক-দুই জনের ওপর নির্ভর না। ম্যাচ জেতানো বা বাঁচানোর বেশ কয়েকজন তারকা সুইসদের আছে। হিজফিল্ডও তাই বলছিলেন, জিতার জন্য গোটা দলকেই খেলতে হবে। মেসিদের মতো আমার দল তারকায় ঠাসা না। গড়ে সবাই প্রায় সমমানের। সংঘবদ্ধ হয়ে টিমটা খেলতে পারলে আর্জেন্টিনাকে মোকাবেলা বেশ ভালভাবেই করা যাবে। দু’দলের ফর্মেশনটার সঙ্গে দারুণ মিল রয়েছে। মেসিরা যেমন ৪-৩-৩ ছকে, একই ছকে ইনলারাও খেলছেন। তবে সুইজারল্যান্ডের ওপর শিরোপার চাপ নেই, যা মাথায় নিয়ে খেলছে আর্জেন্টাইনরা। আজকের ম্যাচে সাবেলার একাদশে একটিই পবির্তন, এ্যাগুয়োর জায়গায় লাভেজ্জি। গোলপোস্টে রোমেরোর ওপরে ডিপ ডিফেন্সে ইনজাকুয়েল গ্যারি ও ফর্নান্ডেজের পাশে মার্কোস রোজো এবং জাবালেতা। মিডফিল্ডে ডি মারিয়া ও গ্যাগোর মাঝে মাশ্চেরানো। স্ট্রাইকিংয়ে মেসি ও লাভেজ্জির একটু ওপরে হিগুয়াইন। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের উত্তরে হিগুয়াইন একটু রুষ্ট হয়ে বলছিলেন ‘গোল পাচ্ছি না তো কি হয়েছে।’ দল তো জিতেই চলেছে। আর আমি যতক্ষণ গোল না পাচ্ছি অন্যদের সহযোগিতা করে যাব গোলের জন্য।
গত দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেয়া সুইজারল্যান্ড এবার নিয়ে দশবার মূলপর্বে খেলে সেরা সাফল্য তিনবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। দুইবার বিশ্বকাপ জয়ী ম্যারাডোনার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও খেলেছে আরও দুইবার। রানার্সআপ দুইবার, এবার নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে বারোবার। মেসিরদের ওজন তো আছেই। পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে সুইসদের বিরুদ্ধে নকআউটে আর্জেন্টিনা নকআউট হওয়ার দল নয়। তবে এ ম্যাচেও এক মেসি নির্ভর হয়ে পড়লে বিপদ। খোদ ব্রাজিলে বসে বার বার মনে হচ্ছে এক মেসিকে ঘিরে এমন এক পেশে নৈপুণ্য আর কতদিন খেলবে যাবে আর্জেন্টিনা। ভক্তরা আরও উজ্জ্বল দেখতে চান প্রিয় দলকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে। সত্যি কথা বলতে কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দেশের গ্রুপ পর্বের খেলায় মনে ভরেনি সমর্থকদের। নকআউটের ম্যাচে তাই উদ্ভাসিত নৈপুণ্য প্রত্যাশা সবার। এই ম্যাচকে ঘিরে তারা শুধু রঙ্গিন নন। হাজির হয়েছেন মনোরম সাও পাওলো শহরে বুকভরা আশা নিয়ে। মেসিকে উদ্দেশ্য করেই আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আনন্দ-উৎসবের চিত্র-আহ্বান, হাতের প্ল্যাকার্ড-ব্যানারই তা বলে দিচ্ছিল। তাদের ভাবখানা ছিল এমন মেসি পারফর্ম, না করতে পারলে ব্রাজিলে কেউ বাঁচাতে পারবে না আর্জেন্টিনাকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় স্পেনকে হারিয়ে চমৎকার সূচনা করলেও গ্রুপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার যখন নকআউটে উঠেই গেছি তখন আরও একধাপ এগোনোর স্বপ্ন দেখতেই পারি। বড় দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও চমক দেখাতে চাই। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বলছিলেন অধিনায়ক গোকহান ইনলার। পাশাপাশি এও বলেন মেসিদের মোকাবেলা করা খুবই কষ্টের-কঠিন। সেটা হবে অসাধ্য সাধন করা। ফুটবলে সবই সম্ভব-এ মন্ত্রকে পুঁজি করেই মাঠে নামবে সুইসরা। আর্জেন্টিনার যেমন রয়েছে মেসি। সুইজারল্যান্ডেরও আছে জারদান শাকিরি নামক তুখোর প্লেমেকার। ব্রাজিল বিশ্বকাপে আলোচনায় চলে এসেছেন হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে। কোচ হিজফিল্ডের তুরুপের তাস শাকিরি আর সাবেলার মহাতারকা মেসির লড়াইটাও দেখতে উদগ্রীব বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ। জার্মান লীগ বুন্দেস লীগায় বেয়ার্ন মিউনিখের এই তারকাকে নিয়ে কোচ সাবেলা বললেন, ওকে আটকানোর জন্য বাড়তি পাহারাদার রাখা হবে। ছুটে গেলেই বিপদ। বিপক্ষ গোল সীমনায় ওর পা দুটো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।
সব কথার শেষ হচ্ছে, আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ এবারও খুব একটা আশা জাগাতে পারছে না। গ্রুপ লীগের তিন ম্যাচে ছয় গোল করলেও তিন গোল খেয়ে জানান দিচ্ছে মেসির দল। কাজেই বাঁচা-মরার নকআউটে রক্ষণ সতর্ক হয়ে খেলতে না পারলে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন শাকিরিরা। সাবেলা যেমন শাকিরিকে আটকানোর ছক তৈরি করেছেন, একইভাবে হিজফিল্ডও প্রস্তুত মেসিকে রুখতে। সুইস কোচ বলেছেন তিন ম্যাচে মেসির কাঁধে ভর করে পাড় পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। আমাদের বিরুদ্ধে সে সুযোগ তারা নাও পেতে পারে। জয়ের-গোলের জন্য অন্যদের চেষ্টা করতে হবে। হিজফিল্ড আরও বললেন, শুধু আমরা নই। বিশ্বের সবাই দেখেছে এক মেসিই টানছে গোটা দলকে। কাজেই আমাদের জায়গায় অন্য বিপক্ষ হলেও মেসির ওপর বাড়তি নজর রাখত। এক্ষেত্রে আমরাও সেটা করতে চাই।
ইউরোপীয়দের মোকাবেলায় প্রস্তুত মেসিবাহিনী। বিকেলের প্রাণবন্ত অনুশীলনে পর আর্জেন্টিনার মায়াবী মহানায়কের উজ্জ্বল চেহারা প্রমাণ করছিল আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকার মহাকাব্যের কথা। যদিও মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ‘এল এম টেন’ বলছিলেন নকআউটের মঞ্চের সবদলই সমীহ জাগানো। কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এমন কি ভুল করারও। এ ধরনের ম্যাচে ভুলের মাসুুল মানেই বিদায়। বিপক্ষ সুইজারল্যান্ডকে সমৃদ্ধ প্রতিপক্ষ হিসেবেই মনে করছি। দর্শক-ভক্তরা যাই ভাবুক সুইসদের বিরুদ্ধে ম্যাচটা তত সহজ হবে না। তবে মানুষের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে মেসির দু’পাায়ের শৈল্পিকতা। প্রতি ম্যাচেই গোল করছেন। গোল করে দলকে জেতাচ্ছেন আর্জেন্টিনার সাদামাটা খেলার সময়েও। তাতেই যেন মেসি নির্ভরতা প্রচ-ভাবে সামনে এসে পড়েছে। এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে ক্লান্ত কোচ সাবেলা বলছিলেন, কি আর করা? অন্যরা এখনও নিজের সেরাটা তুলে ধরতে পারেনি। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ লীগের শেষ ম্যাচের ‘ক্লোজ’ জয়ে মেসি একাই করেছেন দুই গোল। আর রোজোর পা থেকে এক। কিন্তু হিগুয়াইন এখনও গোল খুঁজে চলেছেন। তার ওপর চিন্তা বাড়িয়েছে এ্যাগুয়োর চোট। সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ক্ল্যাশে এ্যাগুয়েরোর জায়গায় লাভেজ্জিকে খেলানোর পরিকল্পনা সাবেলার। এ্যাটলেটিকো মিনেইরোর বেসক্যাম্পে অনুশীলনের সময় হিগুয়াইন ও লাভেজ্জির সঙ্গে মাঠে আলাদা একটা পাঠশালা খুলতে দেখা গেল আর্জেন্টিনা কোচকে। সম্ভবত মেসির ওপর সারা ভুবনের ভারের চাপ কমাতে। আর তা কতটা কমল এ্যারেনা কোরিন্থিয়ান্সের মাঠে আজ সুইস ডিফেন্সের সামনে পড়লেই জানা যাবে। কোচ ওতমার হিজফিল্ডের দল অবশ্য এক-দুই জনের ওপর নির্ভর না। ম্যাচ জেতানো বা বাঁচানোর বেশ কয়েকজন তারকা সুইসদের আছে। হিজফিল্ডও তাই বলছিলেন, জিতার জন্য গোটা দলকেই খেলতে হবে। মেসিদের মতো আমার দল তারকায় ঠাসা না। গড়ে সবাই প্রায় সমমানের। সংঘবদ্ধ হয়ে টিমটা খেলতে পারলে আর্জেন্টিনাকে মোকাবেলা বেশ ভালভাবেই করা যাবে। দু’দলের ফর্মেশনটার সঙ্গে দারুণ মিল রয়েছে। মেসিরা যেমন ৪-৩-৩ ছকে, একই ছকে ইনলারাও খেলছেন। তবে সুইজারল্যান্ডের ওপর শিরোপার চাপ নেই, যা মাথায় নিয়ে খেলছে আর্জেন্টাইনরা। আজকের ম্যাচে সাবেলার একাদশে একটিই পবির্তন, এ্যাগুয়োর জায়গায় লাভেজ্জি। গোলপোস্টে রোমেরোর ওপরে ডিপ ডিফেন্সে ইনজাকুয়েল গ্যারি ও ফর্নান্ডেজের পাশে মার্কোস রোজো এবং জাবালেতা। মিডফিল্ডে ডি মারিয়া ও গ্যাগোর মাঝে মাশ্চেরানো। স্ট্রাইকিংয়ে মেসি ও লাভেজ্জির একটু ওপরে হিগুয়াইন। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের উত্তরে হিগুয়াইন একটু রুষ্ট হয়ে বলছিলেন ‘গোল পাচ্ছি না তো কি হয়েছে।’ দল তো জিতেই চলেছে। আর আমি যতক্ষণ গোল না পাচ্ছি অন্যদের সহযোগিতা করে যাব গোলের জন্য।
গত দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেয়া সুইজারল্যান্ড এবার নিয়ে দশবার মূলপর্বে খেলে সেরা সাফল্য তিনবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। দুইবার বিশ্বকাপ জয়ী ম্যারাডোনার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও খেলেছে আরও দুইবার। রানার্সআপ দুইবার, এবার নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে বারোবার। মেসিরদের ওজন তো আছেই। পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে সুইসদের বিরুদ্ধে নকআউটে আর্জেন্টিনা নকআউট হওয়ার দল নয়। তবে এ ম্যাচেও এক মেসি নির্ভর হয়ে পড়লে বিপদ। খোদ ব্রাজিলে বসে বার বার মনে হচ্ছে এক মেসিকে ঘিরে এমন এক পেশে নৈপুণ্য আর কতদিন খেলবে যাবে আর্জেন্টিনা। ভক্তরা আরও উজ্জ্বল দেখতে চান প্রিয় দলকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে। সত্যি কথা বলতে কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দেশের গ্রুপ পর্বের খেলায় মনে ভরেনি সমর্থকদের। নকআউটের ম্যাচে তাই উদ্ভাসিত নৈপুণ্য প্রত্যাশা সবার। এই ম্যাচকে ঘিরে তারা শুধু রঙ্গিন নন। হাজির হয়েছেন মনোরম সাও পাওলো শহরে বুকভরা আশা নিয়ে। মেসিকে উদ্দেশ্য করেই আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আনন্দ-উৎসবের চিত্র-আহ্বান, হাতের প্ল্যাকার্ড-ব্যানারই তা বলে দিচ্ছিল। তাদের ভাবখানা ছিল এমন মেসি পারফর্ম, না করতে পারলে ব্রাজিলে কেউ বাঁচাতে পারবে না আর্জেন্টিনাকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় স্পেনকে হারিয়ে চমৎকার সূচনা করলেও গ্রুপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার যখন নকআউটে উঠেই গেছি তখন আরও একধাপ এগোনোর স্বপ্ন দেখতেই পারি। বড় দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও চমক দেখাতে চাই। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বলছিলেন অধিনায়ক গোকহান ইনলার। পাশাপাশি এও বলেন মেসিদের মোকাবেলা করা খুবই কষ্টের-কঠিন। সেটা হবে অসাধ্য সাধন করা। ফুটবলে সবই সম্ভব-এ মন্ত্রকে পুঁজি করেই মাঠে নামবে সুইসরা। আর্জেন্টিনার যেমন রয়েছে মেসি। সুইজারল্যান্ডেরও আছে জারদান শাকিরি নামক তুখোর প্লেমেকার। ব্রাজিল বিশ্বকাপে আলোচনায় চলে এসেছেন হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে। কোচ হিজফিল্ডের তুরুপের তাস শাকিরি আর সাবেলার মহাতারকা মেসির লড়াইটাও দেখতে উদগ্রীব বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ। জার্মান লীগ বুন্দেস লীগায় বেয়ার্ন মিউনিখের এই তারকাকে নিয়ে কোচ সাবেলা বললেন, ওকে আটকানোর জন্য বাড়তি পাহারাদার রাখা হবে। ছুটে গেলেই বিপদ। বিপক্ষ গোল সীমনায় ওর পা দুটো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।
সব কথার শেষ হচ্ছে, আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ এবারও খুব একটা আশা জাগাতে পারছে না। গ্রুপ লীগের তিন ম্যাচে ছয় গোল করলেও তিন গোল খেয়ে জানান দিচ্ছে মেসির দল। কাজেই বাঁচা-মরার নকআউটে রক্ষণ সতর্ক হয়ে খেলতে না পারলে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন শাকিরিরা। সাবেলা যেমন শাকিরিকে আটকানোর ছক তৈরি করেছেন, একইভাবে হিজফিল্ডও প্রস্তুত মেসিকে রুখতে। সুইস কোচ বলেছেন তিন ম্যাচে মেসির কাঁধে ভর করে পাড় পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। আমাদের বিরুদ্ধে সে সুযোগ তারা নাও পেতে পারে। জয়ের-গোলের জন্য অন্যদের চেষ্টা করতে হবে। হিজফিল্ড আরও বললেন, শুধু আমরা নই। বিশ্বের সবাই দেখেছে এক মেসিই টানছে গোটা দলকে। কাজেই আমাদের জায়গায় অন্য বিপক্ষ হলেও মেসির ওপর বাড়তি নজর রাখত। এক্ষেত্রে আমরাও সেটা করতে চাই।
No comments:
Post a Comment