ব্রাজিলের মধ্যে বারো বছর আগের মিল খুঁজছেন স্কোলারি
রূপায়ণ ভট্টাচার্য সাও পাওলো
হাতের মধ্যে রাখা হেডফোন৷ ইংরেজি বা স্প্যানিশে প্রশ্নটা এলে ওটা কানে লাগাচ্ছেন অনুবাদ শোনার জন্য৷ পর্তুগিজে প্রশ্ন এলে ওটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন৷ খেলা করার মতো৷
লুই ফিলিপে স্কোলারিকে বেলো অরিয়েন্তের প্রেস কনফারেন্স হলে দেখে মনেই হচ্ছিল না, কিছুক্ষণ আগে এই প্রবীণ মাঠে শিশুর মতো নাচছিলেন৷ যাঁকে সামনে পাচ্ছিলেন সামনে, জড়িয়ে ধরছিলেন৷ টাইব্রেকার শুরুর সময় হাতে জপের মালা ধরনের কী একটা রেখেছিলেন৷ অতি সংস্কারাচ্ছন্ন লোক৷ বারো বছর আগে বিশ্বকাপ জেতার সময় যা যা করেছিলেন, এ বারও তা করছেন৷ টিম ঘোষণার আগে সেবার যে গ্রামের গির্জায় গিয়েছিলেন প্রার্থনা করতে, এ বারও সেখানে গিয়েছিলেন৷
শান্ত গলায় স্কোলারি যা যা বলে যাচ্ছিলেন, তাতে অধিকাংশই তৃপ্তি ও স্বস্তি মাখা৷ তার সঙ্গে রয়েছে রেফারি হাওয়ার্ড ওয়েবের প্রতি ক্ষোভ৷ চিলি কোচ সাম্পাওলির বিরুদ্ধে রাগ৷ একটা সময় তাঁকে বিশ্বজয়ী কোচের মতো অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ শোনাচ্ছিল৷ কখনও কলকাতার ময়দানী কোচদের মতো সস্তার আবেগ গলায়৷ 'স্বর্গ থেকে আমরা তিন ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে'৷
সামান্য বাদেই বোঝা যেতে শুরু করল, স্কোলারি ব্রাজিলের জনতার কাছে দুটো বক্তব্য তুলে রাখতে চাইছেন৷ এক, ব্রাজিল আক্রান্ত, তাদের সমর্থনে ভরিয়ে দিন৷ দুই, ব্রাজিলিয়ানরা সমর্থনের আরও উগ্র হয়ে উঠুক৷ আজ সকাল থেকেই দেখছি, ব্রাজিলের কাগজগুলোতে লেখালেখি শুরু হয়েছে, নেইমার কলম্বিয়া ম্যাচে খেলতে পারবেন কিনা সন্দেহ৷ চিলির ফুটবলারদের মারে তাঁর নাকি হাঁটু ফুলে ঢোল৷ চোট ভালোই লেগেছে৷ তবে অতটা কী? মনে হচ্ছে, এটা স্কোলারির চালেরই অঙ্গ৷ আগের দিন বিশ্বের মিডিয়ার কাছে এসে কিন্ত্ত এত কথা বলেননি ব্রাজিল কোচ৷ নেইমারকে নিয়ে স্কোলারির এটা নতুন চাল৷ কলম্বিয়াকে ধাঁধায় রাখার চাল৷
টাইব্রেকারের সময় কি হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছিল? আগের রাতে স্কোলারির জবাব ছিল, 'সেটা ডাক্তাররা বলতে পারবেন, কার কখন হার্ট অ্যাটাক হবে৷ আমি তো ড্রয়ের সময়ই বলেছিলাম, চিলি ঝামেলায় ফেলবে৷ এ বার বিশ্বকাপে কোস্তা রিকা পরের পর্বে গিয়েছে৷ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিদায় নিয়েছে চিলির জন্য৷ কত অঘটন৷' পেনাল্টি না দেওয়া এবং গোল বাতিল নিয়ে মিক্সড জোনে স্বদেশি সাংবাদিকদের কাছে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন হাল্ক৷ স্কোলারিও ক্ষোভ জানালেন, তবে একটু ঘুরিয়ে৷ 'এই তো শুনি সব সময় রেফারির সিদ্ধান্তের সুবিধে পাচ্ছে ব্রাজিল৷ কিন্ত্ত ফাউল হলে ফাউল, পেনাল্টি হলে পেনাল্টি, গোল হলে গোল তো দেওয়াই উচিত৷'
'স্বর্গ থেকে তিন ধাপ দূরে' দাঁড়িয়ে যেন স্কোলারি প্রতি মুহূর্তে তাঁর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের সঙ্গে এই ব্রাজিলকে মেলাতে যাচ্ছেন৷ মেলাতে বসলে দেখা যাচ্ছে, কোথাও খুব মিল৷ কোথাও অমিল৷ সেই বিশ্বকাপে স্কোলারির সামনের দিকে যা ফুটবলার ছিলেন, তাঁদের নাম করলে স্বর্গবাস অনিবার্য৷ রোনাল্দো, রিভাল্দো, রোনাল্দিনহো, কাকা৷ এ বার সেখানে সামনে শুধু নেইমার তাঁদের সঙ্গে তুলনায় আসবেন৷ প্রথমার্ধে দারুণ খেলে দ্বিতীয়ার্ধে মারে গুটিয়ে গেলেন নেইমার৷ কিন্ত্ত পঞ্চম পেনাল্টি কিকের সময় দেখালেন কী ঠাণ্ডা মাথা৷ স্কোলারি যে জন্য বললেন, 'নেইমারের মাথাটা একেবারে পঁয়তিরিশ বছরের লোকের মতো পরিণত৷ ও পরের দিকের পারছিল না চোটের জন্য৷ ওরা মেরে তো ওর পা ফুলিয়ে দিয়েছে৷ রেফারি কিছুই দেখল না৷'
এক যুগ আগে স্কোলারির যে দলটা ৩-৪-১-২ ছকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তাতে ডিফেন্স বেশ জমাটই ছিল৷ ফাইনালের প্রথম এগারোয় পিছনে ছিলেন লুসিও, এডমিলসন, রকি জুনিয়র৷ মাঝমাঠে কাফু, জিলবার্তো সিলবা, ক্লেবারসন, রবের্তো কার্লোস৷ ইন দ্য হোল রোনাল্দিনহো৷ সামনে রোনাল্দো, রিভাল্দো৷ গোলে দিদা না খেলায় মার্কোস৷ সর্বকালের সেরা ২৫ জনের ব্রাজিল টিমে ঢোকার দাবিদার এঁদের মধ্যে পাঁচ জন৷ তিন 'রো' এবং রবের্তো কার্লোস-কাফু৷ এই টিমে সেখানে নেইমার ও তিয়াগো সিলবা ছাড়া কেউ সর্বকালের সেরা টিমে থাকার দাবিদার নন৷ কিন্ত্ত স্কোলারি ২০০২ সালের পাঁচ জনের মতো ২০১৪ সালে পাঁচ জনকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলছেন৷ চার ডিফেন্ডার এবং নেইমার৷
স্কোলারির দুটো টিমে সবচেয়ে বড় ফারাক বোধহয় ছক৷ এ বার তাঁর টিম খেলছে ৪-১-২-২-১ ছকে৷ ৩-৫-২ ছক ভেঙে৷ এ বার ডিফেন্স ভালো, মাঝমাঠ খারাপ বলে ৪-৫-১ ছকটা ভাবা হয়েছে৷ আর একটা ফারাক আছে৷ আগের বার ওই টিমে জিলবার্তো সিলবা বা ক্লেবারসনের মতো শ্রমিক শ্রেণীর ফুটবলার থাকলেও রোনাল্দিনহো বা রিভাল্দোর মতো গেমমেকার ছিলেন৷ যা এখানে নেই এবং যার জন্য আক্ষেপ চলছেই৷ পেলের সতীর্থ তোস্তাওকে গতবার পর্যন্ত দেখেছি, নিয়মিত ব্রাজিলের প্র্যাক্টিস দেখতে আসছেন কলাম লিখবেন বলে৷ দেখা যেত মিডিয়া সেন্টারেও৷ এ বারই দেখছি না৷ তবে কলাম লিখছেন নিয়মিত৷ সেখানে ব্রাজিলের মাঝমাঠ না থাকার জন্য আক্ষেপ উথলে উঠছে বারবার৷
স্কোলারিকে এ দিন বলতে শোনা গেল, 'আমরা কিন্ত্ত ওদের ব্যর্থতায় কোয়ার্টার ফাইনালে গেলাম না৷ আমাদের আত্মবিশ্বাসই নিয়ে গেল পরের ধাপে৷' তার পরে আরও অবাক করে দিয়ে, 'আমরা বিদেশিদের প্রতি খুব নরম মনোভাব দেখিয়েছি৷ শান্ত ছিলাম৷ নম্র৷ এ বার ওটা বদলানোর সময় হয়েছে৷ চিলি তো প্রায়ই আমাদের বেঞ্চের টেকনিক্যাল এরিয়ায় ঢুকে পড়ছিল৷ অনেকটা যুদ্ধের মতো৷ অনেক হয়েছে৷ আর আমি নম্র থাকতে পারব না৷ আমাকে তো জানেন, আমি কেমন মেজাজি লোক৷'
'ফিলিপাও' স্কোলারির এই দলটাকে অন্যরকম দেখাচ্ছে আবেগ এবং ঐক্যে৷ ম্যাচ শুরুর আগে হাডলে ব্রাজিল দলের অধিকাংশ ফুটবলার কাঁদছেন৷ টাইব্রেকার শুরুর আগে হাডল করে টিম কাঁদছে৷ এ দৃশ্য কবে দেখিয়েছে ব্রাজিল? দাবিদ লুইস পিঠের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়েও খেলছেন৷ নেইমার চিত্কার করে সেজারের উদ্দেশে বলছেন, 'ও আমাদের দৈত্য'! নেইমার মার খেলে প্রতিবাদে একসঙ্গে জ্যা মুক্ত তিরের মতো ছিটকে বেরোচ্ছেন দুই বিশ্বজয়ী কোচ স্কোলারি এবং আলবার্তো পাহিরা৷ গোল হলে বা পেনাল্টির দাবিতে বেঞ্চ থেকে গর্জন করতে করতে বেরোচ্ছে পুরো টিম৷
জেমস রদরিগেস-হোসে পেকেরমান যুগলবন্দি সামলাতে ফোর্তালেসার হলুদ গ্যালারির কাছেও ও রকম উগ্রতা চাইছেন স্কোলারি৷ যা জাপান-কোরিয়ার গ্যালারিকে মধ্যদিনের সূর্যের রং করে দিত প্রতিদিন৷
হাতের মধ্যে রাখা হেডফোন৷ ইংরেজি বা স্প্যানিশে প্রশ্নটা এলে ওটা কানে লাগাচ্ছেন অনুবাদ শোনার জন্য৷ পর্তুগিজে প্রশ্ন এলে ওটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন৷ খেলা করার মতো৷
লুই ফিলিপে স্কোলারিকে বেলো অরিয়েন্তের প্রেস কনফারেন্স হলে দেখে মনেই হচ্ছিল না, কিছুক্ষণ আগে এই প্রবীণ মাঠে শিশুর মতো নাচছিলেন৷ যাঁকে সামনে পাচ্ছিলেন সামনে, জড়িয়ে ধরছিলেন৷ টাইব্রেকার শুরুর সময় হাতে জপের মালা ধরনের কী একটা রেখেছিলেন৷ অতি সংস্কারাচ্ছন্ন লোক৷ বারো বছর আগে বিশ্বকাপ জেতার সময় যা যা করেছিলেন, এ বারও তা করছেন৷ টিম ঘোষণার আগে সেবার যে গ্রামের গির্জায় গিয়েছিলেন প্রার্থনা করতে, এ বারও সেখানে গিয়েছিলেন৷
শান্ত গলায় স্কোলারি যা যা বলে যাচ্ছিলেন, তাতে অধিকাংশই তৃপ্তি ও স্বস্তি মাখা৷ তার সঙ্গে রয়েছে রেফারি হাওয়ার্ড ওয়েবের প্রতি ক্ষোভ৷ চিলি কোচ সাম্পাওলির বিরুদ্ধে রাগ৷ একটা সময় তাঁকে বিশ্বজয়ী কোচের মতো অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ শোনাচ্ছিল৷ কখনও কলকাতার ময়দানী কোচদের মতো সস্তার আবেগ গলায়৷ 'স্বর্গ থেকে আমরা তিন ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে'৷
সামান্য বাদেই বোঝা যেতে শুরু করল, স্কোলারি ব্রাজিলের জনতার কাছে দুটো বক্তব্য তুলে রাখতে চাইছেন৷ এক, ব্রাজিল আক্রান্ত, তাদের সমর্থনে ভরিয়ে দিন৷ দুই, ব্রাজিলিয়ানরা সমর্থনের আরও উগ্র হয়ে উঠুক৷ আজ সকাল থেকেই দেখছি, ব্রাজিলের কাগজগুলোতে লেখালেখি শুরু হয়েছে, নেইমার কলম্বিয়া ম্যাচে খেলতে পারবেন কিনা সন্দেহ৷ চিলির ফুটবলারদের মারে তাঁর নাকি হাঁটু ফুলে ঢোল৷ চোট ভালোই লেগেছে৷ তবে অতটা কী? মনে হচ্ছে, এটা স্কোলারির চালেরই অঙ্গ৷ আগের দিন বিশ্বের মিডিয়ার কাছে এসে কিন্ত্ত এত কথা বলেননি ব্রাজিল কোচ৷ নেইমারকে নিয়ে স্কোলারির এটা নতুন চাল৷ কলম্বিয়াকে ধাঁধায় রাখার চাল৷
টাইব্রেকারের সময় কি হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছিল? আগের রাতে স্কোলারির জবাব ছিল, 'সেটা ডাক্তাররা বলতে পারবেন, কার কখন হার্ট অ্যাটাক হবে৷ আমি তো ড্রয়ের সময়ই বলেছিলাম, চিলি ঝামেলায় ফেলবে৷ এ বার বিশ্বকাপে কোস্তা রিকা পরের পর্বে গিয়েছে৷ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিদায় নিয়েছে চিলির জন্য৷ কত অঘটন৷' পেনাল্টি না দেওয়া এবং গোল বাতিল নিয়ে মিক্সড জোনে স্বদেশি সাংবাদিকদের কাছে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন হাল্ক৷ স্কোলারিও ক্ষোভ জানালেন, তবে একটু ঘুরিয়ে৷ 'এই তো শুনি সব সময় রেফারির সিদ্ধান্তের সুবিধে পাচ্ছে ব্রাজিল৷ কিন্ত্ত ফাউল হলে ফাউল, পেনাল্টি হলে পেনাল্টি, গোল হলে গোল তো দেওয়াই উচিত৷'
'স্বর্গ থেকে তিন ধাপ দূরে' দাঁড়িয়ে যেন স্কোলারি প্রতি মুহূর্তে তাঁর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের সঙ্গে এই ব্রাজিলকে মেলাতে যাচ্ছেন৷ মেলাতে বসলে দেখা যাচ্ছে, কোথাও খুব মিল৷ কোথাও অমিল৷ সেই বিশ্বকাপে স্কোলারির সামনের দিকে যা ফুটবলার ছিলেন, তাঁদের নাম করলে স্বর্গবাস অনিবার্য৷ রোনাল্দো, রিভাল্দো, রোনাল্দিনহো, কাকা৷ এ বার সেখানে সামনে শুধু নেইমার তাঁদের সঙ্গে তুলনায় আসবেন৷ প্রথমার্ধে দারুণ খেলে দ্বিতীয়ার্ধে মারে গুটিয়ে গেলেন নেইমার৷ কিন্ত্ত পঞ্চম পেনাল্টি কিকের সময় দেখালেন কী ঠাণ্ডা মাথা৷ স্কোলারি যে জন্য বললেন, 'নেইমারের মাথাটা একেবারে পঁয়তিরিশ বছরের লোকের মতো পরিণত৷ ও পরের দিকের পারছিল না চোটের জন্য৷ ওরা মেরে তো ওর পা ফুলিয়ে দিয়েছে৷ রেফারি কিছুই দেখল না৷'
এক যুগ আগে স্কোলারির যে দলটা ৩-৪-১-২ ছকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তাতে ডিফেন্স বেশ জমাটই ছিল৷ ফাইনালের প্রথম এগারোয় পিছনে ছিলেন লুসিও, এডমিলসন, রকি জুনিয়র৷ মাঝমাঠে কাফু, জিলবার্তো সিলবা, ক্লেবারসন, রবের্তো কার্লোস৷ ইন দ্য হোল রোনাল্দিনহো৷ সামনে রোনাল্দো, রিভাল্দো৷ গোলে দিদা না খেলায় মার্কোস৷ সর্বকালের সেরা ২৫ জনের ব্রাজিল টিমে ঢোকার দাবিদার এঁদের মধ্যে পাঁচ জন৷ তিন 'রো' এবং রবের্তো কার্লোস-কাফু৷ এই টিমে সেখানে নেইমার ও তিয়াগো সিলবা ছাড়া কেউ সর্বকালের সেরা টিমে থাকার দাবিদার নন৷ কিন্ত্ত স্কোলারি ২০০২ সালের পাঁচ জনের মতো ২০১৪ সালে পাঁচ জনকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলছেন৷ চার ডিফেন্ডার এবং নেইমার৷
স্কোলারির দুটো টিমে সবচেয়ে বড় ফারাক বোধহয় ছক৷ এ বার তাঁর টিম খেলছে ৪-১-২-২-১ ছকে৷ ৩-৫-২ ছক ভেঙে৷ এ বার ডিফেন্স ভালো, মাঝমাঠ খারাপ বলে ৪-৫-১ ছকটা ভাবা হয়েছে৷ আর একটা ফারাক আছে৷ আগের বার ওই টিমে জিলবার্তো সিলবা বা ক্লেবারসনের মতো শ্রমিক শ্রেণীর ফুটবলার থাকলেও রোনাল্দিনহো বা রিভাল্দোর মতো গেমমেকার ছিলেন৷ যা এখানে নেই এবং যার জন্য আক্ষেপ চলছেই৷ পেলের সতীর্থ তোস্তাওকে গতবার পর্যন্ত দেখেছি, নিয়মিত ব্রাজিলের প্র্যাক্টিস দেখতে আসছেন কলাম লিখবেন বলে৷ দেখা যেত মিডিয়া সেন্টারেও৷ এ বারই দেখছি না৷ তবে কলাম লিখছেন নিয়মিত৷ সেখানে ব্রাজিলের মাঝমাঠ না থাকার জন্য আক্ষেপ উথলে উঠছে বারবার৷
স্কোলারিকে এ দিন বলতে শোনা গেল, 'আমরা কিন্ত্ত ওদের ব্যর্থতায় কোয়ার্টার ফাইনালে গেলাম না৷ আমাদের আত্মবিশ্বাসই নিয়ে গেল পরের ধাপে৷' তার পরে আরও অবাক করে দিয়ে, 'আমরা বিদেশিদের প্রতি খুব নরম মনোভাব দেখিয়েছি৷ শান্ত ছিলাম৷ নম্র৷ এ বার ওটা বদলানোর সময় হয়েছে৷ চিলি তো প্রায়ই আমাদের বেঞ্চের টেকনিক্যাল এরিয়ায় ঢুকে পড়ছিল৷ অনেকটা যুদ্ধের মতো৷ অনেক হয়েছে৷ আর আমি নম্র থাকতে পারব না৷ আমাকে তো জানেন, আমি কেমন মেজাজি লোক৷'
'ফিলিপাও' স্কোলারির এই দলটাকে অন্যরকম দেখাচ্ছে আবেগ এবং ঐক্যে৷ ম্যাচ শুরুর আগে হাডলে ব্রাজিল দলের অধিকাংশ ফুটবলার কাঁদছেন৷ টাইব্রেকার শুরুর আগে হাডল করে টিম কাঁদছে৷ এ দৃশ্য কবে দেখিয়েছে ব্রাজিল? দাবিদ লুইস পিঠের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়েও খেলছেন৷ নেইমার চিত্কার করে সেজারের উদ্দেশে বলছেন, 'ও আমাদের দৈত্য'! নেইমার মার খেলে প্রতিবাদে একসঙ্গে জ্যা মুক্ত তিরের মতো ছিটকে বেরোচ্ছেন দুই বিশ্বজয়ী কোচ স্কোলারি এবং আলবার্তো পাহিরা৷ গোল হলে বা পেনাল্টির দাবিতে বেঞ্চ থেকে গর্জন করতে করতে বেরোচ্ছে পুরো টিম৷
জেমস রদরিগেস-হোসে পেকেরমান যুগলবন্দি সামলাতে ফোর্তালেসার হলুদ গ্যালারির কাছেও ও রকম উগ্রতা চাইছেন স্কোলারি৷ যা জাপান-কোরিয়ার গ্যালারিকে মধ্যদিনের সূর্যের রং করে দিত প্রতিদিন৷
http://eisamay.indiatimes.com/fifa-word-cup-2014/lucky-brazil-three-steps-from-heaven-says-scolari/articleshow/37476812.cms?
No comments:
Post a Comment