Monday, June 30, 2014

ছুটির খোঁজে ধরানো আগুন প্রাণ কাড়ল সেই পড়ুয়ার

ছুটির খোঁজে ধরানো আগুন প্রাণ কাড়ল সেই পড়ুয়ার

FireBIG_28
এই সময়: শেষ পর্যন্ত মারাই গেল স্কুলের শৌচালয় থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ক্লাস ফোরের সেই ছাত্রটি৷ রবিবার সকালে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়৷ স্কুলের শৌচালয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগাতে গিয়ে সে অগ্নিদগ্ধ হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ৷ এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে মৃত ছাত্রের পরিবারের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি৷

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব কলকাতার তিলজলায় একটি স্কুলের শৌচাগার থেকে চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশে৷ প্রথমে একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রকে৷ পরে সেখান থেকে ই এম বাইপাস লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয় তাকে৷ তদন্তে জানা যায়, পেট্রল ছড়ানোর পর বাথরুমে আগুন লাগায় ওই ছাত্র৷ এর জেরেই তার গায়ে আগুন লেগে যায়৷ তার কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, কিছু দিনের জন্য যাতে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়--এমন কোনও পরিকল্পনা করছিল ছাত্রটি৷ সে কারণেই শৌচাগারে আগুন লাগানোর চেষ্টা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ স্কুলে যেতে ভালো না-লাগা থেকেই এই ইচ্ছে, না এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে--খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও৷ চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্র কোথা থেকে, কী ভাবে পেট্রল জোগাড় করল, সে ব্যাপারে তদন্তকারীরা এখনও অন্ধকারে৷

রবিবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের৷ ছেলে স্কুলে যেতে চাইত না, এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রটির বাবা৷ তাঁর কথায়, 'আমার ছেলে পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো ছিল৷ স্কুলে না-যাওয়ার ব্যাপারে কখনও কিছু বলতে শুনিনি ওকে৷ তবে মাস খানেক আগে এক বার বলেছিল, 'স্যর, বহুত মারা হ্যায়৷' এর পর অবশ্য ওই ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি৷' তাঁর অভিযোগ, 'ছেলেকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷' কিন্ত্ত এ দিন পর্যন্ত তিনি কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি৷ কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি৷ ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে স্কুল-কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাহায্য বা উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলেও অভিযোগ তাঁর৷ মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

ইতিমধ্যে ফরেন্সিক তদন্তে স্কুলের শৌচাগারে পেট্রলের নমুনা মিলেছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে পেট্রল এল ওই ছাত্রের কাছে? পুলিশের একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই ছাত্রের এক ঘনিষ্ঠ জানতেন যে, তার সঙ্গে পেট্রল রয়েছে৷ তা হলে কেন তিনি ওই ছেলেটিকে স্কুলে পেট্রল নিয়ে যেতে বারণ করলেন না, তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ আর যদি অন্য কেউ এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য দায়ী হয়, তা হলে এর পিছনে কী কারণ রয়েছে--তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷

No comments:

Post a Comment