আইন পরিবর্তন হচ্ছে , তবু ধর্ষণ বন্ধ হয় না কেন ?
পলাশ বিশ্বাস
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে সাহসিকতার জন্য শুক্রবার যে নয় নারীকে পুরস্কৃত করেছে তাদের মধ্যে ভারতের গণধর্ষণের শিকার হওয়া নারীও রয়েছেন। তার মর্মান্তিক মৃত্যু গোটা ভারতসহ বিশ্বের জন্য ছিল এক শোকাবহ ঘটনা।
মেডিক্যালের তরুণী ছাত্রীটি (২৩) দিল্লীর চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অধিক রক্তক্ষরণের কারণে সিঙ্গাপুরের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি পরে 'নির্ভয়া' কিংবা ভীতিহীন বলে পরিচিতি পান।
গণধর্ষণের শিকার এ নারী এ বছর 'ইউএস ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ' পুরস্কার পান। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, তার এ সাহস লাখ লাখ নারী পুরষকে ঐক্যবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করেছে। যাদের বার্তা একটিই, 'এ ধরনের ঘটনা আর নয়'।
অনুষ্ঠানে জন কেরি মেয়েটির বাবা মায়ের দেয়া একটি মেসেজ পড়ে শোনান। সেখানে তারা বলেছেন, 'যে কেবলই আমাদের কন্যা ছিল সে একদিন পুরো পৃথিবীর হয়ে উঠবে তা আমরা কখনই কল্পনাও করিনি।'
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রদপ্তর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্ত আরো তিন নারী অনুপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন তিব্বতের কবি সারিঙ ওয়েসার। তাকে চীনা কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট দেয়নি। এছাড়া বর্তমানে গৃহঅন্তরীণ ভিয়েতনামের ব্লগার তা পঙ তান এবং সিরিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী রাজান জেইতুনাহ। তিনি বর্তমানে নিরাপত্তার স্বার্থে আত্মগোপনে আছেন।
পুরস্কার প্রাপ্ত অন্যরা হলেন আফগান নারী মালালাই বাহাদুরি। তিনি আফগান ন্যাশনাল ইন্টারডিকশান ইউনিটের প্রথম মহিলা সদস্য। আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টাকালে চাচা তার নাক ভেঙে দেয়।
এছাড়া রয়েছেন রুশ সাংবাদিক এলেনা মিলাশিনা, নাইজেরিয়ার গণতান্ত্রিক কর্মী জোশেপিন অবিয়াজুলু অদুমাকিন, সোমালিয়ান অ্যাক্টিভিস্ট ফারতুন আদান এবং হুন্ডুরার জুলিয়েটা ক্যাসেলানোস।
নারী নির্যাতন রোধে নতুন অধ্যাদেশ আনলো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই অধ্যাদেশে চরম নির্যাতনের ঘটনায় ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। নতুন অধ্যাদেশে ধর্ষণের সংজ্ঞা বদলে, একাধিক ধরনের নির্যাতনকে যৌননিগ্রহের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। জে এস ভার্মা কমিশনের সুপারিশ খতিয়ে দেখে শুক্রবার রাতে এই নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ।
দিল্লী গণধর্ষণ ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের কঠোরতম শাস্তির দাবি ওঠে। এর ফলে যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে শাস্তি নিয়ে আইন সংশোধনের ব্যাপারে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। উনত্রিশ দিনের মাথায়, কমিটি গত ২৩ জানুয়ারি সেই রিপোর্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। রিপোর্টে নারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় বেশ কিছু আইন সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সুপারিশ কার্যকর করতে এবার অধ্যাদেশ জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার।
নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে ধর্ষণের সঙ্গেই একাধিক ধরনের নির্যাতনকে যৌন নির্যাতনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে অ্যাসিড হামলাও। এছাড়া মেয়েদের পিছু নেয়া বা উত্ত্যক্ত করা (ইভটিজিং), অশালীন ইঙ্গিত, শ্লীলতাহানি বা অন্য কোনভাবে তাদের হেনস্থা করাকেও অপরাধের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ভার্মা কমিশনের সুপারিশ খতিয়ে দেখে এই নতুন অধ্যাদেশে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নতুন অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে বিভিন্ন মহল থেকে দিল্লী গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণের ক্ষেত্রে সাবালকত্বের বয়সসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার যে দাবি উঠেছিল রিপোর্টে সে সম্পর্কে কোন সুপারিশ করেনি ভার্মা কমিশন।
দিল্লী গণধর্ষণকা- মামলায় বৃহস্পতিবার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিটে মৃত্যুদ-ের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রায় হাজার পাতার চার্জশিট পেশ করা হয় সাকেতে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। তিরিশ জনের সাক্ষ্যের উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।মৃত্যুর কাছে হার মানল বাঁচার মরিয়া লড়াই। তেরো দিনের লড়াই শেষে মৃত্যু হল দিল্লী গণধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতা তরুণীর। ভারতীয় সময় রাত দুটো পনেরোয় তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। চিকিত্সা চলছিল সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। ধর্ষণ ভাইরাস ভারত পেরিয়ে এখন বাংলাদেশে চলে এসেছে! যখন ভারতের ধর্ষণের ঘটনা পৃথিবীজুড়ে আলোচিত হচ্ছে, তখন বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করে কয়েকজন নরপশু। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ফরিদপুর, চট্টগ্রাম এবং সাভারে ধর্ষণের ঘটনা আলোচনায় চলে আসে।
ভারত এবং বাংলাদেশে ধর্ষণ অথবা গণধর্ষণ এখন একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতে এর জোরেশোরে প্রতিবাদ হলেও বাংলাদেশে হুবহু একই ঘটনা ঘটলেও জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ভেতরের পাতায় সে খবর ছাপা হয়।
Фото: EPA
|
ভারতের রাজধানীতে বাসে এক তরুনীকে পাঁচজন আসামীর করা ধর্ষণের মামলার শুনানী অন্ততঃ তিনমাস ধরে চলবে, বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি জানিয়েছে আসামী ও ফরিয়াদী পক্ষের সূত্র ধরে. শুনানী শুরু হয়েছে ৫ই ফেব্রুয়ারী. এই মামলায় ৮০ জন সাক্ষী.
গত বছরের ১৬ই ডিসেম্বর ছজন পুরুষ ২৩-বছর বয়সী ছাত্রী জ্যোতি সিংকে বাসে নির্মমভাবে ধর্ষণ করেছিল. পরে তরুনীটি সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে মারা যায়. ভারতের বহু শহরে ব্যাপক গণমিছিল হয়েছিল এর প্রতিবাদে, যা নিয়মিত পুলিশের সাথে সংঘর্ষে পর্যবসিত হয়েছে. পুলিশ ৬ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে. তাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক পাঁচজনের বিরুদ্ধে ১৩টি ধারায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে – যেমন, খুন, লুন্ঠন, সাক্ষ্যলোপের প্রচেষ্টা, অপরাধমুলক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি. তাদের মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতে পারে. ষষ্ঠ অভিযুক্ত অপরাধ করার মুহুর্তে নাবালক ছিল, তাই তার বিচার করা হবে পৃথকভাবে.
এসব আসামি দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার ঘটনা ভারতে সচরাচর হয় না।
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, দিল্লী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনের বয়স ১৮ বছরের ওপরে। বাকি একজন কিশোর। তার বয়স ১৮ বছরের নিচে। তবে ওই কিশোরের বয়স নির্ণয়ে পুলিশকে তার অস্থিমজ্জা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব আসামি ১৬ ডিসেম্বর দিল্লীতে দামিনী নামে এক মেডিকেল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর ফেলে দেয়। একই সঙ্গে ওই তরুণীর হবু বরকেও মেরে গুরুতর আহত করে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
গুরুতর আহত দামিনীকে উদ্ধার করে দিল্লীর সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সপ্তাহান্তে তার মৃত্যু হয়।
দিল্লীর এই গণধর্ষণের ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্বে যেসব নগরীতে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে দিল্লী অন্যতম একটি।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী রাজিব মোহন জানিয়েছে, ডিএনএ টেস্টেই নতুন দিল্লিতে চলন- বাসে তরুণীকে গণর্ধষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয় জনের অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাজিব মোহন এ সময় আদালতে ওই তরুণী ও তার পরিবারের পরিচয় গোপন রাখার আবদেন জানিয়েছেন। দিল্লির সাকেত জেলা আদালতে গত বৃহস্পতিবার ওই ছয় জনের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, গণধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি ও আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ একটি বন্ধ খামে ডিএনএ টেস্টের ফলাফল ও অন্যান্য প্রমাণাদি আদালতে হস-ান-র করেছে। ওই ঘটনার অভিযুক্তরা হচ্ছেন রাম সিং, তার ভাই মুকেশ এবং তাদের সহযোগী পয়ান গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুর। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে আটক ষষ্ঠজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই তার বিরুদ্ধে আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হবে। তবে সে কিশোর কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ডাক্তারি পরীক্ষাও চালানো হচ্ছে।
এদিকে ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে, আটক ছয়জনই অপরাধে জড়িত ছিল। এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি ওই অভিযোগপত্রের ৩৩ নং পৃষ্ঠায় ওই কিশোরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে বিস-ারিত বর্ণনা দেয়া আছে।
ভারতের আইন অনুযায়ী, অভিযোগপত্র দাখিলের সময় আটকদের আদালতে সশরীরে হাজির হওয়া বাঁধ্যতামূলক হলেও তারা আদালতে উপসি'ত ছিলেন না।
নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের আদালতে আনা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রতিদিন শুনানিসহ এ ঘটনার বিচার চলতি সপ্তাহ শেষে শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগপত্রে প্রায় ৩০ জন সাক্ষীর নাম অন-র্ভূক্ত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) আলতামাস কবীর দিল্লির সাকেত আদালত ভবনে দ্রুত বিচার আদালত উদ্বোধন করেন। ওই আদালতে প্রথম ২৩ বছর বয়সী চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওই ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।
গণধর্ষণের শিকার তরুণীটি গত ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের এক হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রবল আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল শ্রেণীর জনগণ ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চাইছে।
তরুণীটির বাবাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একযোগে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন। এছাড়া মেয়ের সম্মানে তার নামে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে আটক ষষ্ঠজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই তার বিরুদ্ধে আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হবে। তবে সে কিশোর কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ডাক্তারি পরীক্ষাও চালানো হচ্ছে।
এদিকে ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে, আটক ছয়জনই অপরাধে জড়িত ছিল। এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি ওই অভিযোগপত্রের ৩৩ নং পৃষ্ঠায় ওই কিশোরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে বিস-ারিত বর্ণনা দেয়া আছে।
ভারতের আইন অনুযায়ী, অভিযোগপত্র দাখিলের সময় আটকদের আদালতে সশরীরে হাজির হওয়া বাঁধ্যতামূলক হলেও তারা আদালতে উপসি'ত ছিলেন না।
নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের আদালতে আনা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রতিদিন শুনানিসহ এ ঘটনার বিচার চলতি সপ্তাহ শেষে শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগপত্রে প্রায় ৩০ জন সাক্ষীর নাম অন-র্ভূক্ত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) আলতামাস কবীর দিল্লির সাকেত আদালত ভবনে দ্রুত বিচার আদালত উদ্বোধন করেন। ওই আদালতে প্রথম ২৩ বছর বয়সী চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওই ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।
গণধর্ষণের শিকার তরুণীটি গত ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের এক হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রবল আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল শ্রেণীর জনগণ ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চাইছে।
তরুণীটির বাবাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একযোগে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন। এছাড়া মেয়ের সম্মানে তার নামে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দিল্লীর গণধর্ষণের নেপথ্যে সুশাসনের অভাবকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে কিছু আইন সংশোধনের সুপারিশের পাশাপাশি পুলিশ আর প্রশাসনের মানসিকতা পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়েছে বিচারপতি জে এস ভার্মা নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিশন। তবে ধর্ষকের মৃত্যুদ-ের যে দাবিতে পুরো ভারত উত্তাল হয়ে উঠেছিল, তাতে সায় দেননি কমিশনের সদস্যরা। খবর ওয়েবসাইটের।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লীতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিক্যাল ছাত্রী ক'দিন পর মারা যান। নির্মমভাবে পেটানো হয় তার বন্ধুকেও। পরে তাদের দুজনকে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে পিষে মারার চেষ্টা করে ধর্ষকরা। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। ধর্ষকদের মৃত্যুদ-ের দাবি ওঠে। বিক্ষোভরত তরুণরা ইন্ডিয়া গেটে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ায়। এরপর ধর্ষণের ঘটনা ও আইন সংশোধনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বে এই কমিশন করা হয়। এতে সদস্য করা হয় হিমাচল প্রদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি লাইলা শেঠ ও সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল গোপাল সুব্রামনিয়ামকে। কমিশন করার ২৯ দিনের মাথায় বুধবার ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়ে বিচারপতি ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, 'ভারতের যুবসমাজই মানসিকতা পরিবর্তন আনার পথ দেখিয়েছে। আমরা যুব সমাজের কাছে ঋণী। প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে তারা অত্যন্ত পরিণত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে।... এটাই সমাজে পরিবর্তন আনার প্রথম ধাপ।'
তবে মৃত্যুদ-ের দাবির সঙ্গে একমত না হয়ে ভার্মা কমিশন বলেছে, ভারতের প্রচলিত আইন কার্যকর করতে পারলেই নারীর প্রতি সহিংসত রোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব। আইনে নয়, গলদ আইনের শাসন বাস্তবায়নে। এ ধরনের মামলায় পুলিশ ও প্রশাসনের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মা । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের একটি বড় অংশ সমাজকে 'সংকীর্ণ পিতৃতান্ত্রিক' দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এজন্য পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কার করে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারার পরিবেশ তৈরির সুপারিশ করেছে কমিশন।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লীতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিক্যাল ছাত্রী ক'দিন পর মারা যান। নির্মমভাবে পেটানো হয় তার বন্ধুকেও। পরে তাদের দুজনকে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে পিষে মারার চেষ্টা করে ধর্ষকরা। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। ধর্ষকদের মৃত্যুদ-ের দাবি ওঠে। বিক্ষোভরত তরুণরা ইন্ডিয়া গেটে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ায়। এরপর ধর্ষণের ঘটনা ও আইন সংশোধনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বে এই কমিশন করা হয়। এতে সদস্য করা হয় হিমাচল প্রদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি লাইলা শেঠ ও সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল গোপাল সুব্রামনিয়ামকে। কমিশন করার ২৯ দিনের মাথায় বুধবার ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়ে বিচারপতি ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, 'ভারতের যুবসমাজই মানসিকতা পরিবর্তন আনার পথ দেখিয়েছে। আমরা যুব সমাজের কাছে ঋণী। প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে তারা অত্যন্ত পরিণত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে।... এটাই সমাজে পরিবর্তন আনার প্রথম ধাপ।'
তবে মৃত্যুদ-ের দাবির সঙ্গে একমত না হয়ে ভার্মা কমিশন বলেছে, ভারতের প্রচলিত আইন কার্যকর করতে পারলেই নারীর প্রতি সহিংসত রোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব। আইনে নয়, গলদ আইনের শাসন বাস্তবায়নে। এ ধরনের মামলায় পুলিশ ও প্রশাসনের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মা । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের একটি বড় অংশ সমাজকে 'সংকীর্ণ পিতৃতান্ত্রিক' দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এজন্য পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কার করে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারার পরিবেশ তৈরির সুপারিশ করেছে কমিশন।
দ্রুত এ অপরাধের বিচার কার্যকরের জন্য গত বৃহস্পতিবার দিল্লির যন-র মন-রে শিক্ষার্থীরা কালো দিবস পালন করেছে।
ঘটনাটি স্পর্শকাতর বলে আদালতের বার এসোসিয়েশনের সদস্যরা আটকদের বয়কট করে তাদের মামলা নিতে অস্বীকৃতী জানিয়েছে।
মণিপুরে মায়েদের প্রতি রাষ্ট্রের ব্যবহার সর্ববিদিত। দলিত নারীর প্রতি যে অবিচার চলে, দস্যুসুন্দরী ফুলন উপাখ্যানে তাঁর চালচিত্র চিত্রায়িত থাকবে চিরকাল। আদিবাসী রমনী ও মাতা সোনী সোরীর প্রতি অবিরত নির্যাতন চলছে, সে কিনা মাওবাদী।একটি মোমবাতিও বরাদ্দ নেই তাঁর জন্য। বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থায় নারী মহার্ঘ পণ্য, নারী দেহ রাজনীতি, ক্ষমতা ও সাহিত্য সংস্কৃতির অলিন্দে ওঠার সহজতম সিঁড়ি।সমাজে নারীর অবস্থানের মাপকাঠি সবক্ষেত্রেই একই।ভোগ সর্বস্ব।ধর্মে সে শুদ্র,দাসী।কঠোর সতীত্বের অনুশীলনে বন্দী, সবরকম ত্যাগের জন্য দায়বদ্ধ। সমাজ ও ধর্মের অনুশাষনের গন্ডী ডিঙ্গি মেরে পার করতে গেলেই সে নষ্ট মেয়ে নষ্ট ডিমের মতোই।ধর্মেনারী নির্আতন শাস্তরসম্মত।ভারতবর্ষের রাজধানীতে গণধর্ষণের বিরুদ্ধে মোমবাতি প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও বিপ্লব ধার্মিক ফতোয়ার আকার নিছ্ছে মৃত্যুদন্ডের ও ধর্ষকদের রাসায়নিক ভাবে নপুংসক করার দাবি ও সর্বদলীয় সম্মতিতে তত্সম্বন্ধী আইন প্রণয়নে। সত্য হল ভারতবর্ষের কর্তৃত্ব চলছে মনুস্মৃতি ব্যবস্থা ও বিধান অনুযায়ী। সেখানে নারীর অবস্থান বুঝতে হলে সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখা পড়তেই হয়। পড়তে হয় তসলিমার বিতর্কিত কালম অবশ্যই।
ভারতের তামিলনাড়ূতে দলিত শ্রেণীর ওপর পুলিশের যৌন নির্যাতনের ভয়াবহ একটি তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৯২ সালে রাজ্যের ভাচাতি গ্রামে পুলিশ ও বনবিভাগের কর্মকর্তাদের দ্বারা কমপক্ষে ১৮ দলিত নারী ও কিশোরীকে ধর্ষণ এবং শতাধিক যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। চন্দনকাঠ উদ্ধারের জন্য ওই গ্রামে ওই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। এ অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানকার একটি আদালত ২৬৯ জন পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
"অপারেশন গ্রীণ হান্ট" এর নামে এই অঞ্চলে ভারতীয় আধা সামরিক বাহিণী আদিবাসীদের গ্রামগুলোতে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ চালাচ্ছে বলে ব্যপক অভিযোগ উঠেছে। বিহারে উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের ভূমি সেনা দ্বারা নিম্ন বর্ণের হিন্দু, দলিত ও মুসলমানদের উপর নির্যাতন চলছে ধর্মকে ব্যবহার করে।
দামিনীকে বাঁচাতে পুলিশ বা পথচারী কেউই এগিয়ে আসেনি। দিল্লীর রাজপথে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় নিহত মেডিকেল ছাত্রী দামিনীর সহযাত্রী বন্ধু জানিয়েছেন, ঘটনার দিন দুষ্কৃতিরা তাদের রাস্তায় ফেলে যাওয়ার পর প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ বা পথচারী কেউই তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। বারবার সাহায্য চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। এমনকি পিসিআর ভ্যানেও রক্তাক্ত বন্ধুকে তোলার সময় পুলিশ এগিয়ে আসেনি। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এসব কথা বলেন তিনি। খবর-জি নিউজ।
ভারতে তরুণীকে গণধর্ষণের নৃশংস এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। রাজধানী জুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ, তরুণীর মৃত্যুর পর শোক, মৌনমিছিল, এত কিছুর মাঝে আড়ালেই পড়েছিলেন নির্যাতিতার বন্ধু। যিনি ১৬ ডিসেম্বর রাতে তরুণীর সঙ্গে ছিলেন। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন। অবশেষে একটি টেলিভিশনে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ভয়াবহ ওই ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অকপটে জানালেন সেদিনের দুঃস্বপ্নের বাসযাত্রার কথা।
দিল্লীর চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা শুধু ভারতের সাধারণ মানুষকেই স্তব্ধ করে দেয়নি। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তারাও। কিন্তু পাশবিক অত্যাচারের যন্ত্রণা তেইশ বছরের ওই তরুণীর মনোবল ভাঙতে পারেনি। তাই হাসপাতালের বেডে শুয়েই ঘটনার বর্ননা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট পরে লিখিতভাবে জানান, চাপের মুখে জবানবন্দি দিয়েছেন নির্যাতিতা। এনিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। ঘটনার পর টিভির পর্দায় মুখ খুলে এবিষয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তরুণীর বন্ধু।
ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ রুখতে পরিবর্তন দরকার সর্বস্তরে। ঘটনার পরে টেলিভিশনের পর্দায় প্রথমবারের জন্য মুখ খুলে এমনটাই বললেন দিল্লী গণধর্ষণকাণ্ডে নিহত তরুণীর বন্ধু। তার দাবি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন দরকার। পাশাপাশি প্রয়োজন আইনি এবং পুলিশের আচরণের পরিবর্তনও। একটাই দুঃখ। আপ্রাণ চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি বন্ধুকে। তবে বন্ধুর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তির জন্য লড়ে যাবেন বলেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তিনি। জনগণের প্রতি তার অনুরোধ, নৃশংস এ ঘটনায় যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তা যেন থেমে না যায়। সেটাই হবে ওই তরুণীর প্রতি একমাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ভারতে তরুণীকে গণধর্ষণের নৃশংস এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। রাজধানী জুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ, তরুণীর মৃত্যুর পর শোক, মৌনমিছিল, এত কিছুর মাঝে আড়ালেই পড়েছিলেন নির্যাতিতার বন্ধু। যিনি ১৬ ডিসেম্বর রাতে তরুণীর সঙ্গে ছিলেন। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন। অবশেষে একটি টেলিভিশনে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ভয়াবহ ওই ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অকপটে জানালেন সেদিনের দুঃস্বপ্নের বাসযাত্রার কথা।
দিল্লীর চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা শুধু ভারতের সাধারণ মানুষকেই স্তব্ধ করে দেয়নি। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তারাও। কিন্তু পাশবিক অত্যাচারের যন্ত্রণা তেইশ বছরের ওই তরুণীর মনোবল ভাঙতে পারেনি। তাই হাসপাতালের বেডে শুয়েই ঘটনার বর্ননা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট পরে লিখিতভাবে জানান, চাপের মুখে জবানবন্দি দিয়েছেন নির্যাতিতা। এনিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। ঘটনার পর টিভির পর্দায় মুখ খুলে এবিষয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তরুণীর বন্ধু।
ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ রুখতে পরিবর্তন দরকার সর্বস্তরে। ঘটনার পরে টেলিভিশনের পর্দায় প্রথমবারের জন্য মুখ খুলে এমনটাই বললেন দিল্লী গণধর্ষণকাণ্ডে নিহত তরুণীর বন্ধু। তার দাবি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন দরকার। পাশাপাশি প্রয়োজন আইনি এবং পুলিশের আচরণের পরিবর্তনও। একটাই দুঃখ। আপ্রাণ চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি বন্ধুকে। তবে বন্ধুর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তির জন্য লড়ে যাবেন বলেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তিনি। জনগণের প্রতি তার অনুরোধ, নৃশংস এ ঘটনায় যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তা যেন থেমে না যায়। সেটাই হবে ওই তরুণীর প্রতি একমাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ইভটিজিং-নারী নিগ্রহ রুখতে নির্দেশিকা জারি
হিমাদ্রি সরকার
রাজ্যে একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনাকে ছোট ঘটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এমনকী, শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণেও নারী নিগ্রহের ঘটনা প্রসঙ্গে একটি লাইনও উল্লেখ করা হয়নি৷ এনিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধী দলগুলি৷ এবার সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশকে হাতিয়ার করে ইভটিজিং ও নারীনিগ্রহ বন্ধে একটি নির্দেশিকা জারি করল মমতার হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র দন্তর৷ সেখানে ইভটিজিং বন্ধ করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ তারমধ্যে দু'টি নির্দেশ অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ৷ একটি হল, বাস-ট্যাক্সির মতো সাধারণ যানবাহনে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটলে তার চালক-খালাসির দায়িত্ব হবে গাড়ি নিয়ে সরাসরি নিকটবর্তী থানায় নিয়ে যাওয়া৷ তা না হলে ওই গাড়ির পারমিট বাতিল করা হবে৷ দ্বিতীয় নির্দেশটি হল, এই প্রথম কোনও সরকারি নির্দেশে সম্ভবত ইভটিজিংয়ের মতো নারীনিগ্রহের ঘটনা রুখতে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা দেখলে পথচারী বা প্রত্যক্ষদর্শীর দায়িত্ব, চুপ করে না থেকে থানায় গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানানো৷
স্বরাষ্ট্র দন্তর সূত্রের খবর, একটি সিভিল আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণান গত বছর একটি আদেশ দেন৷ সেখানে কর্মস্থলে নারীনিগ্রহ এবং বিভিন্ন জায়গায় ইভটিজিংয়ের ঘটনা রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব দীনবন্ধু ভট্টাচার্য সেই নির্দেশাবলী রাজ্যের সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত তা কার্যকর করতে বলেছেন৷
বিচারপতি রাধাকৃষ্ণান তাঁর রায়ে বলেছেন, কর্মস্থলে নারীদের উপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা রুখতে সংসদে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ কিন্ত্ত ইভটিজিংয়ের ঘটনা রুখতে তা পর্যাপ্ত নয়৷ ঘটনাচক্রে দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনার আগেই এই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ওই ঘটনার পর বিশেষ করে রাস্তাঘাটে বাস-ট্যাক্সির মতো যানবাহনে নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ৷ বিভিন্ন রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল৷ বাস্তবে অবশ্য তা বেশিদূর এগোয়নি৷ এরপর কলকাতায় রাজাবাজারে দিনদুপুরে চলন্ত বাসে একদল মদ্যপ যুবকের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক ছাত্রী৷ এতদিন পরেও ওই বাসটিকে শনাক্ত করা যায়নি৷ গ্রেপ্তার হয়নি অভিযুক্তরাও৷ এমনকী বাসের কোনও যাত্রী বা কোনও প্রত্যক্ষদর্শী সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি৷ এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত সচিবের এই নির্দেশ অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল৷
পুলিশকর্তাদের একাংশ বলছেন, সরকারি-বেসরকারি যানবাহনের উপর এই কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হলে বাস-ট্যাক্সি-ট্রামে মেয়েদের উদ্দেশ করে কটূক্তি, ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির ঘটনা রোখা অনেকটা সহজ হবে৷ কারণ অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত মহিলা থানায় এসে অভিযোগ জানাতে ভয় পান৷ তবে নির্দেশ না মানলে পারমিট বাতিলের মতো পদক্ষেপ করা যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা৷ কারণ, আইনে এই সংক্রান্ত কোনও বিধান নেই৷ ওই নির্দেশিকায় বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি বসানো, পথেঘাটে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশকর্মী নামিয়ে নজরদারি বাড়ানোসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, কয়েকটি পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যেই নারীনিগ্রহের ঘটনা রুখতে আলাদা হেল্পলাইন চালু করেছে৷ কিন্ত্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভি বসানো বা মহিলা পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো এত দ্রুত অসম্ভব৷ কলকাতাতেই এই পরিকাঠামো নেই৷ রাজ্যের অন্যত্র অবস্থা আরও খারাপ৷
কী আছে নির্দেশিকায়?
বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন, মেট্রো, সিনেমা হল, শপিং মল, পার্ক, যানবাহনে সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ কর্মী মোতায়েন করতে হবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভি বসাতে হবে, যাতে কোনও ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তকে দ্রুত ধরা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রার্থনাস্থল, সিনেমা হল, বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে নিজ নিজ এলাকায় ইভটিজিং রোধে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। কোনও যানবাহনে নারীনিগ্রহের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট যানের চালক ও অন্য সদস্যদের দায়িত্ব গাড়ি নিয়ে থানায় চলে আসা। বিভিন্ন শহরে নারীনিগ্রহের ঘটনা রোধে হেল্পলাইন চালু করতে হবে.। ইভটিজিং বা ওই ধরনের ঘটনা রোধে সতর্কতামূলক নোটিস বোর্ড বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখতে হবে। পথচারী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীকেও এই ধরনের ঘটনা রোধে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
রাজ্যে একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনাকে ছোট ঘটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এমনকী, শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণেও নারী নিগ্রহের ঘটনা প্রসঙ্গে একটি লাইনও উল্লেখ করা হয়নি৷ এনিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধী দলগুলি৷ এবার সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশকে হাতিয়ার করে ইভটিজিং ও নারীনিগ্রহ বন্ধে একটি নির্দেশিকা জারি করল মমতার হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র দন্তর৷ সেখানে ইভটিজিং বন্ধ করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ তারমধ্যে দু'টি নির্দেশ অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ৷ একটি হল, বাস-ট্যাক্সির মতো সাধারণ যানবাহনে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটলে তার চালক-খালাসির দায়িত্ব হবে গাড়ি নিয়ে সরাসরি নিকটবর্তী থানায় নিয়ে যাওয়া৷ তা না হলে ওই গাড়ির পারমিট বাতিল করা হবে৷ দ্বিতীয় নির্দেশটি হল, এই প্রথম কোনও সরকারি নির্দেশে সম্ভবত ইভটিজিংয়ের মতো নারীনিগ্রহের ঘটনা রুখতে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা দেখলে পথচারী বা প্রত্যক্ষদর্শীর দায়িত্ব, চুপ করে না থেকে থানায় গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানানো৷
স্বরাষ্ট্র দন্তর সূত্রের খবর, একটি সিভিল আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণান গত বছর একটি আদেশ দেন৷ সেখানে কর্মস্থলে নারীনিগ্রহ এবং বিভিন্ন জায়গায় ইভটিজিংয়ের ঘটনা রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব দীনবন্ধু ভট্টাচার্য সেই নির্দেশাবলী রাজ্যের সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত তা কার্যকর করতে বলেছেন৷
বিচারপতি রাধাকৃষ্ণান তাঁর রায়ে বলেছেন, কর্মস্থলে নারীদের উপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা রুখতে সংসদে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ কিন্ত্ত ইভটিজিংয়ের ঘটনা রুখতে তা পর্যাপ্ত নয়৷ ঘটনাচক্রে দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনার আগেই এই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ওই ঘটনার পর বিশেষ করে রাস্তাঘাটে বাস-ট্যাক্সির মতো যানবাহনে নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ৷ বিভিন্ন রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল৷ বাস্তবে অবশ্য তা বেশিদূর এগোয়নি৷ এরপর কলকাতায় রাজাবাজারে দিনদুপুরে চলন্ত বাসে একদল মদ্যপ যুবকের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক ছাত্রী৷ এতদিন পরেও ওই বাসটিকে শনাক্ত করা যায়নি৷ গ্রেপ্তার হয়নি অভিযুক্তরাও৷ এমনকী বাসের কোনও যাত্রী বা কোনও প্রত্যক্ষদর্শী সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি৷ এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অতিরিক্ত সচিবের এই নির্দেশ অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল৷
পুলিশকর্তাদের একাংশ বলছেন, সরকারি-বেসরকারি যানবাহনের উপর এই কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হলে বাস-ট্যাক্সি-ট্রামে মেয়েদের উদ্দেশ করে কটূক্তি, ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির ঘটনা রোখা অনেকটা সহজ হবে৷ কারণ অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত মহিলা থানায় এসে অভিযোগ জানাতে ভয় পান৷ তবে নির্দেশ না মানলে পারমিট বাতিলের মতো পদক্ষেপ করা যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা৷ কারণ, আইনে এই সংক্রান্ত কোনও বিধান নেই৷ ওই নির্দেশিকায় বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি বসানো, পথেঘাটে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশকর্মী নামিয়ে নজরদারি বাড়ানোসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, কয়েকটি পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যেই নারীনিগ্রহের ঘটনা রুখতে আলাদা হেল্পলাইন চালু করেছে৷ কিন্ত্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভি বসানো বা মহিলা পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো এত দ্রুত অসম্ভব৷ কলকাতাতেই এই পরিকাঠামো নেই৷ রাজ্যের অন্যত্র অবস্থা আরও খারাপ৷
কী আছে নির্দেশিকায়?
বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন, মেট্রো, সিনেমা হল, শপিং মল, পার্ক, যানবাহনে সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ কর্মী মোতায়েন করতে হবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভি বসাতে হবে, যাতে কোনও ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তকে দ্রুত ধরা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রার্থনাস্থল, সিনেমা হল, বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে নিজ নিজ এলাকায় ইভটিজিং রোধে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। কোনও যানবাহনে নারীনিগ্রহের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট যানের চালক ও অন্য সদস্যদের দায়িত্ব গাড়ি নিয়ে থানায় চলে আসা। বিভিন্ন শহরে নারীনিগ্রহের ঘটনা রোধে হেল্পলাইন চালু করতে হবে.। ইভটিজিং বা ওই ধরনের ঘটনা রোধে সতর্কতামূলক নোটিস বোর্ড বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখতে হবে। পথচারী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীকেও এই ধরনের ঘটনা রোধে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।
দিল্লী গণধর্ষণ প্রসঙ্গ প্রণব পুত্রের মন্তব্যে ফের বিতর্ক
বিডিনিউজ : দিল্লীর গণধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনরতদের নিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির ছেলে পার্লামেন্ট সদস্য অভিজিৎ মুখার্জির 'লিপস্টিক মন্তব্য' নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তরুণীদের 'মেকআপ-লিপস্টিক চর্চিত নারী' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ মুখার্জি বলেন, 'গণধর্ষণের প্রতিবাদে আন্দোলন একটি নাটক। এতে অংশ নেয়া নারীরা দেখতে সুন্দর, কিন্তু তাদের দেখে শিক্ষার্থী বলে মনে হয় না আমার।' বাস্তবতার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খুব একটা সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অভিজিৎ মুখার্জির এ মন্তব্য টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার পরপরই নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। অভিজিতের বোন শর্মিষ্ঠা মুখার্জি ভাইয়ের এ মন্তব্যে 'বিস্মিত' হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে এ মন্তব্যের জন্য পরবর্তীতে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিজিৎ দাবি করেছেন, নারীদের অপমানিত করার জন্য এ মন্তব্য করেননি তিনি। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে প্রতিবাদ আন্দোলনকে ন্যায্য বলেও অভিহিত করেন তিনি। এছাড়া 'সরকার আন্দোলন দমনের চেষ্টা করছে' তিনি নিজে এমন মনে করেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, নয়াদিল্লী বা কলকাতা যেখানেই ঘটুক, এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রশাসনের দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন, যাতে এ ধরনের জঘন্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত অন্যদের কাছে একটি সতর্ক বার্তা পৌঁছায়।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুশির্দাবাদ জেলার জঙ্গিপুর উপ-নির্বাচনে অভিজিৎ মুখার্জি ভারতীয় পার্লামেন্টে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে পূর্ববর্তী জনপ্রতিনিধি অভিজিতের বাবা প্রণব মুখার্জি এ আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন।
কান্নুর: প্যারোলে থাকা ছেলে বিট্টিকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল ওড়িশার তত্কালীন পুলিশকর্তা বি বি মোহান্তির বিরুদ্ধে৷ এর জন্য ২০০৯ সালে চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে৷ জেরায় প্রতিবারই জানিয়েছেন, ছেলের কোনও খবর তিনি জানেন না৷ ধরা পড়ার পর বিট্টি মোহান্তি জানাল, তার বাবা তাকে কোনও সাহায্যই করেননি৷
তবে তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন, ফেরার থাকার সময় অন্তত তিন জন নিকট আত্মীয় নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিল বিট্টির সঙ্গে৷ সোমবার কান্নুর পৌঁছচ্ছে রাজস্থান পুলিশের একটি দল৷ তাঁরা বিট্টির ট্রানজিট রিমান্ড চাইতে পারেন৷ তবে কেরালা পুলিশ এখনও বিট্টির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে পারেনি৷ তাই তারা আদৌ ট্রানজিট রিমান্ড দিতে চাইবে কি না, তা পরিষ্কার নয়৷ শুক্রবার রাতে কেরালার কান্নুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিট্টিকে৷ তার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ ২০০৬ সালের মার্চে রাজস্থানের আলোয়ারে বছর ছাব্বিশের এক জার্মান তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে সাত বছরের জেল হয়েছিল বিট্টির৷ কয়েক মাস জেল খাটার পর অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি পায় সে৷ তার পরই ফেরার হয়ে যায় বিট্টি৷ কান্নুরের পুলিশ সুপার রাহুল আর নায়ার জানিয়েছেন, রাজস্থান পুলিশকে কান্নুরে আসার কথা বলা হয়েছে৷ সোমবার কান্নুরে রাজস্থান পুলিশের একটি দল যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জয়পুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার বিজু জর্জ জোসেফ৷ কান্নুর পুলিশ সূত্রে খবর, গত সাড়ে তিন বছরে কেরালায় রীতিমতো জাঁকিয়ে বসেছিল বিট্টি৷ জাল পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমনকি রাঘব রাজনের নামে কলেজের জাল ডিগ্রি সার্টিফিকেটও জোগাড় করে ফেলেছিল সে৷ এমবিএ করার পর স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ত্রিভাঙ্কুরে প্রবেশনারি অফিসারের চাকরি নিয়েছিল রাঘব রাজন নামে৷ মালায়ালম ভাষাটাও রন্ত করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশের ভূমিপুত্রের মতোই৷ ২০০৬ সালে ফেরার হয়ে যাওয়ার পর প্রথমে অন্ধ্রপ্রদেশের পুত্তাপার্থি যায় বিট্টি৷ অন্ধ্রে তিন বছর ছিল সে৷ তবে কিছু দিন পর পরই শহর পাল্টেছে সে৷ রাঘব রাজনের স্বরূপ জানতে পেরে রীতিমতো আঁতকে উঠেছেন এস ভি রামা রাও৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক এই ব্যক্তিই পুত্তাপার্থিতে বিট্টিকে থিতু হতে সাহায্য করেছিলেন৷ খুঁজে দিয়েছিলেন থাকার জায়গা, চাকরিও৷ গত সপ্তাহেই পুত্তাপার্থিতে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি৷ ২০০৭ সালে রাঘব রাজনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়৷ রাঘবের বাবা নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন রাজীব রাজন নামে৷ রামা রাও জানিয়েছেন, সেই সময় মানসিক ভাবে বেশ খারাপ অবস্থায় ছিল বিট্টি৷ উদ্যোগ নিয়ে একটি স্কুলে অঙ্ক এবং কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষকের চাকরি খুঁজে দিয়েছিলেন রামা রাও৷ বাড়ির কাছে জোগাড় করে দিয়েছিলেন সস্তার বাসাও৷ নম্র, অত্যন্ত মেধাবী বছর তিরিশের ওই যুবক ধর্ষণের অপরাধী, এটা মানতে পারছেন না তিনি৷-সংবাদসংস্থা
বাহরাইচ: আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ঠিক ২দিনের মাথায় এ দেশেই আরও একবার ঘটে গেল এক লজ্জাজনক ও নারকীয় ঘটনা।
বাহরাইচের রবিপুর অঞ্চলে ঘটেছে এই নারকীয় ঘটনা। কুড়ি বছরের বোনের মাথা কেটে ফেলে দাদা নানকে। বোন মাহরুনের অপরাধ, সে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ভালবেসে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেই ব্যক্তি তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। রবিবার পুলিশ সুপার বিনয় কুমার যাদব বলেন যে, মৃতার বাবা এসে পুলিশে রিপোর্ট করেন। সেই ভিত্তিতেই নানকে-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় কেস করা হয়েছে। মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠা ভারতে ধর্ষণ বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থাon Saturday, October 13, 2012 | Saturday, October 13, 2012
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে উদ্বেগজনক হারে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
গত এক মাসে এ রাজ্যে ১৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দলিত মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও তা প্রচার করা ছাড়াও ধর্ষিতাকে হত্যার মত ঘটনাও ঘটেছে।
রাজ্যের পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হোডা এ সব বিশেষ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। সমগ্র হরিয়ানায় পুলিশের টহল বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা করে বলা হয়েছে, বিপদগ্রস্ত মহিলাদের সহায়তা দেয়ার জন্য পুলিশ এক অঙ্কের টেলিফোন ব্যবস্থা বসাবে। এ সব টহল তদারকি করবেন শীর্ষ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ ছাড়া, মহিলাদের বিরুদ্ধে যে সব অপরাধ হয় তা তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হবে। অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও তদারকি করবেন এ কর্মকর্তা। এরই মধ্যে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ বিশেষ করে ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্টকে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছে হরিয়ানা রাজ্য সরকার ।
হোমের বিরুদ্ধে তদন্ত, প্রশ্ন বিস্তর
অমিত চক্রবর্তী
গুড়াপের হোমে অমানবিকতা নিয়ে ক্ষুব্ধ আদালত সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে৷ তারই মধ্যে শহরতলির দু'টি বেসরকারি হোমের বিরুদ্ধে চরম নিষ্ঠুরতার অভিযোগ উঠল৷ দু'টি হোমই দক্ষিণ শহরতলিতে৷ এক হোমে নাবালিকাকে লোহার শিকের গরম ছ্যাঁকা, ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ গুরুতর জখম অবস্থায় সে এখন ভর্তি নোদাখালির এক নার্সিং হোমে৷ আর একটি হোমে অপুষ্টিজনিত কারণে দুদিন আগেই একটি শিশু মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ৷ এমনকি হোমের আবাসিকের সংখ্যার সঙ্গে বাস্তবের গড়মিলের অভিযোগও উঠেছে৷ শনিবার দু'টি ঘটনারই তদন্তে আধিকারিকদের নিয়ে যান সমাজকল্যাণ দপ্তরের পরিষদীয় সচিব শশী পাঁজা৷ তার আগেই অবশ্য এলাকার কয়েকশো মহিলা জড়ো হয়ে জোর করে ঢুকে পরে হোমটিতে৷ কয়েক জন কর্মীকে মারধরও করা হয়৷ এর পরেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷ বিভিন্ন হোমে আবাসিক মেয়েদের উপর শারীরিক অত্যাচার, ধর্ষণের একের পর এক অভিযোগে সরগরম রাজ্য৷ গুড়াপের হোমে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হওয়া গুড়িয়ার মৃত্যুতে সরকার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল৷ কিন্ত্ত কয়েক মাস ধরে তদন্ত করলেও তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট৷ শেষে বিরক্ত আদালত রাজ্যের যে সব হোম নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, সেইসব ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয় সিবিআইকে৷ তারই মধ্যে নতুন করে হোমে নিগ্রহের অভিযোগ৷ এবার আবাসিক নিগ্রহের অভিযোগ নরেন্দ্রপুরের সংলাপ হোমে৷ আদালতের নির্দেশে এ বছর ২ জানুয়ারি নাদিয়ালের এক নাবালিকাকে পুলিশ হোমে নিয়ে আসে৷ নার্সিং হোমের বিছানায় শুয়ে সে বলে, 'দু'দিন পর থেকেই শ্রাবণী নামে হোমের এক দিদি অত্যাচার শুরু করে৷ আমাকে একা একটি ঘরে জোর করে আটকে রাখা হত৷ একদিন আমায় সে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে চায়৷ আমি রাজি না হওয়ায় গরম লোহার রড চেপে ধরে পিছনে কোমরের নীচের দিকে৷ অজ্ঞান হয়ে যাই৷ ওরাই জল দিয়ে জ্ঞান ফেরায়৷ আর একদিন ইলেকট্রিক শক দেয় আমার হাতে৷' এ দিন তদন্তে এসে সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা যে তথ্য পেয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, গুরুতর জখম অবস্থায় ওই নাবালিকাকে ১১ জানুয়ারি ভর্তি করা হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে৷ সেখান থেকে ২৯ জানুয়ারি তাকে ছুটি দিয়ে মানসিক চিকিত্সার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা৷ তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফের পরদিন তাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ ২১ ফেব্রুয়ারি সেখান থেকে ছাড়িয়ে পরিবারের লোকেরা তাকে নাদিয়ালের নাসিং হোমে ভর্তি করেন৷ এখনও সেখানেই চিকিত্সাধীন মেয়েটি৷ মেয়েটির বাবা সুখেন শেখ বলেন, 'সব মিটিয়ে নেওয়ার জন্য হোম কর্তৃপক্ষ চিকিত্সার বেশ কিছু টাকাও দেয়৷ কিন্ত্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরে আর টাকা দিতে চায়নি৷' নার্সিং হোমের চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, হাত, দেহের পিছন দিকে বেশ কয়েকটি জায়গায় আগেই অপারেশন হয়৷ দেহের বিভিন্ন জায়গায় ঘা হয়ে গিয়েছে৷ সংলাপ হোমের কর্তা ইন্দ্রাণী সিনহা অবশ্য কোনও অভিযোগই মানতে চাননি৷ তাঁর পাল্টা দাবি, মেয়েটির পরিবার কিছু টাকা চেয়েছিল৷ তা না দেওয়াতেই মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে৷ বছর চারেক আগে সোনারপুরেরই হরিহরপুর এলাকায় একটি হোমে অপুষ্টিজনিত কারণে এক কিশোরের মৃত্যু হয়৷ তখনই হোমগুলিতে নতুন করে নজরদারির কথা ওঠে৷ কিন্ত্ত তা যে কেবলই কথার কথা তার প্রমাণ মালঞ্চ এলাকার 'নিউ এজ সোসাইটি ফর অল' নামে বেসরকারি হোমটিতে৷ কয়েকদিন আাগে একটি বছর দশেকের বালককে অসুস্থ অবস্থায় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ পরদিনই তার মৃত্যু হয়৷ চিকিত্সক তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে 'গ্যাস্ট্রো-এন্টেরাইটিস'কে চিহ্নিত করেছিলেন৷ চিকিত্সকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে সময়ে পর্যাপ্ত খাবার তার পেটে না পড়াতেই তার পাকস্থলি প্রবল প্রদাহের শিকার হয়েছিল৷ আরও তিনজন কিশোর এখনও একই কারণে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন৷ এদিন সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা তদন্তে গিয়ে হোমে আরও তিনজনকে অসুস্থ বলে চিহ্নিত করেন৷ তাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন তাঁরা৷ আবাসিকদের প্রতি নজর না দিলেও হোমটি নিয়মিত কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অর্থ পাচ্ছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছেন সমাজকল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকরা৷
এই সময়: একাধিক ইস্যুতে প্রশাসনের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আগেই সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন৷ এবার নারী নিগ্রহের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে সরকারকে বিঁধলেন কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়৷ পাশাপাশি এ রাজ্যের নাগরিক সমাজের ভূমিকা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি৷ এদিন কলকাতা হাইকোর্টের শতবার্ষিকী হলে এক অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন, 'নারী নিগ্রহের ঘটনায় এ রাজ্য কখনও কখনও দিল্লিকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে৷ এখানকার নাগরিক সমাজ এখনও ঘুমিয়ে আছে দেখে আমি বিস্মিত৷ নাগরিক সমাজ জেগে না ওঠা পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে৷'
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় দিল্লি গণধর্ষণের ঘটনার প্রসঙ্গ ধরেই এ রাজ্যের অবস্থা তুলে ধরেন রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান৷ ঘটনাচক্রে শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপালের ভাষণে রাজ্যের নারী নিগ্রহের প্রসঙ্গে একটি শব্দও উল্লেখ করা হয়নি৷ এ নিয়ে সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা৷ কিন্ত্ত অশোকবাবু নারীনিগ্রহের প্রসঙ্গেই জোরদার সওয়াল করেন৷ এর আগে প্রশাসনে দলতন্ত্র নিয়ে সরাসরি রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি৷ এদিন অবশ্য তাঁর সমালোচনার অভিমুখ ছিল আলাদা৷ এদিনের আলোচনাসভায় দিল্লির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে নাগরিক সমাজ যে ভাবে রাস্তায় নেমেছিল, তাতেই প্রশাসন ও সরকার নড়েচড়ে বসেছে৷ তার জন্যই গঠিত হয়েছে ভার্মা কমিটি৷ নারী নিগ্রহ রুখতে কঠোর আইন আনার কথা ভাবতে হচ্ছে সরকারকে৷ এরপরই অশোকবাবু রাজ্যের প্রসঙ্গ তোলেন৷ তিনি বলেন, নারী নিগ্রহের ঘটনায় আমরা দিল্লির তুলনায় খুব একটা পিছিয়ে নেই৷ কখনও কখনও দিল্লিকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে রাজ্য৷ এখন নাগরিক সমাজ জেগে উঠলে তবেই এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব৷ এ প্রসঙ্গে জেসিকা লাল মামলার কথাও পাড়েন তিনি৷ তাঁর মতে, মামলাটি নিম্ন আদালতে ধামাচাপা পড়ে গেলেও নাগরিক সমাজের আন্দোলনের জেরেই পরে দোষীরা সাজা পেয়েছে৷ তাহলে এখানে নাগরিক সমাজ ঘুমিয়ে রয়েছে কেন? কেন হঠাত্ নাগরিক সমাজকে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি? অনুষ্ঠানের পরে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য থেকেই পরিষ্কার যে নারী নিগ্রহের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ সামনের সারিতেই রয়েছে৷ নাগরিকদের মান-সম্ভ্রম রক্ষা করা তো সরকারেরই দায়িত্ব৷ সেখানে সরকার যদি তার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে না পারলে নাগরিক সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে৷ রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের এহেন মন্তব্য যে সরকারকে যে যথেষ্টই অস্বস্তিতে ফেলবে, তাতে সন্দেহ নেই৷ এর আগে কার্টুন কাণ্ড থেকে বিষমদে মৃত্যু--অনেকগুলি ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে কমিশন৷ আবার অধিকাংশ সুপারিশ কার্যকর না করে সংঘাতের বার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য৷ খোদ মুখ্যমন্ত্রী নাম করে আক্রমণ করেছিলেন অশোকবাবুকে৷ বলেছিলেন, 'বাইরে থেকে এনে যাঁকে বসিয়েছি তিনিই যেন এখন কলমের আঁচড়ে সরকার চালাচ্ছেন৷' তাতেও দমেননি টু জি মামলার চাঞ্চল্যকর রায় দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি৷ এবার নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার কথা বলে তিনি কার্যত 'দলতান্ত্রিক' সরকারের ভূমিকায় অনাস্থা প্রকাশ করলেন, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞ মহলের৷
ভারতে সীমাহীন শ্রেণী বৈষম্য ও নারী নির্যাতন
| ||||||||||||||
ফারুক আহমাদ আরিফ : দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ভারতে মানুষের মাঝে শ্রেণী বৈষম্যের আকার মহামারির ন্যায়। ভারতে হিন্দুত্ববাদী উচু বর্ণ আর ব্রাক্ষ্মাণ্যবাদের কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে দলিত সম্প্রদায় তথা কথিত নীচু জাতের যথা, হরিজন, শব্দকর, তৈলী, হাজাম, দাই, ধোপা, মানতা, চন্ডাল, মুচি, ডোম, চাড়াল, ঋষি, রবিদাস, রুহি দাস, বেহারা, মেছো, কৈবর্ত, জলদাস, নিকারী ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর মানুষদের অধিকার।
এসব সম্প্রদায়ের মানুষদের বর্ণ বৈষম্যের কারণে মন্দিরে পর্যন্ত ঢুকতে মানা। মুখে ধর্মনির্পেক্ষতার কথা বললেও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে দলিত সম্পদ্রায়কে পদে পদে বাঁধার সম্মুখিন করা হয় দেশটির সর্বত্র। মানবিক, নাগরিক, সামাজিক, শিক্ষা ও রাজনৈতিকসহ সকল অধিকার থেকেই সুকৌশলে দলিত সম্প্রাদায়ের লোকদের পিছনে রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদী সমাজপতিদের আগ্রাসনের কারণে অনেকেই নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ভারতের বাঙালুর আইন বিদ্যালয় "অস্পৃশ্যতার উপর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইনের প্রভাব" নিয়ে দেশের ৬টি রাজ্যের ২৪টি জেলায়, দলিত সম্প্রদায়ের ৬৪৮ জন মানুষকে নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গবেষকরা এর ফলাফল প্রদানে বলেন ৬৪৮ জন দলিত মানুষকে প্রশ্ন করে জানা যায় যে, ৫১৬ জন বলেন, তাদেরকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়না।
১৫১ জন ব্যক্তি বলেন, তাদেরকে দেবতার মূর্তি নিয়ে শুভাযাত্রা বের করতে দেওয়া হয়না। ৫৮১ জন মতামত দেন সামাজিক বা বিবাহ অনুষ্ঠানে ঢোল-তবলাসহ নানা জাতের কোন বাজনা-বাজাতে দেওয়াহয়না, হিন্দুধর্মের উ"ু বর্ণের লোকেরা। গ্রামের ৭ শতাংশ লোকের অভিযোগ হচ্ছে তাদেরকে গ্রামের সদর রাস্তা দিয়ে হাঁটতে-চলতে প্রভাবশালী উ"ু বর্ণের লোকদের জন্য মাথানত করে 'নৈব চ, নৈব চ' বলে চলতে হয়। ওদের জন্য রাস্তা ছেড়ে দিতে হয়। ৯ শতাংশ জানিছেন তাদের সবসময় হাতজোড় করে কথা বলতে হয়। ১৮ শতাংশ অভিমত দেন যে, তাদেরকে এখনো উচু বর্ণের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না। তবে একটি বড় অংশের দলিতদের কথা হচ্ছে তারা নিজের বাড়িতে অন্যদের ঢুকতে দেন। দলিত মহিলাদের উচু বর্ণের লোকদের বাড়ির কাজে লাগানো হয়, কিন্তু ভেতর বাড়িতে তাদের প্রবেশে বাঁধা রয়েছে। তাদের শিশুদের স্কুলে যেতে দেওয়া হয় কিন্তু পিছনের বেঞ্চে বসতে বাধ্য করা হয়। টিফিনের সময়ে তাদের জন্য আলাদা খাবার ব্যবস্থা করা হয়। ৪০ শতাংশ লোকের দাবি তাদের গ্রামে কোন দলিত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় না। এ ধরনের কাজ না করলে তাদেরকে সামাজিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে প্রতিনিয়ত।
অদলিতদের ১৬ শতাংশ লোক দলিত সম্প্রদায়ের এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এবং ১৩ শতাংশ লোক মতামত প্রদানে বিরত থাকে। গবেষকরা বলেন, আমরা শুধু বাঙালাতেই এমন ৩৪ টি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি।
ভারতের ২০০১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী দেশে ১৬ কোটি দলিত সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। অবশ্য গত দশ বছরে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। তবে ২০১১ সালের দু'দফায় ভারতে আদমশুমারীর হিসাবে দলিতদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
১৯৯৮ সালের একটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছিল যে, ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের উপর ২৫ হাজার ৬ শ ১৭টি হামলা-সংঘর্ষ হয়েছিল। তন্মেধ্যে শুধু গুজরাটেই ৮ হাজার ৮শ ৯৪টি। অসহায় ১৮শ নারীকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল উচু বর্ণের আক্রোশে। গুজরাটের ২৬ টি জেলার ১০টি বিশেষ আদালত দলিত সম্পদ্রায়ের জন্য কোন কাজ করে না। সেখানে গেলে দলিত সম্প্রদায়ের লোকদের কোন মামলা-মোকাদ্দমা গ্রহণ করা হয় না।
এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা ১৬৬ মিলিয়ন। নেপালে ৪ দশমিক ৫মিলিয়ন, পাকিস্তানে ২ দশমিক শূন্য মিলিয়ন, বাংলাদেশের সংখ্যা প্রায় ৫ মিলিয়ন। ধর্মের দিক থেকে বৌদ্ধ ৮৯ দশমিক ৫০ শতাংশ, খ্রিষ্টান ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, শিখ ৩০ দশমিক ৭০শতাংশ, হিন্দু ২২ দশমিক ২০ শতাংশ, ইসলাম শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ।
জাতীয় তথ্য কমিশনার ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের অনেক দেশেই শ্রেণী বৈষম্য বিদ্যমান। অনুন্নত দেশগুলোতে এটির প্রভাব বেশি, তবে দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে ভারতে বর্ণ ও শ্রেণী বৈষম্য অত্যধিক।
দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রেণী বৈষম্য ৭টি গ্র"পে বিভক্ত রয়েছে। ভারতে শুধু ভিন্ন ধর্মালম্বীদের ক্ষেত্রে নয় বরং হিন্দু ধর্মের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তথা হরিজন, মুচি, তেলেগু, ডোম প্রভৃতির লোকদেরকে মানুষ হিসেবেই মূল্যায়নে আপত্তি করে থাকে। যদিও তাদের সংবিধান ও আইনে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা আছে। সেখানে বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী দেশে প্রায় ৫৫ লক্ষ লোক রয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের। ২০১১ সালে 'হিন্দুস্তান টাইমস' ও নারীবিষয়ক সংগঠন 'অক্ষরে'র যৌথভাবে একটি সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয় নারীদের উপর যৌন হয়রানীর বিষয়ে। সমীক্ষার তথ্য কর্মকর্তা এলিসা জেঙ্ক সমীক্ষাটির প্রতিবেদন প্রকাশকালে জানিয়েছেন যে, ভারতের মুম্বাইয়ের প্রায় ৯৯ শতাংশ নারী নগরীর রাস্তাগুলোকে তারা নিরাপদ মনে করেন না। আর ৯৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তারা সেখানে প্রতিদিন যৌন হয়রানির শিকার হন এবং হচ্ছেন।
এলিসা জেঙ্ক আরো বলেন, সমীক্ষাটি পরিচালনার সময় আমাদের মনে হয়েছিল যে যৌন হয়রানির হার হয়তো বেশিই হবে, কিন্তু তা এমন ভয়াবহ হবে তা আমরা কল্পনাও করিনি। অথচ ভারতের মুম্বাই নগরী নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ বলে যে ধারণা ছিল, এই সমীক্ষায় সেটার অবসান ঘটল।
সমীক্ষায় নারীরা আরো জানায়, ভারতের বাণিজ্যিক নগরী মুম্বাইয়ের রাস্তাগুলোতে যৌন হয়রানি তাদের উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ। তাদের ৯৫ শতাংশ জানিয়েছেন, মুম্বাইয়ের রাস্তায় তারা কোনো না কোনো ধরনের যৌন হয়রানি বা আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং হচ্ছেন। যেমন-অশ্লীল মন্তব্য, স্পর্শ বা সহিংস আক্রমণের মতো পরিস্থিতিতেও তারা পড়েছেন। তবে তারা বিষয়গুলো প্রকাশ না করে বরং চাপা দিতে চান।
সমীক্ষায় ৬৮ শতাংশ নারী এও জানিয়েছেন যে, আক্রান্ত হলেও তাদের কিছুই করার থাকে না। মাত্র ১৫ শতাংশ নারী পুলিশের সাহায্য চান এবং মাত্র ৪ শতাংশ অভিযোগ দাখিল করেন। নারীদের জন্য পুলিশের ১০৩ টি হেল্পলাইন মহারাষ্ট্রে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলেও মাত্র ৭ শতাংশ নারী এর সাহায্য নেন। পুলিশের ওপর আস্থা না থাকাতেই নারীরা ওই পথ মাড়ান না বলে তারা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
টাইমস ওয়ার্ল্ড২৪,কম/আনোয়ার/৮আগস্ট
দলিত মহিলারা আজও হিংসার সহজ শিকারঅমিত দাস
ভারতীয় সংবিধান নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের কথা বললেও তথ্য ও গবেষণা বলছে অন্য কথা। স্বাধীনতার পরেও সমাজে নারীদের, বিশেষত দলিত মহিলাদের অবস্থা খুব বেশি বদলায়নি। পুরুষতান্ত্রিক জাতপাত নির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় দলিত মহিলারা শোষণ, বঞ্চনা ও অত্যাচারের শিকার হয়ে পড়ছেন।
দলিত মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে একটি সমীক্ষা করে গুজরাটের একটি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যে তথ্য উঠে এসেছে তা নাগরিক বিবেককে চমকে দেবার জন্য যথেষ্ট। তথ্য জানার অধিকার আইনে মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং তামিলনাডু থেকে ২০০৪-র ডিসেম্বর থেকে ২০০৯-র নভেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান ও তথ্য অনুসারে জানা যায় তিনটি রাজ্যে উচ্চবর্ণের লোকেরা যে হিংসা ছড়িয়েছে তার মধ্যে কেবল ০.৭৯ শতাংশ (তিনটি মামলা) অভিযোগের ক্ষেত্রে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গুজরাটে আদৌ কোনো দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়নি। এমনকি জাতপাতের চরম নিষ্ঠুরতম একটি মামলা বিচারের জন্য আদালতে আসার পর বিচারকের প্রথম প্রশ্ন ছিল — ''আপনি কী আপস করতে চান?'' এই তথ্য ঐ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। জাতপাত সংক্রান্ত অপরাধে প্রথাগত ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী দলিত মহিলারাই। তাঁরা দুই ধরনের বৈষম্যের শিকার। উচ্চবর্ণের লোকেরা তাঁদের বাড়ির বাইরে নির্যাতন করে আর নিজের ঘরে তাঁরা লিঙ্গভিত্তিক হিংসার শিকার হন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের কমিশনের কাছে মহিলাদের অবস্থা প্রসঙ্গে দাখিল করা একটি প্রতিবেদনে ঐ সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভারতীয় সমাজে দলিত মহিলাদের হিংসার সহজ শিকার বলে মনে করা হয়। কেন না ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা অপরাধ নিবৃত্তকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না এবং দলিত মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হিংসামূলক অপরাধকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয় না। ঐ সংগঠনের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০০৪-র ডিসেম্বর থেকে ২০০৯-র নভেম্বর পর্যন্ত তিনটি রাজ্যে অদলিত ব্যক্তিরা দলিত মহিলাদের উপর যে হিংসাত্মক কার্যকলাপ করেছে তার নথিভুক্ত ৩৭৯টি ঘটনার কথা জানা গেছে। এর মধ্যে ২০১১-র প্রথম দিকে প্রাপ্ত তথ্যটির বিশ্লেষণের পর মাত্র ১০১টি ঘটনার (২৬.৬ শতাংশ) ফলাফল জানা গেছে। তিনটি রাজ্যে অদলিতরা পাঁচজন দলিত মহিলাকে হত্যা করে (৩টি তামিলনাডু, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে ১টি করে)। ধর্ষণ ও দল বেঁধে ধর্ষণের ৭৬টি ঘটনা (গুজরাটে ২০টি, মহারাষ্ট্রে ৩৫টি, তামিলনাডুতে ২১টি) ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অপরদিকে নিজ সম্প্রদায়ের লোকেদের হাতে (পরিবার সমেত) দলিত মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় তিনটি রাজ্যে ১৫জন দলিত মহিলা খুন হন (৮জন তামিলনাডু, ৪ জন গুজরাট, ৩ জন মহারাষ্ট্রে), ধর্ষণ ও পরপর ধর্ষণের ৩৭টি ঘটনা ঘটে (১৯টি তামিলনাডু, ১২টি গুজরাটে, ৬টি মহারাষ্ট্রে)। মোট ১১৭টি মামলা (৩০.৯ শতাংশ) আদালতে নিষ্পত্তির জন্য আটকে আছে এবং ১৬১টি মামলার (৪২.৫ শতাংশ) অবস্থান অজানা রয়ে গেছে। যে সমস্ত মামলার ব্যাপারে কোনো তথ্য জানা যায়নি, সেগুলির কোনো মীমাংসাই হয়নি বলে সমীক্ষায় জানা গেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষ কার্যবিবরণী যেখানে মহিলাদের উপর হিংসার উল্লেখ রয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ''দলিত মহিলারা খুন এবং ধর্ষণের মতো হিংসার লক্ষ্য হয়ে উঠছে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে এবং ক্ষমতাসীন উচ্চবর্ণ ব্যক্তিদের কাছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শিক্ষা এবং তাদের অসম্মতিকে থেঁতলে বা গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে শিকার হয়ে পড়ছে।'' ঐ সংগঠনটিও এই বিষয়ে বিশেষ আলোকপাত করেছে। সম্প্রতি মুম্বাইয়ে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল সায়েন্সে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনাসভায় আন্দোলনকারী এবং শিক্ষাবিদরা তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, তফসিলী জাতি এবং আদিবাসী আইনে (হিংসা প্রতিরোধ) রাজ্যের জটিলতা একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। ঐ সংগঠনের পক্ষে মঞ্জুলা প্রদীপ বলেন, ''আইনটির বয়স ২০ বছর হয়ে গেছে, তবু আইনজ্ঞরাও পর্যন্ত এ সম্বন্ধে কিছু জানেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমেও ব্যাপারটি নেই।'' বিষয়টি থেকে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা আইনটি লাগু করার ক্ষেত্রে প্রায় নেই বললেই চলে। ফলস্বরূপ দলিতরা অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে এবং অস্পৃশ্যতার তকমা এড়াতে শহরমুখী হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি জাতপাতমূলক হিংসা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে সরকার, পুলিস এবং বিচার ব্যবস্থাকে সাংঘাতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলের দলিত আন্দোলন কর্মী একনাথ অবধ অবশ্য এর জন্য দুর্বল রাজনৈতিক সদিচ্ছাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ''আন্দোলনকারীরা এবং সাধারণ মানুষ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, কিন্তু তাঁরা রাজনীতির সাথে লড়তে পারে না।'' মহারাষ্ট্র সরকারের 'নিখুঁত গ্রাম'-র পরিকল্পনা এক্ষেত্রে উল্লেখের দাবি রাখে। জাতপাত এবং অন্যান্য অপরাধ থেকে রেহাই দেওয়ার ও বোঝাপড়ার ব্যাপারে একটি কর্মসূচী তৈরি করা হয়েছে। শ্রী অবধ বলেন, ''এটি জুলুমবাজির লাইসেন্স। দলিতদের বিরুদ্ধে সমস্তরকম প্রতিবন্ধকতাকে একত্রিত করা হয়েছে। পুলিস কোনো ঘটনা নথিভুক্ত করবে না অথবা অযথা বিলম্ব করবে; যদি তাঁরা নথিভুক্ত করেনও তবে বিভ্রান্তিমূলক তদন্ত চালাবে। সেক্ষেত্রে কোনো সাক্ষীই পাওয়া যাবে না। ১৯৯৫-র পর থেকে নথিভুক্ত করার হার ক্রমশ কম। ২০০০ সালের পর তা বন্ধই হয়ে যায়।'' একদিকে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে বাস করার গর্ব অনুভব করি, অন্যদিকে গ্রামীণ ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের উপর ক্রমবর্ধমান শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্য। অথচ বৈদ্যুতিন মিডিয়ায় 'রাম রাজত্বের' ঢক্কানিনাদ, কোনটি প্রকৃত ভারতের চিত্র — তা বিচার করার ভার রইলো নাগরিক মনন ও বিবেকের হাতে। এই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে কিভাবে শক্তিশালী জনগণতন্ত্র গড়ে উঠবে তা নিয়ে প্রত্যেক ভারতবাসীর ভাবার সময় এসেছে। জেন্ডার সমতা ইস্যু ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে: অমর্ত্য সেনপুলিশ মামলা না নেয়ায় ভারতে ধর্ষিতার আত্মহত্যা
ডেস্ক রিপোর্ট
দিওয়ালী অনুষ্ঠানে দুই দুর্বৃত্ত কর্তৃক ধর্ষিত হওয়ার পর থানায় মামলা করতে গিয়েছিল ভারতের পাতিয়ালায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী। পাঁচ মাস ধরে চেষ্টা করলেও থানা তার মামলা নেয়নি। উপরন্তু পুলিশ তাকে আরও যৌন হয়রানি করে। অগত্যা হতভাগ্য ওই কিশোরী গত শুক্রবার আত্মহত্যা করে। সুইসাইডাল নোটে সে নিজেই এ কথা লিখে গেছে।
মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি এমন একসময় ঘটে যখন চলন্ত বাসে এক মেডিকেল ছাত্রীকে ছয় নরপশুর ধর্ষণ করার ঘটনায় দিল্লিতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের মসনদ কেঁপে উঠেছে। তবে 'সভ্য' ভারতে এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রতিদিনই দেশটিতে এ ধরনের বহু বেদনাদায়ক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে সেগুলো লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়। 'ভারতকন্যা'-খ্যাত ওই মেডিকেল ছাত্রীর (প্রকৃত নাম প্রকাশ করা হয়নি) ধর্ষণের ঘটনায় ভারতজুড়ে যখন তীব্র প্রতিবাদ হচ্ছে, সেই সময়ে ২৭ ডিসেম্বর, ঠিক একই ধরনের আরও একটি ঘটনা ঘটে। উত্তর প্রদেশ থেকে ৪২ বছর বয়সী এক মহিলাকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে তিন দুর্বৃত্ত ধর্ষণ করে দিল্লিতে ফেলে রেখে যায়। এর আগে ১৯ ডিসেম্বর কর্ণাটকে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েশিশুকে অপহরণের পর ধর্ষণ করেছে বিবাহিত নরপশুরা। ঘটনাটি গতকাল প্রকাশ পায়। চলতি মাসের শুরুতে ভারতের হাসান জেলায় ১০ দুর্বৃত্ত ১৭ বছর বয়সী এক দলিত কিশোরীকে ১০ দিন ধরে ধর্ষণ করে। দস্যুরানী ফুলন দেবীকে নিয়ে নির্মিত 'ব্যান্ডিট কুইন' সিনেমার মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে রোমহর্ষক ধর্ষণের ঘটনা বেশ আলোচনায় এলেও সেখানে এ ধরনের বর্বর ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভারতে ২০১১ সালে অন্তত ২৪ হাজার ২০৯ জনকে এভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। ২০১১ সালে ভারতে এক লাখ নারীর মধ্যে ১৮.৯ জন ধর্ষিত হয়েছে। সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও উইকিপিডিয়া
সোমবার, দ্বাদশ শেণির এই ছাত্রী সন্ধে সাড়ে ৮টা নাগাদ গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমের কাছে অটোয় ওঠেন ওই তরুণী। অভিযোগ, এর পরেই তরুণীর মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে তিন যুবক। তাঁকে মারধরও করা হয়। এর পর তাঁর মোবাইল ফোন, টাকা পয়সা লুঠ করে ন্যাশানাল হাইওয়েতে তরুণীকে ফেলে রেখে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
অভিযুক্তদের সকলেরই বয়স ২০ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। এখনও পর্যন্ত অঙ্কিত আর দাব্বান নামের দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। সার্কেল অফিসার রণবিজয় সিং জানিয়েছেন ধৃতরা ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করেছে। তৃতীয় অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
কটূক্তির প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হলেন এক দম্পতি। ঘটনাটি হাওড়ার বালির। গুরুতর জখম অবস্থায় মহিলার স্বামীকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। ওই মহিলাকে মারধরের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
হাওড়ার বালির পঞ্চাননতলায় নতুন ফ্ল্যাটে বসবাস শুরুর পর থেকেই শান্তিতে ছিলেন না দম্পতি। আবাসনের এক যুবক বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই মহিলাকে উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। শনিবার কটূক্তির প্রতিবাদ করায় মহিলাকে মারধর শুরু করে ওই যুবক। অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে মহিলার স্বামীকেও মারধর করে ভাঙা কাঁচের টুকরো নিয়ে তাঁর ওপর চড়াও হয়। কাঁচের টুকরোয় হাতের শিরা কেটে যায় মহিলার স্বামীর। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। বালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। শনিবার রাতেই ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিস।
কলকাতা: মহিলারা এরাজ্যে কত নিরাপদ, সরকার তাঁদের জন্য কত কী করেছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে গ্রামে তা প্রচারের জন্য দলের মহিলা কর্মীদের শিক্ষিত করতে 'মধুর ভুবন' নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ অথচ তৃণমূলের সেই দাবির মূলে আঘাত করে রাজ্য সরকারকে ফের একবার অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি বলেছেন, নারী নির্যাতনের ঘটনায় দিল্লির থেকে পিছিয়ে নেই এরাজ্য৷ হয়তো বা এগিয়ে৷ অথচ ঘুমোচ্ছে নাগরিক সমাজ! সরকার এবং সচেতন বাঙালিকে একইসঙ্গে অস্বস্তিতে ফেলে তাঁর আহ্বান, সচেতনতা তৈরি করতে দিল্লির মতোই পথে নামুক পশ্চিমবঙ্গ৷ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে রাজ্য লিগাল এইড সার্ভিস এবং কলকাতা হাইকোর্ট লিগাল এইড সার্ভিসের যৌথ উদ্যোগে হাইকোর্টের সার্ধশতবার্ষিকী ভবনে শনিবার এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়৷ সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন৷ দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের পর রাজধানীর নাগরিক আন্দোলনের পক্ষে সওয়াল করে সুপ্রিম কোর্টের এই প্রাক্তন বিচারপতি দাবি করেছেন, নারী নির্যাতনবিরোধী সচেতনতা তৈরিতে এধরনের গণ আন্দোলনের ভূমিকা বিশাল৷ আর এপ্রসঙ্গেই ক্ষোভের সুরে তিনি বলেছেন, এরাজ্যে নারী নির্যাতন বাড়লেও, নাগরিক সমাজ ঘুমোচ্ছে!
নাগরিক আন্দোলনের কথা বলতে গিয়ে তিনি জেসিকা লাল হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন৷ মনে করিয়ে দেন, জেসিকা লাল হত্যারও সুবিচার হত না যদি মানুষ রাস্তায় না নামতেন৷ তাঁর দাবি, কঠোর আইন নয়, নারীর সমান অধিকার সম্পর্কে নাগরিক সচেতনতাই বন্ধ করতে পারে নারী নির্যাতন৷ এমনকী, অনেক ক্ষেত্রে বিচারকদেরও সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের পর বলতে উঠে দেশের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরও পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তনের ওপর জোর দেন৷ প্রশ্ন তোলেন মধ্য রাতে কলকাতার রাস্তায় একজন মহিলা নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরতে পারবেন না কেন? দুই বিচারপতি একটি বিষয়ে একমত, যে শুধু কঠোর আইন প্রণয়নে নারী নির্যাতন বন্ধ করা যাবে না৷ অর্ধেক আকাশের বিবর্ণ ছবিটা বদলাতে পারে একমাত্র সামাজিক সচেতনতা৷
রাজস্থানের আলোয়ারে এক জার্মান যুবতীকে ধর্ষণের অপরাধে সাত বছরের জেল হয় কিন্তু ২০০৬ সালে জামিন পেয়ে শর্ত ভেঙে পালিয়ে যান, এমনকী নাম ভাঁড়িয়ে গত তিন বছর ধরে কান্নুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসার হিসাবে চাকরিও করছিলেন কিন্তু শেষরক্ষা হল না সহকর্মীদের কাছে ধরা পড়ে গেলেন বিট্টি মোহান্তি! ওড়িশা পুলিশের প্রাক্তন ডিজিপি বি বি মোহান্তির পুত্র বিট্টিকে শনিবার কেরল পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাঁকে আজই প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হলে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
জানা গিয়েছে, জামিন পেয়ে পালানোর পর আসল পরিচয় গোপন করে এমবিএ ডিগ্রি পান বিট্টি তারপর কেরলের ওই ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসারের চাকরিও জোগাড় করেন নিজের পরিচয় দেন অন্ধ্রপ্রদেশের ছেলে, রাজা রাঘব' নামে এমনকী মালয়ালম ভাষাও রপ্ত করে ফেলেন এভাবে ভালই চলছিল কিন্তু তাঁর আসল চেহারা বেরিয়ে পড়ল দিল্লি গণধর্ষণের পর বিভিন্ন চ্যানেল, ইন্টারনেটে বিভিন্ন যৌন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত, দোষীদের ছবি সম্প্রচারিত হওয়ার পর ওই দোষীদের ছবির ভিড়ে জ্বলজ্বল করছে বিট্টির মুখ! সহকর্মীদের চিনতে অসুবিধা হয়নি তাঁকে পুলিশকে খবর দেন তাঁরা গত সপ্তাহে বিট্টিকে তাঁর স্থানীয় আবাস থেকে ধরা হয় জেরার মুখে অপরাধ কবুল করেন তিনি রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁর পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হয় কেরল পুলিশ বিট্টির বিরুদ্ধে জালিয়াতি, পরিচয় গোপন করা, প্রতারণার অভিযোগে স্থানীয় থানায় মামলা করা হয়েছে
নয়াদিল্লি: ফের দিল্লিতে গনধর্ষণের অভিযোগ। গত ২৪ ঘন্টায় জাতীয় রাজধানীতে দুটি গনধর্ষণের ঘটনা ঘটল। দুটি ক্ষেত্রেই ধর্ষণের পর নির্যাতিতাদের নির্জন জায়গায় ফেলে দেয় দুষ্কৃতিরা।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে পূর্ব দিল্লির ওয়েলকাম এলাকায়। সেখানে এক ২৫ বছরের মহিলাকে একটি চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ করে ৪ দুষ্কৃতি।মঙ্গলবার সকালে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ভ্যান পূর্ব দিল্লির নয়া জাফরাবাদ এলাকার একটি ডাস্টবিনের কাছে অচৈতন্য অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে। তাঁকে গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্যাতিতা ওই মহিলার শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে বসন্তকুঞ্জ এলাকায়। মঙ্গলবার ২২ বছরের এক ক্লাব ড্যান্সারকে ধর্ষণ করে তিন জন। ওই তরুণীর দাবি, দুষ্কৃতিরা তাঁকে কুসুমপুর পাহাড়ির একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওই তিনজন ধর্ষণ করে।পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণী বসন্ত বিহারের একটি নাইট ক্লাবে কাজ করেন। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ক্লাবের বাইরে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় দুজনের। তারাই ওই তরুণীকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এরইমধ্যে গাজিয়াবাদেও দিল্লির এক ১৯ বছরের তরুণীকে অটোর মধ্যে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২ মার্চ তিন জনের সঙ্গে ওই তরুণী শেয়ারের অটোতে করে যাচ্ছিলেন। তরুণীর দাবি, হঠাত্ই পথ পরিবর্তন করে অটোটি দাসনার দিকে যেতে শুরু করে। এরপর তাকে দাসনার এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে দুষ্কৃতিরা।তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২২ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণ ও পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে মহিলাদের নিরাপত্তা ও দোষীদের কঠোর সাজার দাবিতে উত্তাল হয়েছিল দিল্লি সহ সারা দেশই। কিন্তু পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রচার স্বত্বেও একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। চলতি বছরে দিল্লিতে দৈনিক গড়ে প্রায় চারটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীতে ১৮১ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম রামচন্দ্রন রাজ্যসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে বুধবার এই তথ্য জানিয়েছেন।
চন্ডীগড়: যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ জানাতে গিয়েও লাঞ্ছনাই জুটল কপালে।বাবাকে নিয়ে তরনতারনে পুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন এক মহিলা। কিন্তু তাঁর কথা শোনা তো দূরের কথা, উল্টে তাঁকেই প্রকাশ্যে চড় মারে, মারধর করে দুজন পুলিশকর্মী। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শোরগোল, বিতর্কের ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। মহিলার অভিযোগ, গতকাল একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে এক ট্রাকচালক তাঁর শ্লীলতাহানি করে৷ এরপর তিনি বাড়ির লোকেদের ডাকেন৷ ট্রাক চালকদের সঙ্গে শুরু হয় বাদানুবাদ৷ ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের অভিযোগ জানাতে গেলে উল্টে ট্রাক চালকদের সঙ্গে মিলে তাঁর উপরেই চড়াও হন দুই পুলিশ কর্মী৷ তাঁর বাবাকেও মারধর করা হয়৷ ওই মহিলার দাবি, শেষমেশ সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান তাঁরা৷
পঞ্জাব পুলিশের এই ভূমিকার নিন্দায় সরব হয় সব মহল৷ এরপরই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল৷ কোন পরিস্থিতিতে কেন এই ঘটনা ঘটেছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে তরনতারণ জেলার ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে পুলিশ। যত ক্ষমতাশালীই হোক, অপরাধীরা রেহাই পাবে না বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।গতকালই অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মী দেবিন্দর সিংহ ও সরজ সিংহকে সাসপেন্ড করে তাদের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে তবে তাদের বরখাস্ত করার দাবিতে অনড় অভিযোগকারিণী ও তার পরিজনরা৷ এদিকে, তরনতারনের ঘটনার আঁচ এদিন পড়েছে সংসদেও৷ পঞ্জাব সরকারের সমালোচনায় মুখর হন কংগ্রেস সাংসদেরা৷ শেষ পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন৷ পঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন৷ তরনতারণের পুলিশ সুপার কানওয়ালজিত অবশ্য এর আগে দাবি করেন, মহিলার বাবা মত্ত অবস্থায় অভিযোগ জানাতে এসে পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন৷ তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কিন্তু ওই মহিলা পুলিশকে বাধা দেওয়ায় ধস্তাধস্তির জেরে মাথার পাগড়ি খুলে যায় দুই পুলিশকর্মীর ক্ষিপ্ত হয়ে তারা মারধর করে তাঁকে৷ অন্যদিকে মহিলার দাবি অনুযায়ী, অভিযুক্ত ট্রাক চালকদের বিরুদ্ধে কেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা কোনও ব্যবস্থা নিলেন না, উল্টে মহিলা এবং তার পরিজনকেই কেন মারধর করা হল, সেবিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেনি পঞ্জাব পুলিশ৷
ভারতে এত ধর্ষণ কেন?০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:১০ |যে পচন বহুদিনের
|
http://www.mid-day.com
http://www.slate.com
"জাগো বাহে কোনঠে সবাই" -
আরও বলি –
"ধর্ষিতা বাংলাদেশ দেখিতে চাহিনা আমরা আর" – এ আজ আমাদের সবার আওয়াজ।।
Tell them not to rape!!! "
তবুও … মে দেরও শালীন পোশাক পরা উচিত…
ছেলেদেরও দৃষ্টি সংযত করতে হবে…।
সবার উচিত যাতে আমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না হয় তার জন্য নিজেকে সংযত করা…।।
মে দের উচিত সংযত হয়ে পোশাক পরা, আর ছেলেদের উচিত নিজের মনুশত্তের জাগ্রত কোঁড়া…।
ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি চাওয়ার চেয়েও বড় কথা তারা যেন আইনের ফাক দিয়ে বেরিয়ে না যায়।
কারণ আমাদের দেশে ধর্ষণএর যে আইনি প্রসেস তাতে পদে পদে ধর্ষিতার অপমান হতে হয় অনেক সময়তো ধর্ষণকারীকে বিয়ে করতে বাধ্য করে সমাজ।
তাই সকল আইনি বাধা দূর করে সঠিক বিচার যেন হয় সে দিকে সবার মন দেয়া উচিত।
আর সকল মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ তারা কেস বাই কেস ফলোআপ করবেন।
ধর্ষণ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিৎ, তার সাথে নারীকে দেওয়া সামাজিক সকল অপবাদেরও অবসান হওয়া উচিৎ ।
এই অপরাধ এর পিছনে সবচেয়ে বড়ো যে কারন, তা হলো শিক্ষার অভাব।
আমি একজন বাংলাদেশি মহিলাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ২টি বাপার -
১। ছেলেদের।
২। মেয়েটির।
অথচ, ২ বারই ছেলেগুলো বদমাইশ ছিলো…তাদের শিক্ষা-চিন্তাধারা ছিলো নিচুমানের…
ধষর্কদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আপনার প্রতিটি মতামতের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আমি সহমত পোষণ করছি। এমন কঠোর আইন আর এই আইনের কার্যকারিতাই হয়েতা এই নির্মম অণ্যায় এতটুকু হলেও কমাতে পারবে।
ধর্ষণ ১২৯৭১
২০০৯ সালে ২ হাজার ৯৭৭ জন
২০১১ সালে ৩ হাজার ২৪৩ জন
২০১১ সালে ৩ হাজার ৩৪৪ জন
২০১২ সালে ৩ হাজার ৪০৭ জন (১১ মাসে)
সর্বমোট ধর্ষণ- ১২৯৭১ জন (৩ বছর ১১ মাসে)
২০০৯ সালে ১২ হাজার ৯০৬টি
২০১০ সালে ১৬ হাজার ২১২টি
২০১১ সালে ২০ হাজার ৬৬ জন,
২০১২ সালে ১৮ হাজার ৪৫টি (১১ মাসে)
সর্বমোট নারী নির্যাতন – ৬৭২২৯ জন (৩ বছর ১১ মাসে) Your text to link…
শুভেচ্ছা।
মানবতার প্রতি সকলের মমত্ববোধ থেকে এটা আশা করা যায় যে, ধর্ষন সহ সকল অপরাধমূলক কার্যকলাপ, অচিরে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এখনই সকলের সচেতন হওয়া জরুরী।
ভাল থাকবেন।
এই মুহূর্তে ঘরে এস। এসে শুনি সাভারের ঘটনাটা। মামনি বললো, প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া বন্ধ। ঘুরাফেরা বন্ধ। আমি বললাম, কিন্তু কেন? আম্মু বললো, যুগ খারাপ। আমার বান্ধবীরও অবস্থা একই। এখন আমাদের কি করা উচিৎ? যুগ খারাপ তাই লুকিয়ে থাকবো? নাকি যারা যুগটাকে খারাপ করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে একটি নিরাপদ সমাজ গড়বো?
১) South Africa: প্রতি ১০ লক্ষনারীতে ১১৯৫ জন ধর্ষিত হয়।
২) Australia: প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৭৭৭ জন ধর্ষিত হয়।
৩) Canada : প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৭৩৩ জন নারী ধর্ষিত হয়।
৪) Zimbabwe: প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৪৫৭ জন নারী ধর্ষিত হয়।
৫) U.S.A: প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৩০১ জন নারী ধর্ষিত হয়।
১) Saudi Arabia: শেষের দিক থেকে ১ নম্বর। এখানে প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ২ জন ধর্ষিত হয়।
২) Azerbaijan: শেষের দিক থেকে ২ নম্বর। প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৩ জন ধর্ষিত হয়।
৩) Yemen: শেষের দিক থেকে ৩ নম্বর। প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৪ জন ধর্ষিত হয়।
৪) Indonesia : এখানে প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ৫ জন ধর্ষিত হয়।
৫) Oman: এখানে প্রতি ১০ লক্ষ নারীতে ১৮ জন ধর্ষিত হয়।
কারো খারাপ লাগলে কিছু করার নাই।
কেউ এখনি গর্জে উঠবে না। কারন এখনো গর্জে উঠার লেভেলের কেউ ধর্ষিত হয়নি।
ভারতে ওই লেভেলের কেউ ধর্ষিত হয়েছিল নির্মম ভাবে।
যেদিন দেখবেন ওই রকম নির্মম ভাবে সেই লেভেলের কেউ ধর্ষিত হয়েছে সেদিন গর্জে উঠবে সবাই।
সেই অপেক্ষায় রইলাম………………আমার বাংলাদেশ।
Your text to link…
শিক্ষা টা ও একটা বিষয়, শিক্ষিত মানুষ এ কাজ করেছে এটা আমি শুনিনি ।
এটা অশিক্ষিত লোকদের কাজ। ফল বিক্রেতা, ড্রাইভার, বখাটে এসব ই বেশি ।
ধর্ষক দের গলাকাটা বেশি অমানবিক হয়ে যায়,
কাটা যায় তবে গলা না……।