Sunday, March 30, 2014

ইন্টারভিউয়ের ১৪ বছর পর চাকরি হল ২৭ জনের

ইন্টারভিউয়ের ১৪ বছর পর চাকরি হল ২৭ জনের

ই সময়: ইন্টারভিউ দেওয়ার পর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১৪ বছর৷ দীর্ঘ দিন ধরে আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি পেতে চলেছেন হুগলি জেলার ২৭ জন৷ শুক্রবার সরকারি কৌঁসুলিকে চরম ভত্‍র্‌সনা করে বিচারপতি প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই ২৭ জনকে আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে চাকরিতে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে৷ আদালতের নির্দেশ মানা হয়েছে কি না, তা পরের দিন আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাতে হবে৷ 

মামলাকারী সুমন চট্টোপাধ্যায়-সহ ২৭ জনের তরফে আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০০০ সালে হুগলি জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা দেন তাঁরা৷ কিন্ত্ত তাঁদের পরীক্ষার ফল জানানো হয়নি৷ দীর্ঘ ন' বছর অপেক্ষার পর ২০০৯ সালে একটি সূত্র থেকে তাঁরা জানতে পারেন, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ওই পদে নিয়োগের জন্য ৭৭ জনের একটি প্যানেল তৈরি করেছে৷ তাতে তাঁদেরও নাম আছে৷ এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে আবেদন জানানো হয়৷ 

কিন্ত্ত তাতে কোনও সাড়া না-পেয়ে ওই ২৭ জন স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ মামলা করেন৷ উত্তরে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানানো হয়, নির্বাচন কমিটির নির্বাচনটিই ছিল অবৈধ৷ কারণ ওই নির্বাচন কমিটির চার সদস্যের অন্যতম জেলাশাসক হাজির ছিলেন না৷ ফলে প্যানেল থেকে তাঁদের নাম বাতিল করা হয়েছে৷ তবুও ওই ২৭ জনকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরকে বিবেচনা করার নির্দেশ দেয় স্যাট৷ 
কিন্ত্ত স্যাটের সেই নির্দেশ স্বাস্থ্য দপ্তর পালন না-করায় চাকরিপ্রার্থীরা ২০১০ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে৷ বিচারপতি প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমে জানিয়ে দেয়, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৭৭ জনের নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে৷ ২০১৩ সালের অগস্ট মাসে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নির্বাচন কমিটির সিদ্ধান্ত বৈধ৷ দু'সপ্তাহের মধ্যে ওই ২৭ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করা হয়৷ চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের আবেদনটি খারিজ করে দেয়৷

মামলাকারীরা আবার কলকাতা হাইকোর্টের একই ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান৷ এ বার আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়৷ ১২ মার্চ ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ২৭ মার্চের মধ্যে ওই ২৭ জনকে নিয়োগ করতে হবে৷ ২৮ মার্চ আদালতে এসে জানাতে হবে, আদালতের নির্দেশ মানা হয়েছে৷ এদিন মামলার শুনানিতে সহকারী সরকারি কৌঁসুলি তপন মুখোপাধ্যায় জানান, মামলাকারীদের চাকরিতে নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলছে৷ ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্ত্ততিও শুরু করা হবে৷ এর পরই ডিভিশন বেঞ্চ সরকারি কৌঁসুলিকে তীব্র ভত্‍র্‌সনা করে জানিয়ে দেয়, ১ এপ্রিলের মধ্যে তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ করে দিতে হবে৷ ২ এপ্রিল চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে৷ 

No comments:

Post a Comment