গরমের হাত থেকে রেহাই নেই, নাকাল করছে লু-তাপপ্রবাহ
এই সময়: এক ছটাক মেঘের দেখা মিলল না রবিবারও৷ পরিষ্কার আকাশে ছড়ি ঘুরিয়ে গেল গনগনে রোদ৷ ফল, দিনভর গরম হাওয়ার হলকা৷ তাপপ্রবাহের জ্বলুনি৷
তাপপ্রবাহের দাপট কমার লক্ষণ নেই৷ বরং, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে৷ আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, সোমবার তো বটেই, গরমের হাত থেকে রেহাই মিলবে না মঙ্গলবারও৷ তার পর স্বস্তি ফিরবে কি না, তার ইঙ্গিত এ দিন পর্যন্ত পাননি আবহবিদরা৷
এমনিতে শনিবারের সঙ্গে বিশেষ ফারাক ছিল না রবিবারের৷ সাতসকাল থেকেই পোড়া গরম৷ বেলা যত বেড়েছে, তত প্রাণান্তকর অবস্থা৷ উপায় নেই বলে মাথায় রোদ নিয়েই ভোটপ্রচারে বেরিয়েছিলেন প্রার্থীরা৷ এ বাদে ছুটির দিন বলে রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল৷ এ দিন থেকে সরকারি ভাবে তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ৷ মহানগরের পারদ সামান্যর জন্য ৪০ ডিগ্রির কাঁটা ছুঁতে পারেনি৷ এ দিন ছিল ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ স্বাভাবিকের চেয়ে যা ছ'ডিগ্রি বেশি৷ উত্তর শহরতলির দমদমে পারদ ছিল ৩৯.৮ ডিগ্রিতে৷ তুলনায় উপকূলের কাছে থাকা কলকাতাতেই যখন গরম হাওয়ার এমন দাপট, তখন রাজ্যের পশ্চিমে পরিস্থিতি সহজেই অনুমেয়৷ শনিবার পূর্বাঞ্চলের উষ্ণতম এলাকা ছিল আসানসোল৷ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ এ দিনও পারদের বিশেষ হেরফের ঘটেনি সেখানে৷ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের বহু জায়গায় তাপপ্রবাহের থাবা৷ বেলা বাড়তেই বইছে লু৷ আবহবিদদের চোখ কপালে তুলে দিয়ে তাপপ্রবাহ বইছে উপকূল সংলগ্ন কাঁথি (৪০.২ ডিগ্রি), ডায়মন্ড হারবারেও (৪০.৬ ডিগ্রি)৷
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, 'বাতাসে যে জলীয় বাষ্প প্রায় নেই, তা কাঁথি, ডায়মন্ড হারবারের তাপমাত্রা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে৷
প্রথমত, সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্প ঢোকার মতো কোনও প্রাকৃতিক অবস্থা এই মুহূর্তে নেই৷ দ্বিতীয়ত, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড থেকে যে গরম হাওয়া ঢুকছে, তা যেটুকু জলীয় বাষ্প আছে সেটুকুও শুষে নিচ্ছে৷ তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম৷' এর পিছনে উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থান পরিবর্তনকেই দায়ী ঠাওরাচ্ছেন আবহবিদরা৷ গত সপ্তাহে যে ঝড়-বৃষ্টি স্বস্তির বার্তা এনে দিয়েছিল, তার 'ভগীরথ' ছিল বাংলাদেশ ও ছত্তিসগড়ের ঘূর্ণাবর্ত আর বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয়৷ সাগরের উচ্চচাপটি ক্রমশ সরে মধ্য ভারতের উপর অবস্থান করছে৷ যার ফলে জোলো বাতাস ঢোকার প্রক্রিয়া একেবারে বন্ধ৷ উল্টে ওডিশা, ছত্তিসগড়, ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া দক্ষিণবঙ্গে ঠেলে ঢোকাচ্ছে মধ্য ভারতের উচ্চচাপটি৷
মার্চের শেষ হতে এখনও বাকি একদিন৷ তার মধ্যেই এমন গরম৷ চায়ের দোকানে, ট্রেন-বাসের ভিড়ে কথা উঠছে এখনই যদি এমন গরম হয়, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ্যে কী হবে! আবহবিদরা অবশ্য বলছেন, পাটিগণিতের হিসেব মেনে তাপমাত্রা বাড়ে না৷ অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে স্বস্তি ফিরতেই পারে৷ তা ছাড়া, শুকনো গরম কলকাতার কাছে অচেনা হতে পারে, তবে একেবারে নতুন নয়৷ ২০১০ সালের ২২ মার্চ আলিপুরের পারদ ছিল ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ ওই সময় বেশ কয়েকদিন তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল কলকাতা৷ ২০০৬ সালের ২৬ মার্চ পারদ চড়েছিল ৪০.৬ সেলসিয়াসে৷ আজ, মঙ্গলবার সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে কি? গোকুলবাবু বলেন, 'তাপমাত্রা এতটা বেড়ে গিয়েছে, তাতে এ ভাবে কিছুটা বলা যায় না৷ এক-আধ ডিগ্রি বেড়ে যেতেই পারে৷ আবার একইরকম থাকতে পারে৷' তাঁর কথায়, 'তাপমাত্রা এত বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলে অস্থিরতা তৈরি হয়৷ আরও একটু সময় গেলে স্পষ্ট করা বোঝা যাবে, কী হতে চলেছে৷'
এ দিন আবহবিদরা বিভিন্ন মডেল ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখেন, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ওডিশা পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত হয়েছে৷ অক্ষরেখা কি জোলো বাতাস ঢুকিয়ে শুকনো গরমের দাপাদাপিতে ইতি টানতে পারবে? গোকুলবাবু বলেন, 'অক্ষরেখাটির চরিত্র এখনও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না৷ সেটি শক্তিশালী হলে জলীয় বাষ্প ঢুকতে পারে৷ কিন্ত্ত তার মানেই এই নয় যে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি উজ্জ্বল হবে৷ এমনও হতে পারে, জলীয় বাষ্প ঢুকল কিন্ত্ত ঝড়-বৃষ্টি হল না৷ তখন আবার আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়বে৷ দরদরিয়ে ঘাম হবে৷'
কালবৈশাখীর অপেক্ষা করা ছাড়া গতি কি!
তাপপ্রবাহের দাপট কমার লক্ষণ নেই৷ বরং, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে৷ আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, সোমবার তো বটেই, গরমের হাত থেকে রেহাই মিলবে না মঙ্গলবারও৷ তার পর স্বস্তি ফিরবে কি না, তার ইঙ্গিত এ দিন পর্যন্ত পাননি আবহবিদরা৷
এমনিতে শনিবারের সঙ্গে বিশেষ ফারাক ছিল না রবিবারের৷ সাতসকাল থেকেই পোড়া গরম৷ বেলা যত বেড়েছে, তত প্রাণান্তকর অবস্থা৷ উপায় নেই বলে মাথায় রোদ নিয়েই ভোটপ্রচারে বেরিয়েছিলেন প্রার্থীরা৷ এ বাদে ছুটির দিন বলে রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল৷ এ দিন থেকে সরকারি ভাবে তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ৷ মহানগরের পারদ সামান্যর জন্য ৪০ ডিগ্রির কাঁটা ছুঁতে পারেনি৷ এ দিন ছিল ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ স্বাভাবিকের চেয়ে যা ছ'ডিগ্রি বেশি৷ উত্তর শহরতলির দমদমে পারদ ছিল ৩৯.৮ ডিগ্রিতে৷ তুলনায় উপকূলের কাছে থাকা কলকাতাতেই যখন গরম হাওয়ার এমন দাপট, তখন রাজ্যের পশ্চিমে পরিস্থিতি সহজেই অনুমেয়৷ শনিবার পূর্বাঞ্চলের উষ্ণতম এলাকা ছিল আসানসোল৷ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ এ দিনও পারদের বিশেষ হেরফের ঘটেনি সেখানে৷ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের বহু জায়গায় তাপপ্রবাহের থাবা৷ বেলা বাড়তেই বইছে লু৷ আবহবিদদের চোখ কপালে তুলে দিয়ে তাপপ্রবাহ বইছে উপকূল সংলগ্ন কাঁথি (৪০.২ ডিগ্রি), ডায়মন্ড হারবারেও (৪০.৬ ডিগ্রি)৷
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, 'বাতাসে যে জলীয় বাষ্প প্রায় নেই, তা কাঁথি, ডায়মন্ড হারবারের তাপমাত্রা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে৷
প্রথমত, সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্প ঢোকার মতো কোনও প্রাকৃতিক অবস্থা এই মুহূর্তে নেই৷ দ্বিতীয়ত, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড থেকে যে গরম হাওয়া ঢুকছে, তা যেটুকু জলীয় বাষ্প আছে সেটুকুও শুষে নিচ্ছে৷ তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম৷' এর পিছনে উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থান পরিবর্তনকেই দায়ী ঠাওরাচ্ছেন আবহবিদরা৷ গত সপ্তাহে যে ঝড়-বৃষ্টি স্বস্তির বার্তা এনে দিয়েছিল, তার 'ভগীরথ' ছিল বাংলাদেশ ও ছত্তিসগড়ের ঘূর্ণাবর্ত আর বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয়৷ সাগরের উচ্চচাপটি ক্রমশ সরে মধ্য ভারতের উপর অবস্থান করছে৷ যার ফলে জোলো বাতাস ঢোকার প্রক্রিয়া একেবারে বন্ধ৷ উল্টে ওডিশা, ছত্তিসগড়, ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া দক্ষিণবঙ্গে ঠেলে ঢোকাচ্ছে মধ্য ভারতের উচ্চচাপটি৷
মার্চের শেষ হতে এখনও বাকি একদিন৷ তার মধ্যেই এমন গরম৷ চায়ের দোকানে, ট্রেন-বাসের ভিড়ে কথা উঠছে এখনই যদি এমন গরম হয়, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ্যে কী হবে! আবহবিদরা অবশ্য বলছেন, পাটিগণিতের হিসেব মেনে তাপমাত্রা বাড়ে না৷ অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে স্বস্তি ফিরতেই পারে৷ তা ছাড়া, শুকনো গরম কলকাতার কাছে অচেনা হতে পারে, তবে একেবারে নতুন নয়৷ ২০১০ সালের ২২ মার্চ আলিপুরের পারদ ছিল ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ ওই সময় বেশ কয়েকদিন তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল কলকাতা৷ ২০০৬ সালের ২৬ মার্চ পারদ চড়েছিল ৪০.৬ সেলসিয়াসে৷ আজ, মঙ্গলবার সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে কি? গোকুলবাবু বলেন, 'তাপমাত্রা এতটা বেড়ে গিয়েছে, তাতে এ ভাবে কিছুটা বলা যায় না৷ এক-আধ ডিগ্রি বেড়ে যেতেই পারে৷ আবার একইরকম থাকতে পারে৷' তাঁর কথায়, 'তাপমাত্রা এত বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলে অস্থিরতা তৈরি হয়৷ আরও একটু সময় গেলে স্পষ্ট করা বোঝা যাবে, কী হতে চলেছে৷'
এ দিন আবহবিদরা বিভিন্ন মডেল ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখেন, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ওডিশা পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত হয়েছে৷ অক্ষরেখা কি জোলো বাতাস ঢুকিয়ে শুকনো গরমের দাপাদাপিতে ইতি টানতে পারবে? গোকুলবাবু বলেন, 'অক্ষরেখাটির চরিত্র এখনও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না৷ সেটি শক্তিশালী হলে জলীয় বাষ্প ঢুকতে পারে৷ কিন্ত্ত তার মানেই এই নয় যে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি উজ্জ্বল হবে৷ এমনও হতে পারে, জলীয় বাষ্প ঢুকল কিন্ত্ত ঝড়-বৃষ্টি হল না৷ তখন আবার আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়বে৷ দরদরিয়ে ঘাম হবে৷'
কালবৈশাখীর অপেক্ষা করা ছাড়া গতি কি!
No comments:
Post a Comment