Monday, March 31, 2014

কংগ্রেস-বিজেপিকে বেদান্তের অনুদান বেআইনি: আদালত

কংগ্রেস-বিজেপিকে বেদান্তের অনুদান বেআইনি: আদালত

ANIL_AGARWAL
ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল কংগ্রেস এবং বিজেপির লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে৷ কিন্ত্ত, নির্বাচন শুরুর ঠিক ১০ দিন আগে দিল্লি হাইকোর্টের দেওয়া একটি রায় দু'টি রাজনৈতিক দলেরই একটি ভিন্নধর্মী ছবি তুলে ধরেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলির বিদেশি অনুদান গ্রহণ নিষিদ্ধ হলেও দু'টি দলই আইন ভেঙে ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে লন্ডন শেয়ার বাজার তালিকাভুক্ত বেদান্ত রিসোর্সেস পিএলসি-র ভারতীয় শাখা সংস্থা থেকে অনুদান গ্রহণ করেছিল বলে রায়ে জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট৷

স্টারলাইট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং সেসা গোয়া, এই দুই সংস্থাই ভারতে রেজিস্টার্ড হলেও সংস্থাদুটির মালিকানা লন্ডন শেয়ার বাজার তালিকাভুক্ত বেদান্ত গোষ্ঠীর হাতে৷ দিল্লি হাইকোর্টের মামলায় দুর্নীতিদমন শাখার দাখিল করা তথ্য অনুযায়ী এই দুই সংস্থার কাছ থেকেই ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে মোট ৮.৭৯ কোটি টাকার অনুদান গ্রহণ করেছে কংগ্রেস৷ একই সময়ে ভারতীয় জনতা পার্টিকে ১.৪২ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে দিয়েছিল সেসা গোয়া৷ দিল্লি হাইকোর্টে এই তথ্য দাখিল করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর )৷ তবে, সেসা গোয়ার বিরুদ্ধে কোনও মামলা না করে কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এডিআর৷ স্টারলাইট ইন্ডাস্ট্রিজও বিজেপিকে ৭ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিল৷ সংস্থাটির বার্ষিক রিপোর্ট থেকেই এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে৷ গত বছরেই দু'টি সংস্থার সংযুক্তিকরণ করেছে বেদান্ত৷

'দু'টি রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপ থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা ১৯৭৬ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) আইন ভঙ্গ করেছে৷ স্টারলাইট এবং সেসা গোয়া থেকে অনুদান গ্রহণ করার অর্থ 'বিদেশি' সূত্র থেকে অনুদান নেওয়া,' মামলার রায়ে বলেন বিচারপতি প্রদীপ নন্দ্রযোগ এবং বিচারপতি জয়ন্ত নাথ৷ এই দুই সংস্থা দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে কী পরিমাণ অনুদান দিয়েছে তা ছ'মাসের মধ্যে তদন্ত করে দেখার জন্য গৃহ মন্ত্রক এবং নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট৷ এছাড়াও, একই মালিকানা কাঠামোযুক্ত অন্য সংস্থাগুলি দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে কী পরিমাণ অনুদান দিয়েছে তাও তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন ) আইন ভাঙলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকার আইনি পদক্ষেপ করতে পারে৷ দোষী প্রমাণিত হলে যাঁরা এই ধরণের লেনদেনে সাহায্য করেছেন রাজনৈতিক দলের সেই সব নেতা এবং আইনজীবীদের তিন বছরের জেলও হতে পারে৷ কংগ্রেস এবং বিজেপি দু'দলের আইনজীবীরাই একে বিদেশি অনুদান আখ্যা দেওয়ার বিরোধিতা করেছে৷ তাদের যুক্তি এই দুই সংস্থাই ভারতীয় কোম্পানি আইন মোতাবেক রেজিস্ট্রিকৃত এবং বেদান্ত-র সবথেকে বড় অংশীদার অনিল আগরওয়াল একজন ভারতীয়৷ এই যুক্তিতে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তারা আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপির সদস্য ও আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ৷ তিনি বলেন, 'এই আইনের লক্ষ্য কী ? বেআইনি অর্থ দেশের ভিতরে আসা আটকানোই এর লক্ষ্য, আইনি পথে যে অর্থ আসছে তা আটকানো নয়৷ অনুদানের টাকা ঘোষিত৷ চোরাপথে তা দেশে প্রবেশ করেনি৷' কংগ্রেসের মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা বলেন, 'একটি ভারতীয় সংস্থার নির্বাচনী তহবিল থেকে এই টাকা এসেছে৷ এ ক্ষেত্রে কোনওরকম আইন ভঙ্গ করা হয়নি' বেদান্তর আইন বিভাগের প্রধান অজিত যাদব অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি৷ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ভারতে তাদের রাজনৈতিক অনুদানের পরিমাণ কমিয়ে প্রায় অর্ধেক (৫ কোটি টাকা ) করে দিয়েছে বেদান্ত রিসোর্সেস৷ ২০১১-১২ অর্থবর্ষে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলিকে প্রায় ১২ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে দিয়েছিল সংস্থাটি৷ বেদান্তর ভারতীয় শাখা সংস্থা সেসা গোয়া তাদের রাজনৈতিক অনুদান ২০১১ -১২ অর্থবর্ষের ৪ .৬৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২০১২ -১৩ বর্ষে ৩০ লক্ষ টাকা করেছে৷ লৌহ আকরিক উত্তোলনে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞায় আয় কমে যাওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি৷

http://eisamay.indiatimes.com/business/grants-to-congress-and-bjp-are-illegal/articleshow/33008094.cms?

No comments:

Post a Comment