Monday, March 31, 2014

প্রিয় স্বাধীন স্বদেশে বিজয়ীর বেশে স্বাধীনতার মহানায়কের ফিরে আসার দিন ১০ জানুয়ারি

প্রিয় স্বাধীন স্বদেশে বিজয়ীর বেশে স্বাধীনতার মহানায়কের ফিরে আসার দিন ১০ 

জানুয়ারি

 
ছাতকে পাকিস্তানের পতাকা পোড়ালেন মুক্তিযোদ্ধারা ॥ সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের মিছিল
altছাতক প্রতিনিধি : বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করায় পাকিস্তানে ধৃষ্টতার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জের ছাতকে মুক্তিযোদ্ধার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর সকালে ছাতক শহীদ মিনার চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়।
পরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানের পতাকা পোড়ান এবং ইমরান খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
এ সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া, সাবেক কমান্ডার স্বরাজ কুমার দাস, মুক্তিযোদ্ধা পিয়ারা মিয়া, গোলাম মোস্তফা, রজব উদ্দিন, কবির মিয়া, শাহাব উদ্দিন, তালেব আলী, রবীন্দ্রনাথ মিন্টু, সুরুজ আলী, কানাই লাল দাস, পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অজয় ঘোষ, নোয়ারাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফজাল আবেদীন আবুল, আওয়ামী লীগ নেতা কল্যাণব্রত দাস, যুবলীগের সাব্বির আহমদ, বাবুল রায়, সুহেল মাহমুদ, ছাত্রলীগ নেতা সজিব মালাকার, সুব্রত হালদার, তন্ময় দেব ও পিংকু দেসহ মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল : ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাওকালে গণজাগরণ মঞ্চের মিছিলে পুলিশের হামলা, লাঠিচার্জ ও নেতৃবৃন্দকে আহত করার প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছ্
শুক্রবার বিকেলে গণজাগরণ মঞ্চ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি বের করে। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের আহ্বায়ক সুব্রত চক্রবর্তী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ সভাপতি আল-আজাদ ও মোকাদ্দেস বাবুল, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু ও সংগঠক একুশ তাপাদার।
বিক্ষোভ মিছিলটি মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার শহীদ মিনারে ফিরে আসে।
 
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর
জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ : মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। বাসিয়া বিধৌত এই জনপদে উড়ে লালসবুজের পতাকা। এর মধ্য দিয়ে সিলেট মুক্ত করার পথ আরো প্রশস্থ হয়ে যায়।
৭ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে বালাগঞ্জ, ওসমানীনগরের দয়ামীর, কুরুয়া, নাজিরবাজার ও রশিদপুর শত্রুমুক্ত হয়। ওই এলাকাগুলো শত্রুমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন, পাকিস্তানি সৈন্যরা বিশ্বনাথ ছেড়ে চলে গেছে; কিন্তু থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেন ও দারোগা আলী আহমদ স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনে জনগণকে বাধা দিচ্ছে।
altএ সংবাদ পেয়েই কমান্ডার আব্দুন নূরের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা থানা সদরে পৌঁছেন। এক পর্যায়ে রাজাকাররা পালিয়ে গেলে থানা পুলিশ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
পুলিশের আত্মসমর্পণে অধিক রাত হয়ে যাওয়ায় সেদিন আর পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। পরদিন ১০ ডিসেম্বর কমান্ডার আব্দুন নূরের নেতৃতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিশ্বনাথের আকাশে লালসবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এদিকে পতাকা উত্তোলনের খবর শুনেই আনন্দ-উল্লাসে হাজারো জনতা পায়ে হেঁটে থানা সদরে ছুটে আসেন।
১১ ডিসেম্বর রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মো. আব্দুল হক চৌধুরী ওরফে সমুজ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুন নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযাদ্ধা ল্যান্স নায়েক মো. গোলাম মোস্তফা। বিজয় সমাবেশে দেওয়ান শমসের রাজা চৌধুরী, থানা প্রশাসক আব্দুল মতলিব, কয়েছ চৌধুরী ও আকমল আলীসহ অনেক বক্তব্য রাখেন।
বিশ্বনাথে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১৩২ জন। এর মধ্যে ৪ জন শহীদ হয়েছেন। বীরবিক্রম একজন ও বীরপ্রতিক একজন। ৪ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন, খাজান্সি ইউনিয়নের শহীদ সুলেমান নগরের শহীদ সুলেমান হোসেন, বাওনপুর গ্রামের শহীদ আব্দুল আহাদ, দেওকলস ইউনিয়নের সৎপুর গ্রামের শহীদ শামছুল হক ও সৈয়দপুর সদুরগাঁওয়ের শহীদ নরমুজ আলী।
 
সিলেটে বিজয়ের মাসকে বরণ করলো মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন ॥ শুরু হচ্ছে পাঠাগারের বই সংগ্রহ
altনিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিবছরের মতো এবারো মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন, সিলেট মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে বরণ করেছে।
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ৯টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন, সিলেটের সভাপতি আল-আজাদ, সাধারণ সম্পাদক বশির আহমদ জুয়েল, নির্বাহী সদস্য ধ্রুব গৌতম, সিলেট মেট্রোপলিটন ল কলেজের উপাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম, আবৃত্তি সংগঠন মুক্তাক্ষরের পরিচালক বিমল কর, মেঠোসুর সম্পাদক বিমান তালুকদার, নারী উদ্যোক্তা শাহেনা বেগম চৌধুরী স্বর্ণা, সমাজকর্মী পিংকু তালুকদার, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি দীপ্র আসিফুল হাই, পুনম কর পূজা, প্রিয়াশ্রী কর পিউ প্রমুখ।
কর্মসূচি শেষে ঘোষণা করা হয়, এ বছরের মহান বিজয় দিবস থেকে মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন, সিলেটের মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারের জন্যে মুক্তিযুদ্ধের বই সংগ্রহ শুরু করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন, সিলেট প্রতিবছর মহান স্বাধীনতার মাস, বিজয়ের মাস ও একুশের মাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে।
 
পশ্চিমা জল্লাদ আর এদেশীয় কুলাঙ্গাররা যেদিন রক্তগঙ্গা বইয়েছিল শ্রীরামসিতে
আল-আজাদ : একাত্তরের ৩১ আগস্ট মঙ্গলবার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং এ দেশীয় ঘাতক চক্র 'শন্তি কমিটি' গঠনের নামে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার একটি সমৃদ্ধ গ্রাম শ্রীরামসিতে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল। নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল শিক্ষক, ধর্মগুরু, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ অসংখ্য মানুষকে। আহত করেছিল অনেককে। সম্ভ্রম লুটেছিল বহু নারীর। পুড়িয়ে দিয়েছিল হাট-বাজার ও ঘরবাড়ি। এছাড়া ব্যাপক হারে লুটপাটও করেছিল।
শ্রীরামসিতে সেদিন কতজন বাঙালি শহীদ হয়েছিলেন সে হিসেব আজো পাওয়া যায়নি। তবে ৩১ জন শহীদের নাম এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক ছাদ উদ্দিন আহমদ, মাওলানা আব্দুল হাই, তহশিলদার সত্যেন্দ্র চক্রবর্র্তী ও মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল বারি, প্রবাসী ফিরোজ মিয়া ও এখলাছুর রহমান, সামছু মিয়া গেদু, আব্দুল জলিল, আলা মিয়া, ওয়ারিছ মিয়া, ছুয়াব উল্লাহ, আব্দুল লতিফ, রইছ উল্লাহ, মানিক মিয়া, দবির মিয়া, মন্তাজ আলী, মজিদ উল্লাহ, নজির মিয়া, সুনু মিয়া, ডা. আব্দুল মান্নান, ছমির মিয়া, রুপু মিয়া, রুস্তম আলী, আছা মিয়া, তৈয়ব আলী, রোয়াব আলী, তাজুল আলী, মছদ্দর আলী, মোক্তার মিয়া ও আব্দুল হান্নান। আরো জীবন দেন অজ্ঞাতনামা একজন টেইলার, একজন প্রাথমিক শিক্ষক, একজন পোস্ট মাস্টার, একজন ডাক পিয়ন ও একজন দোকান সহকারী। এছাড়া পশ্চিমাদের হাতে সেদিন আহত হয়েও ছফিল উদ্দিন, জোয়াহির চৌধুরী, সুন্দর আলী, আমজাদ আলী, আলকাছ মিয়া, তপন চক্রবর্তী ও হুশিয়ার আলী প্রাণে বেঁচে যান। তবে কারো কারো গায়ে এখনো সেই নৃশংসতার চিহ্ন লেগে আছে।
 
ফেঞ্চুগঞ্জে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরদের স্মরণে বিভিন্ন সড়ক ও সেতুর নামকরণ
altজুয়েল খান, ফেঞ্চুগঞ্জ : মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠকদের স্মৃতি রক্ষার্থে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক ও সেতুর নামকরণ হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ ব্যাপারে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি আন্তরিকভাবেই সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়।
এর ফলশ্রুতিতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের কাসিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়-ইসলামপুর সড়কের নামকরণ হয়েছে শহীদ আসাদুজ্জামান সড়ক। দক্ষিণ ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার-গোলাঘাট সড়কের নামকরণ হয়েছে শহীদ ফয়েজ মিয়া সড়ক। কর্মদা-নিজামপুর সড়কের নামকরণ হয়েছে শহীদ পানু পাল সড়ক।
বিস্তারিত পড়ুন
 
ওসমানীনগরের সুরিকোনায় পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংসতার চিহ্ন মুছে যাচ্ছে
আনোয়ার হোসেন আনা, ওসমানীনগর (সিলেট) : সুরিকোন গণহত্যা দিবস ১৯ জুলাই। একাত্তরের এইদিনে পাক হানাদার বাহিনী কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এই গ্রামে অর্ধশতাধিক নিরীহ বাঙালিকে নির্বিচারে হত্যা করে; কিন্তু পশ্চিমা জল্লাদদের সেই নৃশংসতার চিহ্ন মুছে যাচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত এই নিভৃত জনপদে কোন স্মৃতিসৌধ গড়ে উঠেনি।
৪২ বছর আগের এ দিনটি ছিল রবিবার। সুরিকোনা গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ যখন ফজরের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনি পাক হানাদার বাহিনী গ্রামে প্রবেশ করে প্রতিটি ঘরে হানা দেয়। মকরম উল্লা, মুহিব উল্লা, জহির উল্লা, আব্দুল বাহার, সুরুজ উল্লা, আব্দুল জব্বার, সাজিদ উল্লা, আফিজ উল্লা, সাইদুর রহমান, হেকিম উল্লা ও ইউনুছ উল্লাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে যায় কুশিয়ারা ও নাটকিলা নদীর তীরে। এরপর পৃথক ৩টি স্থানে লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে লাশগুলো পানিতে ভাসিয়ে দেয়। পরে এলাকাবাসী নদী থেকে ৩৪ জন শহীদের লাশ উদ্ধার করে বিভিন্ন স্থানে কবর দেন।
বিস্তারিত পড়ুন
 
ফেঞ্চুগঞ্জের 'রাজপথ' এখন 'বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মকবুল আলী রাজপথ'
ফেঞ্চুগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : ফেঞ্চুগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মকবুল আলীর নামে উপজেলা সদরের একটি সড়কের নামকরণ হয়েছে। রাজনপুর এলাকার 'রাজপথ' নামে পরিচিত সড়কটি এখন থেকে 'বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মকবুল আলী রাজপথ' নামে পরিচিত হবে।
১৩ জুলাই  শনিবার সকালে সড়কের নতুন নামফলক উন্মোচন করেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।
পরে মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মকবুল আলী রাজথের প্রবেশমুখে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ লিয়াকত আলী। উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসার আহমদ শাহর পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কামান্ডার মো. আকরাম হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ কয়েস আহমদ, ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন খান, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে সৈয়দ নূরুজ্জামান ও সৈয়দ বদরুজ্জামান।
 
বড়লেখায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মুহিবুর রহমান সড়ক উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : বড়লেখায় স্বাধীনতার প্রায় ৪২ বছর পর উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের গুদামবাজার থেকে ঈদগাবাজার পর্যন্ত সড়কটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মুহিবুর রহমানের নামে নামকরণের পর এর উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিন।
আওয়ামী লীগ নেতা মাখন মিয়ার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহাব উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজ উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমিনুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুত ভূষণ পাল, বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, নারী শিক্ষা একাডেমী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিন, দাসেরবাজার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন মাতাই, বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন, ইউপি সদস্য আব্দুন নূর, শহীদ পরিবারের ফয়জুর রহমান, আলী আহমদ, খালেদ আহমদ প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধা মুহিবুর রহমানের নামে সড়কের নামকরণ হওয়ায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। এজন্য শহীদ পরিবারের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
 
একাত্তরের ২৬ মে বুরুঙ্গায় পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে ৭৮ জন বাঙালিকে
altআনোয়ার হোসেন আনা, ওসমানীনগর (সিলেট) : ওসমানীনগরবাসীর একটি শোকের দিন ২৬ মে।
১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানীর পৈতৃক নিবাস ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা ইউনিয়নে বর্বর পাকবাহিনী তাদের এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় 'শান্তিকার্ড' দেওয়ার নাম করে বর্তমান বুরুঙ্গা ইকবাল আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলকার পুরুষদের জড়ো করে হত্যাযজ্ঞ চালায়।
জল্লাদরা ওইদিন ৭৮ জন বাঙালিকে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিত করতে লাশের উপর কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তবে গুলি খেয়েও সেই হত্যাযজ্ঞ থেকে বেঁচে যান কয়েকজন। এখনো তাদের দুতিনজন সেই ভয়াল স্মৃতি বুকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪ সদস্যের তদন্তকারী দল ২০১১ সালের ২২ মে বুরুঙ্গা গণকবর পরিদর্শন করে।
১৯৮৪ সালে সরকারিভাবে ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে বুরুঙ্গা গণকবরের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে।
 
আগৈলঝাড়ায় স্মরণসভায় বধ্যভূমি কেতনার বিলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ দাবি
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা : বরিশালের আগৈলঝাড়ার কেতনার বিল বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৫ মে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের কেতনার বিলে বহু বাঙালিকে পাকসেনারা গুলি করে হত্যা করে; কিন্তু স্বাধীনতার ৪২ বছরেও এই বধ্যভূমিতে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি।
বুধবার বিকেলে উপজেলার রাংতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হল রুমে নূর মোহাম্মদ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার, জালাল বেপারী, রনজিৎ বৈদ্য, আজিমদ্দিন হাওলাদার, চাঁদশী গ্রামের মনোজ গোমস্তা, তপন বোস প্রমুখ।
বক্তারা কেতনার বিল বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
 
ফেঞ্চুগঞ্জে ৪২ বছর পর দুই শহীদের নামে দুটি সড়কের নামকরণ হলো
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৪২ বছর পর ফেঞ্চুগঞ্জে শহীদ আসাদুজ্জামান ও শহীদ ফয়েজ মিয়ার নামে উপজেলার দুটি সড়কের নামকরণ হয়েছে।
উপজেলা সদরের বিজয় পয়েন্ট থেকে ডাকবাংলা সড়কটিকে শহীদ আসাদুজ্জামান সড়ক ও মাইজগাঁও থেকে শাহ শহর উল্ল্যা সড়ককে শহীদ ফয়েজ মিয়া সড়ক নাম দেয়া হয়েছে।
২৭ মার্চ বুধবার সকালে সড়ক দুটির নামফলক উন্মোচন করেন সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এ উপলক্ষে বিজয় পয়েন্টে আয়োজিত এক সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী। মাসার আহমদ শাহর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আকরাম হোসেন, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম, শহীদ পরিবারের সদস্য হাসানুজ্জামান ও মানিকুজ্জামান, ফরিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথান শিক্ষক ময়ূব আলী প্রমুখ।
 
দিনাজপুরের বিরলে গণহত্যার ২৫ শহীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন
তনুজা শারমিন তনু, দিনাজপুর : স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পশ্চিম রাজারামপুর গ্রামে একাত্তরের গণহত্যার শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।
১৫ মার্চ শুক্রবার সকালে এই স্মৃতিসৌধের ফলক উম্মোচন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক স্থানীয় সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ উপলক্ষে বিরল উপজেলার ফুলবাড়ি স্কুল মাঠে  দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোকাদ্দেস হোসেন বাবলু, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্ত ঘোষ, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক আলী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম।
অনুষ্ঠানে গণহত্যায় স্বামীহারা ৮ নারীকে সন্মাননা প্রদান করা হয়।
 
তিনদিনের সম্মুখ যুদ্ধ শেষে হিলির মুহাড়াপাড়া মুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা
তনুজা শারমিন তনু, দিনাজপুর : একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর মরণপণ সম্মুখযুদ্ধ হয় দিনাজপুরের হিলির মুহাড়াপাড়ায়। একটানা তিনদিন চলে এ লড়াই। শেষপর্যন্ত পর্যুদস্ত হয়ে পিছু হটে পাকিস্তানি সৈন্যরা। মুক্ত হয় গুরুত্বপূর্ণ এই জনপদ। সেদিন ছিল ১১ই ডিসেম্বর,যেদিন প্রিয় পতাকা উড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় ঘোষণা করেন। 
পাক হানাদার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিলো ভারতের সীমান্ত ঘেষা হিলির মুহাড়াপাড়ায়। সেখানে আক্রমণের উদ্দেশ্যে ভারতীয় ৩টি রেজিমেন্ট ও ক্যাপ্টেন আনোয়ারের নেতৃত্বে মুক্তি বাহিনী ৯ ডিসেম্বর বাসুদেবপুর বিজিবি (তখনকার ইপিআর) ক্যাম্পের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনী মুহাড়াপাড়ায় পৌঁছে পশ্চিমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনীর ৩শ ৪৫ জন বীর শহীদ হন। অন্যদিকে  পাক হানাদার বাহিনীর নিহত হয় কমপক্ষে ১০ জন জাঁদরেল সেনা কর্মকর্তাসহ ৫০ জন সৈনিক। এছাড়া উভয় দিকে কমপক্ষে ১ হাজার ৪শ জন আহত হয়।
এ রণাঙ্গনেই মুক্তিযোদ্ধাদের এয়ার সাপোর্ট দেয় মিত্র বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিতে সেই ভয়াবহ যুদ্ধ অম্লান হয়ে আছে।
স্বাধীনতার ৪১ বছর পর এখানে নির্মিত হয়েছে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। স্থানীয় প্রশাসন যুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখারও উদ্যোগ নিয়েছে।
 
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর শাহাদৎ বার্ষিকী ১০ ডিসেম্বর
এম. শিমুল খান, খুলনা : ১০ ডিসেম্বর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর ৪১তম শাহাদৎ বার্ষিকী।
মহান মুক্তিযুদ্ধে খুলনাকে শত্রুমুক্ত করতে পাকিস্তানি নৌঘাঁটি তিতুমীরের দখল নিতে ৭ ডিসেম্বর মুক্তিকামী নৌসেনারা নেভাল জেটি হলদিয়া থেকে তিনটি রণতরী বিএনএস পদ্মা ও পলাশ এবং আইএনএস পানভেল (ভারতীয়) নিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় যাত্রা শুরু করেন।
মংলা বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত করে ১০ ডিসেম্বর ভোরে খুলনা অভিমুখে রওনা হন রণতরী তিনটির বীর যোদ্ধারা। রণতরী বহরে ছিল প্রথমে ভারতীয় জাহাজ পানভেল, মাঝে পলাশ ও শেষে পদ্মা। একই গতিতে এগুতে থাকে যুদ্ধযানগুলো। দুপুর ১২টার দিকে জাহাজ তিনটি খুলনার শিপইয়ার্ডের অদূরে পৌঁছলে ভুল সিগনালের কারণে মিত্র বাহিনীর যুদ্ধ বিমানের নিক্ষিপ্ত বোমায় পলাশ ও পদ্মা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত পদ্মার ইঞ্জিন বিকল হয়ে নদীর চরে আটকা পড়ে এবং পলাশে আগুন ধরে যায়। এ সময় জীবন বাঁচাতে অনেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন; কিন্তু পলাশের ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশিয়ার (চিফ ইআরএ) রুহুল আমিন অগ্নিদগ্ধ রণতরী পলাশ ও বিপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজেই শহীদ হন। এই বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্যে তাকে পরে তিনি বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভুষিত করা হয়।
ওইদিন আরো শহীদ হন বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ, নৌসেনা ফরিদ উদ্দীন, আখতার উদ্দীন, দৌলত হোসেন ও নৌকমান্ডো মো. রফিকসহ ১০ জন। এলাকার মানুষ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহসহ শহীদদের মরদেহ রূপসা নদীর পূর্ব তীরে সমাহিত করেন।
 

No comments:

Post a Comment