ঝিলম করঞ্জাই
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কুকুরে কামড়ালে জলাতঙ্কে একজনেরও মারা যাওয়ার কথা নয়৷
পশ্চিমবঙ্গের তথ্য বলছে, ২০১২-তেও এ রোগে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের! গত বছর এবং চলতি বছরেও সংখ্যাটা নেহাত কম নয়৷
কেন এই হাল? অন্তর্তদন্ত বলছে, এই হাল শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কর্তাদের পরিকল্পনার অভাব আর কর্মীদের একাংশের গাফিলতিতে৷ স্বাস্থ্য ভবনের অন্দরেই শোনা যাচ্ছে, এ রাজ্যে জলাতঙ্ক চিকিত্সার পরিকাঠামোর গোড়াতেই গলদ থাকায় মৃতের সংখ্যাটা শূন্যতে আনা অসম্ভব৷ শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে মৃতের সংখ্যা বাড়াটাও অস্বাভাবিক নয়৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাস ঘটিত জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ শুধু চাই ঠিকঠাক বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা এবং পরিকাঠামো৷ প্রয়োজন সময়মতো ঠিকঠাক টিকাপ্রয়োগ এবং ক্ষতস্থানে নিয়মিত শুশ্রুষা৷ কিন্ত্ত বাস্তব ছবিটা বলছে, প্রতি বছর জলাতঙ্কে বিশ্বজুড়ে যে প্রায় ৫৫,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে ৩৬ শতাংশের মৃত্যু ভারতেই হয়৷ তার মধ্যে ২০১২-য় সালে আবার এ রাজ্যেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল৷ এ বছর পরিস্থিতির খানিক 'উন্নতি' হলেও, জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের স্থানও এখনও উপরের দিকে৷
কনভেন্ট লেনের পাস্ত্তর ইনস্টিটিউট৷ ২০০৪ সালের আগে রাজ্যে এখানেই জলাতঙ্কের টিকা তৈরি করা হত৷ সেটা বন্ধ হলেও পাস্ত্তর ইনস্টিটিউটের গুরুত্ব খর্ব হয়নি৷ এই প্রতিষ্ঠানকে কুকুরের কামড়ের টিকাকরণের নোডাল সেন্টার চিহ্নিত করে রাজ্য সরকার৷ ২০০৯ সালে প্রথম জলাতঙ্কের টিকা ইন্ট্রাডারমাল পদ্ধতিতে দেওয়া চালু হয় এখানে৷ পরবর্তী সময়ে এখানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার রূপরেখা মতো ক্ষতস্থানে ইমিইনোগ্লুবিউলিন প্রয়োগ করাও চালু হয়৷
তা হলে সমস্যা কোথায়? স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্র বলছে, অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ কিংবা জেলা হাসপাতালে টিকা নেই বলে ঘোষণা করে রোগীকে পাস্ত্তরে রেফার করাই এখন দস্ত্তর৷ কিন্ত্ত সেখানে শুধু টিকা দেওয়ার পরিকাঠামোই আছে, রোগীদের ক্ষতস্থানে শুশ্রুষা করার পরিকাঠামো তেমন একটা নেই৷ ফলে কুকুরের কামড়ে আহতদের পাস্ত্তর থেকে টিকা নিয়ে ক্ষতস্থানে চিকিত্সার জন্য ছুটতে হয় অন্য হাসপাতালে৷ অনেকের পক্ষে তা সম্ভব হয় না৷ ফলে বাড়ে সংক্রমণের বিপদ৷ আবার টিকার কোর্স অসম্পূর্ণ রেখে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনেন, এমন রোগীর সংখ্যা কম নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিত্সকরাই৷ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক চিকিত্সক সখেদে বলছেন, 'ক্ষতস্থানে শুশ্রুষা না-হওয়ায় বেশ কয়েকজনের পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন হয়েছে যে, তাদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিত্সা করেও বাঁচানো যায়নি৷'
২০১২ সালে রাজ্যে যে ৩৮ জন মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩৬ জন মারা গিয়েছে আইডি হাসপাতালে৷ সমস্যাটা কোথায়, তা মানছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র সুমন বিশ্বাসও৷ তিনি স্বীকার করেছেন, মাল্টিডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপের পক্ষ থেকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাস্ত্তর ইনস্টিটিউটের সমস্ত কাজকর্ম স্থানান্তরিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ সুমনবাবু জানাচ্ছেন, 'গুরুতর আহতদের ভর্তি রেখে চিকিত্সার এবং টিকাকরণ করার জন্য এখনও কোন হাসপাতাল নির্দিষ্ট হয়নি৷ কিন্ত্ত প্রস্তাবটি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে৷' ঘটনা হল, দু' বছর ধরে এই প্রস্তাব বিবেচনাধীন থাকলেও, সে হাসপাতালের নাম নির্দিষ্ট করে উঠতে পারেনি স্বাস্থ্য দপ্তর৷
http://eisamay.indiatimes.com/state/Hydrophobia-Deaths-in-West-Bengal/articleshow/37508992.cms
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কুকুরে কামড়ালে জলাতঙ্কে একজনেরও মারা যাওয়ার কথা নয়৷
পশ্চিমবঙ্গের তথ্য বলছে, ২০১২-তেও এ রোগে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের! গত বছর এবং চলতি বছরেও সংখ্যাটা নেহাত কম নয়৷
কেন এই হাল? অন্তর্তদন্ত বলছে, এই হাল শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কর্তাদের পরিকল্পনার অভাব আর কর্মীদের একাংশের গাফিলতিতে৷ স্বাস্থ্য ভবনের অন্দরেই শোনা যাচ্ছে, এ রাজ্যে জলাতঙ্ক চিকিত্সার পরিকাঠামোর গোড়াতেই গলদ থাকায় মৃতের সংখ্যাটা শূন্যতে আনা অসম্ভব৷ শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে মৃতের সংখ্যা বাড়াটাও অস্বাভাবিক নয়৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাস ঘটিত জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ শুধু চাই ঠিকঠাক বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা এবং পরিকাঠামো৷ প্রয়োজন সময়মতো ঠিকঠাক টিকাপ্রয়োগ এবং ক্ষতস্থানে নিয়মিত শুশ্রুষা৷ কিন্ত্ত বাস্তব ছবিটা বলছে, প্রতি বছর জলাতঙ্কে বিশ্বজুড়ে যে প্রায় ৫৫,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে ৩৬ শতাংশের মৃত্যু ভারতেই হয়৷ তার মধ্যে ২০১২-য় সালে আবার এ রাজ্যেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল৷ এ বছর পরিস্থিতির খানিক 'উন্নতি' হলেও, জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের স্থানও এখনও উপরের দিকে৷
কনভেন্ট লেনের পাস্ত্তর ইনস্টিটিউট৷ ২০০৪ সালের আগে রাজ্যে এখানেই জলাতঙ্কের টিকা তৈরি করা হত৷ সেটা বন্ধ হলেও পাস্ত্তর ইনস্টিটিউটের গুরুত্ব খর্ব হয়নি৷ এই প্রতিষ্ঠানকে কুকুরের কামড়ের টিকাকরণের নোডাল সেন্টার চিহ্নিত করে রাজ্য সরকার৷ ২০০৯ সালে প্রথম জলাতঙ্কের টিকা ইন্ট্রাডারমাল পদ্ধতিতে দেওয়া চালু হয় এখানে৷ পরবর্তী সময়ে এখানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার রূপরেখা মতো ক্ষতস্থানে ইমিইনোগ্লুবিউলিন প্রয়োগ করাও চালু হয়৷
তা হলে সমস্যা কোথায়? স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্র বলছে, অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজ কিংবা জেলা হাসপাতালে টিকা নেই বলে ঘোষণা করে রোগীকে পাস্ত্তরে রেফার করাই এখন দস্ত্তর৷ কিন্ত্ত সেখানে শুধু টিকা দেওয়ার পরিকাঠামোই আছে, রোগীদের ক্ষতস্থানে শুশ্রুষা করার পরিকাঠামো তেমন একটা নেই৷ ফলে কুকুরের কামড়ে আহতদের পাস্ত্তর থেকে টিকা নিয়ে ক্ষতস্থানে চিকিত্সার জন্য ছুটতে হয় অন্য হাসপাতালে৷ অনেকের পক্ষে তা সম্ভব হয় না৷ ফলে বাড়ে সংক্রমণের বিপদ৷ আবার টিকার কোর্স অসম্পূর্ণ রেখে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনেন, এমন রোগীর সংখ্যা কম নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিত্সকরাই৷ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক চিকিত্সক সখেদে বলছেন, 'ক্ষতস্থানে শুশ্রুষা না-হওয়ায় বেশ কয়েকজনের পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন হয়েছে যে, তাদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিত্সা করেও বাঁচানো যায়নি৷'
২০১২ সালে রাজ্যে যে ৩৮ জন মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩৬ জন মারা গিয়েছে আইডি হাসপাতালে৷ সমস্যাটা কোথায়, তা মানছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র সুমন বিশ্বাসও৷ তিনি স্বীকার করেছেন, মাল্টিডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপের পক্ষ থেকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাস্ত্তর ইনস্টিটিউটের সমস্ত কাজকর্ম স্থানান্তরিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ সুমনবাবু জানাচ্ছেন, 'গুরুতর আহতদের ভর্তি রেখে চিকিত্সার এবং টিকাকরণ করার জন্য এখনও কোন হাসপাতাল নির্দিষ্ট হয়নি৷ কিন্ত্ত প্রস্তাবটি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে৷' ঘটনা হল, দু' বছর ধরে এই প্রস্তাব বিবেচনাধীন থাকলেও, সে হাসপাতালের নাম নির্দিষ্ট করে উঠতে পারেনি স্বাস্থ্য দপ্তর৷
http://eisamay.indiatimes.com/state/Hydrophobia-Deaths-in-West-Bengal/articleshow/37508992.cms
No comments:
Post a Comment