মনিরুল টোপ দেন সানোয়ারকে
হেমাভ সেনগুপ্ত ● সিউড়ি
হাইকোর্টে মামলা করার খবর পেয়ে মনিরুল ও দলবল তাঁকে অপহরণ করেছিল বলে দাবি করছেন সানোয়ার শেখ৷ শুক্রবার দিনমজুরের বেশে , গামছা কাঁধে , লুঙ্গি পরে লাভপুর এসেছিলেন তিনি৷ এই প্রতিবেদককে তিনি জানান , এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নানা প্রলোভন দিয়ে মামলা না -করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে৷ খুনের ঘটনায় এ বার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাবে পরিবার৷
সানোয়ার জানিয়েছেন , হাইকোর্টে আবেদনের খবর পেয়ে গিয়েছিলেন মনিরুল শেখ৷ তার আগে থেকেই অবশ্য ঘরছাড়া তিনি ও অন্য ভাইয়েরা৷ লোকসভা ভোটের আগে কীর্ণাহার বাজারে এসেছিলেন সানোয়ার৷ সেই সময় এক পরিচিত তাঁকে বলে , কেউ তাঁকে ডাকছে৷ সেখানে যেতেই জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে৷ সানোয়ার বলেন , 'গাড়ি গিয়ে থামল এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে৷ মনিরুলরা বলল , প্রাণে বাঁচতে চাইলে কোর্টে পিটিশন বন্ধ কর৷ আমাকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা , দুই ছেলের চাকরি , দু'টো কনট্রাক্টরি লাইসেন্স , বিধায়ক কোটায় চারটে বাড়ি করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল মনিরুল ও তার দলবল৷ প্রাণভয়ে প্রথমে হ্যাঁ বলি৷ তাতেই মুক্তি মেলে৷ এর পরই পালাই৷ সেই যে লাভপুর ছাড়লাম , আর ঢুকিনি৷ '
সানোয়ারের দাবি , হাইকোর্টে আবেদন করার আগের দিনও তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়৷ তিনি জানিয়েছেন , অপহরণকারীরা তাঁকে বলে , 'আজই তোর উকিলকে ফোন করে বল , সাত দিনের জন্য পিটিশন পিছিয়ে দিতে৷ টাকা হাতে পাওয়ার পর আর জমা দিস না৷ তা হলে গোটা পরিবারকে শেষ করে দেব৷ ' সে বারও রাজি হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানাচ্ছেন সানোয়ার৷ তবে হাজারো হুমকি -প্রলোভনেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতা করতে রাজি হয়নি পরিবার৷ সানোয়ার বলেন , 'রাজ্য পুলিশে আর ভরসা নেই৷ আদালতে সিবিআই তদন্ত চাইব৷ '
পাশাপাশি , অস্ত্র আইনে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশের আবেদনে অনুমোদন দিতে গিয়ে বেকায়দায় জেলা প্রশাসন৷ নথি অনুযায়ী , তিন বছর আগে এই মর্মে আবেদন করেছিল পুলিশ৷ তত্কালীন জেলাশাসক তা মঞ্জুরও করেছিলেন৷ অথচ গত ১৮ জুন পুলিশ জানিয়েছিল , মনিরুলের নাম খুনের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হলেও তাঁর নামে অস্ত্র আইনের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার আগে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে৷ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর , গত ২০ জুন পুলিশের সেই আবেদন নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে জেলাশাসকের দপ্তর নথি থেকে জানতে পারে , তিন বছর আগে একই মামলায় একই নামে একই আইনে চার্জশিট দেওয়ার আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল৷ এমনকি , তত্কালীন জেলাশাসক সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছেন৷ জেলা প্রশাসনিক ভবনের কর্তারা এই নিয়ে যথেষ্ট ধন্দে পড়ে গিয়েছেন৷ অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও একই মামলায় পুলিশ দ্বিতীয় বারের জন্য কেন আবেদন করল , তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের ভাইরা৷ নিহতদের সেজো ভাই মজলে শেখ বলেন , 'সেই সময় খুনের সঙ্গে অস্ত্র আইন লাগু হয়েছিল৷ জেলাশাসক অনুমতি দিলেও মনিরুল পরে বিধায়ক হয়ে যাওয়ায় অস্ত্র আইনেও আর চার্জশিট হল না৷ খুনের মামলাও চাপা পড়ে গেল৷ আবার নতুন করে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করাটা পুলিশের একটা কৌশল মাত্র৷ '
এ ক্ষেত্রে কী ভাবে এই আবেদনে সাড়া দেওয়া যায় , তা নিয়েও যথেষ্ট বেকায়দায় প্রশাসন৷ ইতিমধ্যেই এ ধরনের পুরোনো মামলার ইতিহাস ঘেঁটে দেখছেন প্রশাসনিক কর্তারা৷ রয়েছে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার ভাবনাও৷ জেলাশাসক মোহন গান্ধী জানান , 'আবেদনটি প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে রয়েছে৷ আইনের বিষয়টি সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখা হবে৷ ' সরকারি আইনজীবী রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন , 'জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় ডাকলে বা আইনি পরামর্শ চাইলে , সব বিষয় খতিয়ে দেখে পরামর্শ দেব৷ ' জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন , 'আইন মেনে যে ভাবে আবেদন করা দরকার , করেছি৷ ' যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই মনিরুল বলছেন , 'পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে৷ এ বিষয়ে কিছু বলব না৷ ' পাশাপাশি , শেখ পরিবারের অভিযোগ , চার্জশিটে নাম থাকা যাদব ও তাঁর দলবল সানোয়ারদের জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে , যাতে জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ে৷ সানোয়ার ও তাঁর পরিবারের দাবি , খুনের পর থেকে ৮০ বিঘা জমির দখল নিয়েছে অভিযুক্তরা৷
হেমাভ সেনগুপ্ত ● সিউড়ি
হাইকোর্টে মামলা করার খবর পেয়ে মনিরুল ও দলবল তাঁকে অপহরণ করেছিল বলে দাবি করছেন সানোয়ার শেখ৷ শুক্রবার দিনমজুরের বেশে , গামছা কাঁধে , লুঙ্গি পরে লাভপুর এসেছিলেন তিনি৷ এই প্রতিবেদককে তিনি জানান , এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নানা প্রলোভন দিয়ে মামলা না -করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে৷ খুনের ঘটনায় এ বার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাবে পরিবার৷
সানোয়ার জানিয়েছেন , হাইকোর্টে আবেদনের খবর পেয়ে গিয়েছিলেন মনিরুল শেখ৷ তার আগে থেকেই অবশ্য ঘরছাড়া তিনি ও অন্য ভাইয়েরা৷ লোকসভা ভোটের আগে কীর্ণাহার বাজারে এসেছিলেন সানোয়ার৷ সেই সময় এক পরিচিত তাঁকে বলে , কেউ তাঁকে ডাকছে৷ সেখানে যেতেই জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে৷ সানোয়ার বলেন , 'গাড়ি গিয়ে থামল এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে৷ মনিরুলরা বলল , প্রাণে বাঁচতে চাইলে কোর্টে পিটিশন বন্ধ কর৷ আমাকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা , দুই ছেলের চাকরি , দু'টো কনট্রাক্টরি লাইসেন্স , বিধায়ক কোটায় চারটে বাড়ি করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল মনিরুল ও তার দলবল৷ প্রাণভয়ে প্রথমে হ্যাঁ বলি৷ তাতেই মুক্তি মেলে৷ এর পরই পালাই৷ সেই যে লাভপুর ছাড়লাম , আর ঢুকিনি৷ '
সানোয়ারের দাবি , হাইকোর্টে আবেদন করার আগের দিনও তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়৷ তিনি জানিয়েছেন , অপহরণকারীরা তাঁকে বলে , 'আজই তোর উকিলকে ফোন করে বল , সাত দিনের জন্য পিটিশন পিছিয়ে দিতে৷ টাকা হাতে পাওয়ার পর আর জমা দিস না৷ তা হলে গোটা পরিবারকে শেষ করে দেব৷ ' সে বারও রাজি হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানাচ্ছেন সানোয়ার৷ তবে হাজারো হুমকি -প্রলোভনেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতা করতে রাজি হয়নি পরিবার৷ সানোয়ার বলেন , 'রাজ্য পুলিশে আর ভরসা নেই৷ আদালতে সিবিআই তদন্ত চাইব৷ '
পাশাপাশি , অস্ত্র আইনে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশের আবেদনে অনুমোদন দিতে গিয়ে বেকায়দায় জেলা প্রশাসন৷ নথি অনুযায়ী , তিন বছর আগে এই মর্মে আবেদন করেছিল পুলিশ৷ তত্কালীন জেলাশাসক তা মঞ্জুরও করেছিলেন৷ অথচ গত ১৮ জুন পুলিশ জানিয়েছিল , মনিরুলের নাম খুনের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হলেও তাঁর নামে অস্ত্র আইনের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার আগে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে৷ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর , গত ২০ জুন পুলিশের সেই আবেদন নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে জেলাশাসকের দপ্তর নথি থেকে জানতে পারে , তিন বছর আগে একই মামলায় একই নামে একই আইনে চার্জশিট দেওয়ার আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল৷ এমনকি , তত্কালীন জেলাশাসক সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছেন৷ জেলা প্রশাসনিক ভবনের কর্তারা এই নিয়ে যথেষ্ট ধন্দে পড়ে গিয়েছেন৷ অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও একই মামলায় পুলিশ দ্বিতীয় বারের জন্য কেন আবেদন করল , তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের ভাইরা৷ নিহতদের সেজো ভাই মজলে শেখ বলেন , 'সেই সময় খুনের সঙ্গে অস্ত্র আইন লাগু হয়েছিল৷ জেলাশাসক অনুমতি দিলেও মনিরুল পরে বিধায়ক হয়ে যাওয়ায় অস্ত্র আইনেও আর চার্জশিট হল না৷ খুনের মামলাও চাপা পড়ে গেল৷ আবার নতুন করে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করাটা পুলিশের একটা কৌশল মাত্র৷ '
এ ক্ষেত্রে কী ভাবে এই আবেদনে সাড়া দেওয়া যায় , তা নিয়েও যথেষ্ট বেকায়দায় প্রশাসন৷ ইতিমধ্যেই এ ধরনের পুরোনো মামলার ইতিহাস ঘেঁটে দেখছেন প্রশাসনিক কর্তারা৷ রয়েছে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার ভাবনাও৷ জেলাশাসক মোহন গান্ধী জানান , 'আবেদনটি প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে রয়েছে৷ আইনের বিষয়টি সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখা হবে৷ ' সরকারি আইনজীবী রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন , 'জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় ডাকলে বা আইনি পরামর্শ চাইলে , সব বিষয় খতিয়ে দেখে পরামর্শ দেব৷ ' জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন , 'আইন মেনে যে ভাবে আবেদন করা দরকার , করেছি৷ ' যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই মনিরুল বলছেন , 'পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে৷ এ বিষয়ে কিছু বলব না৷ ' পাশাপাশি , শেখ পরিবারের অভিযোগ , চার্জশিটে নাম থাকা যাদব ও তাঁর দলবল সানোয়ারদের জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে , যাতে জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ে৷ সানোয়ার ও তাঁর পরিবারের দাবি , খুনের পর থেকে ৮০ বিঘা জমির দখল নিয়েছে অভিযুক্তরা৷
http://eisamay.indiatimes.com/state/manirul-bait-to-sanoyar/articleshow/37374853.cms
No comments:
Post a Comment