Thursday, June 5, 2014

যশোর-খুলনা মহাসড়কের ১৯ কিমি. মরণফাঁদ

যশোর-খুলনা মহাসড়কের ১৯ কিমি. মরণফাঁদ
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জুন, ২০১৪
ইন্দ্রজিৎ রায় ও এসএম ফারুক আহমেদ, যশোর থেকে
মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ১৯ কিলোমিটার এলাকায়। সাড়ে তিন বছর ধরে চলছে সংস্কার কাজ। তবুও যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা সম্ভব হয়নি। খোদ যোগাযোগমন্ত্রী পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সর্বশেষ ২২ ফেব্র“য়ারি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করেছেন। এরপর আবারও মে মাসে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। চলছে সংস্কার কাজ। এ অবস্থায় ৩ জুন মহাসড়কের নওয়াপাড়া রাজঘাট এলাকায় ভাঙাচোরা রাস্তায় ওভারলোড ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার (মাহেন্দ্র) সাতজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। মহাসড়কে প্রাণহানির ঘটনায় এলাকায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। সূত্র জানায়, ২২ ফেব্র“য়ারি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিলের পর নতুন করে টেন্ডার করা হয়েছে। মে মাসে রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরডিএল এসটিবি কার্যাদেশ পেয়েছে। ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ কিলোমিটার মহাসড়কের সংস্কার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে আগামী বর্ষা মৌসুমেও চলবে সংস্কার কাজ। ফলে মহাসড়কে আরও ভয়াবহরূপ নেবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বর্তমানে যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়া অংশের অবস্থা বেহাল। ভারি ও হালকা যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ৩ জুন নওয়াপাড়া রাজঘাট এলাকায় পাট বোঝাই ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার সাতজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে জানা গেছে ভাঙাচোরা রাস্তায় ট্রাকটি ছিল অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই। একই সঙ্গে চালক বেপরোয়া চালাতে গিয়ে চাপা দিয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার যুগান্তরকে বলেন, মে মাসে নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, সাড়ে তিন বছর ধরে চলছে যশোর-খুলনা মহাসড়কের সংস্কার কাজ। পুরোপুরি কাজ শেষ হতে আরও ৬ মাস সময় লাগবে বলে ধারণা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে মহাসড়কের যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট থেকে অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। খুলনার যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বেসিক ইউআইএল জেভি কাজটি পায়। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। দরপত্র আহ্বানের এক বছরের মাথায় ২০১২ সালের ২৭ জানুয়ারি সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সংস্কার কাজ কিছুটা হওয়ার পর ওই বছরের ৩১ মে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ভাঙা অংশগুলোতে ইট বিছিয়ে মহাসড়কটি সংস্কার করা হয়। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের খুলনা সফরকে কেন্দ্র করে ইট উঠিয়ে সেই জায়গাগুলোতে পিচ দেয়া হয়। এরপর প্রিওডিক মেনটেইন্যান্স প্রোগ্রামের (পিএমপি) আওতায় মহাসড়কটির ২৭ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আবারও দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৩১ অক্টোবর ২২ কোটি ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকার প্রকল্পের কাজ পায় আগের যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বেসিক ইউআইএল জেভি। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২২ ফেব্র“য়ারি যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কটি পরিদর্শন করেন।
- See more at: http://www.jugantor.com/bangla-face/2014/06/06/108164#sthash.oP5VWZPN.dpuf

No comments:

Post a Comment