Thursday, June 26, 2014

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও বর্তমান বাস্তবতা

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও বর্তমান বাস্তবতা
রেজাউল করিম খোকন
দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। দেশের এই বিশাল জনশক্তিকে কাজে না লাগিয়ে অর্থনীতির উন্নয়নে একটি রাষ্ট্রের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। গত কয়েক বছর ধরেই নারী উন্নয়নে নারী উদ্যোক্তার জন্য বাজেটে ভাল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বছরও নারী উন্নয়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে নারী উদ্যোক্তার জন্য ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বাড়বে বলে সাধারণভাবে ধারণা করা যায়। পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নারী উদ্যোক্তারা আরও ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক, পশ্চাৎপদ গোষ্ঠী অর্থাৎ নারীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এবারও নারী উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ থাকবে।’ এখন অনেকের প্রশ্ন, এই নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্কই কী নারী উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ? এই বরাদ্দকৃত অর্থ নারীর উন্নয়নে কিভাবে ব্যবহৃত হয় সেটাও সুস্পষ্ট নয়। ফলে অস্বচ্ছতা এবং অস্পষ্টতার বেড়াজালে আটকে থাকছে এদেশে নারীর সত্যিকার উন্নয়ন চিত্র।
প্রতিবছরের অর্থনীতির দিকনির্দেশনা হলো বাজেট। এবারের বাজেটকে ঘিরে সমাজের প্রতিটি স্তরেই ছিল নানা আশা-আকাক্সক্ষা, উৎসাহ-উদ্দীপনা। এবারের নতুন অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ নানা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। নারীর অর্থনৈতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ততা বাড়াতে আরও কিছু সুবিধা দেয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে তারা। প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে নারীর ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা মানসিক স্বালম্বিতার অন্য নাম। অথচ একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারীর সার্বিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার উদাহরণ কমই বলা যায়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। কর্মজীবী নারীর অধিকাংশ আবার চাকরিজীবী। বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা খুব কম বলা চলে। যথাযথ পড়াশোনা, ঘরের বাইরে যাওয়া, ব্যবসায় পুঁজির যোগান, সমাজ ও পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা একজন উদ্যোক্তার জন্য জরুরী। যোগ্যতা প্রমাণের পরিপূর্ণ সুযোগ না পেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। শ্রমিক থেকে শুরু করে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চতর পর্যায়ে রয়েছে নারীর বিচরণ। চাকরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা হয়ে অনেক নারী গড়ে তুলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শুধু নিজেই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে সমাজ উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে। বিশ্লেষকদের মতে, নারীকে এখন নারী নয় বরং একজন যোগ্য মানুষ হিসেবেই ভাবতে শুরু করেছে সমাজ। সম্প্রতি পরিসংখ্যান এ বক্তব্যেরই সমর্থন দেয়। বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণাপত্র ‘অর্থনীতির মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ’-এ উল্লেখ রয়েছে, অতিদ্রুত অর্থনীতিতে বিশেষভাবে চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যে অংশগ্রহণকারী নারীর সংখ্যা বাড়ছে।
মোট শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ১৯৯৫-৯৬ সালে ছিল ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০০২-০৩ সালে ২৬ দশমিক ১ শতাংশ, ২০০৫-০৬ সালে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০১১-১২ সালে তা হয়েছে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গবেষণায় বলা হয় ২০০৬ সালে এক কোটি ১৩ লাখ নারী কর্মক্ষেত্রে ছিল। ২০১০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে এক কোটি ৬২ লাখ হয়। সিপিডির গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী এখনও তার পূর্ণ যোগ্যতা অনুযায়ী অর্থনীতিতে অংশ নিতে পারছে না। আশির দশকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে নারীর সংখ্যা ১ শতাংশও ছিল না। বর্তমানে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী নারী। উচ্চ পদস্থ নারী কর্মকর্তার সংখ্যা খুব বেশি নয়। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, তবে এটা আশানুরূপ নয়।
এক সময়ে এ দেশে নারীর আয় মানেই ছিল কাঁথা সেলাই। কিন্তু এখন নারী শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছে। আজকাল ছোট-বড় সরকারী- বেসরকারী সব ব্যাংকেই বিপুলসংখ্যক নারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত। তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকিং কর্মকা- চমৎকারভাবে পরিচালনা করছে। বিভিন্ন কোম্পানিতে ছোট পদে চাকরি নিয়েও যোগ্যতার বলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে আসছে অনেক নারী। আবার অনেকে সামান্য পুঁজি নিয়েও ব্যবসা করে এখন ব্যবসায়ী হিসেবে ভালভাবেই প্রতিষ্ঠিত। যখন তারা কাজ শুরু করেছিল পরিবারের লোকজন তাদের ওপর আস্থাশীল ছিল না। তখন পরিবার থেকে মনে করা হতো তারা পারবে না। কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে। এখন পরিবারই তাদের এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করছে। যার ফলে নারী আরো যোগ্য হিসেবে গড়ে ওঠার ভাল সুযোগ পাচ্ছে। মূলত কর্মক্ষেত্রে নারী অনেক ভাল কাজ করে। তারা পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান। কর্মক্ষেত্রে অযথা সময় নষ্ট করে না তারা। তবে আজও অনেক প্রতিষ্ঠান মেয়েদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিতে চায় না, তাদের ওপর আস্থাশীল হতে পারে না। কারণ একজন নারীর গভীর রাতে বা অপরিচিত এলাকায় অফিসের কাজে নিশ্চিত মনে যাওয়ার মতো পরিবেশ এখনও বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়নি। আবার মাতৃত্বকালীন বা বাচ্চা ছোট থাকলেও ঘন ঘন ছুটি নিতে হয় নারীকে। এটাও অনেক প্রতিষ্ঠান পছন্দ করে না। তবে দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ধীরে হলেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।
কর্মক্ষেত্রে নারীর পদচারণা বাড়লেও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামো এখনও নারীর কাজের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। আজকাল উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। নারীরা উচ্চশিক্ষা লাভ করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট অফিসে যোগ দেয়ায় প্রেক্ষাপট অনেক বদলে যাচ্ছে। কর্পোরেট বিশ্বের নামী-দামী প্রতিষ্ঠানগুলোর সিইও পদ অর্জন করছে নারী। বিশ্বে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন এসেছে এবং কর্মক্ষেত্রেও তাদের প্রবেশ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী কর্পোরেট জগতে নারীর ব্যস্ত পদচারণার ঢেউ আমাদের দেশেও এসে লাগছে ইদানীং। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য নারী কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব সাম্প্রতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। এ বছর অসলো বিজনেস ফর পিস এ্যাওয়ার্ড-২০১৪ অর্জন করেছে দেশের অন্যতম সেরা নিটল-নিলয় গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা আহমাদ। ব্যবসার সঙ্গে সামাজিক মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটিয়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি নারীর জন্য আলাদা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে তিনি এ দেশে নারী উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছেন। দারিদ্র্যপীড়িত মুসলিম বাংলাদেশের নারীদের দুর্দশা উপলব্ধি করে তিনি এবং তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথও দেখিয়েছেন। সেলিমা আহমাদ বাংলাদেশ উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আর তাই অসলো বিজনেজ ফর পিস এ্যাওয়ার্ড-২০১৪’র মতো বড় স্বীকৃতি দ্বিতীয় বাংলাদেশী ও প্রথম এশীয় নারী হিসেবে পেয়েছে সেলিমা আহমাদ।
ব্যবসা-বাণিজ্যের নোবেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত অসলো বিজনেস ফর পিস এ্যাওয়ার্ড জয়ী সেলিমা আহমাদ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তিনি গাড়ি, সিমেন্ট, চিনি, রিয়েল এস্টেট ব্যবসাসহ আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। সেলিমা আহমাদ বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের একজন পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন সুদক্ষভাবে। তার নানা ব্যবসা উদ্যোগ, কঠোর অধ্যবসায়, পরিশ্রম, কৌশলী পদক্ষেপ শুধু আর্থিক সাফল্যই তৈরি করেনি, সামাজিক পরিবর্তনেও বিরাট ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে দারিদ্র্যপীড়িত মুসলিম বাংলাদেশের নারীর দুর্দশা তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। এসব নারীকে দক্ষ ও মেধাবী উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আর্থিক ও মার্কেটিং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নারীকে ক্ষুদ্র গণ্ডি থেকে বেরিয়ে বড় পরিসরে ভাবার পথ দেখিয়েছেন।
অসলো বিজনেস ফর পিস এ্যাওয়ার্ড জয়ের পর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে গিয়ে সেলিমা আহমাদ বলেছেন, এ অর্জন শুধু আমার কাজের স্বীকৃতি নয়, বাংলাদেশের নারীও যে বাণিজ্যের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এটি তারই স্বীকৃতি। আমি বাংলাদেশের নারীকে ক্ষুদ্র পরিসরে দেখতে চাই না। তাদের বড় পরিসরে এগিয়ে আনতে হবে। আমি চাই তাদের ক্ষমতায়ন হবে, সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে তারা ভূমিকা রাখবে। সামাজিক পরিবর্তনে এগিয়ে আসবে।
দু’একজন সফল নারীকে উদাহরণ হিসেবে টেনে নারী সমাজের চিত্র পাওয়া যাবে না। এদেশে নারী যতটুকু এগিয়েছে এর চেয়ে বেশি এগোনো উচিত ছিল। এদেশে নারীর সবচেয়ে বড় সমস্যা সঙ্কোচবোধ যা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একজন নারীকে পিছিয়ে দেয়। তাই আমাদের এখানে নারীকে অর্থনীতি থেকে শুরু করে যে কোন ক্ষেত্রেই এগোতে হলে সঙ্কোচ ঝেড়ে ফেলতে হবে।
গত কয়েক বছর ধরেই নারী উন্নয়নে, নারী উদ্যোক্তার জন্য বাজেটে ভাল পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এবারও বাজেটে নারী উন্নয়নে বরাদ্দ রয়েছে ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু তার ব্যবহার নিশ্চিত নয়। কেননা, এসব বরাদ্দ মন্ত্রণালয়ভিত্তিক যেভাবে রয়েছে তার প্রয়োগ অনেক ক্ষেত্রেই নেই। গত বছর নারী উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও যদি তার প্রয়োগ না হয় তবে তা অর্থহীন। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেটের কতখাটি প্রয়োগ হচ্ছে সে ব্যাপারে সঠিক চিত্র প্রস্ফুটিত হয় না। তাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে বরাদ্দ রয়েছে এবং কী পরিমাণ নারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তাও পরিষ্কার হতে হবে। নইলে বাজেটের অনেকখানি হয়ত অব্যবহৃতই রয়ে যাবে। নারীশক্তিকে পূর্ণরূপে ব্যবহার করতে হলে শুধু তাদের নিরাপত্তা বা বাঁচিয়ে রাখলে চলবে না। তাদের উন্নয়নের যথোপযুক্ত পরিবেশ এবং সুযোগ করে দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনগণের জেন্ডার সংবেদনশীল মনমানসিকতা প্রথম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। পারিবারিক প্রচলিত মূল্যবোধে কন্যাশিশুর প্রতি যে ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক মানসিকতার চর্চা করা হয় ছোটবেলা থেকে যার ফলশ্রুতিতে আমাদের সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন আজও পরিপূর্ণভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। একজন মা শুধু নিজের জন্যই সন্তান জন্ম দেন না। বস্তুত তিনি সমাজকে একটি মানবসম্পদ দান করেন। অথচ মায়েদের স্বাস্থ্য রক্ষায় পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র কেউই বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। পরিবার থেকেই নারী বৈষম্যের মাঝে বড় হয়। শিক্ষার অভাব, কুসংস্কার এবং নারীর প্রতি চিরন্তন অবজ্ঞার ফলস্বরূপ নারী এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি, নেতৃত্বায়ন, সুস্থতা-এসব নিয়ে আলোচনা তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন সমস্যা চিহ্নিত করে মাঠ পর্যায়ে নারীকে সচেতন করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে সব নারীকে অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে, সম্পত্তিতে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন,সর্বোপরি নারীকে মানুষ ভাবার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
নারীকে স্বপ্ন দেখতে হবে, স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখন সহজেই দৃশ্যমান। প্রতিদিন সকালে কিংবা সন্ধ্যায় নগরীর রাজপথে, অলি-গলিতে হাজার হাজার, লাখ লাখ নারী গার্মেন্ট শ্রমিকের মিছিল প্রমাণ করে আমাদের গোটা অর্থনীতির চালিকাশক্তির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে আছে তারা। তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে অস্বীকার করা কিংবা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট তৈরি করতে হলে নারীর অ-আর্থিক (গৃহকর্ম) কাজের মূল্যায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরী। কেননা অর্থনীতিতে নারীর অবদান সঠিকভাবে জানা থাকলেই কেবল নারীর জন্য সঠিক বরাদ্দ দেয়া সম্ভব।
http://allbanglanewspapers.com/janakantha/

No comments:

Post a Comment