নৃত্য গীত কবিতায় রূপময় বর্ষাকে আবাহন
সংস্কৃতি সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ষা মানেই যেন প্রশান্তির পরশ। হৃদয়ে বয়ে যায় অবিরল আনন্দের ধারা। আর রবিবার ছিল এই রূপময় ঋতুর প্রথম দিন পয়লা আষাঢ়। দিনভর প্রখর খরতাপ বয়ে গেলেও বিকেলে আকাশ ঝরে পড়া বৃষ্টির জল জানান দিয়েছে বর্ষার জয়ধ্বনি। ঐশ্বর্যময় ও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর ঋতুটিকে বরণ করতে সকাল থেকেই সরব হয়ে ওঠে রাজধানী। কবিতার ছন্দে, গানের সুরে আর নৃত্যের ঝঙ্কারে আবাহন করা রূপময় বর্ষাকে। সঙ্গে ছিল বিশিষ্টজনদের আলাপচারিতায় বর্ষাকথন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় বর্ষা উৎসবের আয়োজন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ঢাকা মহানগর সংসদ। প্রায় একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে বর্ষা উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
সকাল সাতটা থেকে শুরু হয় উদীচীর বর্ষাবরণ। তৃষিত হৃদয়ে, পুষ্পে-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে নতুন প্রাণের নতুন গানের সুর নিয়ে স্বাগত জানানো হয় বর্ষাকে। প্রথমেই দার্শনিক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ মরহুম অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিম স্মরণে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। নীরবতা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শুরুতেই ছিল যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনা। ‘আমার গলার হার খুলে নে ওগো ললিতে’ শীর্ষক লোকগানের সুরে যন্ত্রসঙ্গীতের ঐক্যতান ঘটান লিটন দত্ত, রবিঙ্গ চৌধুরী, অরূপ শীল, সুমন, বজলুর রহমান ও সজল দেওয়ান। এরপর বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পল্লবী, মিরপুর শাখার শিল্পীরা দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর মঞ্চে আসেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ও নীহারিকা। তাঁরা পরিবেশন করেন উচ্চাঙ্গসঙ্গীত। তাঁদের সুললিত কণ্ঠের পরিবেশনায় মোহময় হয়ে ওঠে সকালের পরিবেশ। এরপর মেঘদূত কবিতা আবৃত্তি করেন বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে হ্যাপি হোমস। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে উদীচীর সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সঞ্চালনায় ছিল সঙ্গীত ও আবৃত্তি আড্ডা। এতে উপস্থিত ছিলেন সালমা আকবর, সোমা রানী রায়, আজিজুর রহমান তুহিন, বুলবুল ইসলাম, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, জয়িতা, সেমন্তী মঞ্জরী, স্বর্ণময়ী মন্ডল প্রমুখ সঙ্গীতশিল্পী। এ ছাড়াও, ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ ও উদীচীর সহ-সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন।
এরপর শুরু হয় বর্ষাকথন। এতে অংশ নেন বরেণ্যশিল্পী হাশেম খান। উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী, সাবেক সভাপতি ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গোলাম মোহাম্মদ ইদু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিবিদ রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা এবং উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। এ পর্বের শেষে বর্ষা ঘোষণা পাঠ করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার। এতে প্রকৃতি রক্ষায় আরও বেশি করে মনোযোগী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বর্ষাকথনের পর শুরু হয় অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্ব। এ পর্বের শুরুতেই ছিল স্পন্দনের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য। এরপর গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পী আশরাফুল আলম, রিমিলা করিম, বিপ্লব রায়হান, সীমান্ত সজল, সায়ের হোসেন পাপ্পু ও মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন। এ পর্বের শেষাংশে ছিল উদীচী কাফরুল শাখার শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনা। বর্ষা উৎসবের অনুষ্ঠানমালার এ পর্বটি উপস্থাপনা করেন মৌমিতা জান্নাত।
বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরের মতো এবারও দিনব্যাপী বর্ষা উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। উৎসবের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসংলগ্ন হাকিম চত্বরে সকাল সোয়া সাতটায়। শিল্পী সেমন্তী মঞ্জরীর কণ্ঠে ‘মেঘ মল্লার’ রাগ পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে ‘এসো হে সজল শ্যাম’ ও ‘রিম ঝিম নামিল দেয়া’ পর পর দুটি দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ধ্রুব শিশু-কিশোর সংগঠনের শিল্পীরা। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ড. অনুপম কুমার পাল। একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাশকুর ই সাত্তার কল্লোল ও নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী ও সুর সপ্তকের শিল্পীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যশ্রী, স্পন্দন ও ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্রের শিল্পীরা। এছাড়া একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, অনিমা রায়, ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও আবু বকর সিদ্দিক। বর্ষাকথন পর্বে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করেন ড. হায়াৎ মামুদ। অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ বিতরণ করা হয়।
বিকেলে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুল তলায় বিকেলে। এতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী তপন মাহমুদ, সাজেদ আকবর, সালমা আকবর, নাসিমা শাহীন ফেন্সি, বিশ্বজিৎ রায়, শহীদ খান, সুমা রানী রায়, মামুন জাহিদ খান, জান্নাতুল ফেরদৌসী লাকী, আরিফ রহমান প্রমুখ। দলীয় সঙ্গীতে অংশ নেন সুর বিহার, পঞ্চ ভাস্কর, নন্দন, সুরতীর্থ, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, ভাওয়াইয়া গানের দল, দৃষ্টি ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। একক আবৃত্তি করেন গোলাম সারোয়ার, বেলায়েত হোসেন ও লায়লা আফরোজ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নটরাজ, নবচেতনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও নৃত্যাক্ষরের শিল্পীরা। এছাড়া দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কল্পরেখা ও কণ্ঠশীলনের শিল্পীরা
ঋষিজের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণ
তাঁরা দুজনেই বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের আলোর দিশারী। একজন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর অপরজন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাঙালী ও বাংলা সাহিত্যের বিকাশ এবং তাঁকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে পৌঁছে দিয়েছিলেন রবীন্দ্র। অন্যদিকে সুরের পথিক নজরুলের ক্ষুরধার লেখনীর নির্ভয় উচ্চারণে উদ্দীপনার সঞ্চার করেছিলেন স্বাধীনতাকামী লক্ষ-কোটি মানুষের অন্তরে। রবিবার এক আয়োজনে স্মরণ করা এই দুই কবিকে। কবিগুরুর ১৫৩তম ও জাতীয় কবির ১১৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। গানের সুরে, কবিতার ছন্দে ও কবিদ্বয়কে নিবেদিত কথায় সাজানো হয় আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন ঋষিজের সভাপতি গণসঙ্গীত
শিল্পী ফকির আলমগীর।
প্রথম পর্বের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুই কবির অমর সৃষ্টি নানা গান আর কবিতা অনবদ্য পরিবেশনা উপস্থাপিত হয় শিল্পীদের কণ্ঠে। কাজী নজরুল ইসলামের আগমনী কবিতাটি পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়াও কবিতার দোলায়িত ছন্দে একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ ও ঝর্ণা সরকার। মিলনায়তনজুড়ে সুরের অনুরণন ছড়িয়ে একক কণ্ঠে গান শোনান তপন মাহমুদ, শাহীন সামাদ, ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান, ডালিয়া নওশীন, অনিমা রায়, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ও ইউসুফ আলী খান। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী, আনন্দন ও ঋষিজ।
সকাল সাতটা থেকে শুরু হয় উদীচীর বর্ষাবরণ। তৃষিত হৃদয়ে, পুষ্পে-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে নতুন প্রাণের নতুন গানের সুর নিয়ে স্বাগত জানানো হয় বর্ষাকে। প্রথমেই দার্শনিক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ মরহুম অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিম স্মরণে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। নীরবতা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শুরুতেই ছিল যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনা। ‘আমার গলার হার খুলে নে ওগো ললিতে’ শীর্ষক লোকগানের সুরে যন্ত্রসঙ্গীতের ঐক্যতান ঘটান লিটন দত্ত, রবিঙ্গ চৌধুরী, অরূপ শীল, সুমন, বজলুর রহমান ও সজল দেওয়ান। এরপর বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পল্লবী, মিরপুর শাখার শিল্পীরা দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর মঞ্চে আসেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ও নীহারিকা। তাঁরা পরিবেশন করেন উচ্চাঙ্গসঙ্গীত। তাঁদের সুললিত কণ্ঠের পরিবেশনায় মোহময় হয়ে ওঠে সকালের পরিবেশ। এরপর মেঘদূত কবিতা আবৃত্তি করেন বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে হ্যাপি হোমস। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে উদীচীর সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সঞ্চালনায় ছিল সঙ্গীত ও আবৃত্তি আড্ডা। এতে উপস্থিত ছিলেন সালমা আকবর, সোমা রানী রায়, আজিজুর রহমান তুহিন, বুলবুল ইসলাম, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, জয়িতা, সেমন্তী মঞ্জরী, স্বর্ণময়ী মন্ডল প্রমুখ সঙ্গীতশিল্পী। এ ছাড়াও, ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ ও উদীচীর সহ-সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন।
এরপর শুরু হয় বর্ষাকথন। এতে অংশ নেন বরেণ্যশিল্পী হাশেম খান। উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী, সাবেক সভাপতি ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গোলাম মোহাম্মদ ইদু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিবিদ রেজাউল করিম সিদ্দিক রানা এবং উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। এ পর্বের শেষে বর্ষা ঘোষণা পাঠ করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার। এতে প্রকৃতি রক্ষায় আরও বেশি করে মনোযোগী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বর্ষাকথনের পর শুরু হয় অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্ব। এ পর্বের শুরুতেই ছিল স্পন্দনের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য। এরপর গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পী আশরাফুল আলম, রিমিলা করিম, বিপ্লব রায়হান, সীমান্ত সজল, সায়ের হোসেন পাপ্পু ও মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন। এ পর্বের শেষাংশে ছিল উদীচী কাফরুল শাখার শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনা। বর্ষা উৎসবের অনুষ্ঠানমালার এ পর্বটি উপস্থাপনা করেন মৌমিতা জান্নাত।
বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরের মতো এবারও দিনব্যাপী বর্ষা উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। উৎসবের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসংলগ্ন হাকিম চত্বরে সকাল সোয়া সাতটায়। শিল্পী সেমন্তী মঞ্জরীর কণ্ঠে ‘মেঘ মল্লার’ রাগ পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে ‘এসো হে সজল শ্যাম’ ও ‘রিম ঝিম নামিল দেয়া’ পর পর দুটি দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ধ্রুব শিশু-কিশোর সংগঠনের শিল্পীরা। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ড. অনুপম কুমার পাল। একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাশকুর ই সাত্তার কল্লোল ও নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী ও সুর সপ্তকের শিল্পীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যশ্রী, স্পন্দন ও ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্রের শিল্পীরা। এছাড়া একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, অনিমা রায়, ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও আবু বকর সিদ্দিক। বর্ষাকথন পর্বে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি ড. নিগার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করেন ড. হায়াৎ মামুদ। অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ বিতরণ করা হয়।
বিকেলে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুল তলায় বিকেলে। এতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী তপন মাহমুদ, সাজেদ আকবর, সালমা আকবর, নাসিমা শাহীন ফেন্সি, বিশ্বজিৎ রায়, শহীদ খান, সুমা রানী রায়, মামুন জাহিদ খান, জান্নাতুল ফেরদৌসী লাকী, আরিফ রহমান প্রমুখ। দলীয় সঙ্গীতে অংশ নেন সুর বিহার, পঞ্চ ভাস্কর, নন্দন, সুরতীর্থ, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, ভাওয়াইয়া গানের দল, দৃষ্টি ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। একক আবৃত্তি করেন গোলাম সারোয়ার, বেলায়েত হোসেন ও লায়লা আফরোজ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নটরাজ, নবচেতনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও নৃত্যাক্ষরের শিল্পীরা। এছাড়া দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কল্পরেখা ও কণ্ঠশীলনের শিল্পীরা
ঋষিজের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণ
তাঁরা দুজনেই বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের আলোর দিশারী। একজন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর অপরজন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাঙালী ও বাংলা সাহিত্যের বিকাশ এবং তাঁকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে পৌঁছে দিয়েছিলেন রবীন্দ্র। অন্যদিকে সুরের পথিক নজরুলের ক্ষুরধার লেখনীর নির্ভয় উচ্চারণে উদ্দীপনার সঞ্চার করেছিলেন স্বাধীনতাকামী লক্ষ-কোটি মানুষের অন্তরে। রবিবার এক আয়োজনে স্মরণ করা এই দুই কবিকে। কবিগুরুর ১৫৩তম ও জাতীয় কবির ১১৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। গানের সুরে, কবিতার ছন্দে ও কবিদ্বয়কে নিবেদিত কথায় সাজানো হয় আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন ঋষিজের সভাপতি গণসঙ্গীত
শিল্পী ফকির আলমগীর।
প্রথম পর্বের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুই কবির অমর সৃষ্টি নানা গান আর কবিতা অনবদ্য পরিবেশনা উপস্থাপিত হয় শিল্পীদের কণ্ঠে। কাজী নজরুল ইসলামের আগমনী কবিতাটি পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়াও কবিতার দোলায়িত ছন্দে একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ ও ঝর্ণা সরকার। মিলনায়তনজুড়ে সুরের অনুরণন ছড়িয়ে একক কণ্ঠে গান শোনান তপন মাহমুদ, শাহীন সামাদ, ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান, ডালিয়া নওশীন, অনিমা রায়, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ও ইউসুফ আলী খান। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী, আনন্দন ও ঋষিজ।
http://allbanglanewspapers.com/janakantha/
No comments:
Post a Comment