হাটহাজারীর ড. ইউনূস যেভাবে বিশ্ব নাগরিক হলেন
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক
প্রকাশ : ২৮ জুন, ২০১৪
বাংলাদেশের নাগরিকরা বাংলাদেশী। একজন বাংলাদেশী আছেন, যিনি আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বের নাগরিক। তার নাম প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একজন বিশ্বখ্যাত ও অতুলনীয় বাংলাদেশী। তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এবং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। মার্কিন জাতির পক্ষ থেকে, মার্কিন কংগ্রেস জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ বা মহাগুরুত্বপূর্ণ অর্জন বা অবদানকে মূল্যায়ন করে থাকে। এই মূল্যায়নের সর্বোচ্চ প্রকাশ হচ্ছে মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক অবদানকারী বা অর্জনকারীকে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল প্রদানপূর্বক সম্মান করা ও তার অবদান বা অর্জনকে স্বীকৃতি দেয়া। অতি অল্প সংখ্যক বিদেশী নাগরিক এমন সম্মান অর্জন করেছেন।
আজ ২৮ জুন প্রফেসর ইউনূসের জন্ম দিবস; ১৯৪০ সালের এই দিনে তার জন্ম। জন্মদিনের অতিরিক্ত এই দিনে দেশে দেশে পালিত হচ্ছে সামাজিক ব্যবসা দিবস। সামাজিক ব্যবসা দিবস পালনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা। এই দিবসে প্রফেসর ইউনূসের প্রতি সম্মান জানানোর জন্যই এই কলাম। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা আমার পুরোপুরি নেই। এটাই আমার অনুভূতি। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তা-চেতনা, কর্ম, কামনা, দর্শন ইত্যাদি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বই লেখা হচ্ছে, যেখানে ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানানো হচ্ছে, সেখানে আমার মতো একজন নগণ্য ব্যক্তির পক্ষ থেকে একটি কলামের মাধ্যমে বিশ্বনাগরিক প্রফেসর ইউনূসকে আমি কতটুকুই বা সম্মান জানাতে পারব বা তার জীবন ও কর্মকে নিয়ে কতটুকুই বা মূল্যায়ন করতে পারব। এতদসত্ত্বেও অতি ক্ষুদ্র একটি চেষ্টা।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের দুটি গুণের কথা আমাকে বলতেই হবে। এক হচ্ছে, নিজের বিবেক ও সৎ চিন্তাপ্রসূত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ধারণা বা চিন্তা সবার সামনে উপস্থাপন করার সৎ সাহস ও গরজ। দ্বিতীয় হচ্ছে, উদ্ভাবনী ও সাংগঠনিক শক্তি। উদাহরণস্বরূপ সাত বা আট বছর আগে ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের এক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রদত্ত ড. ইউনূসের বিখ্যাত ভাষণের কথাটি উল্লেখ করা যায়।
সেদিন তিনি বক্তব্যে যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেটা বিরল। কিন্তু তার পুরো বক্তব্যের মর্মবস্তু ছিল বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নতি। যেসব বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন, সেগুলোর সব আঙ্গিক আমাদের নাগরিক সমাজ কর্তৃক অনুসরণ করা সম্ভব হয়নি। শুধু একটি আঙ্গিক পূর্ণোদ্যমে এবং আরেকটি আঙ্গিক অর্ধেক অনুসরণ করা সম্ভব হয়। যেটি পূর্ণোদ্যমে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে সেটির এখনকার পরিচিত নাম সৎ ও যোগ্য প্রার্থী আন্দোলন। এই আন্দোলন সম্পর্কে পাঠক সমাজ কম-বেশি পরিচিত। যে আঙ্গিকটি আংশিকভাবে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে, সেটি ছিল বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি প্রস্তাব। প্রফেসর ইউনূসের আহ্বানে আমিসহ আরও বহু ব্যক্তির মধ্যে সচেতনতার নব-উন্মেষ ঘটে। প্রক্রিয়াটি কিন্তু সফল হয়নি।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আরেকটি বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ওইদিন বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি নিজে বক্তব্যের ওই অংশটুকুর শিরোনাম দিয়েছিলেন- বিল্ডিং আপ রেস্পেক্টিবিলিটি অ্যাজ এ নেশন। অর্থাৎ জাতি হিসেবে মর্যাদা বা ভাবমূর্তি গড়ে তোলা। তিনি যা বলেছিলেন তার সারমর্ম এরকম- একটি দেশের জন্য ভাবমূর্তি বা সুনাম অতি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের পরিচয় বন্যা, ঝড়-তুফান, দরিদ্রতা ইত্যাদির জন্য। অধুনা পরিচয়ের নেতিবাচক তালিকায় যোগ হয়েছে সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ততা। অথচ নেতিবাচক দিকগুলো মোকাবেলা করার জন্য দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের অনেক ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলোকে জগৎবাসীর সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। প্রথম ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য হল, বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির জনক। ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে বা দারিদ্র্য বিমোচন সম্পর্কে পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করতে গেলেই বাংলাদেশের নাম ও গ্রামীণ ব্যাংকের নাম উচ্চারণ বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীব্যাপী ডায়রিয়া একটি মারাত্মক ব্যাধি, বিশেষত শিশুদের জন্য। বাংলাদেশের ওরাল স্যালাইন নামক স্বাভাবিক ওষুধ উদ্ভাবন করে ডায়রিয়া প্রতিরোধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দক্ষতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ গত ৩৫ বছরে দ্বিগুণ হওয়া জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা উৎপাদন করছে। বাংলাদেশ গত ১২ বছরেই শিশু মৃত্যু হার অর্ধেক করেছে, যেটি অন্য যে কোনো উন্নয়নশীল দেশ পারেনি। অধ্যাপক ইউনূসের জাতীয় মর্যাদা প্রসঙ্গে উত্থাপিত আঙ্গিকগুলোর সারমর্ম তুলে ধরলাম। আমার বিনীত বক্তব্য, তিনি নিজ কর্ম দ্বারা, নিজ অর্জন দ্বারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সম্মানকে যে উন্নত স্থানে নিয়ে গেলেন সেটির মূল্যায়ন কী প্রকারে করা হবে? ওটা এরকমভাবেই করা হবে, একজাম্পল ইজ বেটার দেন প্রিসেপ্ট। অর্থাৎ তত্ত্ব থেকে উদাহরণ উৎকৃষ্ট। প্রফেসর ইউনূস যথার্থই জাতীয় বিবেক এবং অন্যতম জাতীয় অভিভাবকের দায়িত্ব পালনের দাবিদার হতে পারেন।
তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ফিরে গিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আমরা বাধাগ্রস্ত করতে চাই না। সারা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা তাদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি না। এটি হলে আমাদের দেশ পিছিয়ে যাবে। তরুণ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে যে পরিশ্রমী ও উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, তার ধারাবাহিকতা ব্যাহত হবে। প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, আমরা চাই তরুণ প্রজন্ম এ ধরনের একাধিক আন্তর্জাতিক মানের পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের সম্মানকে পৃথিবীব্যাপী অধিকতর ছড়িয়ে দেবে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রশংসা করে প্রফেসর ড. ইউনূস বলেন, তারা অনেক পরিশ্রমী ও মেধাবী। তাদের পক্ষে এ ধরনের সম্মান বয়ে আনা সম্ভব। বয়স্করা যেটি দেরিতে পেরেছে, তরুণরা সেটি আরও দ্রুত আনতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তরুণ প্রজন্মে নিয়ে প্রফেসর ইউনূসের অনুভূতি অনেকটা এরকম। বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা অতীতের যে কোনো তরুণ প্রজন্মের তুলনায় ভাগ্যবান বেশি। এর অন্যতম কারণ হল কারিগরি প্রযুক্তি। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দী চলছে। প্রথম শতাব্দী থেকে নিয়ে সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত যে পরিবর্তন পৃথিবীতে আসেনি, সেই পরিবর্তন এসেছিল সপ্তম শতকে, দ্বীন ইসলামের আবির্ভাবের মাধ্যমে পৃথিবীর সভ্যতার মোড়কে ঘুরিয়ে দেয়া। সপ্তম থেকে নিয়ে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের অগ্রগতি ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে নিয়ে শুরু হয় ইউরোপীয় রেনেসাঁ এবং তৎপরবর্তীকালে শিল্প বিপ্লব। বিগত দুই থেকে তিন শত বছরে বহু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছে এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য হল এই কথা যে, ১৯৪৬ সালের পূর্বেকার ২০০ বছর এবং ১৯৪৬ সালের পরের ৩০ বছর অবদানের ব্যাপ্তিতে প্রায় সমান। আজ থেকে নিয়ে পিছনের দিকে তিন দশকের অবদান বিগত একশত বছরের অবদানকে ব্যাপ্তিতে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং আগামী বিশ বছরের অবদান অবিস্মরণীয় এবং অকল্পনীয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বর্তমান প্রজন্ম প্রযুক্তিবান্ধব এবং বর্তমান প্রযুক্তিও তারুণ্য ও কৈশোরবান্ধব। প্রযুক্তির এই উদারতার সুযোগ বাংলাদেশের তরুণগণকে গ্রহণ করতেই হবে। প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প ও ব্যবসার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা সহজতর এবং তা অধিকতর ফলপ্রসূ, শ্রমনির্ভর বা ভূমিনির্ভর ব্যবসা ও শিল্পের তুলনায়। চট্টগ্রাম মহানগর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। সমুদ্র তীরবর্তী মহানগর হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অন্য সব অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামের তরুণরা প্রায় একশত বছর যাবৎই অধিকতর বিদেশমুখী। বিদেশমুখী হওয়া ভালো কিন্তু যদি দুটি পায়ের মধ্যে একটি পা দেশে থাকে, তাহলে সোনায় সোহাগা। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক তরুণ সম্প্রদায় এই কথাটি যেন মনে রাখেন।
প্রফেসর ইউনূস একজন অর্থনীতিবিদ হলেও এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হলেও তিনি পুরস্কার পেয়েছিলেন শান্তিতে। ব্যাখ্যাটি কোনোমতেই দুর্বোধ্য নয়। শান্তির জন্ম মনে। শান্তির সঙ্গে সম্পর্ক অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের। অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করে পুঁজির প্রাপ্যতা ও উদ্যোগের ওপর। বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষত নারী অশান্তিতে থাকে, কারণ তার নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাতন্ত্র্য নেই। প্রফেসর ড. ইউনূস লাখ লাখ মানুষের মাঝে শান্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। বিশ্বের জ্ঞানী ও গুণীজনরা প্রফেসর ইউনূসের কর্মের স্বীকৃতির মাধ্যমে স্বীকার করলেন, দৃশ্যমান সশস্ত্র সংঘাত নিরসনই একমাত্র শান্তিবাদী কাজ নয়। বস্তুত ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের মাধ্যমে শান্তিবাদী কার্যক্রমের ধারণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের মডেলে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পৃথিবীর ১১০টি দেশে সম্প্রসারিত হয়েছে। এমনকি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও সম্পদশালী দেশ আমেরিকার নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, ওহাইও প্রভৃতি রাজ্য বা প্রদেশ এবং বোস্টন, ডালাস, লসএঞ্জেলেস ইত্যাদি নগরীতেও এরূপ ক্ষুদ্রঋণ কর্মকাণ্ড চালু হয়েছে। গত চার থেকে পাঁচ বছর যাবৎ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সোস্যাল বিজনেস ধারণাটিকে পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন। গত চার বছর যাবৎ সোস্যাল বিজনেস বা সামাজিক ব্যবসা নামক তত্ত্বের বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি ব্যস্ত। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দুটি কাজ প্রায় একই সঙ্গে করার চেষ্টা করছেন প্রফেসর ইউনূস ও তার সংগঠন। প্রথমত নবীন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং দ্বিতীয়ত সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে অংশীদারিত্ব সৃষ্টি। প্রফেসর ইউনূস বিশ্বাস করেন : ঋণ থেকে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। এটি টেকসই ও অনুকরণীয়ভাবে যুব সম্প্রদায়ের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের পথে নতুন সম্ভাবনার পথ সৃষ্টি করবে। অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করা বা সরকার কর্তৃক বিশাল কোনো অবকাঠামোগত নির্মাণ প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে গতানুগতিক চাকরির ক্ষেত্র তৈরির ধারা থেকে বের হয়ে এসে সামাজিক ব্যবসার পদ্ধতিতে বেকার ব্যক্তি নিজেই, সহজ টেকসই এবং সরাসরি ক্ষুদ্র অংশীদারিত্বের কাঠামোতে বিনিয়োগ করে, বিষয়টির মোড় ঘুরিয়ে দেবে। যার সমস্যা তাকে দিয়েই সমাধান; শুধু দরকার প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন।
প্রফেসর ড. ইউনূসের গ্রামের বাড়ি এবং আমার গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি দুটি গ্রাম; আকাশপথে দূরত্ব ১ কিলোমিটার, সড়কপথে দূরত্ব ২ কিলোমিটার। অতএব, প্রফেসর ইউনূসকে জানা, চেনা, তাকে নিয়ে আনন্দিত হওয়া, গর্বিত হওয়া, তার কথা সবাইকে বলা এটা যুগপৎ আমার অধিকার ও দায়িত্ব। প্রফেসর ইউনূস কোনোমতেই তার গ্রাম বা তার থানা হাটহাজারী বা তার জেলা চট্টগ্রাম বা তার মাতৃভূমি বাংলাদেশের গর্বের বিষয় নয়। তিনি এখন ধারণাগতভাবে বিশ্বের নাগরিক এবং বিশ্বের গর্ব।
নোবেল জয়ী ড. ইউনূস সুহৃদকে আবারও অভিনন্দন।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
www.generalibrahim.com
- See more at: http://www.jugantor.com/window/2014/06/28/116359#sthash.02whTeaO.dpufআজ ২৮ জুন প্রফেসর ইউনূসের জন্ম দিবস; ১৯৪০ সালের এই দিনে তার জন্ম। জন্মদিনের অতিরিক্ত এই দিনে দেশে দেশে পালিত হচ্ছে সামাজিক ব্যবসা দিবস। সামাজিক ব্যবসা দিবস পালনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা। এই দিবসে প্রফেসর ইউনূসের প্রতি সম্মান জানানোর জন্যই এই কলাম। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা আমার পুরোপুরি নেই। এটাই আমার অনুভূতি। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তা-চেতনা, কর্ম, কামনা, দর্শন ইত্যাদি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বই লেখা হচ্ছে, যেখানে ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানানো হচ্ছে, সেখানে আমার মতো একজন নগণ্য ব্যক্তির পক্ষ থেকে একটি কলামের মাধ্যমে বিশ্বনাগরিক প্রফেসর ইউনূসকে আমি কতটুকুই বা সম্মান জানাতে পারব বা তার জীবন ও কর্মকে নিয়ে কতটুকুই বা মূল্যায়ন করতে পারব। এতদসত্ত্বেও অতি ক্ষুদ্র একটি চেষ্টা।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের দুটি গুণের কথা আমাকে বলতেই হবে। এক হচ্ছে, নিজের বিবেক ও সৎ চিন্তাপ্রসূত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ধারণা বা চিন্তা সবার সামনে উপস্থাপন করার সৎ সাহস ও গরজ। দ্বিতীয় হচ্ছে, উদ্ভাবনী ও সাংগঠনিক শক্তি। উদাহরণস্বরূপ সাত বা আট বছর আগে ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের এক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রদত্ত ড. ইউনূসের বিখ্যাত ভাষণের কথাটি উল্লেখ করা যায়।
সেদিন তিনি বক্তব্যে যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেটা বিরল। কিন্তু তার পুরো বক্তব্যের মর্মবস্তু ছিল বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নতি। যেসব বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন, সেগুলোর সব আঙ্গিক আমাদের নাগরিক সমাজ কর্তৃক অনুসরণ করা সম্ভব হয়নি। শুধু একটি আঙ্গিক পূর্ণোদ্যমে এবং আরেকটি আঙ্গিক অর্ধেক অনুসরণ করা সম্ভব হয়। যেটি পূর্ণোদ্যমে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে সেটির এখনকার পরিচিত নাম সৎ ও যোগ্য প্রার্থী আন্দোলন। এই আন্দোলন সম্পর্কে পাঠক সমাজ কম-বেশি পরিচিত। যে আঙ্গিকটি আংশিকভাবে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে, সেটি ছিল বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি প্রস্তাব। প্রফেসর ইউনূসের আহ্বানে আমিসহ আরও বহু ব্যক্তির মধ্যে সচেতনতার নব-উন্মেষ ঘটে। প্রক্রিয়াটি কিন্তু সফল হয়নি।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আরেকটি বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ওইদিন বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি নিজে বক্তব্যের ওই অংশটুকুর শিরোনাম দিয়েছিলেন- বিল্ডিং আপ রেস্পেক্টিবিলিটি অ্যাজ এ নেশন। অর্থাৎ জাতি হিসেবে মর্যাদা বা ভাবমূর্তি গড়ে তোলা। তিনি যা বলেছিলেন তার সারমর্ম এরকম- একটি দেশের জন্য ভাবমূর্তি বা সুনাম অতি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের পরিচয় বন্যা, ঝড়-তুফান, দরিদ্রতা ইত্যাদির জন্য। অধুনা পরিচয়ের নেতিবাচক তালিকায় যোগ হয়েছে সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ততা। অথচ নেতিবাচক দিকগুলো মোকাবেলা করার জন্য দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের অনেক ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলোকে জগৎবাসীর সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। প্রথম ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য হল, বাংলাদেশ ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির জনক। ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে বা দারিদ্র্য বিমোচন সম্পর্কে পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করতে গেলেই বাংলাদেশের নাম ও গ্রামীণ ব্যাংকের নাম উচ্চারণ বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীব্যাপী ডায়রিয়া একটি মারাত্মক ব্যাধি, বিশেষত শিশুদের জন্য। বাংলাদেশের ওরাল স্যালাইন নামক স্বাভাবিক ওষুধ উদ্ভাবন করে ডায়রিয়া প্রতিরোধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দক্ষতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ গত ৩৫ বছরে দ্বিগুণ হওয়া জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা উৎপাদন করছে। বাংলাদেশ গত ১২ বছরেই শিশু মৃত্যু হার অর্ধেক করেছে, যেটি অন্য যে কোনো উন্নয়নশীল দেশ পারেনি। অধ্যাপক ইউনূসের জাতীয় মর্যাদা প্রসঙ্গে উত্থাপিত আঙ্গিকগুলোর সারমর্ম তুলে ধরলাম। আমার বিনীত বক্তব্য, তিনি নিজ কর্ম দ্বারা, নিজ অর্জন দ্বারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সম্মানকে যে উন্নত স্থানে নিয়ে গেলেন সেটির মূল্যায়ন কী প্রকারে করা হবে? ওটা এরকমভাবেই করা হবে, একজাম্পল ইজ বেটার দেন প্রিসেপ্ট। অর্থাৎ তত্ত্ব থেকে উদাহরণ উৎকৃষ্ট। প্রফেসর ইউনূস যথার্থই জাতীয় বিবেক এবং অন্যতম জাতীয় অভিভাবকের দায়িত্ব পালনের দাবিদার হতে পারেন।
তিনি বলেছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ফিরে গিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আমরা বাধাগ্রস্ত করতে চাই না। সারা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা তাদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি না। এটি হলে আমাদের দেশ পিছিয়ে যাবে। তরুণ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে যে পরিশ্রমী ও উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, তার ধারাবাহিকতা ব্যাহত হবে। প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, আমরা চাই তরুণ প্রজন্ম এ ধরনের একাধিক আন্তর্জাতিক মানের পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের সম্মানকে পৃথিবীব্যাপী অধিকতর ছড়িয়ে দেবে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রশংসা করে প্রফেসর ড. ইউনূস বলেন, তারা অনেক পরিশ্রমী ও মেধাবী। তাদের পক্ষে এ ধরনের সম্মান বয়ে আনা সম্ভব। বয়স্করা যেটি দেরিতে পেরেছে, তরুণরা সেটি আরও দ্রুত আনতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তরুণ প্রজন্মে নিয়ে প্রফেসর ইউনূসের অনুভূতি অনেকটা এরকম। বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা অতীতের যে কোনো তরুণ প্রজন্মের তুলনায় ভাগ্যবান বেশি। এর অন্যতম কারণ হল কারিগরি প্রযুক্তি। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দী চলছে। প্রথম শতাব্দী থেকে নিয়ে সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত যে পরিবর্তন পৃথিবীতে আসেনি, সেই পরিবর্তন এসেছিল সপ্তম শতকে, দ্বীন ইসলামের আবির্ভাবের মাধ্যমে পৃথিবীর সভ্যতার মোড়কে ঘুরিয়ে দেয়া। সপ্তম থেকে নিয়ে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের অগ্রগতি ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে নিয়ে শুরু হয় ইউরোপীয় রেনেসাঁ এবং তৎপরবর্তীকালে শিল্প বিপ্লব। বিগত দুই থেকে তিন শত বছরে বহু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছে এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য হল এই কথা যে, ১৯৪৬ সালের পূর্বেকার ২০০ বছর এবং ১৯৪৬ সালের পরের ৩০ বছর অবদানের ব্যাপ্তিতে প্রায় সমান। আজ থেকে নিয়ে পিছনের দিকে তিন দশকের অবদান বিগত একশত বছরের অবদানকে ব্যাপ্তিতে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং আগামী বিশ বছরের অবদান অবিস্মরণীয় এবং অকল্পনীয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বর্তমান প্রজন্ম প্রযুক্তিবান্ধব এবং বর্তমান প্রযুক্তিও তারুণ্য ও কৈশোরবান্ধব। প্রযুক্তির এই উদারতার সুযোগ বাংলাদেশের তরুণগণকে গ্রহণ করতেই হবে। প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প ও ব্যবসার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা সহজতর এবং তা অধিকতর ফলপ্রসূ, শ্রমনির্ভর বা ভূমিনির্ভর ব্যবসা ও শিল্পের তুলনায়। চট্টগ্রাম মহানগর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। সমুদ্র তীরবর্তী মহানগর হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অন্য সব অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামের তরুণরা প্রায় একশত বছর যাবৎই অধিকতর বিদেশমুখী। বিদেশমুখী হওয়া ভালো কিন্তু যদি দুটি পায়ের মধ্যে একটি পা দেশে থাকে, তাহলে সোনায় সোহাগা। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক তরুণ সম্প্রদায় এই কথাটি যেন মনে রাখেন।
প্রফেসর ইউনূস একজন অর্থনীতিবিদ হলেও এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হলেও তিনি পুরস্কার পেয়েছিলেন শান্তিতে। ব্যাখ্যাটি কোনোমতেই দুর্বোধ্য নয়। শান্তির জন্ম মনে। শান্তির সঙ্গে সম্পর্ক অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যের। অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করে পুঁজির প্রাপ্যতা ও উদ্যোগের ওপর। বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষত নারী অশান্তিতে থাকে, কারণ তার নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাতন্ত্র্য নেই। প্রফেসর ড. ইউনূস লাখ লাখ মানুষের মাঝে শান্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। বিশ্বের জ্ঞানী ও গুণীজনরা প্রফেসর ইউনূসের কর্মের স্বীকৃতির মাধ্যমে স্বীকার করলেন, দৃশ্যমান সশস্ত্র সংঘাত নিরসনই একমাত্র শান্তিবাদী কাজ নয়। বস্তুত ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের মাধ্যমে শান্তিবাদী কার্যক্রমের ধারণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের মডেলে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পৃথিবীর ১১০টি দেশে সম্প্রসারিত হয়েছে। এমনকি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও সম্পদশালী দেশ আমেরিকার নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, ওহাইও প্রভৃতি রাজ্য বা প্রদেশ এবং বোস্টন, ডালাস, লসএঞ্জেলেস ইত্যাদি নগরীতেও এরূপ ক্ষুদ্রঋণ কর্মকাণ্ড চালু হয়েছে। গত চার থেকে পাঁচ বছর যাবৎ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সোস্যাল বিজনেস ধারণাটিকে পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন। গত চার বছর যাবৎ সোস্যাল বিজনেস বা সামাজিক ব্যবসা নামক তত্ত্বের বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি ব্যস্ত। সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দুটি কাজ প্রায় একই সঙ্গে করার চেষ্টা করছেন প্রফেসর ইউনূস ও তার সংগঠন। প্রথমত নবীন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং দ্বিতীয়ত সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে অংশীদারিত্ব সৃষ্টি। প্রফেসর ইউনূস বিশ্বাস করেন : ঋণ থেকে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। এটি টেকসই ও অনুকরণীয়ভাবে যুব সম্প্রদায়ের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের পথে নতুন সম্ভাবনার পথ সৃষ্টি করবে। অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করা বা সরকার কর্তৃক বিশাল কোনো অবকাঠামোগত নির্মাণ প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে গতানুগতিক চাকরির ক্ষেত্র তৈরির ধারা থেকে বের হয়ে এসে সামাজিক ব্যবসার পদ্ধতিতে বেকার ব্যক্তি নিজেই, সহজ টেকসই এবং সরাসরি ক্ষুদ্র অংশীদারিত্বের কাঠামোতে বিনিয়োগ করে, বিষয়টির মোড় ঘুরিয়ে দেবে। যার সমস্যা তাকে দিয়েই সমাধান; শুধু দরকার প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন।
প্রফেসর ড. ইউনূসের গ্রামের বাড়ি এবং আমার গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি দুটি গ্রাম; আকাশপথে দূরত্ব ১ কিলোমিটার, সড়কপথে দূরত্ব ২ কিলোমিটার। অতএব, প্রফেসর ইউনূসকে জানা, চেনা, তাকে নিয়ে আনন্দিত হওয়া, গর্বিত হওয়া, তার কথা সবাইকে বলা এটা যুগপৎ আমার অধিকার ও দায়িত্ব। প্রফেসর ইউনূস কোনোমতেই তার গ্রাম বা তার থানা হাটহাজারী বা তার জেলা চট্টগ্রাম বা তার মাতৃভূমি বাংলাদেশের গর্বের বিষয় নয়। তিনি এখন ধারণাগতভাবে বিশ্বের নাগরিক এবং বিশ্বের গর্ব।
নোবেল জয়ী ড. ইউনূস সুহৃদকে আবারও অভিনন্দন।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
www.generalibrahim.com
No comments:
Post a Comment