Friday, June 27, 2014

সারদা মামলায় এবার জেরা ব্যাঙ্ক, সেবি কর্তাদের

সারদা মামলায় এবার জেরা ব্যাঙ্ক, সেবি কর্তাদের

kunal
এই সময়: সিবিআই-কে লেখা সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে ইঙ্গিত ছিলই, কিন্ত্ত এই প্রথম সারদা মামলায় সরাসরি জড়িয়ে গেল এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নাম৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইডির তরফ থেকে ডেকে পাঠানো হয় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ফিনান্স বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এ কে মিশ্রকে৷ ছ' ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁকে জেরা করা হয়৷ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষকে ঋণ পাইয়ে দেওয়া নিয়ে তাঁর কাছে এদিন বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব চান ইডির অফিসারেরা৷ ইডি জানতে পেরেছে, গ্লোবাল অটোমোবাইল কারখানা তৈরির জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শান্তনুবাবু৷ সুদীপ্ত সেন এবং শান্তনু ঘোষের যৌথ ষড়যন্ত্রে যে ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তাদের ভূমিকা রয়েছে বুধবারই তা আদালতে জানিয়েছিল ইডি৷

সেবির কয়েকজন পদস্থ কর্তাকেও এদিন জেরা করা হয়৷ সারদার ব্যবসা বেআইনি জানার পর তারা ঠিক কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সিবিআই-এর তদন্তকারীরা সে কথা জানতে চান তাঁদের কাছ থেকে৷
অন্যদিকে, সারদা মামলায় রাজ্যের এক মন্ত্রীকে ডেকে পাঠানোর নির্দেশ দিতে বিচারকের কাছে বৃহস্পতিবার আবেদন জানালেন অন্যতম অভিযুক্ত সাসপেন্ড তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ৷ তিনি অবশ্য মন্ত্রীর নাম করেননি৷ তবে নাম উল্লেখ না করলেও তিনি রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করেছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে৷ কারণ, সংবাদ মাধ্যমের হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে সারদা সংস্থার এজেন্টদের বৈঠকে হাজির থেকে বক্তব্য পেশ করেছেন মদনবাবু৷ এই প্রসঙ্গে এদিন মদনবাবুর বক্তব্য জানতে চেয়ে ফোন কর হলে তিনি বলেন, 'যা সত্য তা একদিন উঠে আসবেই৷ এর বেশি আর কিছু বলব না৷'

কুণালবাবু ছাড়াও এদিন সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে আলিপুর আদালতে হাজির করে সিবিআই৷ সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী লোক৷ তাঁরা বাইরে গেলে প্রমাণ লোপাট করতে পারেন৷ তাই তাদের পাঁচ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠানো হোক৷ বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন৷

আদালতে এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আবেদন জানান, একই মামলায় রাজ্য পুলিশের সিট অভিযুক্তদের পুলিশ এবং জেল হেফাজত পেয়েছে৷ সিবিআই আবার নতুন করে সেই একই মামলায় তাদের পুলিশ হেফাজতের পর জেল হেফাজতে চাইছে৷ ফলে, কতদিন তাদের এভাবে জেলে থাকতে হবে তার ঠিক নেই৷ এছাড়া ধৃতদের জেরা করে তদন্ত খুব একটা এগোতে পারেনি সিবিআই৷ সুতরাং অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হোক৷ সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়, ধৃতদের জেরা করে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে৷ তদন্তের এখন প্রাথমিক পর্যায় চলছে সুতরাং ধৃতদের জামিন দেওয়া হলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে৷

দু-পক্ষের বক্তব্য শেষ হতেই কুণালবাবু বিচারকের উদ্দেশ্যে বলে ওঠেন, 'আমার আইনজীবী বলেছেন তা ঠিক আছে, কিন্ত্ত আমার কিছু বলার রয়েছে৷' বিচারক তাঁর দিকে তাকাতেই দাঁড়িয়ে থাকা কুণাল ঘোষ বলেন, 'এখানে আলোচনায় শুনলাম এজেন্টদের অনেকে আত্মহত্যা করেছে৷ তাদের মধ্যে তো এজেন্ট এবং আমানকারীরা রয়েছেন৷ আমি তো কোনওদিন এজেন্টদের মিটিংয়ে যাইনি৷ অথচ যারা এজেন্টদের মিটিংয়ে গিয়ে বসেছেন, ভাষণ দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এই চেয়ার থেকে কেন ডেকে পাঠানো এবং গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে না? আর, এই আদালত থেকেই তো বিভিন্ন মামলায় আমাকে জামিন দেওয়া হয়ছে৷ সুতরাং এই মামলাতেও জামিন দেওয়া হোক৷' বিচারক হারাধন মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়ে দেন, 'যা বলার তা আপনার আইনজীবীরাই বলেছেন৷'

No comments:

Post a Comment