মধ্যপ্রাচ্যে আরেক আফগানিস্তান ইরাক
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জুন, ২০১৪
ইরাকের সুন্নি যোদ্ধাদের মসুল ও তিকরিত দখলে সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ন্ত্রিত দেশটির মানচিত্রই বদলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে প্রায় একশ বছর আগে ওসমানীয় শাসনের পতনের পর পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর যে সীমানা নির্ধারিত হয়েছিল তাও বদলে যেতে পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উদ্ভব ঘটতে পারে নতুন আঞ্চলিক জোটের।
দ্য ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লিভ্যান্টের (আইএসআইএল) আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী কালো পতাকা উত্তোলন করে মসুল দখল অভিযান চালালে ইরাকের সেনাবাহিনী যুদ্ধ না করে পালিয়ে গেছে। ফলে ইরাকের অখণ্ডতা নিয়েই এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তারা যখন বাগদাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র এ আশংকা নিয়ে জেগে উঠছে যে এই জিহাদিরা মধ্যপ্রাচ্যের কেন্দ্রস্থলে একটি বিপজ্জনক ঘাঁটি তৈরি করতে পারে। এটা হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের আরেকটি আফগানিস্তান।
আমরা যা দেখছি তা হচ্ছে ক্ষমতার পতন। প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকির সরকার আর কখনোই আগের মতো ক্ষমতাকে সংহত করতে পারবেন না, বলছিলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের পশ্চিম এশিয়া বিশেষজ্ঞ ফাওয়াজ জর্জেস। তিনি বলেন, নিশ্চিতই, আমরা যা দেখছি তা হল নতুন করে সীমান্ত আঁকার পাঁয়তারা।
ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার ইরাকের শীর্ষ শিয়া আলেম গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ আলি আল-সিস্তানি সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সুন্নি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়ার জন্য ইরাকিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শিয়া প্রধানমন্ত্রী মালিকির আহ্বানে দেশে জরুরি অবস্থা জারিতে সংসদ অনিহা দেখানোর পরই সিস্তানি এ আহ্বান জানান। সংসদের সুন্নি ও কুর্দি এমপিরা মালিকির আহ্বানে সাড়া দেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সুন্নি যোদ্ধাদের ক্ষমতাকে বড় করে দেখা হচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে তাদের আমেরিকার সমর্থন নিয়ে পরাজিত করেছিল সুন্নি উপজাতীয়রা। কিন্তু এখন তারা মালিকি সরকারের সুন্নিদের প্রতি সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে সুন্নিদের ক্ষোভকে বাড়িয়ে তুলছে। সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সেনাবাহিনীও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
ফাওয়াজ বলেন, বস্তুত আইএসআইএলের গত বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হল তারা বিলুপ্ত ইরাকি সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের নিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে। আপনি যদি লক্ষ্য করেন তা হলে দেখবেন যে তারা দক্ষ ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীর মতোই যুদ্ধ করছে। তারা আত্মপ্রত্যয়ী, তাদের কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ আছে এবং তারা যুদ্ধ কৌশল দ্বারা অনুপ্রাণিত। আইএসআইএলে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সাবেক বাথিস্ট সদস্যরা, রয়েছে অক্ষত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এবং উপজাতীয়রা। তারা সবাই মালিকিকে হটাতে চায়। এখন পর্যন্ত যেসব শহর দখল করা হয়েছে সেগুলো সুন্নি অধ্যুষিত।
ফাওয়াজ বলেন, ইরাক কখনও সুস্থ হয়নি, এটা একটা বিকলাঙ্গ দেশ। এই সংকট এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে যাতে দেশটি ৩-৪ টুকরো হয়ে যাবে। দেশটাকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য দরকার নতুন নেতা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। সেখানে এটারই অভাব।
১৭শ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে আইএসআইএল : ইরাকের বিভিন্ন শহর দখল করে নেয়ার পর সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লিভ্যান্ট (আইএসআইএল) ১৭শ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে। এই দাবির সপক্ষে তারা রোববার টুইটারে কিছু স্থিরচিত্রও প্রকাশ করেছে।
আরও একটি শহর দখল : মসুল ও তিকরিতের পর ইরাকের তুর্কি অধ্যুষিত তাল আফার শহরটি রোববার দখল করে নিয়েছে আইএসআইএলের জঙ্গিরা। শহরের স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, এক লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীরা শহরে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। বিবিসি, রয়টার্স।
- See more at: http://www.jugantor.com/ten-horizon/2014/06/17/112116#sthash.F2HnDlng.dpufদ্য ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লিভ্যান্টের (আইএসআইএল) আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী কালো পতাকা উত্তোলন করে মসুল দখল অভিযান চালালে ইরাকের সেনাবাহিনী যুদ্ধ না করে পালিয়ে গেছে। ফলে ইরাকের অখণ্ডতা নিয়েই এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তারা যখন বাগদাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র এ আশংকা নিয়ে জেগে উঠছে যে এই জিহাদিরা মধ্যপ্রাচ্যের কেন্দ্রস্থলে একটি বিপজ্জনক ঘাঁটি তৈরি করতে পারে। এটা হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের আরেকটি আফগানিস্তান।
আমরা যা দেখছি তা হচ্ছে ক্ষমতার পতন। প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকির সরকার আর কখনোই আগের মতো ক্ষমতাকে সংহত করতে পারবেন না, বলছিলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের পশ্চিম এশিয়া বিশেষজ্ঞ ফাওয়াজ জর্জেস। তিনি বলেন, নিশ্চিতই, আমরা যা দেখছি তা হল নতুন করে সীমান্ত আঁকার পাঁয়তারা।
ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার ইরাকের শীর্ষ শিয়া আলেম গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ আলি আল-সিস্তানি সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সুন্নি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়ার জন্য ইরাকিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শিয়া প্রধানমন্ত্রী মালিকির আহ্বানে দেশে জরুরি অবস্থা জারিতে সংসদ অনিহা দেখানোর পরই সিস্তানি এ আহ্বান জানান। সংসদের সুন্নি ও কুর্দি এমপিরা মালিকির আহ্বানে সাড়া দেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সুন্নি যোদ্ধাদের ক্ষমতাকে বড় করে দেখা হচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে তাদের আমেরিকার সমর্থন নিয়ে পরাজিত করেছিল সুন্নি উপজাতীয়রা। কিন্তু এখন তারা মালিকি সরকারের সুন্নিদের প্রতি সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে সুন্নিদের ক্ষোভকে বাড়িয়ে তুলছে। সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সেনাবাহিনীও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
ফাওয়াজ বলেন, বস্তুত আইএসআইএলের গত বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হল তারা বিলুপ্ত ইরাকি সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের নিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে। আপনি যদি লক্ষ্য করেন তা হলে দেখবেন যে তারা দক্ষ ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীর মতোই যুদ্ধ করছে। তারা আত্মপ্রত্যয়ী, তাদের কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ আছে এবং তারা যুদ্ধ কৌশল দ্বারা অনুপ্রাণিত। আইএসআইএলে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সাবেক বাথিস্ট সদস্যরা, রয়েছে অক্ষত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এবং উপজাতীয়রা। তারা সবাই মালিকিকে হটাতে চায়। এখন পর্যন্ত যেসব শহর দখল করা হয়েছে সেগুলো সুন্নি অধ্যুষিত।
ফাওয়াজ বলেন, ইরাক কখনও সুস্থ হয়নি, এটা একটা বিকলাঙ্গ দেশ। এই সংকট এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে যাতে দেশটি ৩-৪ টুকরো হয়ে যাবে। দেশটাকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য দরকার নতুন নেতা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। সেখানে এটারই অভাব।
১৭শ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে আইএসআইএল : ইরাকের বিভিন্ন শহর দখল করে নেয়ার পর সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লিভ্যান্ট (আইএসআইএল) ১৭শ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে। এই দাবির সপক্ষে তারা রোববার টুইটারে কিছু স্থিরচিত্রও প্রকাশ করেছে।
আরও একটি শহর দখল : মসুল ও তিকরিতের পর ইরাকের তুর্কি অধ্যুষিত তাল আফার শহরটি রোববার দখল করে নিয়েছে আইএসআইএলের জঙ্গিরা। শহরের স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, এক লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীরা শহরে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। বিবিসি, রয়টার্স।
No comments:
Post a Comment