চট্টগ্রামের আইনশৃংখলা
প্রকাশ : ১৭ জুন, ২০১৪
এক সময় চট্টগ্রাম অঞ্চলে অপহরণের ঘটনা ঘটত বেশি, বিশেষত গত চারদলীয় জোট শাসনামলে। বর্তমানে অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। বরং আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতিতে আতংকে দিন কাটাচ্ছে চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্র বলছে, নগরীতে গত সাড়ে তিন বছরে খুন হয়েছে ৩০৭ জন, নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৮২৭ জন, অপহরণের শিকার হয়েছে ১০৬ জন। চলতি বছরের গত ৫ মাসে খুন হয়েছে ৪৫ জন, অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৩২টি। বস্তুত যেসব ঘটনায় মামলা হয়েছে, এসব হল কেবল তারই পরিসংখ্যান। এর বাইরেও যে খুন, অপহরণ, নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নগরীতে গত কয়েক মাসে একাধিক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএসের ছাত্র কায়সারুল ইসলাম নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর কর্ণফুলী নদীতে তার লাশ পাওয়া গেছে। পাহাড়তলী থানার সমুদ্র উপকূলীয় ঝাউতলা এলাকায় পাওয়া গেছে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের মস্তকবিহীন লাশ। এ দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখনও অনুদ্ঘাটিত। বস্তুত নগরীতে প্রতি সপ্তাহেই দু-একটি খুন, অপহরণ, গুপ্তহত্যার ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি আতংকজনক বৈকি।
শুধু চট্টগ্রাম নয়, অনেক স্থানেই অপহরণ-গুম-খুনের ব্যাপকতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। এমন কোনো দিন নেই, যেদিন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত এক বা একাধিক খবর থাকে না। বিষয়টি এখন মানুষের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কে কখন কোথা থেকে অপহৃত হবে, কেউ জানে না। স্বভাবতই অপহরণ-গুম-খুন ঘিরে দেশে এক ধরনের ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ এ অবস্থার অবসান চায়। আর সে কারণেই চায় এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার পেছনের সত্যটি দ্রুত উদ্ঘাটিত হোক।
আইনশৃংখলা নিয়ে মানুষের উৎকণ্ঠার একটি বড় কারণ হল, এ ধরনের অনেক ঘটনায় সরকারের বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে পড়া। দেশে কয়েক বছর ধরে একের পর এক অপহরণ, গুম, খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে দুবছর আগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অপহরণ ও গুমের ঘটনা এবং সাম্প্রতিক নারায়ণগঞ্জের সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর মানুষের মনে বিরাজ করছে চরম নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি ও আতংক। ওই ঘটনায় বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামনে আসায় মানুষ অধিকতর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তখন তা ভাবনার বিষয় বৈকি।
এ অবস্থার অবসানে তথা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে স্বভাবতই বিশেষ বাহিনীর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি আমলে নেয়া দরকার। লক্ষণীয়, শুধু নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নয়, বেশিরভাগ অপহরণ ও গুমের ঘটনাই ঘটছে আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে। অপহৃতদের স্বজনরা অনেক ক্ষেত্রেই সন্দেহ প্রকাশ এবং অভিযোগ করেছেন যে, এসব ঘটনার সঙ্গে বিশেষ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। এমন প্রতিটি অভিযোগেরই যথাযথ তদন্ত হওয়া জরুরি। হতে পারে, সমাজের নানা শ্রেণীর দুর্বৃত্ত ও অপরাধী তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধারে অপহরণ, গুম ও খুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করছে আইনশৃংখলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু সদস্যকে। সেক্ষেত্রে এর পুরো দায়ভার গিয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্ট গোটা বাহিনীটির ওপরই। এটি সেই বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ বাস্তবতায় সংশ্লিষ্ট আইনশৃংখলা বাহিনীর এ ধরনের সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সেই বাহিনীর সংস্কারের বিষয়েও অবিলম্বে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
- See more at: http://www.jugantor.com/editorial/2014/06/17/112201#sthash.usiFmRpY.dpufশুধু চট্টগ্রাম নয়, অনেক স্থানেই অপহরণ-গুম-খুনের ব্যাপকতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। এমন কোনো দিন নেই, যেদিন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত এক বা একাধিক খবর থাকে না। বিষয়টি এখন মানুষের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কে কখন কোথা থেকে অপহৃত হবে, কেউ জানে না। স্বভাবতই অপহরণ-গুম-খুন ঘিরে দেশে এক ধরনের ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ এ অবস্থার অবসান চায়। আর সে কারণেই চায় এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার পেছনের সত্যটি দ্রুত উদ্ঘাটিত হোক।
আইনশৃংখলা নিয়ে মানুষের উৎকণ্ঠার একটি বড় কারণ হল, এ ধরনের অনেক ঘটনায় সরকারের বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে পড়া। দেশে কয়েক বছর ধরে একের পর এক অপহরণ, গুম, খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে দুবছর আগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অপহরণ ও গুমের ঘটনা এবং সাম্প্রতিক নারায়ণগঞ্জের সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর মানুষের মনে বিরাজ করছে চরম নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি ও আতংক। ওই ঘটনায় বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামনে আসায় মানুষ অধিকতর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তখন তা ভাবনার বিষয় বৈকি।
এ অবস্থার অবসানে তথা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে স্বভাবতই বিশেষ বাহিনীর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি আমলে নেয়া দরকার। লক্ষণীয়, শুধু নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নয়, বেশিরভাগ অপহরণ ও গুমের ঘটনাই ঘটছে আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে। অপহৃতদের স্বজনরা অনেক ক্ষেত্রেই সন্দেহ প্রকাশ এবং অভিযোগ করেছেন যে, এসব ঘটনার সঙ্গে বিশেষ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। এমন প্রতিটি অভিযোগেরই যথাযথ তদন্ত হওয়া জরুরি। হতে পারে, সমাজের নানা শ্রেণীর দুর্বৃত্ত ও অপরাধী তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধারে অপহরণ, গুম ও খুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করছে আইনশৃংখলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু সদস্যকে। সেক্ষেত্রে এর পুরো দায়ভার গিয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্ট গোটা বাহিনীটির ওপরই। এটি সেই বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ বাস্তবতায় সংশ্লিষ্ট আইনশৃংখলা বাহিনীর এ ধরনের সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সেই বাহিনীর সংস্কারের বিষয়েও অবিলম্বে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
No comments:
Post a Comment