মোক্তারের বেআইনি বাড়ি ভাঙতে তত্পরতা, ছাড় তৃণমূল এমএলএ-র
তাপস প্রামাণিক
আবারও সেই 'মাজদিয়ায় জেল আর রায়গঞ্জে বেল'-এর কাণ্ড৷
প্রশ্নটা উঠছে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার দু'মুখো নীতি নিয়ে৷
বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে বন্দর এলাকার কংগ্রেস নেতা মহম্মদ মোক্তারের নির্মীয়মাণ একটি তিনতলা বাড়ি দুরমুশ করে দিয়ে আসে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা৷ অথচ, রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাম আলির বিরুদ্ধে দরগা রোডে বেআইনি বহুতল নির্মাণের অভিযোগ উঠলেও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুরসভা!
পুরসভা সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার ২৫ নম্বর দরগা রোডে কেআইটি স্কিম ৩৫-এর মধ্যে একটি জি+ফোর (পাঁচতলা) বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল বিল্ডিং বিভাগ৷ কিন্ত্ত বাস্তবে সেখানে জি+সিক্স বা সাততলা বাড়ি তৈরি হয়েছে৷ উপরের দু'টি তলের জন্য পুরসভার কাছ থেকে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমতি নেওয়াও হয়নি৷ এই বাড়িটিরই মালিক রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাম আলি৷ বিষয়টি নজরে আসার পরেই বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা বিধায়কের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত তৃণমূল নেতৃত্বের চাপে তাঁরা শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হন৷
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়েও কি দু'-মুখো নীতি নিয়ে চলছেন পুরকর্তারা৷ বন্দর এলাকায় তৃণমূলের একচেটিয়া রাজনৈতিক আধিপত্যে কংগ্রেস নেতা মোক্তার থাবা বসাচ্ছেন বলেই কি তাঁকে বার বার নিশানা বানানো হচ্ছে?
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তীর দাবি, মেটিয়াবুরুজের পি ৭৯/১ মুদিয়ালি রোডে তিনতলা বাড়ি নির্মাণের জন্য বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল৷ বিল্ডিং প্ল্যান অনুসারে বাড়িটির মালিক মোক্তারের বাবা মহম্মদ শাকিল৷ বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, সেখানে যে পুরোনো বাড়ি রয়েছে, সেটিকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলতে হবে৷ কিন্ত্ত সেই নির্দেশ মানা হয়নি৷ তার উপরেই তিনতলা বাড়ি তৈরি হচ্ছিল৷ বিল্ডিং প্ল্যানে বাড়ির চার পাশে যে পরিমাণ জায়গা ছাড়তে বলা হয়েছিল, তা-ও মানা হয়নি৷ সে জন্যই বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷
তা হলে একই অভিযোগে কেন তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা৷ পুরকমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, 'বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেলেই সাধারণত এফআইআর করা হয়৷ এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে জানি না৷ খোঁজ নিয়ে দেখব৷'
বিল্ডিং বিভাগের ডিজি (১) অনিন্দ্য কারফর্মা বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না৷ তা ছাড়া বেআইনি বাড়ির বিষয় আমি দেখি না৷ এ নিয়ে আমার সঙ্গে কেউ কোনও দিন আলোচনা করতেও আসেননি৷' ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'ওখানে যেটা হয়েছে, পুরোপুরি বেআইনি৷ আমরা আগে এক বার এফআইআর করেছিলাম৷ তার পর আর বিষয়টি বেশি দূর এগয়নি৷'
কংগ্রেস নেত্রী মালা রায়ের অভিযোগ, 'শাসকদলের মদতেই শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণ চলছে৷ সে সব ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়াও হচ্ছে না৷ অথচ মোক্তারের বাড়ি ভাঙতে পুরসভার ধৈর্য ধরছে না৷' মোক্তার বলেন, 'বিল্ডিং প্ল্যান নিয়েই আমরা বাড়ি বানাচ্ছিলাম৷ তা সত্ত্বেও পুরসভা বিনা নোটিসে বাড়ি ভেঙে দিয়ে গেল৷ আমি কংগ্রেস করি বলেই বার বার আমার সঙ্গে এ রকম ব্যবহার করা হচ্ছে৷' মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'আইন মেনেই বেআইনি বাড়ি ভেঙেছে পুরসভা৷'
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/kmc-md-mukhtar-sohram-ali-illeagal-construction/articleshow/37269388.cms?
তাপস প্রামাণিক
আবারও সেই 'মাজদিয়ায় জেল আর রায়গঞ্জে বেল'-এর কাণ্ড৷
প্রশ্নটা উঠছে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার দু'মুখো নীতি নিয়ে৷
বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে বন্দর এলাকার কংগ্রেস নেতা মহম্মদ মোক্তারের নির্মীয়মাণ একটি তিনতলা বাড়ি দুরমুশ করে দিয়ে আসে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা৷ অথচ, রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাম আলির বিরুদ্ধে দরগা রোডে বেআইনি বহুতল নির্মাণের অভিযোগ উঠলেও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুরসভা!
পুরসভা সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার ২৫ নম্বর দরগা রোডে কেআইটি স্কিম ৩৫-এর মধ্যে একটি জি+ফোর (পাঁচতলা) বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল বিল্ডিং বিভাগ৷ কিন্ত্ত বাস্তবে সেখানে জি+সিক্স বা সাততলা বাড়ি তৈরি হয়েছে৷ উপরের দু'টি তলের জন্য পুরসভার কাছ থেকে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমতি নেওয়াও হয়নি৷ এই বাড়িটিরই মালিক রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাম আলি৷ বিষয়টি নজরে আসার পরেই বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা বিধায়কের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত তৃণমূল নেতৃত্বের চাপে তাঁরা শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হন৷
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়েও কি দু'-মুখো নীতি নিয়ে চলছেন পুরকর্তারা৷ বন্দর এলাকায় তৃণমূলের একচেটিয়া রাজনৈতিক আধিপত্যে কংগ্রেস নেতা মোক্তার থাবা বসাচ্ছেন বলেই কি তাঁকে বার বার নিশানা বানানো হচ্ছে?
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তীর দাবি, মেটিয়াবুরুজের পি ৭৯/১ মুদিয়ালি রোডে তিনতলা বাড়ি নির্মাণের জন্য বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল৷ বিল্ডিং প্ল্যান অনুসারে বাড়িটির মালিক মোক্তারের বাবা মহম্মদ শাকিল৷ বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, সেখানে যে পুরোনো বাড়ি রয়েছে, সেটিকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলতে হবে৷ কিন্ত্ত সেই নির্দেশ মানা হয়নি৷ তার উপরেই তিনতলা বাড়ি তৈরি হচ্ছিল৷ বিল্ডিং প্ল্যানে বাড়ির চার পাশে যে পরিমাণ জায়গা ছাড়তে বলা হয়েছিল, তা-ও মানা হয়নি৷ সে জন্যই বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷
তা হলে একই অভিযোগে কেন তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা৷ পুরকমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, 'বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেলেই সাধারণত এফআইআর করা হয়৷ এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে জানি না৷ খোঁজ নিয়ে দেখব৷'
বিল্ডিং বিভাগের ডিজি (১) অনিন্দ্য কারফর্মা বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না৷ তা ছাড়া বেআইনি বাড়ির বিষয় আমি দেখি না৷ এ নিয়ে আমার সঙ্গে কেউ কোনও দিন আলোচনা করতেও আসেননি৷' ডিজি (২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'ওখানে যেটা হয়েছে, পুরোপুরি বেআইনি৷ আমরা আগে এক বার এফআইআর করেছিলাম৷ তার পর আর বিষয়টি বেশি দূর এগয়নি৷'
কংগ্রেস নেত্রী মালা রায়ের অভিযোগ, 'শাসকদলের মদতেই শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণ চলছে৷ সে সব ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়াও হচ্ছে না৷ অথচ মোক্তারের বাড়ি ভাঙতে পুরসভার ধৈর্য ধরছে না৷' মোক্তার বলেন, 'বিল্ডিং প্ল্যান নিয়েই আমরা বাড়ি বানাচ্ছিলাম৷ তা সত্ত্বেও পুরসভা বিনা নোটিসে বাড়ি ভেঙে দিয়ে গেল৷ আমি কংগ্রেস করি বলেই বার বার আমার সঙ্গে এ রকম ব্যবহার করা হচ্ছে৷' মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'আইন মেনেই বেআইনি বাড়ি ভেঙেছে পুরসভা৷'
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/kmc-md-mukhtar-sohram-ali-illeagal-construction/articleshow/37269388.cms?
No comments:
Post a Comment