বিরোধী জোটে দলের সংখ্যা যত বাড়ছে, আন্দোলনে যোগ হচ্ছে তত শূন্য
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোটে দলের সংখ্যা যতই বাড়ছে, আন্দোলনে যোগ হচ্ছে তত শূন্য। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির ‘তথাকথিত’ নির্বাচনের পর বিরোধী জোটটি সরকারের বিরুদ্ধে কেবল আন্দোলনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে।
১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের রিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে ১৯৯৮ সালে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠন করা হয়। এতে একটি ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতেও সক্ষম হয় জোটটি। এর ফলে ২০০১ সালের নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে চারদলীয় জোট। পরে ২০০৯ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এর বিরুদ্ধে ব্যাপকভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট আত্মপ্রকাশ করে। এ জোটে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাপ ভাসানী, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, ডেমোক্রেটিক লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ পিপল্স লীগ। গত ২৫ জানুয়ারি কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ১৮ দলীয় জোটে যোগ দেয় এবং এই রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ১৯ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়। কয়েকদিন আগে সাম্যবাদী দলের একটি অংশ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ১৯ দলের সঙ্গে থেকে আন্দোলন গড়ে তুলতে।
কিন্তু জোটে দিন দিন দল বাড়লেও আন্দোলনের ঘরে যোগ হচ্ছে কেবল শূন্য। আন্দোলন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে মতভিন্নতা। অভিযোগ রয়েছে, কর্মসূচি দিলে নেতারা মাঠে থাকেন না, কর্মীদেরও দেখা যায় না। কর্মীদের অভিযোগ হচ্ছে, কর্মসূচি দিয়ে নেতারা লাপাত্তা হয়ে যান। মাঠে নেতাদের টিকিটিও দেখা যায় না। এ ব্যাপারে নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে, মাঠ গরম করবে কর্মীরা। এভাবেই একজন কর্মী নেতা হয়ে ওঠেন। তারা বলেন, আমরাও কর্মী ছিলাম। মাঠে কাজ করেই তো নেতা হয়েছি। যুদ্ধ ময়দানে জেনারেলরা থাকেন না, থাকে সৈন্য-সামন্ত।
এ ব্যাপারে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ প্রতিবেদকসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমাদের নেতাদের হয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। র্যাব-পুলিশের যন্ত্রণায় আমরা নেতারা বাসা-বাড়িতে থাকতে পারি না। মাঠে নামলে করে গুলি। এ অবস্থায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আমরা আন্দোলনে নেই। আবার ধরা পড়ে জেলে গেলে অভিযোগ করা হয়, আন্দোলন থেকে বাঁচতে ম্যানেজ করে জেলে যায় নেতারা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান বলেন, আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। রাজপথে থেকে বুলেট-বোমা উপেক্ষা করে মিছিল-মিটিংয়ের অগ্রভাগে থেকে এরশাদকে বিদায় করেছি। বর্তমানে আমরা কী সেই আগের বয়সেই রয়েছি? আমাদের বয়স হয়েছে, শরীর দুর্বল হয়েছে। তাই যুবা বয়সের মতো রাজপথে থাকা তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কর্মীরাই মাঠে থাকবে।
এ ব্যাপরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৫০টি করে মামলা রয়েছে। এসব মামলায় প্রায় প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিতে হয়। তার ওপর রাস্তায় নামলেই সরাসরি গুলি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় সাধারণ কর্মীদের রাস্তামুখো করা একটি সমস্যা। তাই এ প্রেক্ষিতে কী করে একটি কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলা যায়?
এদিকে পুরনো চারদলীয় জোটে থাকা পাঁচটি দল এবং নতুনের মধ্যে এলডিপি, জাগপা, কল্যাণ পার্টি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া ১৯ দলীয় জোটের বাকি দলগুলো অনেকটা নামসর্বস্ব। ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নিলু, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন, ডেমোক্রেটিক লীগ মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ পিপল্স লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গরিব নেওয়াজের রাজনৈতিক কার্যালয়ের কোনো ঠিকানা নেই। বিভিন্ন ভাড়া বাসা, ব্যবসায়িক ছোট রুম ও বন্ধুদের অফিসেই চলে তাদের রাজনৈতিক চলাফেরা।
জোটের নেতাদের অভিযোগ, সমন্বয়ের অভাবে ১৯ দলের কর্মসূচি ঠিকমত পালিত হচ্ছে না। জোটের প্রধান দল বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে শরিক দলের নেতাদের সমন্বয়হীনতাই এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, সমন্বয়ের অভাব কোথাও কোথাও আছে। তারপরও আমরা কর্মসূচি সফল করার চেষ্টা করছি। আন্দোলনে থাকছি না তা নয়। তবে বড় দলের মাঝে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। কর্মসূচি সফল করতে জোটের সব দল আন্তরিক। ঈদের পরে বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে ১৯ দল মাঠে আসছে বলে জানান পার্থ।
জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতের ঢাকা মহানগরের এক নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জোটের মধ্যে সমন্বয় কমে গেছে। বাড়ছে জোটের নেতাদের মধ্যে দূরত্ব। ২৯ জানুয়ারির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি থাকলেও ১৯ দল ঢাকায় মিছিল বের করতে পারেনি।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, যে কোনো কর্মসূচি ঘোষণার আগে ও পরে জোটের সমন্বয় দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ কারণেই ১৯ দলের কর্মসূচি সফলভাবে পালিত হচ্ছে না। পল্টনে তার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বলে তিনি জানান। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্ধুর রিয়াল স্টেট ব্যবসা অফিসের পাশের একটি রুম নিয়ে লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
তবে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মওলানা আবদুল লতিফ নিজামী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নানা কারণে অনেক সময় দলের শীর্ষ নেতারা কর্মসূচিগুলোতে সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারেন না। সেজন্যই হয়তো জোটের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো জোটের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। সবকিছুই ঠিকঠাক মতো চলছে।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গত পাঁচ মাসে ১৯ দলের মাত্র দুটি মিটিং হয়েছে। ওই দুই মিটিংয়ে নেয়া কর্মসূচি ঠিকমত পালিত হতে দেখা যায়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারের বাধায় পণ্ড হয়েছে। তবে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জোটের শরিক দলের মধ্যে যে সমন্বয় প্রয়োজন তা না থাকায় সরকার আরও বেশি চড়াও হওয়ার সুযোগ পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
http://www.amardeshonline.com/ pages/details/2014/06/16/ 246841#.U56g-EBQySp
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোটে দলের সংখ্যা যতই বাড়ছে, আন্দোলনে যোগ হচ্ছে তত শূন্য। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির ‘তথাকথিত’ নির্বাচনের পর বিরোধী জোটটি সরকারের বিরুদ্ধে কেবল আন্দোলনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে।
১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের রিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে ১৯৯৮ সালে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠন করা হয়। এতে একটি ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতেও সক্ষম হয় জোটটি। এর ফলে ২০০১ সালের নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে চারদলীয় জোট। পরে ২০০৯ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এর বিরুদ্ধে ব্যাপকভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট আত্মপ্রকাশ করে। এ জোটে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাপ ভাসানী, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, ডেমোক্রেটিক লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ পিপল্স লীগ। গত ২৫ জানুয়ারি কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ১৮ দলীয় জোটে যোগ দেয় এবং এই রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ১৯ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়। কয়েকদিন আগে সাম্যবাদী দলের একটি অংশ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ১৯ দলের সঙ্গে থেকে আন্দোলন গড়ে তুলতে।
কিন্তু জোটে দিন দিন দল বাড়লেও আন্দোলনের ঘরে যোগ হচ্ছে কেবল শূন্য। আন্দোলন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে মতভিন্নতা। অভিযোগ রয়েছে, কর্মসূচি দিলে নেতারা মাঠে থাকেন না, কর্মীদেরও দেখা যায় না। কর্মীদের অভিযোগ হচ্ছে, কর্মসূচি দিয়ে নেতারা লাপাত্তা হয়ে যান। মাঠে নেতাদের টিকিটিও দেখা যায় না। এ ব্যাপারে নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে, মাঠ গরম করবে কর্মীরা। এভাবেই একজন কর্মী নেতা হয়ে ওঠেন। তারা বলেন, আমরাও কর্মী ছিলাম। মাঠে কাজ করেই তো নেতা হয়েছি। যুদ্ধ ময়দানে জেনারেলরা থাকেন না, থাকে সৈন্য-সামন্ত।
এ ব্যাপারে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ প্রতিবেদকসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমাদের নেতাদের হয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। র্যাব-পুলিশের যন্ত্রণায় আমরা নেতারা বাসা-বাড়িতে থাকতে পারি না। মাঠে নামলে করে গুলি। এ অবস্থায় আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আমরা আন্দোলনে নেই। আবার ধরা পড়ে জেলে গেলে অভিযোগ করা হয়, আন্দোলন থেকে বাঁচতে ম্যানেজ করে জেলে যায় নেতারা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান বলেন, আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। রাজপথে থেকে বুলেট-বোমা উপেক্ষা করে মিছিল-মিটিংয়ের অগ্রভাগে থেকে এরশাদকে বিদায় করেছি। বর্তমানে আমরা কী সেই আগের বয়সেই রয়েছি? আমাদের বয়স হয়েছে, শরীর দুর্বল হয়েছে। তাই যুবা বয়সের মতো রাজপথে থাকা তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কর্মীরাই মাঠে থাকবে।
এ ব্যাপরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৫০টি করে মামলা রয়েছে। এসব মামলায় প্রায় প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিতে হয়। তার ওপর রাস্তায় নামলেই সরাসরি গুলি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় সাধারণ কর্মীদের রাস্তামুখো করা একটি সমস্যা। তাই এ প্রেক্ষিতে কী করে একটি কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলা যায়?
এদিকে পুরনো চারদলীয় জোটে থাকা পাঁচটি দল এবং নতুনের মধ্যে এলডিপি, জাগপা, কল্যাণ পার্টি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া ১৯ দলীয় জোটের বাকি দলগুলো অনেকটা নামসর্বস্ব। ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নিলু, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন, ডেমোক্রেটিক লীগ মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ পিপল্স লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গরিব নেওয়াজের রাজনৈতিক কার্যালয়ের কোনো ঠিকানা নেই। বিভিন্ন ভাড়া বাসা, ব্যবসায়িক ছোট রুম ও বন্ধুদের অফিসেই চলে তাদের রাজনৈতিক চলাফেরা।
জোটের নেতাদের অভিযোগ, সমন্বয়ের অভাবে ১৯ দলের কর্মসূচি ঠিকমত পালিত হচ্ছে না। জোটের প্রধান দল বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে শরিক দলের নেতাদের সমন্বয়হীনতাই এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, সমন্বয়ের অভাব কোথাও কোথাও আছে। তারপরও আমরা কর্মসূচি সফল করার চেষ্টা করছি। আন্দোলনে থাকছি না তা নয়। তবে বড় দলের মাঝে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। কর্মসূচি সফল করতে জোটের সব দল আন্তরিক। ঈদের পরে বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে ১৯ দল মাঠে আসছে বলে জানান পার্থ।
জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতের ঢাকা মহানগরের এক নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জোটের মধ্যে সমন্বয় কমে গেছে। বাড়ছে জোটের নেতাদের মধ্যে দূরত্ব। ২৯ জানুয়ারির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি থাকলেও ১৯ দল ঢাকায় মিছিল বের করতে পারেনি।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, যে কোনো কর্মসূচি ঘোষণার আগে ও পরে জোটের সমন্বয় দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ কারণেই ১৯ দলের কর্মসূচি সফলভাবে পালিত হচ্ছে না। পল্টনে তার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বলে তিনি জানান। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্ধুর রিয়াল স্টেট ব্যবসা অফিসের পাশের একটি রুম নিয়ে লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
তবে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মওলানা আবদুল লতিফ নিজামী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নানা কারণে অনেক সময় দলের শীর্ষ নেতারা কর্মসূচিগুলোতে সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারেন না। সেজন্যই হয়তো জোটের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো জোটের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। সবকিছুই ঠিকঠাক মতো চলছে।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গত পাঁচ মাসে ১৯ দলের মাত্র দুটি মিটিং হয়েছে। ওই দুই মিটিংয়ে নেয়া কর্মসূচি ঠিকমত পালিত হতে দেখা যায়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারের বাধায় পণ্ড হয়েছে। তবে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জোটের শরিক দলের মধ্যে যে সমন্বয় প্রয়োজন তা না থাকায় সরকার আরও বেশি চড়াও হওয়ার সুযোগ পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
http://www.amardeshonline.com/
No comments:
Post a Comment