বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই ॥ তোফায়েল
শহীদ জননী স্মারক বক্তৃতা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। এ বিচারপ্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শীর্ষক’ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। জাহানারা ইমাম ছিলেন নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। স্মরণসভায় চলতি বছরের জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান করা হয়। ব্যক্তিপর্যায়ে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত ও সংগঠন পর্যায়ে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ কে স্মৃতিপদক দেয়া হয়। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের পক্ষে স্মৃতিপদক নেন সংগঠনটির চেয়ারপার্সন এ কে খন্দকার।
অনুষ্ঠানে একাত্তরে মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার বলেন, সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে রাখা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। তিনি এ দুটি বিষয় সংশোধনের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বতর্মান গতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
গত মঙ্গলবার জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা স্থগিতের ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের সমালোচনা করেন আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে যে আসামির অনুপস্থিতিতেও রায় দেয়া যাবে, কারণ এটি সাধারণ খুন বা ফৌজদারি মামলা নয়। এর পর হয়ত দেখা যাবে, রায় ঘোষণার আগে সব আসামিরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, জামায়াত নানা অজুহাতে বিচার দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে। এ সব সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী বিধিমালা সংশোধন করতে হবে।
স্মারক বক্তৃতায় শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বতর্মান অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি আশা করছেন, বড় বড় রাজনৈতিক ঘোষণা বন্ধ করে লেখাপড়ার ব্যাপারে সরকার আরেকটু আন্তরিকতা দেখাবে। স্মারক বক্তৃতায় জাফর ইকবাল বলেন, সারাদেশে জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রতিযোগিতা এখন একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা; এতে রাষ্ট্রেরও ভূমিকা আছে। লিখিতভাবে না হলেও মৌখিকভাবে খুব স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে- পাবলিক পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীকে বেশি করে নম্বর দিতে হবে, পাসের হার বাড়াতে হবে, পরীক্ষার ফল ভাল দেখাতে হবে। কিন্তু সর্বোচ্চ গ্রেড পাওয়া ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া দূরে থাকুক, পাস করতে পারে না।
জাফর ইকবাল আরও বলেন, দেশের বড় বড় পত্রিকাগুলো গাইড বইয়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সব বড় পত্রিকার লেখাপড়া পাতা এক একটা গাইড বই। পত্রিকাগুলো শিক্ষা নিয়ে বড় বড় কথা লেখে, গাইড বইয়ের উপদ্রব নিয়ে মন্তব্য করে, শিক্ষা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে। কিন্তু তারা নিজেরাই আবার পুরোপুরি গাইড বই হিসেবে মুখস্ত করার জন্য প্রশ্ন আর উত্তর ছাপিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রত্যেকটা প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। অথচ পত্রিকাগুলো এ নিয়ে তেমন কিছু লেখেনি, টকশোতে এ নিয়ে কথা হয়নি, শিক্ষাবিদরা কিছু বলেননি। তাঁরা হয়ত ধরে নিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হবেই। পরীক্ষাসংক্রান্ত গুরুতর সমস্যাগুলো এখনও সরকার স্বীকার করতে রাজি নয়, সমস্যা স্বীকার না করলে সমাধার হবে কিভাবে? ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দুবর্লতা উল্লেখ করে জাফর ইকবাল বলেন, সবাই বলে বাংলাদেশে তিন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, আসলে ৯ বা ১১ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর বই মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঠ্যসূচীতে রাখা হয়েছে- এমন অভিযোগ রয়েছে। যে দল ও দলের নেতাদের যুদ্ধাপরাদের জন্য এ দেশে বিচার করা হচ্ছে, সে দলের প্রতিষ্ঠাতার বই কিংবা আদর্শ যদি এ দেশের ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়, তবে এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে?
স্মরণসভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল।
অনুষ্ঠানে একাত্তরে মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার বলেন, সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে রাখা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। তিনি এ দুটি বিষয় সংশোধনের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বতর্মান গতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
গত মঙ্গলবার জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা স্থগিতের ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের সমালোচনা করেন আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে যে আসামির অনুপস্থিতিতেও রায় দেয়া যাবে, কারণ এটি সাধারণ খুন বা ফৌজদারি মামলা নয়। এর পর হয়ত দেখা যাবে, রায় ঘোষণার আগে সব আসামিরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, জামায়াত নানা অজুহাতে বিচার দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে। এ সব সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী বিধিমালা সংশোধন করতে হবে।
স্মারক বক্তৃতায় শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বতর্মান অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি আশা করছেন, বড় বড় রাজনৈতিক ঘোষণা বন্ধ করে লেখাপড়ার ব্যাপারে সরকার আরেকটু আন্তরিকতা দেখাবে। স্মারক বক্তৃতায় জাফর ইকবাল বলেন, সারাদেশে জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রতিযোগিতা এখন একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা; এতে রাষ্ট্রেরও ভূমিকা আছে। লিখিতভাবে না হলেও মৌখিকভাবে খুব স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে- পাবলিক পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীকে বেশি করে নম্বর দিতে হবে, পাসের হার বাড়াতে হবে, পরীক্ষার ফল ভাল দেখাতে হবে। কিন্তু সর্বোচ্চ গ্রেড পাওয়া ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া দূরে থাকুক, পাস করতে পারে না।
জাফর ইকবাল আরও বলেন, দেশের বড় বড় পত্রিকাগুলো গাইড বইয়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সব বড় পত্রিকার লেখাপড়া পাতা এক একটা গাইড বই। পত্রিকাগুলো শিক্ষা নিয়ে বড় বড় কথা লেখে, গাইড বইয়ের উপদ্রব নিয়ে মন্তব্য করে, শিক্ষা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে। কিন্তু তারা নিজেরাই আবার পুরোপুরি গাইড বই হিসেবে মুখস্ত করার জন্য প্রশ্ন আর উত্তর ছাপিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রত্যেকটা প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। অথচ পত্রিকাগুলো এ নিয়ে তেমন কিছু লেখেনি, টকশোতে এ নিয়ে কথা হয়নি, শিক্ষাবিদরা কিছু বলেননি। তাঁরা হয়ত ধরে নিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হবেই। পরীক্ষাসংক্রান্ত গুরুতর সমস্যাগুলো এখনও সরকার স্বীকার করতে রাজি নয়, সমস্যা স্বীকার না করলে সমাধার হবে কিভাবে? ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দুবর্লতা উল্লেখ করে জাফর ইকবাল বলেন, সবাই বলে বাংলাদেশে তিন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, আসলে ৯ বা ১১ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর বই মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঠ্যসূচীতে রাখা হয়েছে- এমন অভিযোগ রয়েছে। যে দল ও দলের নেতাদের যুদ্ধাপরাদের জন্য এ দেশে বিচার করা হচ্ছে, সে দলের প্রতিষ্ঠাতার বই কিংবা আদর্শ যদি এ দেশের ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়, তবে এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে?
স্মরণসভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল।
http://allbanglanewspapers.com/janakantha/
No comments:
Post a Comment