জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শুরু মৃত্যুর পাইপলাইন
রণজিৎ বিশ্বাস
: মৃত্যুর শক্তিমত্তা সম্পর্কে জানতে বড় ইচ্ছে করে। এটি বড় বিস্ময় বিস্তারী।
: কিন্তু, আমার কাছে কেন!
: মরণশীলের মৃত্যুচিন্তা নিয়ে আপনি গবেষণা করেন শুনেছি।
: করি, কিন্তু শেষ তো করতে পারি না!
: এ পর্যন্ত যতটুকু পেয়েছেন, তাই বলুন।
: মৃত্যু কাউকে ছাড়ে না। বাঙালী, বাংলাদেশী, হননশিল্পী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক, মৃদুসাম্প্রদায়িক, থকথকে সাম্প্রদায়িক, ছদ্মসাম্প্রদায়িক, ঝাপটাশিল্পী, যুদ্ধাপরাধী, তাদের পোষকপালক, সত্যাশ্রয়ী, মিথ্যাবাদী, চৌর্যশিল্পী, স্বাধীনতাপ্রেমী, দেশবিরোধী, মানবতাবাদী, রবীন্দ্রভক্ত ও রবীন্দ্রবিরোধী কেউ বাঁচতে পারবে না। সবাইকে জীবনের যাপন শেষ করতে হবে ও মারা যেতে হবে।
: মনে করুন যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, কোন দেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতাকে যারা হত্যা করে, যারা সেই হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্রে থাকে, যারা হত্যাকারীদের পুরস্কার দেয়, সসম্মান পুনর্বাসন করে, সংসদে বসার ব্যবস্থা করে দেয় এমনকি বিরোধী দলের নেতার আসনে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের কোলে বসায়, কাঁধে চড়ায় ও মাথায় নাচায়, যারা অভিভাবকের আসনে বসে বড় নোংরা ও বড় অনৈতিক ব্যক্তিত জীবন যাপন করে তারাও কি মারা যাবে?!
: যাবে। মারা যাবে। কেউই মৃত্যুর হাত থেকে পালাতে পারবে না। পৃথিবীর যে কোণেই থাকুন মৃত্যু আপনাকে ধরে ধরে আনবে। সেটাই সিস্টেম।
: যারা মুক্তিযোদ্ধা, যাদের জীবন বীরত্বব্যঞ্জক, যারা পরোপকারী, যারা নিজে না খেয়ে অন্যকে খাওয়ায়, যারা অন্যকে অভুক্ত রেখে তার খাবার নিজে খায়, যারা ক্ষমতা ও দায়িত্বের মধ্যে ফারাক পার্থক্য বোঝে না, যারা স্কুলড্রপআউট সন্তানকে প্রশ্রয় দিয়ে অর্থবিত্তের কুম্ভীলক বানায় এবং বিদেশে বাকসোপেটেরায় ভরে অর্থ পাচার করে তারাও কি এই সিস্টেমে পড়ে যাবে, তারাও কি জীবন রক্ষা করতে পারবে না?!
: না। না না না। কেউ জীবন রক্ষা করতে পারবে না।
: কিছু মনে করবেন না। একানেকশানে আমার লাস্ট প্রশ্ন- যারা, মনে করুন, যারা জেনুইন মুক্তিযোদ্ধা, যারা অন্যকিছু হতে গিয়ে ঘোরে-চক্করে মুক্তিযোদ্ধা, যারা মানুষকে তার যথাপ্রাপ্য বুঝিয়ে দেয় ও যারা দেয় না, যারা মানুষকে তার হক থেকে মাহ্্রুম করার জন্য অথবা কাউকে হক’এর থেকে বেশি দেয়ার জন্য কিংবা অকালে-সময়ে কাউকে অনেক কিছুতে ডুবিয়ে ভাসিয়ে অথবা ভরিয়ে দেয়ার জন্য মানুষের বুকে ও পিঠে ‘আমাদের’ ‘তোমাদের’, ‘তাহাদের’ ও ‘উহাদের’ কিংবা ‘দুশমনদের’ অথবা ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের’ জাতীয় লেবেল লাগায়, যারা ক্ষমতায় থাকার পরও জরিমানা গুণে টাকার বর্ণ সফেদ করে নেয়, কোন জাতির সবচেয়ে শোকের দিনে বারবার পাল্টানো নিজের জীবনের সবচেয়ে আনন্দদিন ফিট করে নেয় ও বৃহতাতিবৃহৎ পিষ্টক কাটার উল্লাস করে, যারা শিশু নিরপেক্ষ ও উন্মাদকে সমার্থক মনে করে, নিজের দেশকে যারা বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর পবিত্র স্বপ্নময় ও সম্ভাবনাময় মনে করে, যারা মনে করে- আমি আমি আমার দেশের ষোলো কোটি ভাগের এক ভাগের নিষ্কণ্টক মালিক এবং আমি আমি আমার দেশের গর্বিত ভূমিপুত্র, যারা মনে করে বিশ্বাস যার যার দেশ সবার, যারা মনে করে ধর্মভীরুতা গ্রাহ্য কিন্তু ধর্মান্ধতা বর্জ্য, যারা মনে করে মানুষ সর্বপ্রথম সর্বশেষ সর্বপ্রান্তিক ও সর্বশেষ বিচারে মানুষ, যারা মনে করে মানুষকে মানুষ ভাবার আগে তার জন্মপরিচয় ধর্মপরিচয় ও বংশপরিচয় দেখে নেয়া উচিত, যারা মনে করে সকল বিশ্বাসের মানুষের মৃত্যুতে একই শুভশব্দাবলী উচ্চারণ করা দরকার নেই, যারা মনে করে- সমাজকে সুন্দর করতে হলে মানুষের চাষে পরিণত না করে বাগানে সাজাতে হবে এবং বাগানে সাজাবার জন্য শতবর্ণের ও শত প্রজাতির ফুল ফুটতে দেয়ার মতো করে সব বিশ্বাস আদর্শ ও পরিচয়ের সব মানুষের পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষণা করতে হবে; যারা মনে করে- পশুপক্ষী সহজেই পশুপক্ষী, তরুলতা সহজেই তরুলতা কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় মানুষ; যারা মনে করে- মানুষ প্রথমবার জন্মগ্রহণ করে নিজের জন্য, পরে তাকে জন্মগ্রহণ করতে হয় মানুষের জন্য; যারা মনে করে- পৃথিবী মানবের তরে দানবের তরে নয়; যারা মনে করেÑ আমাদের অনেক ভাবাভাবির পরে ঠিক করে নিতে হবে- বিশ্বের সবচেয়ে শোভন ও পূতপবিত্র দেশটিকে আমরা মানবের হাতে রাখব না পাশবের হাতে তুলে দেব, যারা বিশ্বস্রষ্টা বিশ্বের সবার আর ভাবে- আমার বিধাতা শুধু আমার, তিনি শুধু আমাকেই সৃষ্টি করেছেন, তিনি শুধু আমারই দেখভাল করবেন এবং আমাকে স্বর্গে নিয়ে আর সবাইকে নরকে পাঠাবেন, যারা কাফের ও যারা মোনাফেক, যারা ফ্রিথিঞ্চার, যারা আস্তিক, যারা নাস্তিক, যারা সংশয়বাদী, যারা বাঁ হাতে আয় করে ও যারা মানুষের বাঁ হাতের আয়ের শিকার হয়, যারা জাতীয় সঙ্গীতকে জীবনের সেরা সাংগীতিক উচ্চারণ মনে করে তা গাইবার সময় মর্মতেজের সন্ধান পায়, যারা জাতীয় সঙ্গীতকে অসম্মান করে ও তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধিকে যুক্ত করে, যারা জাতীয় পতাকাকে খামচে ধরে ও তাই আবার গাড়িতে বাড়িতে ওড়াবার সুযোগ পায়, যারা নিশ্বাসে নিশ্বাসে বলে- চিরজীবী হোক বাংলাদেশ মাতৃভূমি আমার স্বদেশ, আমার কথা হলো- তাদেরও সবাইকে কি মরতে হবে??!! এদের মধ্যে যারা সবচেয়ে শক্তিমত্ত যারা মানুষকে মারতে মারতে প্রবল দর্পে চিৎকার করে- বিধাতা তুমি নাই, তারাও মারা যাবে?! তারা কি নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না?!
: দেখুন মশাই, আপনি আমাকে খুব বিরক্ত করছেন। একটি মাত্র কথাকে আপনি আমার মুখ দিয়ে বারবার কেন বলতে চাচ্ছেন?! আপনার ক্যারেকটার তো ভাল নয়! আপনি তো কিলবিলে পিলপিলে ঢিলঢিলে আর টিমটিমে মানুষ!! আপনাকে তো দু’নখের চাপে কেশকীটের মতো পিষে ফেলা উচিত! আমি তো আপনাকে একশ’ একবার বলেছি- কেউ দুনিয়াতে চিরদিন বেঁচে থাকতে পারবে না। ভাল খারাপ শুদ্ধাশুদ্ধ ও নষ্টভ্রষ্ট সব মানুষকেই এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। সংসারে প্রাণীসহ মানুষ, পশু ও পাশবেতর, কীট ও সরীসৃপ তক্ষক ও আরশোলা, পিঁপড়া ও হাতী, কাচকি মাছ ও তিমি, কচ্ছপ ও পিরানহা, গুইসাপ ও হায়েনা- সবাই, মশা থেকে ছারপোকা সবাই মারা যাবে। জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই তারা মৃত্যুর পাইপলাইনে ঢুকে যায়। মানবতাবাদী ও মানববিদ্বেষী-আমরা সবাই কিন্তু সেই পাইপ লাইনেই আছি। কার পাইপ কখন তাকে নলের শেষ মাথায় নিয়ে আসবে আর টুক করে মৃত্যুকূপে ফেলে দেবে, কেউ জানে না। স্বয়ং সর্বপ্রভু জানেন কিনা তাঁকে জিজ্ঞেস করতে হবে। ফোনের নেটওয়ার্ক ডিস্টার্ব না করলেই হয়।
লেখক : শ্রমজীবী কথা সাহিত্যিক।
: কিন্তু, আমার কাছে কেন!
: মরণশীলের মৃত্যুচিন্তা নিয়ে আপনি গবেষণা করেন শুনেছি।
: করি, কিন্তু শেষ তো করতে পারি না!
: এ পর্যন্ত যতটুকু পেয়েছেন, তাই বলুন।
: মৃত্যু কাউকে ছাড়ে না। বাঙালী, বাংলাদেশী, হননশিল্পী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক, মৃদুসাম্প্রদায়িক, থকথকে সাম্প্রদায়িক, ছদ্মসাম্প্রদায়িক, ঝাপটাশিল্পী, যুদ্ধাপরাধী, তাদের পোষকপালক, সত্যাশ্রয়ী, মিথ্যাবাদী, চৌর্যশিল্পী, স্বাধীনতাপ্রেমী, দেশবিরোধী, মানবতাবাদী, রবীন্দ্রভক্ত ও রবীন্দ্রবিরোধী কেউ বাঁচতে পারবে না। সবাইকে জীবনের যাপন শেষ করতে হবে ও মারা যেতে হবে।
: মনে করুন যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, কোন দেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতাকে যারা হত্যা করে, যারা সেই হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্রে থাকে, যারা হত্যাকারীদের পুরস্কার দেয়, সসম্মান পুনর্বাসন করে, সংসদে বসার ব্যবস্থা করে দেয় এমনকি বিরোধী দলের নেতার আসনে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের কোলে বসায়, কাঁধে চড়ায় ও মাথায় নাচায়, যারা অভিভাবকের আসনে বসে বড় নোংরা ও বড় অনৈতিক ব্যক্তিত জীবন যাপন করে তারাও কি মারা যাবে?!
: যাবে। মারা যাবে। কেউই মৃত্যুর হাত থেকে পালাতে পারবে না। পৃথিবীর যে কোণেই থাকুন মৃত্যু আপনাকে ধরে ধরে আনবে। সেটাই সিস্টেম।
: যারা মুক্তিযোদ্ধা, যাদের জীবন বীরত্বব্যঞ্জক, যারা পরোপকারী, যারা নিজে না খেয়ে অন্যকে খাওয়ায়, যারা অন্যকে অভুক্ত রেখে তার খাবার নিজে খায়, যারা ক্ষমতা ও দায়িত্বের মধ্যে ফারাক পার্থক্য বোঝে না, যারা স্কুলড্রপআউট সন্তানকে প্রশ্রয় দিয়ে অর্থবিত্তের কুম্ভীলক বানায় এবং বিদেশে বাকসোপেটেরায় ভরে অর্থ পাচার করে তারাও কি এই সিস্টেমে পড়ে যাবে, তারাও কি জীবন রক্ষা করতে পারবে না?!
: না। না না না। কেউ জীবন রক্ষা করতে পারবে না।
: কিছু মনে করবেন না। একানেকশানে আমার লাস্ট প্রশ্ন- যারা, মনে করুন, যারা জেনুইন মুক্তিযোদ্ধা, যারা অন্যকিছু হতে গিয়ে ঘোরে-চক্করে মুক্তিযোদ্ধা, যারা মানুষকে তার যথাপ্রাপ্য বুঝিয়ে দেয় ও যারা দেয় না, যারা মানুষকে তার হক থেকে মাহ্্রুম করার জন্য অথবা কাউকে হক’এর থেকে বেশি দেয়ার জন্য কিংবা অকালে-সময়ে কাউকে অনেক কিছুতে ডুবিয়ে ভাসিয়ে অথবা ভরিয়ে দেয়ার জন্য মানুষের বুকে ও পিঠে ‘আমাদের’ ‘তোমাদের’, ‘তাহাদের’ ও ‘উহাদের’ কিংবা ‘দুশমনদের’ অথবা ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের’ জাতীয় লেবেল লাগায়, যারা ক্ষমতায় থাকার পরও জরিমানা গুণে টাকার বর্ণ সফেদ করে নেয়, কোন জাতির সবচেয়ে শোকের দিনে বারবার পাল্টানো নিজের জীবনের সবচেয়ে আনন্দদিন ফিট করে নেয় ও বৃহতাতিবৃহৎ পিষ্টক কাটার উল্লাস করে, যারা শিশু নিরপেক্ষ ও উন্মাদকে সমার্থক মনে করে, নিজের দেশকে যারা বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর পবিত্র স্বপ্নময় ও সম্ভাবনাময় মনে করে, যারা মনে করে- আমি আমি আমার দেশের ষোলো কোটি ভাগের এক ভাগের নিষ্কণ্টক মালিক এবং আমি আমি আমার দেশের গর্বিত ভূমিপুত্র, যারা মনে করে বিশ্বাস যার যার দেশ সবার, যারা মনে করে ধর্মভীরুতা গ্রাহ্য কিন্তু ধর্মান্ধতা বর্জ্য, যারা মনে করে মানুষ সর্বপ্রথম সর্বশেষ সর্বপ্রান্তিক ও সর্বশেষ বিচারে মানুষ, যারা মনে করে মানুষকে মানুষ ভাবার আগে তার জন্মপরিচয় ধর্মপরিচয় ও বংশপরিচয় দেখে নেয়া উচিত, যারা মনে করে সকল বিশ্বাসের মানুষের মৃত্যুতে একই শুভশব্দাবলী উচ্চারণ করা দরকার নেই, যারা মনে করে- সমাজকে সুন্দর করতে হলে মানুষের চাষে পরিণত না করে বাগানে সাজাতে হবে এবং বাগানে সাজাবার জন্য শতবর্ণের ও শত প্রজাতির ফুল ফুটতে দেয়ার মতো করে সব বিশ্বাস আদর্শ ও পরিচয়ের সব মানুষের পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষণা করতে হবে; যারা মনে করে- পশুপক্ষী সহজেই পশুপক্ষী, তরুলতা সহজেই তরুলতা কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় মানুষ; যারা মনে করে- মানুষ প্রথমবার জন্মগ্রহণ করে নিজের জন্য, পরে তাকে জন্মগ্রহণ করতে হয় মানুষের জন্য; যারা মনে করে- পৃথিবী মানবের তরে দানবের তরে নয়; যারা মনে করেÑ আমাদের অনেক ভাবাভাবির পরে ঠিক করে নিতে হবে- বিশ্বের সবচেয়ে শোভন ও পূতপবিত্র দেশটিকে আমরা মানবের হাতে রাখব না পাশবের হাতে তুলে দেব, যারা বিশ্বস্রষ্টা বিশ্বের সবার আর ভাবে- আমার বিধাতা শুধু আমার, তিনি শুধু আমাকেই সৃষ্টি করেছেন, তিনি শুধু আমারই দেখভাল করবেন এবং আমাকে স্বর্গে নিয়ে আর সবাইকে নরকে পাঠাবেন, যারা কাফের ও যারা মোনাফেক, যারা ফ্রিথিঞ্চার, যারা আস্তিক, যারা নাস্তিক, যারা সংশয়বাদী, যারা বাঁ হাতে আয় করে ও যারা মানুষের বাঁ হাতের আয়ের শিকার হয়, যারা জাতীয় সঙ্গীতকে জীবনের সেরা সাংগীতিক উচ্চারণ মনে করে তা গাইবার সময় মর্মতেজের সন্ধান পায়, যারা জাতীয় সঙ্গীতকে অসম্মান করে ও তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধিকে যুক্ত করে, যারা জাতীয় পতাকাকে খামচে ধরে ও তাই আবার গাড়িতে বাড়িতে ওড়াবার সুযোগ পায়, যারা নিশ্বাসে নিশ্বাসে বলে- চিরজীবী হোক বাংলাদেশ মাতৃভূমি আমার স্বদেশ, আমার কথা হলো- তাদেরও সবাইকে কি মরতে হবে??!! এদের মধ্যে যারা সবচেয়ে শক্তিমত্ত যারা মানুষকে মারতে মারতে প্রবল দর্পে চিৎকার করে- বিধাতা তুমি নাই, তারাও মারা যাবে?! তারা কি নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না?!
: দেখুন মশাই, আপনি আমাকে খুব বিরক্ত করছেন। একটি মাত্র কথাকে আপনি আমার মুখ দিয়ে বারবার কেন বলতে চাচ্ছেন?! আপনার ক্যারেকটার তো ভাল নয়! আপনি তো কিলবিলে পিলপিলে ঢিলঢিলে আর টিমটিমে মানুষ!! আপনাকে তো দু’নখের চাপে কেশকীটের মতো পিষে ফেলা উচিত! আমি তো আপনাকে একশ’ একবার বলেছি- কেউ দুনিয়াতে চিরদিন বেঁচে থাকতে পারবে না। ভাল খারাপ শুদ্ধাশুদ্ধ ও নষ্টভ্রষ্ট সব মানুষকেই এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। সংসারে প্রাণীসহ মানুষ, পশু ও পাশবেতর, কীট ও সরীসৃপ তক্ষক ও আরশোলা, পিঁপড়া ও হাতী, কাচকি মাছ ও তিমি, কচ্ছপ ও পিরানহা, গুইসাপ ও হায়েনা- সবাই, মশা থেকে ছারপোকা সবাই মারা যাবে। জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই তারা মৃত্যুর পাইপলাইনে ঢুকে যায়। মানবতাবাদী ও মানববিদ্বেষী-আমরা সবাই কিন্তু সেই পাইপ লাইনেই আছি। কার পাইপ কখন তাকে নলের শেষ মাথায় নিয়ে আসবে আর টুক করে মৃত্যুকূপে ফেলে দেবে, কেউ জানে না। স্বয়ং সর্বপ্রভু জানেন কিনা তাঁকে জিজ্ঞেস করতে হবে। ফোনের নেটওয়ার্ক ডিস্টার্ব না করলেই হয়।
লেখক : শ্রমজীবী কথা সাহিত্যিক।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2014-06-03&ni=174848
No comments:
Post a Comment