তিয়ানআনমেন স্কয়ারে চীনা সেনাবাহিনী ছিল বিচলিত
চীনে ছাত্রদের রাজধানী বেজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ার দখল ১৯৮৯ সালের বসন্তকালে দ্বিতীয় মাসে পৌঁছে। চীনা নেতারা বিচলিত ও মতবিভক্ত হয়ে পড়েন। ছাত্রদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ দমনে সামরিক শক্তি প্রয়োগের প্রতি সমর্থন দানের অঙ্গীকার করতে শীর্ষ সেনা কমান্ডারদের হেডকোয়ার্টারে তলব করা হয়।
একজন এতে অস্বীকৃতি জানান। মেজর জেনারেল জু কিনজিয়ান বলেন, প্রতিবাদ বিক্ষোভ এক রাজনৈতিক সমস্যা এবং শক্তি বলে নয়, আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করা উচিত। এটি ছিল তার উর্ধতনদের প্রতি এক হতবুদ্ধিকর ভর্ৎসনা। তিনি ছিলেন শক্তিশালী ৩৮তম গ্রুপ আর্মির নেতা। তার কার্যকলাপ সম্পর্কে গবেষকদের নতুন বিবরণ থেকে এটা জানা যায়। গবেষকরা তার সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন। তিনি ঐতিহাসিক ইয়াং জিশেংকে বলেন, আমি ইতিহাসের চোখে অপরাধী হওয়ার চেয়ে বরং আমার শিরচ্ছেদ করা হোক তাই চাই। যদিও জেনারেল জুকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হয়, তবুও তার অবাধ্যতা কমিউনিস্ট পার্টিতে ভয়ের সঞ্চার করে এবং সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করতে পারে বলে গুজবের জন্ম দেয়। এতে নেতৃত্বের মনে এ বিশ্বাস দানা বাঁধতে থাকে যে, ছাত্রদের নেতৃত্বে চলমান বিক্ষোভ কমিউনিস্ট পার্টির অস্তিত্বের প্রতি হুমকি ছাড়া আর কিছুই নয়।
১৯৮৯-এর ৩ ও ৪ জুন বেজিংয়ে রক্তক্ষয়ী দমন অভিযান চালানোর আগে চীনা সেনাবাহিনীর ভিতর যে গোপন সলাপরামর্শ চলছিল, সেই সম্পর্কে কয়েক দফা তথ্য ফাঁস হয়েছে। জেনারেলের অবাধ্যতা ও এটি যে ভীতিভাবের সঞ্চার করেছিল, সেই সম্পর্কিত নতুন খবর ওইসব তথ্যে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে বাইরে চলে যাওয়া সেনাবাহিনীর দলিলপত্রে কিছু কিছু তথ্য রয়েছে। অন্যান্য তথ্য ২৫ বছর আগেকার ঘটনাবলীতে জড়িত দলীয়কর্মী, সাবেক সৈন্য ও অন্যান্য ব্যক্তির সাক্ষাতকারে প্রকাশ পায়। সেই সময়ে দলের প্রবীণতম নেতা দেং জিয়াওপিং দমন অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীর অবিচল আনুগত্যের প্রশংসা করেন এবং বিদেশীদের বর্ণনাতেও সেনাবাহিনী অনড় বাধ্যতার মূর্তি দেখা যায়। কিন্তু ওই বছরের ৪ জুনের আগে এবং এর পরবর্তী কয়েক মাসে সেনাবাহিনীতে দেয়া ভাষণ ও লেখা রিপোর্টে দেখা যায় যে, সেনাবাহিনী তাদের ওপর ন্যস্ত ওই নৃশংস কাজ নিয়ে অবিশ্বাস, বিভ্রান্তি, গুজব ও অনুতাপের কারণে বিচলিত হয়েছিল। পিপলস আর্মড পুলিশের অফিসার ক্যাপ্টেন ইয়াং দে’য়ান এক দলিলে লিখেছেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল এবং বিভ্রান্তিজনক। আমরা ওই লড়াইয়ের নির্মমতা ছোট করে দেখিয়েছিলাম। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরীর সংগৃহীত সামরিক দলিলপত্রের মধ্যে ইয়াংয়ের লেখাটিও ছিল। কোন কোন সাবেক সৈন্য ও কর্মকর্তা ওই সঙ্কটকালে তাদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে সম্মত হলেও তারা রাষ্ট্রের সেন্সরশিপ ও সাক্ষীদের স্তব্ধ করে দেয়ার নীতি নিয়ে ভীত। এর ফলে চীনের তরুণ প্রজন্ম আধুনিক চীনা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে অজ্ঞই থেকে গেছে। ১৯৮৯ সালে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন এমন এক সৈন্য লি জিয়াওমিং বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন অন্যায় করিনি, কিন্তু আমি সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে, একজন অংশগ্রহণকারী হিসেবে মনে করি, এটি চীনা সেনাবাহিনীর জন্য এক লজ্জাষ্কর ঘটনাই ছিল।
চীনা সৈন্যরা ৩ জুন পরদিন ভোরের মধ্যে যে কোন মূল্যে স্কয়ারটি পুনরায় দখল করার নির্দেশ পান। দেশের নেতারা ওই রাত প্রায় ৯-৩০টা থেকে ১০টার মধ্যে তাজা গুলি ব্যবহার অনুমোদন করেন। প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন এমন এক বিদ্বান ব্যক্তি উ রেনহুয়া এ কথা জানান। তিনি এখন লস এঞ্জেলেসে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, মৌখিকভাবে দেয়া ওই নির্দেশে কখন ও কিভাবে গুলি ছুড়তে হবে তার কোন উল্লেখ ছিল না এবং এটি খুব সম্ভবত সব সেনা ইউনিটের কাছেও পৌঁছেনি। তিনি এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে বলেন, শূন্যে গুলি চালানো হবে, না জনতার দিকে গুলি ছোড়া হবে, অস্পষ্ট ছিল। ৩৮তম গ্রুপ আর্মির সদস্য ওয়াং ইয়ংলি কিছু বেসামরিক লোকজন কিভাবে সৈন্যদের দিকে ইটপাটকেল ও বোতল ছুড়েছিল এবং তারপর লোহার রড নিয়ে সামরিক যানবাহনের ওপর হামলা চালয়েছিল, তার বর্ণনা দেন। -নিউইয়র্ক টাইমস।
একজন এতে অস্বীকৃতি জানান। মেজর জেনারেল জু কিনজিয়ান বলেন, প্রতিবাদ বিক্ষোভ এক রাজনৈতিক সমস্যা এবং শক্তি বলে নয়, আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করা উচিত। এটি ছিল তার উর্ধতনদের প্রতি এক হতবুদ্ধিকর ভর্ৎসনা। তিনি ছিলেন শক্তিশালী ৩৮তম গ্রুপ আর্মির নেতা। তার কার্যকলাপ সম্পর্কে গবেষকদের নতুন বিবরণ থেকে এটা জানা যায়। গবেষকরা তার সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন। তিনি ঐতিহাসিক ইয়াং জিশেংকে বলেন, আমি ইতিহাসের চোখে অপরাধী হওয়ার চেয়ে বরং আমার শিরচ্ছেদ করা হোক তাই চাই। যদিও জেনারেল জুকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হয়, তবুও তার অবাধ্যতা কমিউনিস্ট পার্টিতে ভয়ের সঞ্চার করে এবং সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করতে পারে বলে গুজবের জন্ম দেয়। এতে নেতৃত্বের মনে এ বিশ্বাস দানা বাঁধতে থাকে যে, ছাত্রদের নেতৃত্বে চলমান বিক্ষোভ কমিউনিস্ট পার্টির অস্তিত্বের প্রতি হুমকি ছাড়া আর কিছুই নয়।
১৯৮৯-এর ৩ ও ৪ জুন বেজিংয়ে রক্তক্ষয়ী দমন অভিযান চালানোর আগে চীনা সেনাবাহিনীর ভিতর যে গোপন সলাপরামর্শ চলছিল, সেই সম্পর্কে কয়েক দফা তথ্য ফাঁস হয়েছে। জেনারেলের অবাধ্যতা ও এটি যে ভীতিভাবের সঞ্চার করেছিল, সেই সম্পর্কিত নতুন খবর ওইসব তথ্যে রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে বাইরে চলে যাওয়া সেনাবাহিনীর দলিলপত্রে কিছু কিছু তথ্য রয়েছে। অন্যান্য তথ্য ২৫ বছর আগেকার ঘটনাবলীতে জড়িত দলীয়কর্মী, সাবেক সৈন্য ও অন্যান্য ব্যক্তির সাক্ষাতকারে প্রকাশ পায়। সেই সময়ে দলের প্রবীণতম নেতা দেং জিয়াওপিং দমন অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীর অবিচল আনুগত্যের প্রশংসা করেন এবং বিদেশীদের বর্ণনাতেও সেনাবাহিনী অনড় বাধ্যতার মূর্তি দেখা যায়। কিন্তু ওই বছরের ৪ জুনের আগে এবং এর পরবর্তী কয়েক মাসে সেনাবাহিনীতে দেয়া ভাষণ ও লেখা রিপোর্টে দেখা যায় যে, সেনাবাহিনী তাদের ওপর ন্যস্ত ওই নৃশংস কাজ নিয়ে অবিশ্বাস, বিভ্রান্তি, গুজব ও অনুতাপের কারণে বিচলিত হয়েছিল। পিপলস আর্মড পুলিশের অফিসার ক্যাপ্টেন ইয়াং দে’য়ান এক দলিলে লিখেছেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল এবং বিভ্রান্তিজনক। আমরা ওই লড়াইয়ের নির্মমতা ছোট করে দেখিয়েছিলাম। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরীর সংগৃহীত সামরিক দলিলপত্রের মধ্যে ইয়াংয়ের লেখাটিও ছিল। কোন কোন সাবেক সৈন্য ও কর্মকর্তা ওই সঙ্কটকালে তাদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে সম্মত হলেও তারা রাষ্ট্রের সেন্সরশিপ ও সাক্ষীদের স্তব্ধ করে দেয়ার নীতি নিয়ে ভীত। এর ফলে চীনের তরুণ প্রজন্ম আধুনিক চীনা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে অজ্ঞই থেকে গেছে। ১৯৮৯ সালে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন এমন এক সৈন্য লি জিয়াওমিং বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন অন্যায় করিনি, কিন্তু আমি সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে, একজন অংশগ্রহণকারী হিসেবে মনে করি, এটি চীনা সেনাবাহিনীর জন্য এক লজ্জাষ্কর ঘটনাই ছিল।
চীনা সৈন্যরা ৩ জুন পরদিন ভোরের মধ্যে যে কোন মূল্যে স্কয়ারটি পুনরায় দখল করার নির্দেশ পান। দেশের নেতারা ওই রাত প্রায় ৯-৩০টা থেকে ১০টার মধ্যে তাজা গুলি ব্যবহার অনুমোদন করেন। প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন এমন এক বিদ্বান ব্যক্তি উ রেনহুয়া এ কথা জানান। তিনি এখন লস এঞ্জেলেসে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, মৌখিকভাবে দেয়া ওই নির্দেশে কখন ও কিভাবে গুলি ছুড়তে হবে তার কোন উল্লেখ ছিল না এবং এটি খুব সম্ভবত সব সেনা ইউনিটের কাছেও পৌঁছেনি। তিনি এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে বলেন, শূন্যে গুলি চালানো হবে, না জনতার দিকে গুলি ছোড়া হবে, অস্পষ্ট ছিল। ৩৮তম গ্রুপ আর্মির সদস্য ওয়াং ইয়ংলি কিছু বেসামরিক লোকজন কিভাবে সৈন্যদের দিকে ইটপাটকেল ও বোতল ছুড়েছিল এবং তারপর লোহার রড নিয়ে সামরিক যানবাহনের ওপর হামলা চালয়েছিল, তার বর্ণনা দেন। -নিউইয়র্ক টাইমস।
No comments:
Post a Comment