শক্ত হাতে দমন হবে লালন-লেনিন অথবা ছবির হাট!
লিখেছেনঃ আরিফুজ্জামান তুহিন
লিখেছেনঃ আরিফুজ্জামান তুহিন
আ.লীগ এর আগেরবারের ক্ষমতায় আসা আর শেষ কথিত নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। এর আগেরবারও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর ইচ্ছে বা আর্শিবাদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসে। আর দ্বিতীয়বার এ সমর্থন আঞ্চলিক পরাশক্তি ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ ও দেশের সেনাবাহিনীর নিশ্চল ভূমিকার কারণে গণভবন থেকে নামতে হয়নি শেখ হাসিনাকে। কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে-শেখ হাসিনা সহ এন্তার আ.লীগের নেতা কর্মীরা বুঝে গেছেন সময় হাতে বেশি নেই। নগদ নারায়ন যা পাওয়া যায় তাই ভাল। দ্রুত কামাও, এলাকা লিজ দাও বেশ্যার দালাল অথবা মাফিয়াচক্রের কাছে। কারণ যে কোন মূহুর্তে ক্ষমতা হাত থেকে চলে যেতে পারে।এখন প্রশ্ন উঠতে পারে বিএনপিতো আন্দোলন জমাতে পারে না, জামায়াতের সাথে সরকারের আপোষরফা হয়েছে আর হেফাজত সরকারের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে তাহলে সরকার পড়বে কিভাবে? বাকি থাকে কি সেনা অভ্যুত্থান? মোটেও সেনাক্যু’র ঝুকির মধ্যে হাসিনা সরকার নেই। শুধু বাংলাদেশ নয় সকল নয়াউপনেবিশত দেশগুলোতে আশির দশকের মত আর সেনাক্যুর সম্ভাবনা একেদম শূন্যের কোঠায় প্রায় নেমে এসেছে। আপনারা বেয়াড়া প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে থাইল্যান্ডে কি হলো? সে প্রশ্নের উত্তরে ছোট করে বলে রাখি, সেই ক্যু হবার পর কোথাও থেকে কোন ফুলের মালা যায়নি।
লালন থেকে লেনিনঃ বাউল, ফকিরদের ওপর হামলা। হামলা হয়েছে যশোরের সংখ্যালঘুদের ওপর। গত পাঁচ বছরে যত সংখ্যালঘু ও ভিন্নামতালম্বি মানুষের ওপর হামলা হয়েছে তার পরিসংখ্যান এক জায়গায় জড়ো করলে গোটা বিএনপি জামাত জোট সরকারের সাথে তার আর কোন পার্থক্য থাকে না।
বাউল-ফকিরদের চুল দাড়ি কেটে তাদেরকে মোসলমান করা হয়েছে, পড়ানো হয়েছে তওবা। এটা শুধু ২০১১ সালের ৭ এপ্রিলে রাজবাড়ির পাংশার ঘটনা নয়, এর আগেরবার ও এবারের আ.লীগ শাসনামলে এরকম ঘটনা অসংখ্য ঘটেছে। অর্থ্যাৎ আ.লীগ একটি টোটালেটেরিয়ান ডিক্টেটরশিপ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে আমাদের ওপর। ইতোমধ্যে দলটি সফল। কারণ কোন বিরুদ্ধমতই সে রাখেনি। হেফাজতকে কব্জা করে শফি হুজুরের ছেলেকে রেলের সম্পত্তি দিয়েছে। তিনি সেখানে বহুতল ভবন করছেন। অন্যান্যদের আ.লীগ হয় নিজের ছাতার তলে নিয়ে এসেছে নতুবা তাদের বীষদাত ভেঙ্গে ঢোড়া সাপ বানিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের এই আগ্রাসি মনোভাব থেকে কেউ রেহাই পায়নি। না লালনপন্থি ফকিররা না লেনিনবাদী বিপ্লবীরা।
কেন ছবির হাটঃ ছবির হাটের বৃত্তান্ত নিয়ে অনেকে অনেক কথা লিখেছেন, অনেকে আরো বলবেন। আমিও কিছু তথ্য উপাত্ত দিতে চাই এর সঙ্গে। সময়টি ২০০৩ সালে। মোল্লার একটি খাবারের দোকান আছে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে কাচা মরিচ দিয়ে ভাত খায় আমার মত অনেক শিক্ষার্থী। এরও আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় একটি ক্যান্টিন ছিলো। সেখানে আমরা কলাভবনের শিক্ষার্থীরাও যেতাম খেতে। কারণ দুপুর বেলায় কম টাকায় ভর্তা, ভাজি নানান পদের খাবার জুটত। হুট করে একদিন চারুকলা কর্তৃপক্ষ বললেন, ক্যান্টিন বাণিজ্যিকভাবে কারো একজনের কাছে ছেড়ে দেওয়া হবে। বাণিজ্যিকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন হলো। ক্যান্টিনটাই বন্ধ হয়ে গেলো। এই ক্যান্টিনটা বন্ধ হবার পরই মোল্লার দোকানে খরিদ্দার বেড়ে গেলো।
তো, বিকেলের পর স্থানটি একদমই নিরব। তখনো সরওয়ারর্দী উদ্যানের ভেতর টিনের বেড়া দিয়ে কাজ হচ্ছিলো। ফলে উদ্যানের ভেতর পাকা রাস্তাগুলো হয়নি।
কিছু লোক উদ্যেগ নিলেন সন্ধ্যা বেলা বর্তমান ছবির হাটে ঢুকতে যে বটগাছ তার নিচে গান করবেন। তখন এলাকাটি খুব নির্জন ছিলো। বট গাছের নিচেটা তখন উচু ঢিবির মত ছিলো। সন্ধ্যা নামার আগেই যেনো নেমে আসতো ঘন অন্ধকার। সেখানে সপ্তাহে তিন কি চারদিন (আমার এখন আর মনে নেই। শুক্রবার সহ) সেখানে সন্ধ্যেবেলা গান হোত। বাউল ফকিরদের গান। বিপ্লবের গান, প্রেমের গান। নিয়মিত গানের জন্য আনা হলো একটি ছোটখাটো সাউন্ড সিস্টেম সাথে বড় সাউন্ড বক্স। জায়গাটার নাম দেয়া হলো গানের ভিটা। যারা এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তার মধ্যে আছেন গায়ক কফিল আহমেদ, গায়ক রাজিব আহমেদ রাজু ভাই, মোল্লা সাগর আরো অনেকে। এরা সবাই কিছু না কিছু পারে। আমি কেবল বেগার। আমার কাজ ছিলো সাউন্ড সিস্টেমটা রিকশায় করে আনা। আবার গান শেষে তা নিরাপদে রাখা। এই সাউন্ড সিস্টেমটা প্রগতির পরিব্রাজক দল (প্রপদ) এর অফিসে রাখতাম। এসবের পাশাপাশি যারা ছবি আঁকেন এমন শিল্পীরা শুক্রবারে মোল্লার হোটেলের সামনের চত্বরে ছবি বিক্রির হাট বসানো শুরু করলেন। মাঝে মধ্যে আমরা, আমাদের বন্ধুরা, বড় ভাইরা সেখানে সিনেমা দেখানোও শুরু করলাম।
এরপর আস্তে আস্তে অন্ধকার উদ্যান ক্রমশই আলোকিত হলো, চায়ের দোকান বসলো। মধুর কেন্টিনে এক সময় যে রাজনৈতিক বিতর্ক, আড্ডা, বিপ্লব, কবিতা নতুন কিছুর জন্য তুমুল হৈচৈ-তার সব কিছুই শুরু হলো ছবির হাটে।
এখন প্রশ্নটা হলো ছবির হাটে কি হয়? কেন ছবির হাট ভাঙ্গতে হবে?
অনেকগুলো ছোট ছোট উত্তর, একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি মেলালে এর উত্তর পাওয়া যাবে। তবে সংক্ষেপে যদি বলি তাহলে, এই ভূমির ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্তের চিত্ত বিকাশের জন্য এই নগরে কোন আয়োজন নেই। আছে ধানমণ্ডি-সেখানে উচ্চবিত্তরা যায়। কিন্তু উচ্চবিত্তরাতো শিল্প সাহিত্য সৃষ্টি করে না, তারা শিল্প সাহিত্য কিনে তাদের ঘরের শোভা বর্ধন করেন। ছবির হাট সেই স্পেস পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলো। এর সঙ্গে অবশ্যই ক্ষুদ্র আকারে হলেও রাষ্ট্র বিরোধী কিছু মানুষ সেখানে যেতো, কবিতার কথা বলতো, গল্প লিখতে না পারার কথা বলতো, বিপ্লব হচ্ছে না, কম্যুনিস্ট পার্টিগুলো সব ভেড়াতে পরিণত হয়েছে তার সমালোচনা করতো। এসব করতে করতে তারা মাঝে মধ্যেই রাজপথে দাড়িয়ে যেতো। তারা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে দিনরাত খাটতো। মঞ্চের আওয়ামীকরণের বিরোধীতা করতো। তারা রানা প্লাজায় নিহত মানুষের জন্য চাঁদা তুলে পাশে দাঁড়াতো। তাদের জন্য লংমার্চ করে ঢাকা থেকে হেটে সাভারে গিয়ে রানাপ্লাজা সহ নির্যাতিত শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলতো। বিজিএমই ঘেরাও করে সংগঠনের সভাপতির মুখে থুথু দিতো। তারা অনেক কিছু করতো। তারা রাষ্ট্রের হত্যার বিরোধীতা করার জন্য হাতে বন্দুক তুলে নেওয়ার মত উশকানিও দিতো। লালন ভাস্কর্য্য বিমানবন্দরে যখন ভাঙ্গতে চেয়েছে সরকার তার বিরুদ্ধে এ চত্বর থেকেই মনিরউদ্দিন তপু, কফিল আহমেদ, কৃষ্ণ কলি ইসলাম সহ অনেকের হাত ধরেই বাংলার সংস্কৃতি আন্দোলন গড়ে ওঠেছে। তবুও বলি, বিপ্লব হয়নি। এভাবে বিপ্লব হয়না কমরেডস।
এর বিপরীতে ছবির হাটে গাঁজা খাওয়া মানুষ যেতো। হয়তো ভিড় ভাট্টার মধ্যে দেহ বিক্রি করে সারাদিনের ভাত যোগাড় করার মত মেহনতি নারীও সেখানে ছিলেন। অথবা কিছুই না, একটু মন খুলে কথা বলার জন্যও অনেকে সেখানে যেতেন।
তো, এই মানুষগুলো আলবত হাসিনা খালেদার মানুষ না। তারা মুক্ত হতে চেয়েছিলো। সরকার আসলে এমন মানুষদেরকেই ভয় পায়। আমি আড়াআড়ি বা সোজাসুজি বুঝি-এমন মানুষদের ভয় পায় জনগনের ওপর চেপে বসা সরকারগুলো। শেখ হাসিনার দোষ কোথায়? তিনিও ভয় পেয়েছেন। এতোটাই ভয় পেয়েছেন রাতের অন্ধকারে সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন।
আ.লীগ জামাত সমঝোতাঃ ৯৬ এর নির্বাচনে মৌলবাদী গোষ্ঠীর সাথে আ.লীগের সমঝোতা চুক্তির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই?
এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একটা সমঝোতা হয়েছে অথবা আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির পরিবর্তে জামাতকে চায়। বিরোধী দল হিসেবে জামাতকে চাওয়ার পেছনে ১ হাজার ১টার ওপরে যুক্তি আছে। এটার প্রথম এসিড টেস্ট হয়েছিলো মোল্লা কাদেরের সময়। কিন্তু মানুষ যে এভাবে রিঅ্যাক্ট করবে আ.লীগ সে হিসেবটা আগে করে রাখেনি। ফলে এবার একটু ভেবেচিন্তে এগুনো।
প্রথমে শুরু হলো সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ধীরগতিতে চলা। সাঈদীর রায় যে কোন সময় দিতে পারে কিন্তু রায় ঘোষণা হবে না। এরপর আসলো জামাত নিষিদ্ধের মামলা স্থগতি করা।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুরিন আফরোজের মত যারা আছেন তাদেরকে কোনঠাসা করে ট্রাইব্যুনালকে স্থগিত করা হলো একরকম। আইনমন্ত্রী একটা খোড়া যুক্তি দিলেন-জামাত নিষিদ্ধের মামলা করা যাবে না, আইনে শাস্তির বিধান নেই। এটা আইনকে একদম আমাদের মত লেম্যানদের মত বোঝা আর কি। যাতে এ বিষয়ে কোন কথা বার্তা জোরে সোরে না উঠে সে জন্য জাপান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে-একদম স্টেট ধমক দিয়ে বললেন, এটা নিয়ে হৈইচই করার কিছু নেই। তিনি যেসব কথাবার্তা বললেন, সোজা আদালত অবমাননা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলে কথা। তিনিইতো সব। ফলে বন্ধ হয়ে গেলো জামাত নিষিদ্ধের মামলার ব্যাপারে সরকারকে সমালোচনা।
ড. আলী রিয়াজকে আপনারা চেনেন নিশ্চয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়’র ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। সম্প্রতি ঢাকায় এসেছেন। দেশ, রাজনীতি নানান বিষয় তাঁর সাথে অনেক কথা হলো। তিনি একটি ব্যাখ্যা দিলেন। ব্যাখ্যার এক অংশের সঙ্গে আমি একমত। তিনি বললেন, "আওয়ামী লীগ বিএনপিকে শুকিয়ে মেরে ফেলবে। ইতিমধ্যে বিএনপি প্রায় অস্তিত্বহীন। আ.লীগ চায় বিএনপি বিলিন হয়ে যাক। জামাত থাকবে। দেশে দুইটি পক্ষ থাকবে। একপাশে আ.লীগ অন্যপাশে জামাত। এই দুটি ভাগকে সোজাভাবে দেখানো হবে স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তি।তখন যতই মধ্যবিত্ত আ.লীগের সমালোচনা করুক দিনশেষে আ.লীগেই থাকতে হবে। কারণ আর যাইহোক জামাতকেতো সমর্থন দেওয়া যায় না। এতে আ.লীগের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আ.লীগ। আর যদি আ.লীগ না করতে চাও তাহলে ওয়ার্কার্স পার্টি কর, জাসদ কর, সাম্যবাদী দল কর তাতে সমস্যা নেই। আর যদি সেক্যুলার না থাকতে চাও তাহলে জামাত কর।’ যেহেতু এখানে সেক্যুলারিজম ইটসসেলফ রিলিজয়নে পরিণত হয়েছে সে কারণে উঠতি মধ্যবিত্তের শেষতক সেক্যুলার থাকতেই হবে। যদি বিএনপি না থাকে তাহলে সে কোনভাবেই জামাত হতে পারবে না।"
আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, বিএনপি না থাকলে সেই স্থানে অন্য কিছু এসে যাবে। শূন্যস্থান থাকবে না। আর বিএনপির শূন্যস্থান জামাতকে দিয়ে পূরণ হবে না।’ তিনি উত্তরে বললেন, না। তা হবে না। অন্য কেউ আসবে না।’ এর কারণ হিসেবে তিনি বললেন, আ.লীগের বিরোধীতা বা এন্টি আ.লীগ রাজনীতি যতবার হয়েছে তা এখানকার সেনাক্যু’র মাধ্যমে হয়েছে। বিএনপি, জাতীয় পার্টির ইতিহাস তাই। বর্তমানে সেরকম কোন সেনাক্যু’র কোন সম্ভাবনা নেই। ফলে আ.লীগ টিকে যাবে।’
আমি শ্রদ্ধেয় ড. আলী রিয়াজের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত নই। কোন শূন্যস্থান কখনোই শূন্য থাকে না। আবার জামাতও সেখানে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা নিতে পারবে না। তাহলে কি হবে? এ ব্যাখ্যা আরো পরে দিচ্ছি।
করপোরেট মিলিটারিঃ বাংলাদেশের আসল মালিক কারা? সংবিধানে একটা জবাব আছে এর। জনগণ বাংলাদেশের মালিক। কিন্তু এটা আইডিয়ালিস্টিক থট। বাস্তবে এ দেশের মালিকানা হলো এখানকার ব্যবসায়ীরা। যদি ব্যাবসায়ীরা অস্থির হয়ে ওঠেন তাহলে একটা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এর সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী সিভিল সমাজ আর ভোগবাদী মধ্যবিত্ত যারা মালিক না হয়েও সমাজের উপরশ্রেণী ও প্রান্তিক জনগোষ্টির মধ্যে হেজিমনি তৈরী করার ক্ষমতা রাখে।
কিন্তু কে এই আ.লীগকে থামাবে? সেনাবাহিনী? প্রত্যক্ষ সেনাক্যু’র কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ দেশের সেনাবাহিনী ক্যু করলে তাতে অনেক রিস্ক। আর ক্যু না করেইতো আমাদের সেনাবাহিনী অর্থ বিত্তের নানান ভাগ পেয়েছে। আর প্রতি নিয়ত পাচ্ছে। সেনাবাহিনীর এ সংক্রান্ত ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে জানতে চাইলে বিবিসির ফৌজি বাণিজ্য ধারাবাহিকগুলো পড়েন। এটা তাহলে নিশ্চিত করেই বলা যায় প্রত্যক্ষ কোন সেনাক্যু’র সম্ভাবনা আমাদের মিলিটারি থেকে আসার কোন সম্ভাবনা অন্তত দেখছি না।
মধ্যবিত্তের অস্বস্তিঃ মধ্যবিত্তশ্রেণী’র কোন প্রগতিশীল ভূমিকা কোনকালে এ ভূমিতে ছিলো না। অবাক হচ্ছেন না? এটা বিশ্বাস করলে করেন, না করলে আরো বিস্তারিত স্টাডি করে দেখতে পারেন। এমন কী ৭১’ ও না। আমাদের মধ্যবিত্ত আইডেন্টি ক্রাইসিসে ভোগা একটা রুগ্ন সাংস্কৃতিক শ্রেণী। তারা কারোর পক্ষে হয়ে মাঠে নামার কোন চান্স নেই। আগে যেখানে একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতির নানান বিষয়ে নিয়ে মাঠ গরম করতো এখন তারা ব্যস্ত কিভাবে করপোরেট জব নিয়ে ভালো থাকা যায়। এমন কী যে বাবা মা তাকে বড় করেছে তার দায়িত্ব এড়িয়ে নিজের জন্য বাঁচা যায় (গোপনে বলে রাখি এভাবে ভালো থাকা যায় না)। এই মধ্যবিত্তশ্রেণী কখনোই কোন ডিক্টেটরের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে না। কিন্তু এরাই আবার হেজিমনি তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তো কিভাবে? এরা যখন অস্বস্তিতে ভোগেন তখন রাষ্ট্রও অস্বস্তিতে ভোগে।
একটা নগদ উদাহরণ নারায়নগঞ্জ। র্যাব তৈরী হবার পর সব থেকে বেশি মানুষ খতমের স্বীকার হয়েছেন নিষিদ্ধ গোপন কম্যুনিস্ট পার্টির নেতা ও কর্মীরা। পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল) সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোফাখারুর চৌধুরীকে র্যাব গুলি করে হত্যা করে। পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল লাল পতাকা) এর সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান টুটুলকেও হত্যা করা হয়। এসব পার্টির অন্তত ১৮’শ মানুষ হত্যা করা হয়। আর গণমাধ্যম তাদের পরিচয় দিয়েছে হত্যার পরে, কান কাটা মনির বা নাক কাটা সিরাজ নামে। পত্রিকাগুলো তাদের সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে, অমুক থানায় তার নামে ১৬টি খুনের মামলা আছে। কোন রিপোর্টারের একবার মনে হয়নি-তথ্যগুলো একটু ক্রসচেক করে নেই। র্যাব যা বলছে তাই সত্যি? অর্থ্যাৎ র্যাবের ক্রসফায়ারের সাথে গণমাধ্যম সেই খুনের ন্যায্যতা তৈরী করেছে। খুনের দায় তাই তাদেরও আছে।
তো, এখন আবার কি হলো যে র্যাবের বিরুদ্ধে হৈচৈ হচ্ছে? কারণ চন্দন সরকার। তিনি একজন মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত। এক সময়ের শামিম ওসমানের কাছের মানুষ। টাকা পয়সা আছে। সমাজের এরকম একজন নিহত হলে মধ্যবিত্ত বিপন্নতা বোধ করেন। কারণ সেতো তাদের শ্রেণীর মানুষ। মোফাখার বা টুটুলতো তাদের শ্রেণী প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা মরলে তাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু চন্দন সরকার মরলে তাদের যায় আসে। কারণ, চন্দন সরকারতো রাষ্ট্র ভাঙ্গতে যায়নি। এরকম একজন মানুষকে যখন র্যাব ধরে নিয়ে যায় তখন মধ্যবিত্ত মনে করে যেকোন সময় তাকেও র্যাব বা পুলিশের লোক ধরে নিয়ে শীতলক্ষ্যায় বা এরকম কোন নদীতে মাছেদের খাদ্য বানিয়ে দিতে পারে। এই মধ্যবিত্ত যখন হাউকাউ করে তখন গণমাধ্যমও হাউকাউয়ে সুর মেলায়। বিষয়টি এমন না যে, এর আগে গুম হয়নি। প্রতিদিনই গুম হয়েছে, এখনো হচ্ছে। সেসব খবর কোনদিন পত্রিকার পাতায় আসবে না। কারণ তারা মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে তেমন কোন মূল্য তৈরী করতে পারেনি।
তো মধ্যবিত্তের অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এই লক্ষণ ভালো না। এটা শেখ হাসিনাকে দ্রুত বিদায় নেওয়ার লক্ষণ।
ক্ষমতায় থাকার ন্যায্যতা আছে এটা আওয়ামী লীগ নিজেই বিশ্বাস করে না : আওয়ামী লীগ এবার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে তাতে দলটির নেতাকর্মীরা নিজেরাই বিশ্বাস করে না, কাজটি ঠিক হয়েছে কিনা। অর্থ্যাৎ আওয়ামী লীগের লোক মনে করছে যেভাবে ক্ষমতায় তারা এসেছে তাতে বেশিদিন তারা টিকতে পারবে না। দ্রুত লুটপাট করতে হবে। এলাকা দখল করতে হবে। গত ৫ জানুয়ারি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্র জোট ছাড়াই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ শিক্ষক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘বর্তমান জোট সরকার প্রধান বিরোধী দল ছাড়াই গত ৫ জানুয়ারিতে যে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সরকার গঠন করেছে, এটা আইনের চোখে অবৈধ না হলেও গণতন্ত্রের সঙ্গে যায় না। আর সরকার গঠনের পর প্রধান বিরোধী দল অপেক্ষা নিজ দলের অন্তর্কলহের কারণে প্রায় প্রতিনিয়তই যে আহত নিহতর খবর আমরা পাচ্ছি তার কারণ হলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একটি তড়িঘড়ি নির্বাচন দিয়ে সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়েছে এবং কার্যকর প্রতিরোধহীন বিরোধী দলের কারণে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে একাধিপত্যের জন্ম দিয়েছে। এর কারণে আধিপত্য বিস্তারে নিজেরাই নিজেদের মধ্যে খুন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।’
এই রাষ্ট্র বিজ্ঞানী আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা একটি আশঙ্কায় ভুগছেন। আর তা হলো যে ভাবেই হোক একটি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। যে কয়দিন থাকতে পারি। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় আখের গুছিয়ে নিতে হবে। এই ধরণের শঙ্কা আর লুটপাটের মনোভাবের কারণেই এমন ঘটছে বলেও তিনি মনে করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য নূহ-উল আলম লেনিনও একই কথা বলেছেন। দেশে কোন কার্যকরী বিরোধী দল নেই এ ব্যাপারটি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির এই সদস্য স্বীকার করে বলেন, ‘দেশে কার্যকর কোন বিরোধী দল নেই। একটি দলের হাতে সর্বময় ক্ষমতা দেখে অসৎ লোকেরা নানা কায়দা-কৌশল করে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়ছে। এসব লোকেরাই দলের সর্বনাশ ডেকে আনে। এ সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলে দলীয় কর্মীদের খুন করতেও দ্বিধা করে না। এ কারনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারী ও দলের নামে অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
ছবির হাট ভেঙ্গে দেওয়া আর শেখ হাসিনার নিজের আঁকা ছবি একই সময় প্রচারে এসেছে।
বিষয়টি কাকতাল হলেও এর মধ্যে একটি সুর কিন্তু আছে। আল কোরআন নাজিল হওয়ার পর আরবে কবিতা লেখা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। কারণ আল কোরআনের চেয়ে বড় কবিতা আর হতে পারে না। এখন হাসিনা নিশ্চয় এরকম কিছু মনে করেন না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা কি আর তাই মেনে চলবেন? মনে রাখতে হবে হিটলার কিন্তু দারুন একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন।
হিটলার আঁকা ছবি।
এখন দেখা যাক মধ্যবিত্তের অস্বস্তি কোথায় গিয়ে পৌছায়। তবে ছবির হাট লালন কিম্বা লেনিন কোনকিছুকেই সরকার পরোয়া করে না। বিরুদ্ধমতের কোন চিহ্ন নিশানা তারা রাখতে চায় না।
লালন থেকে লেনিনঃ বাউল, ফকিরদের ওপর হামলা। হামলা হয়েছে যশোরের সংখ্যালঘুদের ওপর। গত পাঁচ বছরে যত সংখ্যালঘু ও ভিন্নামতালম্বি মানুষের ওপর হামলা হয়েছে তার পরিসংখ্যান এক জায়গায় জড়ো করলে গোটা বিএনপি জামাত জোট সরকারের সাথে তার আর কোন পার্থক্য থাকে না।
বাউল-ফকিরদের চুল দাড়ি কেটে তাদেরকে মোসলমান করা হয়েছে, পড়ানো হয়েছে তওবা। এটা শুধু ২০১১ সালের ৭ এপ্রিলে রাজবাড়ির পাংশার ঘটনা নয়, এর আগেরবার ও এবারের আ.লীগ শাসনামলে এরকম ঘটনা অসংখ্য ঘটেছে। অর্থ্যাৎ আ.লীগ একটি টোটালেটেরিয়ান ডিক্টেটরশিপ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে আমাদের ওপর। ইতোমধ্যে দলটি সফল। কারণ কোন বিরুদ্ধমতই সে রাখেনি। হেফাজতকে কব্জা করে শফি হুজুরের ছেলেকে রেলের সম্পত্তি দিয়েছে। তিনি সেখানে বহুতল ভবন করছেন। অন্যান্যদের আ.লীগ হয় নিজের ছাতার তলে নিয়ে এসেছে নতুবা তাদের বীষদাত ভেঙ্গে ঢোড়া সাপ বানিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের এই আগ্রাসি মনোভাব থেকে কেউ রেহাই পায়নি। না লালনপন্থি ফকিররা না লেনিনবাদী বিপ্লবীরা।
কেন ছবির হাটঃ ছবির হাটের বৃত্তান্ত নিয়ে অনেকে অনেক কথা লিখেছেন, অনেকে আরো বলবেন। আমিও কিছু তথ্য উপাত্ত দিতে চাই এর সঙ্গে। সময়টি ২০০৩ সালে। মোল্লার একটি খাবারের দোকান আছে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে কাচা মরিচ দিয়ে ভাত খায় আমার মত অনেক শিক্ষার্থী। এরও আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় একটি ক্যান্টিন ছিলো। সেখানে আমরা কলাভবনের শিক্ষার্থীরাও যেতাম খেতে। কারণ দুপুর বেলায় কম টাকায় ভর্তা, ভাজি নানান পদের খাবার জুটত। হুট করে একদিন চারুকলা কর্তৃপক্ষ বললেন, ক্যান্টিন বাণিজ্যিকভাবে কারো একজনের কাছে ছেড়ে দেওয়া হবে। বাণিজ্যিকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন হলো। ক্যান্টিনটাই বন্ধ হয়ে গেলো। এই ক্যান্টিনটা বন্ধ হবার পরই মোল্লার দোকানে খরিদ্দার বেড়ে গেলো।
তো, বিকেলের পর স্থানটি একদমই নিরব। তখনো সরওয়ারর্দী উদ্যানের ভেতর টিনের বেড়া দিয়ে কাজ হচ্ছিলো। ফলে উদ্যানের ভেতর পাকা রাস্তাগুলো হয়নি।
কিছু লোক উদ্যেগ নিলেন সন্ধ্যা বেলা বর্তমান ছবির হাটে ঢুকতে যে বটগাছ তার নিচে গান করবেন। তখন এলাকাটি খুব নির্জন ছিলো। বট গাছের নিচেটা তখন উচু ঢিবির মত ছিলো। সন্ধ্যা নামার আগেই যেনো নেমে আসতো ঘন অন্ধকার। সেখানে সপ্তাহে তিন কি চারদিন (আমার এখন আর মনে নেই। শুক্রবার সহ) সেখানে সন্ধ্যেবেলা গান হোত। বাউল ফকিরদের গান। বিপ্লবের গান, প্রেমের গান। নিয়মিত গানের জন্য আনা হলো একটি ছোটখাটো সাউন্ড সিস্টেম সাথে বড় সাউন্ড বক্স। জায়গাটার নাম দেয়া হলো গানের ভিটা। যারা এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তার মধ্যে আছেন গায়ক কফিল আহমেদ, গায়ক রাজিব আহমেদ রাজু ভাই, মোল্লা সাগর আরো অনেকে। এরা সবাই কিছু না কিছু পারে। আমি কেবল বেগার। আমার কাজ ছিলো সাউন্ড সিস্টেমটা রিকশায় করে আনা। আবার গান শেষে তা নিরাপদে রাখা। এই সাউন্ড সিস্টেমটা প্রগতির পরিব্রাজক দল (প্রপদ) এর অফিসে রাখতাম। এসবের পাশাপাশি যারা ছবি আঁকেন এমন শিল্পীরা শুক্রবারে মোল্লার হোটেলের সামনের চত্বরে ছবি বিক্রির হাট বসানো শুরু করলেন। মাঝে মধ্যে আমরা, আমাদের বন্ধুরা, বড় ভাইরা সেখানে সিনেমা দেখানোও শুরু করলাম।
এরপর আস্তে আস্তে অন্ধকার উদ্যান ক্রমশই আলোকিত হলো, চায়ের দোকান বসলো। মধুর কেন্টিনে এক সময় যে রাজনৈতিক বিতর্ক, আড্ডা, বিপ্লব, কবিতা নতুন কিছুর জন্য তুমুল হৈচৈ-তার সব কিছুই শুরু হলো ছবির হাটে।
এখন প্রশ্নটা হলো ছবির হাটে কি হয়? কেন ছবির হাট ভাঙ্গতে হবে?
অনেকগুলো ছোট ছোট উত্তর, একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি মেলালে এর উত্তর পাওয়া যাবে। তবে সংক্ষেপে যদি বলি তাহলে, এই ভূমির ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্তের চিত্ত বিকাশের জন্য এই নগরে কোন আয়োজন নেই। আছে ধানমণ্ডি-সেখানে উচ্চবিত্তরা যায়। কিন্তু উচ্চবিত্তরাতো শিল্প সাহিত্য সৃষ্টি করে না, তারা শিল্প সাহিত্য কিনে তাদের ঘরের শোভা বর্ধন করেন। ছবির হাট সেই স্পেস পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলো। এর সঙ্গে অবশ্যই ক্ষুদ্র আকারে হলেও রাষ্ট্র বিরোধী কিছু মানুষ সেখানে যেতো, কবিতার কথা বলতো, গল্প লিখতে না পারার কথা বলতো, বিপ্লব হচ্ছে না, কম্যুনিস্ট পার্টিগুলো সব ভেড়াতে পরিণত হয়েছে তার সমালোচনা করতো। এসব করতে করতে তারা মাঝে মধ্যেই রাজপথে দাড়িয়ে যেতো। তারা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে দিনরাত খাটতো। মঞ্চের আওয়ামীকরণের বিরোধীতা করতো। তারা রানা প্লাজায় নিহত মানুষের জন্য চাঁদা তুলে পাশে দাঁড়াতো। তাদের জন্য লংমার্চ করে ঢাকা থেকে হেটে সাভারে গিয়ে রানাপ্লাজা সহ নির্যাতিত শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলতো। বিজিএমই ঘেরাও করে সংগঠনের সভাপতির মুখে থুথু দিতো। তারা অনেক কিছু করতো। তারা রাষ্ট্রের হত্যার বিরোধীতা করার জন্য হাতে বন্দুক তুলে নেওয়ার মত উশকানিও দিতো। লালন ভাস্কর্য্য বিমানবন্দরে যখন ভাঙ্গতে চেয়েছে সরকার তার বিরুদ্ধে এ চত্বর থেকেই মনিরউদ্দিন তপু, কফিল আহমেদ, কৃষ্ণ কলি ইসলাম সহ অনেকের হাত ধরেই বাংলার সংস্কৃতি আন্দোলন গড়ে ওঠেছে। তবুও বলি, বিপ্লব হয়নি। এভাবে বিপ্লব হয়না কমরেডস।
এর বিপরীতে ছবির হাটে গাঁজা খাওয়া মানুষ যেতো। হয়তো ভিড় ভাট্টার মধ্যে দেহ বিক্রি করে সারাদিনের ভাত যোগাড় করার মত মেহনতি নারীও সেখানে ছিলেন। অথবা কিছুই না, একটু মন খুলে কথা বলার জন্যও অনেকে সেখানে যেতেন।
তো, এই মানুষগুলো আলবত হাসিনা খালেদার মানুষ না। তারা মুক্ত হতে চেয়েছিলো। সরকার আসলে এমন মানুষদেরকেই ভয় পায়। আমি আড়াআড়ি বা সোজাসুজি বুঝি-এমন মানুষদের ভয় পায় জনগনের ওপর চেপে বসা সরকারগুলো। শেখ হাসিনার দোষ কোথায়? তিনিও ভয় পেয়েছেন। এতোটাই ভয় পেয়েছেন রাতের অন্ধকারে সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন।
আ.লীগ জামাত সমঝোতাঃ ৯৬ এর নির্বাচনে মৌলবাদী গোষ্ঠীর সাথে আ.লীগের সমঝোতা চুক্তির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই?
এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একটা সমঝোতা হয়েছে অথবা আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির পরিবর্তে জামাতকে চায়। বিরোধী দল হিসেবে জামাতকে চাওয়ার পেছনে ১ হাজার ১টার ওপরে যুক্তি আছে। এটার প্রথম এসিড টেস্ট হয়েছিলো মোল্লা কাদেরের সময়। কিন্তু মানুষ যে এভাবে রিঅ্যাক্ট করবে আ.লীগ সে হিসেবটা আগে করে রাখেনি। ফলে এবার একটু ভেবেচিন্তে এগুনো।
প্রথমে শুরু হলো সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ধীরগতিতে চলা। সাঈদীর রায় যে কোন সময় দিতে পারে কিন্তু রায় ঘোষণা হবে না। এরপর আসলো জামাত নিষিদ্ধের মামলা স্থগতি করা।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুরিন আফরোজের মত যারা আছেন তাদেরকে কোনঠাসা করে ট্রাইব্যুনালকে স্থগিত করা হলো একরকম। আইনমন্ত্রী একটা খোড়া যুক্তি দিলেন-জামাত নিষিদ্ধের মামলা করা যাবে না, আইনে শাস্তির বিধান নেই। এটা আইনকে একদম আমাদের মত লেম্যানদের মত বোঝা আর কি। যাতে এ বিষয়ে কোন কথা বার্তা জোরে সোরে না উঠে সে জন্য জাপান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে-একদম স্টেট ধমক দিয়ে বললেন, এটা নিয়ে হৈইচই করার কিছু নেই। তিনি যেসব কথাবার্তা বললেন, সোজা আদালত অবমাননা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলে কথা। তিনিইতো সব। ফলে বন্ধ হয়ে গেলো জামাত নিষিদ্ধের মামলার ব্যাপারে সরকারকে সমালোচনা।
ড. আলী রিয়াজকে আপনারা চেনেন নিশ্চয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়’র ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। সম্প্রতি ঢাকায় এসেছেন। দেশ, রাজনীতি নানান বিষয় তাঁর সাথে অনেক কথা হলো। তিনি একটি ব্যাখ্যা দিলেন। ব্যাখ্যার এক অংশের সঙ্গে আমি একমত। তিনি বললেন, "আওয়ামী লীগ বিএনপিকে শুকিয়ে মেরে ফেলবে। ইতিমধ্যে বিএনপি প্রায় অস্তিত্বহীন। আ.লীগ চায় বিএনপি বিলিন হয়ে যাক। জামাত থাকবে। দেশে দুইটি পক্ষ থাকবে। একপাশে আ.লীগ অন্যপাশে জামাত। এই দুটি ভাগকে সোজাভাবে দেখানো হবে স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তি।তখন যতই মধ্যবিত্ত আ.লীগের সমালোচনা করুক দিনশেষে আ.লীগেই থাকতে হবে। কারণ আর যাইহোক জামাতকেতো সমর্থন দেওয়া যায় না। এতে আ.লীগের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আ.লীগ। আর যদি আ.লীগ না করতে চাও তাহলে ওয়ার্কার্স পার্টি কর, জাসদ কর, সাম্যবাদী দল কর তাতে সমস্যা নেই। আর যদি সেক্যুলার না থাকতে চাও তাহলে জামাত কর।’ যেহেতু এখানে সেক্যুলারিজম ইটসসেলফ রিলিজয়নে পরিণত হয়েছে সে কারণে উঠতি মধ্যবিত্তের শেষতক সেক্যুলার থাকতেই হবে। যদি বিএনপি না থাকে তাহলে সে কোনভাবেই জামাত হতে পারবে না।"
আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, বিএনপি না থাকলে সেই স্থানে অন্য কিছু এসে যাবে। শূন্যস্থান থাকবে না। আর বিএনপির শূন্যস্থান জামাতকে দিয়ে পূরণ হবে না।’ তিনি উত্তরে বললেন, না। তা হবে না। অন্য কেউ আসবে না।’ এর কারণ হিসেবে তিনি বললেন, আ.লীগের বিরোধীতা বা এন্টি আ.লীগ রাজনীতি যতবার হয়েছে তা এখানকার সেনাক্যু’র মাধ্যমে হয়েছে। বিএনপি, জাতীয় পার্টির ইতিহাস তাই। বর্তমানে সেরকম কোন সেনাক্যু’র কোন সম্ভাবনা নেই। ফলে আ.লীগ টিকে যাবে।’
আমি শ্রদ্ধেয় ড. আলী রিয়াজের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত নই। কোন শূন্যস্থান কখনোই শূন্য থাকে না। আবার জামাতও সেখানে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা নিতে পারবে না। তাহলে কি হবে? এ ব্যাখ্যা আরো পরে দিচ্ছি।
করপোরেট মিলিটারিঃ বাংলাদেশের আসল মালিক কারা? সংবিধানে একটা জবাব আছে এর। জনগণ বাংলাদেশের মালিক। কিন্তু এটা আইডিয়ালিস্টিক থট। বাস্তবে এ দেশের মালিকানা হলো এখানকার ব্যবসায়ীরা। যদি ব্যাবসায়ীরা অস্থির হয়ে ওঠেন তাহলে একটা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এর সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী সিভিল সমাজ আর ভোগবাদী মধ্যবিত্ত যারা মালিক না হয়েও সমাজের উপরশ্রেণী ও প্রান্তিক জনগোষ্টির মধ্যে হেজিমনি তৈরী করার ক্ষমতা রাখে।
কিন্তু কে এই আ.লীগকে থামাবে? সেনাবাহিনী? প্রত্যক্ষ সেনাক্যু’র কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ দেশের সেনাবাহিনী ক্যু করলে তাতে অনেক রিস্ক। আর ক্যু না করেইতো আমাদের সেনাবাহিনী অর্থ বিত্তের নানান ভাগ পেয়েছে। আর প্রতি নিয়ত পাচ্ছে। সেনাবাহিনীর এ সংক্রান্ত ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে জানতে চাইলে বিবিসির ফৌজি বাণিজ্য ধারাবাহিকগুলো পড়েন। এটা তাহলে নিশ্চিত করেই বলা যায় প্রত্যক্ষ কোন সেনাক্যু’র সম্ভাবনা আমাদের মিলিটারি থেকে আসার কোন সম্ভাবনা অন্তত দেখছি না।
মধ্যবিত্তের অস্বস্তিঃ মধ্যবিত্তশ্রেণী’র কোন প্রগতিশীল ভূমিকা কোনকালে এ ভূমিতে ছিলো না। অবাক হচ্ছেন না? এটা বিশ্বাস করলে করেন, না করলে আরো বিস্তারিত স্টাডি করে দেখতে পারেন। এমন কী ৭১’ ও না। আমাদের মধ্যবিত্ত আইডেন্টি ক্রাইসিসে ভোগা একটা রুগ্ন সাংস্কৃতিক শ্রেণী। তারা কারোর পক্ষে হয়ে মাঠে নামার কোন চান্স নেই। আগে যেখানে একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতির নানান বিষয়ে নিয়ে মাঠ গরম করতো এখন তারা ব্যস্ত কিভাবে করপোরেট জব নিয়ে ভালো থাকা যায়। এমন কী যে বাবা মা তাকে বড় করেছে তার দায়িত্ব এড়িয়ে নিজের জন্য বাঁচা যায় (গোপনে বলে রাখি এভাবে ভালো থাকা যায় না)। এই মধ্যবিত্তশ্রেণী কখনোই কোন ডিক্টেটরের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে না। কিন্তু এরাই আবার হেজিমনি তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তো কিভাবে? এরা যখন অস্বস্তিতে ভোগেন তখন রাষ্ট্রও অস্বস্তিতে ভোগে।
একটা নগদ উদাহরণ নারায়নগঞ্জ। র্যাব তৈরী হবার পর সব থেকে বেশি মানুষ খতমের স্বীকার হয়েছেন নিষিদ্ধ গোপন কম্যুনিস্ট পার্টির নেতা ও কর্মীরা। পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল) সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোফাখারুর চৌধুরীকে র্যাব গুলি করে হত্যা করে। পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল লাল পতাকা) এর সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান টুটুলকেও হত্যা করা হয়। এসব পার্টির অন্তত ১৮’শ মানুষ হত্যা করা হয়। আর গণমাধ্যম তাদের পরিচয় দিয়েছে হত্যার পরে, কান কাটা মনির বা নাক কাটা সিরাজ নামে। পত্রিকাগুলো তাদের সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে, অমুক থানায় তার নামে ১৬টি খুনের মামলা আছে। কোন রিপোর্টারের একবার মনে হয়নি-তথ্যগুলো একটু ক্রসচেক করে নেই। র্যাব যা বলছে তাই সত্যি? অর্থ্যাৎ র্যাবের ক্রসফায়ারের সাথে গণমাধ্যম সেই খুনের ন্যায্যতা তৈরী করেছে। খুনের দায় তাই তাদেরও আছে।
তো, এখন আবার কি হলো যে র্যাবের বিরুদ্ধে হৈচৈ হচ্ছে? কারণ চন্দন সরকার। তিনি একজন মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত। এক সময়ের শামিম ওসমানের কাছের মানুষ। টাকা পয়সা আছে। সমাজের এরকম একজন নিহত হলে মধ্যবিত্ত বিপন্নতা বোধ করেন। কারণ সেতো তাদের শ্রেণীর মানুষ। মোফাখার বা টুটুলতো তাদের শ্রেণী প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা মরলে তাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু চন্দন সরকার মরলে তাদের যায় আসে। কারণ, চন্দন সরকারতো রাষ্ট্র ভাঙ্গতে যায়নি। এরকম একজন মানুষকে যখন র্যাব ধরে নিয়ে যায় তখন মধ্যবিত্ত মনে করে যেকোন সময় তাকেও র্যাব বা পুলিশের লোক ধরে নিয়ে শীতলক্ষ্যায় বা এরকম কোন নদীতে মাছেদের খাদ্য বানিয়ে দিতে পারে। এই মধ্যবিত্ত যখন হাউকাউ করে তখন গণমাধ্যমও হাউকাউয়ে সুর মেলায়। বিষয়টি এমন না যে, এর আগে গুম হয়নি। প্রতিদিনই গুম হয়েছে, এখনো হচ্ছে। সেসব খবর কোনদিন পত্রিকার পাতায় আসবে না। কারণ তারা মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে তেমন কোন মূল্য তৈরী করতে পারেনি।
তো মধ্যবিত্তের অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এই লক্ষণ ভালো না। এটা শেখ হাসিনাকে দ্রুত বিদায় নেওয়ার লক্ষণ।
ক্ষমতায় থাকার ন্যায্যতা আছে এটা আওয়ামী লীগ নিজেই বিশ্বাস করে না : আওয়ামী লীগ এবার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছে তাতে দলটির নেতাকর্মীরা নিজেরাই বিশ্বাস করে না, কাজটি ঠিক হয়েছে কিনা। অর্থ্যাৎ আওয়ামী লীগের লোক মনে করছে যেভাবে ক্ষমতায় তারা এসেছে তাতে বেশিদিন তারা টিকতে পারবে না। দ্রুত লুটপাট করতে হবে। এলাকা দখল করতে হবে। গত ৫ জানুয়ারি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্র জোট ছাড়াই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ শিক্ষক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘বর্তমান জোট সরকার প্রধান বিরোধী দল ছাড়াই গত ৫ জানুয়ারিতে যে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সরকার গঠন করেছে, এটা আইনের চোখে অবৈধ না হলেও গণতন্ত্রের সঙ্গে যায় না। আর সরকার গঠনের পর প্রধান বিরোধী দল অপেক্ষা নিজ দলের অন্তর্কলহের কারণে প্রায় প্রতিনিয়তই যে আহত নিহতর খবর আমরা পাচ্ছি তার কারণ হলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একটি তড়িঘড়ি নির্বাচন দিয়ে সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়েছে এবং কার্যকর প্রতিরোধহীন বিরোধী দলের কারণে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে একাধিপত্যের জন্ম দিয়েছে। এর কারণে আধিপত্য বিস্তারে নিজেরাই নিজেদের মধ্যে খুন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।’
এই রাষ্ট্র বিজ্ঞানী আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা একটি আশঙ্কায় ভুগছেন। আর তা হলো যে ভাবেই হোক একটি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। যে কয়দিন থাকতে পারি। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় আখের গুছিয়ে নিতে হবে। এই ধরণের শঙ্কা আর লুটপাটের মনোভাবের কারণেই এমন ঘটছে বলেও তিনি মনে করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য নূহ-উল আলম লেনিনও একই কথা বলেছেন। দেশে কোন কার্যকরী বিরোধী দল নেই এ ব্যাপারটি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির এই সদস্য স্বীকার করে বলেন, ‘দেশে কার্যকর কোন বিরোধী দল নেই। একটি দলের হাতে সর্বময় ক্ষমতা দেখে অসৎ লোকেরা নানা কায়দা-কৌশল করে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়ছে। এসব লোকেরাই দলের সর্বনাশ ডেকে আনে। এ সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলে দলীয় কর্মীদের খুন করতেও দ্বিধা করে না। এ কারনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারী ও দলের নামে অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
ছবির হাট ভেঙ্গে দেওয়া আর শেখ হাসিনার নিজের আঁকা ছবি একই সময় প্রচারে এসেছে।
বিষয়টি কাকতাল হলেও এর মধ্যে একটি সুর কিন্তু আছে। আল কোরআন নাজিল হওয়ার পর আরবে কবিতা লেখা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। কারণ আল কোরআনের চেয়ে বড় কবিতা আর হতে পারে না। এখন হাসিনা নিশ্চয় এরকম কিছু মনে করেন না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা কি আর তাই মেনে চলবেন? মনে রাখতে হবে হিটলার কিন্তু দারুন একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন।
হিটলার আঁকা ছবি।
এখন দেখা যাক মধ্যবিত্তের অস্বস্তি কোথায় গিয়ে পৌছায়। তবে ছবির হাট লালন কিম্বা লেনিন কোনকিছুকেই সরকার পরোয়া করে না। বিরুদ্ধমতের কোন চিহ্ন নিশানা তারা রাখতে চায় না।
No comments:
Post a Comment