মরণ কামড় দেবে মেক্সিকো
প্রকাশ : ১৭ জুন, ২০১৪
সোনালি ট্রফির সঙ্গে আর কোনো দেশের প্রণয় এত গভীর নয়, যতটা ব্রাজিলের। চার বছর পর পর এ ট্রফি হাতছানি দিয়ে ডাকে লাতিন আমেরিকার এই দেশটিকে। এবার তো নিজেদের দেশে সেই সোনালি ট্রফির খেলা। তাই নিঃসন্দেহে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ব্রাজিল। তবে তাদের খেলার ছন্দ নিয়ে যতটা আশা করেছিলাম, প্রথম ম্যাচে তা দেখা যায়নি। বরং ওই ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াই ভালো খেলেছে। আসলে ওইদিন ব্রাজিলের ডিফেন্স খুব একটা ভালো খেলেনি। তারপরও নেইমার ও অস্কারের ওপর ভর করে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছেড়েছে ব্রাজিল। আজ মেক্সিকোর বিপক্ষে ব্রাজিলই ফেভারিট। তবে এজন্য কোচ লুই ফিলিপ স্কলারিকে ডিফেন্স নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। যদি তিনি কাজ করে থাকেন, তাহলে আজ দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে কোনো অসুবিধা হবে না নেইমারদের। তবে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে মেক্সিকোকে খাটো করে দেখার কিছু নেই। ক্যামেরুনের বিপক্ষে তারা যেভাবে খেলেছে তাতে প্রশংসার দাবি রাখেন দস সান্তোসরা। আফ্রিকার ওই দলটির বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছে মেক্সিকো। আমাদের মনে রাখতে হবে বিশ্ব ফুটবলের র্যাংকিংয়ে কিন্তু মেক্সিকোর অবস্থান ২০ নম্বরে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের ওই রকম নড়বড়ে খেলা যদি আজও দেখা যায় এবং অন্যদিকে যদি ক্যামেরুনের বিপক্ষে টিম মেক্সিকোকে দেখা যায়, তাহলে সাম্বাদের আনন্দে বাদ সাধতে পারে। যদি টিম মেক্সিকোকে দেখা যায় মাঠে, তাহলে ব্রাজিলের জন্য তা অশনি সংকেত বয়ে আনতে পারে। ফলে ম্যাচে ড্র হওয়ার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জন্য মরণ কামড় দিতেও পারে মেক্সিকো। ব্রাজিল যদি তাদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ উন্নতি করতে পারে, তাহলে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে রাশিয়াকেই আমি এগিয়ে রাখব। কারণ রাশিয়ার র্যাংকিং যেখানে ১৯, দক্ষিণ কোরিয়ার ৫৭। আসলে ইউরোপের প্রত্যেকটি দলকেই বোঝা মুশকিল। কোনো কোনো ম্যাচে তো তারা পিছিয়ে পড়েও জিতে যাচ্ছে। আবার কোনো ম্যাচে বসনিয়ার মতো দল প্রথমবার এসেই আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিয়ে দিয়েছে। তবে অনেক সময় মাঠে র্যাংকিং কাজে দেয় না। কোস্টারিকা, জাপান ও বসনিয়ার মতো টিম হিসেবে যদি মাঠে খেলতে পারে কোরিয়া, তাহলে তারা কিছু করে দেখাতে পারবে। যদিও ওই দলগুলো ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ফলাফল ধরে রাখতে পারেনি। এই ম্যাচে রাশিয়াই ফেভারিট। তবে আমার শুভ কামনা থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য।
এইচ-গ্র“পের একনম্বর দল বলা চলে বেলজিয়ামকে। ইউরোপের সেরা দলের একটি তারা। সে হিসেবে ম্যাচে এগিয়ে থাকবে বেলজিয়ামই। আফ্রিকানদের মধ্যে অন্যতম সেরা দল আলজেরিয়া। টপ মোস্ট দল আফ্রিকার। সে হিসেবে আলজেরিয়াকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। যদি ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের মানসিকতা থাকে, তাহলে ভালো খেলতে পারবে তারা।
সোমবার বড় দল হিসেবেই জিতেছে আর্জেন্টিনা। তবে তাদের খেলার পদ্ধতিটা আমার কাছে ভালো লাগেনি। হয়তো ভালো লাগেনি মেসি-হিগুয়াইনদের কাছে। কারণ প্রথমার্ধে কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা একটি নতুন ফর্মেশন ৩-৫-২-এ খেলিয়েছেন। তিনজন ডিফেন্স নিয়ে খেলেছে তারা। বসনিয়ার বিপক্ষে তাদের এই ফর্মেশনে খেলাটা ঠিক হয়নি। তারপরও আÍঘাতী গোল খাওয়ার পর বসনিয়াও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মেসি যখনই বল পেয়েছেন, বসনিয়ার দুই কিংবা তিনজন তাকে আটকে রেখে বল কেড়ে নিয়েছে। তাই মেসি নিজের ছন্দে খেলতে পারেনি। ফলে ওই ফরমেশনে ডি মারিয়া, আগুয়েরো, মেসি মাসচেরানো কেউ নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি। তবে দ্বিতীয়র্ধেই ফরমেশনে পরিবর্তন আনেন সাবেলা। ৪-৩-৩ পদ্ধতিতে খেলান। পরে হিগুয়াইন এবং গাগোকে নামানোর পর কিছুটা গতি আসে আর্জেন্টিনার খেলায়। তবে পুরো ৯০ মিনিট বসনিয়াকে তাজা মনে হয়েছে। শেষ মুহূর্তে তারা গোল শোধও করেছে। অনেকে অসম লড়াই করেছে মনে করছিলেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বসনিয়া ইউরোপের ২১ নম্বর দল। মাঠের পারফরম্যান্সে বসনিয়া কোনো অংশেই কম ছিল না। তারা ম্যাচের প্রতি মুহূর্তে আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিয়েছে। তাই আর্জেন্টিনা ভাগ্যগুণে জিতেছে। মেসি দুটি সুযোগের একটি কাজে লাগাতে পেরেছে। তার ছন্দময় খেলা বসনিয়ার ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়েছে। যদিও সে আউট স্ট্যান্ডিং খেলেনি। আর্জেন্টিনাকে আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে।
সোমবার ভোরে হন্ডুরাসের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারেননি ফ্রান্সের রিবেরি। ম্যাচের প্রথম দিকে তার অভাব বেশ অনুভব করেছে ফ্রান্স। কিন্তু পরে বেনজামা সেই অভাব পূরণ করে দিয়েছেন। তার পা থেকেই প্রত্যেকটি গোল পেয়েছে ফ্রান্স। রিবেরি থাকলে হয়তো ফ্রান্স আরও চমৎকার অ্যাটাকিং খেলতে পারত। শংকার কথা হচ্ছে, কাল হয়তো বেনজামা ভালো খেলেছেন। প্রত্যেক দিন তো আর ভালো খেলতে পারবেন না। তবে এই জয়টা তাদের খুব প্রয়োজন ছিল। অন্যদিকে হন্ডুরাস হয়তো সেরকম কিছু করে দেখাতে পারেনি। তবে হন্ডুরাসের লাল কার্ডটিই ফ্রান্সের বড় জয়ের ভীত গড়ে দিয়েছে। এদিকে রোববার রাতের ম্যাচে প্রথম গোল করে এগিয়েছিল কিন্তু ইকুয়েডরই। সুইজারল্যন্ড ইউরোপিয়ান ধাঁচে খেলেছে। তাদের কৌশলও খুব অ্যাটাকিং ছিল। গতিময় খেলা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত জয় তাদেরই হয়েছে।
No comments:
Post a Comment