ভাগ্যের জোরে জিতেছেন মেসিরা
বসনিয়ার দৃষ্টিনন্দন ফুটবল
ভাগ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বড় দলের পক্ষ নেয়। প্রমাণ মিলল আরেকবার। ভাগ্যদেবী পাশে না থাকলে এই ম্যাচ জেতার কথা নয় আর্জেন্টিনার। বিশ্বকাপের অভিষেকেই বিশ্বনন্দিত তারকা মেসির আর্জেন্টিনাকে যেভাবে চেপে ধরেছিল বসনিয়া এ্যান্ড হার্জেগোভিনা তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে স্বাধীন হওয়া ছোট্ট দু’টি দেশ যুক্তনামে প্রথমবারের মতো খেলছে বিশ্ব কাঁপানো বিশ্বকাপ ফুটবলে। আর প্রথম ম্যাচে জিততে না পারলেও তাদের, লড়াকু-শৈল্পিক ফুটবল নজর কাড়ে রিও’র ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৭৫ হাজার দর্শকের। যেখানে গ্যালারির রং হয়ে উঠেছিল নব্বই ভাগ আকাশী-সাদায়। আর্জেন্টিনার এত ভক্ত-সমর্থকের মুহুর্মুহু করতালি আর গগনবিদারী চিৎকার দমাতে পারেনি বসনিয়ানদের আক্রমণের তোড়। তারকায় ঠাসা দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে ছোট দলের এত মেজাজি খেলা প্রত্যাশা করার কথা নয়। ছোট ছোট গড়ানো পাস, বল ধরে খেলার প্রবণতা, ক্ষুরধার দ্রুত পাল্টা আক্রমণ, সংঘবদ্ধ হয়ে খেলার কলাকৌশল আর প্রবল আত্মবিশ্বাস- দর্শকদের ধারণা পাল্টে দেয় বসনিয়ানরা। ইউরোপ থেকে কোয়ালিফাই করে আসা বসনিয়া এত দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দেবে তা ছিল অনেকেরই কল্পনার বাইরে। কিন্তু সেটাকে বাস্তবরূপ দিয়ে তারা প্রমাণ করল, ফুটবলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। যে ম্যাচে ’এল এম-টেন, মেসি নামের সিংহ মাঠে, পাশে এ্যাগুয়েরো, ডি মারিও, জাবালেতা, হিগুয়াইনের মতো বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। এমন সমৃদ্ধ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ম্যাচে অনেক বড় দলের তারকা তকমা লাগানো ফুটবলারদেরও বুক কেঁপে ওঠে লড়াই করতে অথচ অবলীলায় সমান তালে নব্বই মিনিট লড়াই চালিয়ে গেল বসনিয়ার ফুটবলাররা। যেন পাত্তাই দিচ্ছে না দলটি আর্জেন্টিনাকে। হাবভাব দেখে যে কারও মনে হতে বাধ্য, সমশক্তি বা তার চেয়েও ছোট কোন দলকে মোকাবেলা করছে অখ্যাত ফুটবলাররা মারাকানায় বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচে। বসনিয়া এ্যান্ড হার্জেগোভিনার খেলা খবরের শিরোনাম হয়েছে বিশ্ব মিডিয়ায়। যেখানে কেবলই প্রশংসা আর প্রশংসা।
গ্রুপ এফ থেকে দু’দলেরই এটি প্রথম ম্যাচ। জয় বলে কথা, সেটা যেভাবেই আসুক। এদিক থেকে ভাগ্যবান আর্জেন্টিনা। ফুটবল গোলের খেলা, গোল করে জয় পাওয়াটাই মুখ্য। হেরে গেলে ভাল খেলার কোন মূল্য নেই। এক্ষেত্রে সফল আর্জেন্টিনা। যদিও ম্যাচে গোল হয়েছে তিনটি, ব্যবধান ২-১। এর মধ্যে দুইটি করেছে বসনিয়ানরাÑ নিজেদের পোস্টে একটি অপরটি আর্জেন্টনার জালে। আর্জেন্টিনা জয় পেয়েছে অধিনায়ক মেসির একমাত্র গোলে। শুরুর তিন মিনিটেই সিড কোলাসিনাকের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে বসনিয়া। উপহারের এই নিয়েই ৬৫ মিনিট ম্যাচ ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। বিপক্ষ দলের নিখুঁত মার্কিংয়ে মেসি, ডি মারিও ও এ্যাগুয়েরোর মতো মাঠ কাঁপানো ফরোয়ার্ড নিজেদের ঝলকটা যেন ভুলে গিয়েছিলেন। মেলে ধরতে ব্যর্থ হন বিপক্ষ দলের নব্বই মিনিটের দুর্দান্ত প্রতিরোধে। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়ী বার্সিলোনা তারকা মেসি। তাও খুব বেশি নয়। বসনিয়ানদের কড়া পাহারার মধ্যে দু’তিনটি চোখ ধাঁধানো টান আর একটি গোল। এখানেই শেষ লিওনেল কেচ্ছা। মেসির বদনাম আছে ক্লাব পর্যায়ে তিনি যে শৈল্পিক খেলা উপহার দিয়ে থাকেন জাতীয় দলের জার্সিতে তার অর্ধেকও পারেন না। এই প্রমাণটা বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতে এবারও পাওয়া গেল মারাকানার মাঠে। যদিও গোলের বদৌলতে ম্যাচ সেরা তিনিই। কিন্তু দর্শক ভোটে ম্যাচের নায়ক আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। তাঁর অসাধারণ কিছু ‘সেভ’ বাঁচিয়ে দিয়েছে দলকে। তা না হলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত।
ম্যাচের বয়স তখন ৬৫ মিনিট, চলছে আক্রমণ প্রতিআক্রমণ। এ অবস্থায় মাঝমাঠ থেকে মাশ্চেরানোর বাড়ানো থ্রু ধরে তিন বিপক্ষ ফুটবলারকে ডজ দিয়ে বক্সের ঠিক কাছাকাছি থেকে মেসির জোরালো শট সাইডপোস্টের ভেতরে লেগে জালে (২-০)। পরাশক্তির বিরুদ্ধে দুই গোলে পিছিয়ে পড়লেও তেজী ঘোড়ার মতো টগবগে বসনিয়ানরা। মাথার ওপর প্রত্যাশার চাপ না থাকায় সাবলীল আক্রমণাত্মক খেলা, ৩-৫-২ ছকে। যা মোকাবেলা করতে গিয়ে মেসিরা হয়ত ভাবছিলেন, এ কোন অদম্য দলের বিরুদ্ধে খেলছি। যারা আমাদের না হোক, আর্জেন্টিনাকেও ভয় পাচ্ছে না। মনের প্রবল জোর আর খুনে মেজাজে খেলার ফসল ৮৫ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করে সাইড লাইনে দাঁড়ানো আর্জেন্টাইন কোচ আলেজান্দ্রো সাবেলার মাথা খারাপ করে দেন বসনিয়ান ফরোয়ার্ড ভিদাদ বিসেভিকচ। সুটেড-বুটেড সাবেলা মাথায় হাত দিয়ে নির্ধারিত সীমানায় হাঁটাহাঁটি করছিলেন মুখ নিচু করে। আবার এটাও হয়ত ভাবতে পারেন এই বুঝি সব গেল? সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তেতে ওঠা বসনিয়ানদের আক্রমণ চিন্তারই কারণ অবশ্য ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে। কারণ আর একটি গোল খেলেই পূর্ণ পয়েন্ট হাতছাড়া। একই সঙ্গে মান-ইজ্জত বিসর্জনের বিষয়টাও।
যা হোক-স্লোভাক রেফারি জোয়েল এ্যাগুইলার শেষ বাঁশি শোনার পর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো অবস্থার পর স্বস্তি-উৎসবের বান আর্জেন্টাইন শিবিরে। মাঠ ছেড়ে আসা খেলোয়াড়দের বুকে জড়িয়ে শুভেচ্ছা জানালেন কোচ সাবেলা।
বিশ্ব ফুটবলের শাসক সংস্থা ফিফার নিয়মানুযায়ী ম্যাচ শেষে মিডিয়া ব্রিফিং। এখানে শুরুতেই বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কোচ সাফাত সুসিকের পালা। শুরুটা করলেন তিনি এভাবে-আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে এই পরাজয় দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। আত্মঘাতী গোলটিই টার্নিং পয়েন্ট জয়-পরাজয়ের। তিনি অভিনন্দন জানান বিপক্ষ গোলরক্ষক রোমেরোকে। সাফাতের কথায়, আর্জেন্টিনা নয়, আমরা হেরে গেছি রোমেরোর কাছে। তাঁর অসাধারণ কিছু ‘সেভ’ গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেয় আর্জেন্টিনাকে। যদিও আমার দল জয়ের জন্য নয়। দর্শক মন জয় করতে ভাল খেলা উপহার দেয়ার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামে। দলের সার্বিক নৈপুণ্য প্রমাণ করে ছেলেরা সেটা দেখাতে পেরেছে। তারকায় ঠাসা শিরোপা প্রত্যাশী সুবিন্যস্ত আর্জেন্টিনার ঘাম ঝরাতে পারার মধ্যেও একটা আনন্দ, অনুপ্রেরণা রয়েছে। আমরা তা উপলব্ধি করছি। পরের দুই ম্যাচেও একই ফর্মেশনে খেলে আমরা দর্শকের ভালবাসা কুড়াতে চাই।
৪-৪-২ ছকের কোচ সাবেলার মুখ বরাবরই গোমড়া। মাইকের সামনে কথাও বলেন মাথা নিচু করে, ভাব-গাম্ভীর্য নিয়ে। ম্যাচ শেষে পরিবর্তন বলতে লাল চেহারায় কিছুটা কালো মেঘের ছাপÑ একরাশ হতাশা। সাবেলা মনে করছেন জয়টাই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় পাওয়া। যা পরবর্তী দুই ম্যাচে ইরান ও নাইজিরিয়ার বিপক্ষে ধরে রাখার অনুপ্রেরণা যোগাবে। তবে দলের সার্বিক পারফর্মেন্স নিয়ে তেমন কোন মন্তব্যে গেলেন না আর্জেন্টাইন কোচ। চেহারাই বলে দিচ্ছিল মেসিদের কাছ থেকে ম্যাঁড়মেড়ে এই খেলা তিনি প্রত্যাশা করেননি। কিন্তু প্রশংসা করলেন প্রতিপক্ষ দলের। বললেন খুবই ভাল খেলেছে ওরা। আমার ধারণা, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে পরবর্তী পর্বে পৌঁছার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বসনিয়ানদের। বিশ্বকাপে নতুন খেলতে এলেও ওদের আত্মবিশ্বাস, পিছিয়ে পড়েও হাল না ছাড়ার মানসিকতা প্রশংসার দাবি রাখে। মেসির নৈপুণ্য নিয়ে প্রশ্ন করলেও বিষয়টা টেকনিক খাটিয়ে পাশ কেটে যান-এই বলে যে, ও যা করার করেছে। গোল করে দলকে জিতিয়েছে।
মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে ‘এলএম-টেনকেও।’ মায়াবী মুখের হাসি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। মিনিট তিনেকের মতো মাইকের সামনে বসে শুধু বলে গেলেন, দলের জয়ে আমি খুশি। তবে ব্যবধান নিয়ে হতাশ। আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল। আমাদের মূল্যবান পূর্ণ পয়েন্টে বিপক্ষ দলের অবদান রয়েছে (আত্মঘাতী গোল)। কাজেই আমি মনে করি নৈতিক জয়টা ওদেরই বলে তাড়াহুড়া করে চলে গেলেন।
গ্রুপ এফ থেকে দু’দলেরই এটি প্রথম ম্যাচ। জয় বলে কথা, সেটা যেভাবেই আসুক। এদিক থেকে ভাগ্যবান আর্জেন্টিনা। ফুটবল গোলের খেলা, গোল করে জয় পাওয়াটাই মুখ্য। হেরে গেলে ভাল খেলার কোন মূল্য নেই। এক্ষেত্রে সফল আর্জেন্টিনা। যদিও ম্যাচে গোল হয়েছে তিনটি, ব্যবধান ২-১। এর মধ্যে দুইটি করেছে বসনিয়ানরাÑ নিজেদের পোস্টে একটি অপরটি আর্জেন্টনার জালে। আর্জেন্টিনা জয় পেয়েছে অধিনায়ক মেসির একমাত্র গোলে। শুরুর তিন মিনিটেই সিড কোলাসিনাকের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে বসনিয়া। উপহারের এই নিয়েই ৬৫ মিনিট ম্যাচ ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। বিপক্ষ দলের নিখুঁত মার্কিংয়ে মেসি, ডি মারিও ও এ্যাগুয়েরোর মতো মাঠ কাঁপানো ফরোয়ার্ড নিজেদের ঝলকটা যেন ভুলে গিয়েছিলেন। মেলে ধরতে ব্যর্থ হন বিপক্ষ দলের নব্বই মিনিটের দুর্দান্ত প্রতিরোধে। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়ী বার্সিলোনা তারকা মেসি। তাও খুব বেশি নয়। বসনিয়ানদের কড়া পাহারার মধ্যে দু’তিনটি চোখ ধাঁধানো টান আর একটি গোল। এখানেই শেষ লিওনেল কেচ্ছা। মেসির বদনাম আছে ক্লাব পর্যায়ে তিনি যে শৈল্পিক খেলা উপহার দিয়ে থাকেন জাতীয় দলের জার্সিতে তার অর্ধেকও পারেন না। এই প্রমাণটা বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতে এবারও পাওয়া গেল মারাকানার মাঠে। যদিও গোলের বদৌলতে ম্যাচ সেরা তিনিই। কিন্তু দর্শক ভোটে ম্যাচের নায়ক আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। তাঁর অসাধারণ কিছু ‘সেভ’ বাঁচিয়ে দিয়েছে দলকে। তা না হলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত।
ম্যাচের বয়স তখন ৬৫ মিনিট, চলছে আক্রমণ প্রতিআক্রমণ। এ অবস্থায় মাঝমাঠ থেকে মাশ্চেরানোর বাড়ানো থ্রু ধরে তিন বিপক্ষ ফুটবলারকে ডজ দিয়ে বক্সের ঠিক কাছাকাছি থেকে মেসির জোরালো শট সাইডপোস্টের ভেতরে লেগে জালে (২-০)। পরাশক্তির বিরুদ্ধে দুই গোলে পিছিয়ে পড়লেও তেজী ঘোড়ার মতো টগবগে বসনিয়ানরা। মাথার ওপর প্রত্যাশার চাপ না থাকায় সাবলীল আক্রমণাত্মক খেলা, ৩-৫-২ ছকে। যা মোকাবেলা করতে গিয়ে মেসিরা হয়ত ভাবছিলেন, এ কোন অদম্য দলের বিরুদ্ধে খেলছি। যারা আমাদের না হোক, আর্জেন্টিনাকেও ভয় পাচ্ছে না। মনের প্রবল জোর আর খুনে মেজাজে খেলার ফসল ৮৫ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করে সাইড লাইনে দাঁড়ানো আর্জেন্টাইন কোচ আলেজান্দ্রো সাবেলার মাথা খারাপ করে দেন বসনিয়ান ফরোয়ার্ড ভিদাদ বিসেভিকচ। সুটেড-বুটেড সাবেলা মাথায় হাত দিয়ে নির্ধারিত সীমানায় হাঁটাহাঁটি করছিলেন মুখ নিচু করে। আবার এটাও হয়ত ভাবতে পারেন এই বুঝি সব গেল? সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তেতে ওঠা বসনিয়ানদের আক্রমণ চিন্তারই কারণ অবশ্য ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে। কারণ আর একটি গোল খেলেই পূর্ণ পয়েন্ট হাতছাড়া। একই সঙ্গে মান-ইজ্জত বিসর্জনের বিষয়টাও।
যা হোক-স্লোভাক রেফারি জোয়েল এ্যাগুইলার শেষ বাঁশি শোনার পর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো অবস্থার পর স্বস্তি-উৎসবের বান আর্জেন্টাইন শিবিরে। মাঠ ছেড়ে আসা খেলোয়াড়দের বুকে জড়িয়ে শুভেচ্ছা জানালেন কোচ সাবেলা।
বিশ্ব ফুটবলের শাসক সংস্থা ফিফার নিয়মানুযায়ী ম্যাচ শেষে মিডিয়া ব্রিফিং। এখানে শুরুতেই বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কোচ সাফাত সুসিকের পালা। শুরুটা করলেন তিনি এভাবে-আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে এই পরাজয় দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। আত্মঘাতী গোলটিই টার্নিং পয়েন্ট জয়-পরাজয়ের। তিনি অভিনন্দন জানান বিপক্ষ গোলরক্ষক রোমেরোকে। সাফাতের কথায়, আর্জেন্টিনা নয়, আমরা হেরে গেছি রোমেরোর কাছে। তাঁর অসাধারণ কিছু ‘সেভ’ গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেয় আর্জেন্টিনাকে। যদিও আমার দল জয়ের জন্য নয়। দর্শক মন জয় করতে ভাল খেলা উপহার দেয়ার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামে। দলের সার্বিক নৈপুণ্য প্রমাণ করে ছেলেরা সেটা দেখাতে পেরেছে। তারকায় ঠাসা শিরোপা প্রত্যাশী সুবিন্যস্ত আর্জেন্টিনার ঘাম ঝরাতে পারার মধ্যেও একটা আনন্দ, অনুপ্রেরণা রয়েছে। আমরা তা উপলব্ধি করছি। পরের দুই ম্যাচেও একই ফর্মেশনে খেলে আমরা দর্শকের ভালবাসা কুড়াতে চাই।
৪-৪-২ ছকের কোচ সাবেলার মুখ বরাবরই গোমড়া। মাইকের সামনে কথাও বলেন মাথা নিচু করে, ভাব-গাম্ভীর্য নিয়ে। ম্যাচ শেষে পরিবর্তন বলতে লাল চেহারায় কিছুটা কালো মেঘের ছাপÑ একরাশ হতাশা। সাবেলা মনে করছেন জয়টাই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় পাওয়া। যা পরবর্তী দুই ম্যাচে ইরান ও নাইজিরিয়ার বিপক্ষে ধরে রাখার অনুপ্রেরণা যোগাবে। তবে দলের সার্বিক পারফর্মেন্স নিয়ে তেমন কোন মন্তব্যে গেলেন না আর্জেন্টাইন কোচ। চেহারাই বলে দিচ্ছিল মেসিদের কাছ থেকে ম্যাঁড়মেড়ে এই খেলা তিনি প্রত্যাশা করেননি। কিন্তু প্রশংসা করলেন প্রতিপক্ষ দলের। বললেন খুবই ভাল খেলেছে ওরা। আমার ধারণা, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে পরবর্তী পর্বে পৌঁছার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বসনিয়ানদের। বিশ্বকাপে নতুন খেলতে এলেও ওদের আত্মবিশ্বাস, পিছিয়ে পড়েও হাল না ছাড়ার মানসিকতা প্রশংসার দাবি রাখে। মেসির নৈপুণ্য নিয়ে প্রশ্ন করলেও বিষয়টা টেকনিক খাটিয়ে পাশ কেটে যান-এই বলে যে, ও যা করার করেছে। গোল করে দলকে জিতিয়েছে।
মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে ‘এলএম-টেনকেও।’ মায়াবী মুখের হাসি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। মিনিট তিনেকের মতো মাইকের সামনে বসে শুধু বলে গেলেন, দলের জয়ে আমি খুশি। তবে ব্যবধান নিয়ে হতাশ। আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল। আমাদের মূল্যবান পূর্ণ পয়েন্টে বিপক্ষ দলের অবদান রয়েছে (আত্মঘাতী গোল)। কাজেই আমি মনে করি নৈতিক জয়টা ওদেরই বলে তাড়াহুড়া করে চলে গেলেন।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html
No comments:
Post a Comment