নৌপথে বাড়ছে লাশের মিছিল
যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ
প্রকাশ : ০৩ জুন, ২০১৪
চলছে দূরন্ত কালবৈশাখীর মৌসুমী। দুয়ারে কড়া নাড়ছে বর্ষাকাল। বর্ষা মৌসুমে লঞ্চ দুর্ঘটনা একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রাকৃতিক পাশাপাশি মানুষ সৃষ্ট কিছু কারণেও বেড়েই চলেছে নৌপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। কারণগুলোর মধ্যে ত্র“টিপূর্ণ নৌযান, অদক্ষ মাস্টার, ড্রাইভার, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নদীপথে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট, ফায়ার বাকেট, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, বালুভর্তি বাক্স ও বালতি এবং হস্তচালিত পানির পাম্পের ব্যবস্থা রাখার কথা থাকলেও বেশিরভাগ লঞ্চেই ওসব নিয়ম-কানুনের কোনো তোয়াক্কা করা হয় না।
শীতলক্ষ্যা ও মেঘনায় লাশের মিছিল
নৌযান চলাচলের জন্য শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কয়েক বছরের পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ দুটি নদীতে গত কয়েক বছরে লঞ্চডুবি, যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌকাডুবির ঘটনায় শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দিন দিন নৌ দুর্ঘটনায় নিহত মানুষের লাশের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। তারপরও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।
সর্বশেষ গত মে মাসে দুটি লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৩ মে পটুয়াখালীর গলাচিপার কলাগাছিয়া নদীতে ডুবে যায় এমভি শাথিল। উদ্ধার হয় ১৭ জনের লাশ। গত ১৫ মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে তিনশতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি মিরাজ-৪ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যায়? ভয়াবহ এ লঞ্চ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় শতাধিক লাশ উদ্ধার করা হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ৫০ যাত্রী, বাকিদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলা ও গজারিয়া উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীতে তিন বছরে এটি ছাড়া আরও দুটি লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছে। তিনটি লঞ্চডুবিতে এখানে প্রায় ২২০ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ২০১২ সালে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চডুবিতে ১৪৭ যাত্রী, ২০১৩ সালে এমএল সারস লঞ্চডুবিতে ১৬ যাত্রীর লাশ উদ্ধার হয়।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং এড়াতে রাতের বেলায় বালুবাহী ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। প্রশাসনের সামনেই এ দুটি নদীতে রাতে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে বালুবাহী ট্রলার। এসব বাল্কহেড রাতে চলাচলের সময় কোনো বাতি ব্যবহার করে না। গত বছর ট্রলারডুবির ঘটনার পর জেলা প্রশাসক সন্ধ্যার পর বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু তার পরও বিপজ্জনকভাবে সেগুলো চলাচল করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীতলক্ষ্যা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় মাঝ নদীতে জাহাজগুলো নোঙর করার কারণেও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি অনেক বেড়েছে। বড় বড় জাহাজ এভাবে নদী দখল করে রাখার কারণে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
গত মাসে টাস্কফোর্সের বৈঠক শেষে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান নিজেও এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, বালুবাহী জাহাজের ৯০ শতাংশ পানিতে তলিয়ে থাকে ও বাতি থাকে না। তাই নদীতে কোনো যান আছে কিনা সহজে বোঝা যায় না। যা নৌচলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে, অভিযুক্তদের শাস্তি হয় না
কমবেশি প্রতি বছরই লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে। পানিতে ডুবে প্রাণ হারায় সাধারণ মানুষ। এতে স্বজন হারাদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। লঞ্চডুবির কারণ অনুসন্ধানে বা লঞ্চডুবির কারণ জানতে গণমাধ্যমসহ জনমানুষের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি গঠনের পর প্রতিবেদনও জমা পড়ে। কিন্তু প্রতিবেদনের কোনো সুপারিশই বাস্তবায়িত হয় না। বিগত বছরগুলোয় বিভিন্ন লঞ্চ দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন, প্রতিবেদন প্রদান এবং পরবর্তী কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এমনটিই দেখা যায়। তদন্ত কমিটির বেশিরভাগ সুপারিশই অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে।
২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মতলব ষাটনল এলাকায় মেঘনা নদীতে এমভি জলকপোত ও এমভি রাজহংসী নামের দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষে রাজহংসীর ১৬২ জন প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটির সুপারিশে একটি ‘স্বাধীন অনুসন্ধান সেল’ করার প্রস্তাব করেছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ের তদন্ত প্রতিবেদনে লঞ্চ জরিপ কাজে মাস্টার মেরিনার, নেভাল আর্কিটেক্ট ও মেরিন প্রকৌশলী তিনটি পক্ষকেই কাজে লাগানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে আবহাওয়া দফতরের অফিস খোলার সুপারিশ ছিল। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতায় মাওয়া ও পাটুরিয়ায় দফতর স্থাপন ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি।
২০০২ সালের ৩ মে চাঁদপুরের ষাটনল সংলগ্ন মেঘনায় সালাহউদ্দিন-২ নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় ৩৬৩ যাত্রী মারা যান। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি দায়িত্বে অবহেলার জন্য সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী, জরিপকারকসহ চার কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়। পাশাপাশি নকশা অনুযায়ী লঞ্চ নির্মাণ না করায় মালিক এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্য মাস্টারকে অভিযুক্ত করা হয়। শেষ পর্যন্ত মালিককে জরিমানা এবং মাস্টারকে চাকরিচ্যুত করা হলেও অন্যদের কোনো শাস্তি হয়নি।
২০০৩ সালের ৮ জুলাই এমভি নাসরিন ডুবে ৬৪১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ছিল দেশের লঞ্চ দুর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। রহস্য উদঘাটনে গঠিত হয়েছিল দুটি তদন্ত কমিটি। তবে তদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী কারও শাস্তি হয়নি।
নৌপরিবহন অধিদফতরের তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর দেশে নৌপরিবহন দুর্ঘটনায় ২০ হাজারের মতো মামলা হলেও নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ২০০টির। তবে যেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে সেগুলোতে কারও কোনো শাস্তি হয়নি।
নৌপরিবহন সংক্রান্ত ১৯৭৬ সালের আইনে লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটলে মালিক, চালক ও জরিপকারীসহ অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা থাকলেও নকশাকারী বা নির্মাণকারীর বিষয়ে কিছুই নেই এ আইনে।
নকশা ছাড়াই জাহাজ নির্মাণ, বেশিরভাগের নেই ফিটনেস
লঞ্চডুবির পেছনে অন্যতম কারণ নকশা ছাড়াই জাহাজ নির্মাণ। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নকশা না মেনে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে কেরানীগঞ্জের বেশকিছু ডকইয়ার্ডে চলছে নকশা ছাড়া জাহাজ নির্মাণের কাজ। রাজধানীর অদূরে বুড়িগঙ্গার তীরে কেরানীগঞ্জে গড়ে ওঠা ডকইয়ার্ডে পুরনো নৌযান হয়ে যাচ্ছে নতুন। এসব ডকইয়ার্ডে নকশা অনুযায়ী নৌযান তৈরি হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রতিনিধি দলকে হাতে রেখেই এসব কাজ হচ্ছে। সূত্র জানায়, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএ’র কিছু অসাধু কর্মকর্তা সার্ভে রেজিস্ট্রেশন নকশা দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। লঞ্চ নির্মাণের বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কিছু নিয়ম রয়েছে। সে আনুযায়ী লঞ্চ নির্মাণ করা হলে সেটি ঝড় বা দুর্যোগের কবলে পড়ে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত কাত হলেও এতে পানি প্রবেশ করবে না। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশে নির্মিত লঞ্চগুলো মাত্র ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রি কাত হলেই পানি ঢুকে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ২২ হাজার নৌযান
সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন নৌপথে চলাচলকারী নৌযানের সংখ্যা ৩৫ হাজার। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে মাত্র ১৩ হাজারের। আর রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চলাচল করছে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার নৌযান। রেজিস্ট্রেশন করা নৌযানের মধ্যে নিয়মিত বার্ষিক সার্ভে বা ফিটনেস পরীক্ষা হয় আনুমানিক ছয় হাজারের। সার্ভে না করার কারণে ফিটনেসবিহীন নৌযান চলাচল করায় বিঘ্নিত হচ্ছে নৌ নিরাপত্তা, প্রতি বছর প্রাণ হারাচ্ছেন শতাধিক মানুষ।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সেক্টরে নিবন্ধিত নৌযানের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। এর মধ্যে যাত্রীবাহী নৌযান ২ হাজার ২২৫টি। যাত্রীবাহী নৌযানের মধ্যে বছরে ফিটনেস পরীক্ষা বা সার্ভে করা হয় মাত্র ৮৫০ থেকে ৯০০টির। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে কোনো নৌশুমারি না হওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী নৌযানের সংখ্যা কত তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই। এ কারণে যাত্রীবাহী নৌযানের (লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার) প্রকৃত সংখ্যাও অজ্ঞাত। এ বিপুল সংখ্যক নৌযানের সার্ভে ও ফিটনেস পরীক্ষা করার দায়িত্বে রয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার’।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের পরিদর্শক ও বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন নৌরুটে ঝুঁকি নিয়ে চলছে কয়েক শতাধিক ফিটনেসবিহীন নৌযান। ফিটনেসবিহীন নৌযান অবাধে চলাচলের কারণেই দুর্ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়েই চলেছে।
নৌ দুর্ঘটনার কারণ
বিআইডব্লিউটিএ, ও কয়েকটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা নৌপথে দুর্ঘটনার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- নদীর মধ্যে বড় বড় জাহাজ নোঙর করে রাখা, লঞ্চের নকশাজনিত ত্র“টি, চালকের অদক্ষতা, মাস্টার-সুকানির গাফিলতি, অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন, নিরাপত্তা আইন অমান্য করা, বাতি বা সার্চ লাইট না থাকা, চলার পথে দুই লঞ্চের মধ্যে প্রতিযোগিতা, বেপরোয়া চালানো, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অবহিত না হওয়া, কচুরিপানার প্রতিবন্ধকতা, নদীতে পুলিশের টহল না থাকা।
পাঁচ হাজার দুর্ভাগা
নৌযান দুর্ঘটনার ইতিহাস নতুন নয়। গত ৩৭ বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে অর্থাৎ ২০০০ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাসে দুটি লঞ্চ দুর্ঘটনাসহ বিগত সাড়ে ১৩ বছরে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার হিসাব মতে, ২০০০ সালে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যান ৪৩৯ জন যাত্রী। ২০০১ সালে ৭৬টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ৩৯২ জন? ২০০২ সালে ২৮টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ছয়শতাধিক। ২০০৩ সালে ৬৪টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ১ হাজার ২০৫ জন। ২০০৪ সালে ৫৬টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ৪৮৭। ২০০৫ সালে ৪৯টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ১৭৬। ২০০৬ সালে ৩৮টি দুর্ঘটনা ঘটে, মারা যান ৭৮। ২০০৭ সালে ৩৪টি দুর্ঘটনা ঘটে মারা যান শতাধিক যাত্রী। ২০০৮ সালে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটে, না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিন শতাধিক যাত্রী। ২০০৯ সালে ২৯টি দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৩০৮ জনের। ২০১০ সালে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৭০ জন মারা যান। ২০১১ সালে ৩৫টি লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে, পানিতে ডুবে মারা যান ১৫৬ জন। ২০১২ সালের মার্চে মেঘনায় এমভি শরীয়তপুর-১ ডুবে মারা যায় শতাধিক যাত্রী। ২০১৩ সালে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মারা যায় প্রায় ৪৫০ জন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মে মাস পর্যন্ত লঞ্চডুবে পৃথক ঘটনায় শতাধিক মানুষ মারা যান। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় কয়েক শতাধিক যাত্রী।
No comments:
Post a Comment