পির্লোর পায়েই আজুরির রিমোট
দীপেন্দু বিশ্বাস, রিও দে জেনেইরো
স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে৷ রিও থেকে দেড় ঘণ্টা দূরে ট্যাক্সি করে যাচ্ছি ব্রাজিলের প্র্যাক্টিস দেখতে৷ সেখান থেকে আবার মাঠে বসে আর্জেন্তিনার ম্যাচ৷ ছোট থেকেই টিভিতে বসে বিশ্বকাপ দেখছি৷ কিন্ত্ত ব্রাজিলে এসে বুঝতে পারছি, এত দিন শুধুই ফুটবলটা দেখেছি, উপলব্ধি করিনি৷
নীল পতাকায় মোড়া বছর বারোর পাওলোর সঙ্গে দেখা না-হলে হয়তো ব্যাপারটা এত ভালো করে বুঝতেই পারতাম না৷ আসলে আমরা বাঙালিরা ব্রাজিল-আর্জেন্তিনাতেই বুঁদ হয়ে থাকি৷ পাওলোই আমার পরিচিত প্রথম ইতালির সমর্থক৷ বাবার সঙ্গে রোম থেকে এসেছে ব্রাজিলে৷ কয়েক দিন আগে ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল সাও পাওলো এয়ারপোর্টের কফি শপে৷ আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, 'তোমাদের ভারতে কেউ ইতালিকে সাপোর্ট করে?' আমার অনেক বন্ধু কলকাতায় মাঝরাতে টিভির সামনে বসে পির্লো, বালোতেলির জন্য গলা ফাটাবে শুনে ওর চোখ বড় বড়৷ মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, 'ওয়াও, তা হলে ওদের বলো আমাদের জন্য প্রার্থনা করতে৷'
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-১ হারানোর সময় মানাউসের গ্যালারিতে বসে পাওলো কতটা নাচল জানি না৷ তবে বালোতেলির গোলটার সময় চোখে পড়ল, পাওলোরই বয়সেরই একটা ছেলের চোখে জল৷ আসলে ফুটবল আবেগের ভাষা পৃথিবীর সব জায়গাতেই এক৷ পির্লোর খেলা দেখতে দেখতে আর একটা চরম সত্যি আবারও উপলব্ধি করলাম, বয়স কখনও প্রতিভাকে ডজ করে বেরিয়ে যেতে পারে না৷
আন্দ্রে পির্লো৷ একটা ৩৫ প্লাস ফুটবলার, ম্যাচে যার কোনও গোল নেই, কোনও গোলের ফাইনাল পাস নেই, তবু ম্যাচের শেষে সেই পির্লোকে ছাড়া আর অন্য কাউকে নিয়ে কথাই বলতে ইচ্ছে করছে না৷ আমরা ভারতীয় ফুটবলাররা প্রায়ই একটা কথা শুনি৷ কাউকে আঘাত করার জন্য বলছি না, কিন্ত্ত পরখ না-করেই বলে দেওয়া হয়, 'ওকে দিয়ে চলবে না রে, ওর বয়স হয়ে গেছে৷' ভাগ্যিস প্রান্দেলি ও রকম ভাবেননি৷ ইংল্যান্ড কিন্ত্ত শেষ হয়ে গেল পির্লো ম্যাজিকেই৷
ইন্টারনেট সার্ফ করে দেখছিলাম, ১১২টা পাসের মধ্যে পির্লোর ১০৩টা পাস একেবারে নিখুঁত৷ তুলনায় অবশ্য দে রোসির ১১১টার মধ্যে ১০৫টা পাস ঠিক৷ তবে ফুটবল তো আর শুধু স্ট্যাট দিয়ে মাপা যায় না৷ পির্লো শিল্পী৷ আর ইতালি টিমটার ও-ই যেন গার্জেন৷ টিমটাকে খেলাচ্ছে৷ পির্লোর পায়েই যেন আজুরির রিমোট৷ কখনও দে রোসির সঙ্গে ছোট ছোট পাস খেলে পাগল করে দিল স্টার্লিংদের, কখনও আবার চেলিনির সঙ্গে স্কোয়্যার পাস খেলতে খেলতে চল্লিশ গজের মাপা থ্রু৷ শেষ দিকে ফ্রি-কিকটা ক্রসপিসে না-লাগলে সোনায় সোহাগা হত৷
সামনে একা বালোতেলিকে রেখে টিম সাজিয়েছিল ইতালি৷ এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ যতটা দেখলাম, তাতে বেশির ভাগ টিমই কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলছে৷ যে ছকে স্পেনকে উড়িয়ে দিয়েছিল ডাচরা, ইতালিও সেই পলিসি নিল৷ বালোতেলি তো সে ভাবে বলই পাচ্ছিল না৷ ওকে ডাবল কভারিংয়ে রেখেছিল কাহিল আর জাগিয়েলকা৷ সেখান থেকে হেডে যখন গোল করল, তখন দেখলাম সুপার মারিও একেবারে আনমার্কড৷ এটাই কিন্ত্ত একজন স্ট্রাইকারের আসল গুণ৷
যার কথাই বলি, সেই পির্লোর প্রসঙ্গই এসে পড়ছে৷ ম্যাচের শুরু থেকেই রাশটা নিজের পায়ে রেখেছিল৷ জেরার চেষ্টা করেছিল ঠিকই৷ ম্যাচের পর মার্গারেট নামে ইংল্যান্ডের তরুণীর মুখে যা শুনলাম সেটাই ঠিক, 'পির্লোর স্ট্যান্ডার্ডের কোনও প্লেয়ার নেই আমাদের টিমে৷' এখানে এসে বেশ কয়েকজন ইংল্যান্ডের বন্ধুও হয়ে গিয়েছে৷ চিরকাল শুনে এসেছি, ওদের সমর্থকরা খুব উগ্র৷ কিন্ত্ত যে ভাবে ওদের মুখে ইতালির প্রশংসা শুনছিলাম, তাতে ধারণাটা একটু হলেও বদলাল৷ বুঝলাম, প্রতিভাকে সবাই-ই কুর্নিশ জানায়৷
পির্লোর প্রেমে পড়ে গিয়েও একটা কথা খোলা মনেই বলছি, ইউরোপের দুই জায়েন্টের লড়াইটাও দারুণ জমল৷ এমন আপ অ্যান্ড ডাউন ফুটবল দেখার জন্যই তো এত দূর আসা৷ পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে গ্রাউন্ডারে মার্চিসিও ৩৫ মিনিটে ইতিালকে ১-০ এগিয়ে দিল৷ ওখানেই কিন্ত্ত পির্লোর 'অদৃশ্য' পা৷ ডামি রান দিয়ে বলটা ছেড়ে মার্চিসিওকে জায়গা তৈরি করে দিল৷ নিজে ফরোয়ার্ড বলে জানি, টিমে পির্লোর মতো একজন মিডফিল্ডার থাকলে ফরোয়ার্ডদের ফূর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ৷ জেরার ভালো৷ কিন্ত্ত স্টারিজ, রুনিদের জন্য সে রকম কোনও পাসের পসরা সাজিয়ে দিতে পারেনি ইংল্যান্ড মিডফিল্ডাররা৷
রুনির ক্রস থেকে স্টারিজের গোলে ১-১ হল ৩৭ মিনিটে৷ সেকেন্ড হাফেও প্রচুর অ্যাটাক করেছে ইংল্যান্ড৷ তবু স্টারিজ, রুনিকে নিয়ে আমি নাচানাচি করার মতো কিছু পাচ্ছি না৷ এই ধরনের ম্যাচে 'গেম চেঞ্জার' দরকার৷ সেটা কই? আগেই বলেছিলাম, ইংল্যান্ড বেশি দূর যেতে পারবে না৷ কারণ, ইপিএল-ও আমাদের দেশের ফুটবলের মতো বিদেশি নির্ভর৷ সুয়ারেজ, আগুয়েরোরা তফাত গড়ে দেয়৷ কিন্ত্ত বিশ্বকাপে তো আর সেটা হবে না৷
অন্য দিকে ইতালি অনেক প্ল্যানড৷ চিরকালই ওদের ডিফেন্স ভালো৷ এখন আর কাতানেচিও নেই, নেস্তা-কানাভারোরাও নেই৷ তবু ইতালির ডিফেন্ডারদের ট্যাকল সব সময়ই অপোনেন্ট অ্যাটাকারদের হাড় হিম করে দেয়৷ সেকেন্ড হাফে যখন চেপে ধরছে স্টারিজ-স্টার্লিং-ওয়েলবেকরা, তখনও বারজাগলি, পালেত্তারা বুক চিতিয়ে লড়ে ম্যাচটাকে বের করে নিল৷
দু'জনের কথা না বলে পারছি না৷ এক ইতালির গোলকিপার সিরিগু৷ বুফোঁ না-থাকায় ইতালি নিশ্চয়ই একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপে ছিল৷ আর সিরিগুর ক্ষেত্রে সেটা ছিল আকাশছোঁয়া৷ মানাউসের মাঠে প্যারিস সাঁ জাঁর গোলকিপার কিন্ত্ত একশোয় একশো৷ ম্যাচের প্রিভিউতে ইম্মোবিলের চমকে দেওয়ার কথা বলেছিলাম৷ শেষের দিকে নেমে তেমন কিছু করতে পারেনি৷ কিন্ত্ত আমি জানি, ইম্মোবিলে পারবে৷ সেটা যতটা না ওর নিজের ক্ষমতায়, তার চেয়েও বেশি দাদার মতো পির্লোর জন্য৷
আমার ফুটবল বোধ বলছে, ইতালি অনেক দূর যাবে৷ যত সময় যাবে, খেলা খুলবে৷ তবে ইতালির সাফল্য চাই, আমরা ছোট্ট ইতালিয়ান বন্ধু পাওলোর জন্যও৷ জানি না, পাওলোর সঙ্গে আর দেখা হবে কি না! বিশ্বকাপের এ-ও এক দস্ত্তর৷ কত বন্ধু হয়, আবার হারিয়ে যায়৷
স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে৷ রিও থেকে দেড় ঘণ্টা দূরে ট্যাক্সি করে যাচ্ছি ব্রাজিলের প্র্যাক্টিস দেখতে৷ সেখান থেকে আবার মাঠে বসে আর্জেন্তিনার ম্যাচ৷ ছোট থেকেই টিভিতে বসে বিশ্বকাপ দেখছি৷ কিন্ত্ত ব্রাজিলে এসে বুঝতে পারছি, এত দিন শুধুই ফুটবলটা দেখেছি, উপলব্ধি করিনি৷
নীল পতাকায় মোড়া বছর বারোর পাওলোর সঙ্গে দেখা না-হলে হয়তো ব্যাপারটা এত ভালো করে বুঝতেই পারতাম না৷ আসলে আমরা বাঙালিরা ব্রাজিল-আর্জেন্তিনাতেই বুঁদ হয়ে থাকি৷ পাওলোই আমার পরিচিত প্রথম ইতালির সমর্থক৷ বাবার সঙ্গে রোম থেকে এসেছে ব্রাজিলে৷ কয়েক দিন আগে ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল সাও পাওলো এয়ারপোর্টের কফি শপে৷ আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, 'তোমাদের ভারতে কেউ ইতালিকে সাপোর্ট করে?' আমার অনেক বন্ধু কলকাতায় মাঝরাতে টিভির সামনে বসে পির্লো, বালোতেলির জন্য গলা ফাটাবে শুনে ওর চোখ বড় বড়৷ মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, 'ওয়াও, তা হলে ওদের বলো আমাদের জন্য প্রার্থনা করতে৷'
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-১ হারানোর সময় মানাউসের গ্যালারিতে বসে পাওলো কতটা নাচল জানি না৷ তবে বালোতেলির গোলটার সময় চোখে পড়ল, পাওলোরই বয়সেরই একটা ছেলের চোখে জল৷ আসলে ফুটবল আবেগের ভাষা পৃথিবীর সব জায়গাতেই এক৷ পির্লোর খেলা দেখতে দেখতে আর একটা চরম সত্যি আবারও উপলব্ধি করলাম, বয়স কখনও প্রতিভাকে ডজ করে বেরিয়ে যেতে পারে না৷
আন্দ্রে পির্লো৷ একটা ৩৫ প্লাস ফুটবলার, ম্যাচে যার কোনও গোল নেই, কোনও গোলের ফাইনাল পাস নেই, তবু ম্যাচের শেষে সেই পির্লোকে ছাড়া আর অন্য কাউকে নিয়ে কথাই বলতে ইচ্ছে করছে না৷ আমরা ভারতীয় ফুটবলাররা প্রায়ই একটা কথা শুনি৷ কাউকে আঘাত করার জন্য বলছি না, কিন্ত্ত পরখ না-করেই বলে দেওয়া হয়, 'ওকে দিয়ে চলবে না রে, ওর বয়স হয়ে গেছে৷' ভাগ্যিস প্রান্দেলি ও রকম ভাবেননি৷ ইংল্যান্ড কিন্ত্ত শেষ হয়ে গেল পির্লো ম্যাজিকেই৷
ইন্টারনেট সার্ফ করে দেখছিলাম, ১১২টা পাসের মধ্যে পির্লোর ১০৩টা পাস একেবারে নিখুঁত৷ তুলনায় অবশ্য দে রোসির ১১১টার মধ্যে ১০৫টা পাস ঠিক৷ তবে ফুটবল তো আর শুধু স্ট্যাট দিয়ে মাপা যায় না৷ পির্লো শিল্পী৷ আর ইতালি টিমটার ও-ই যেন গার্জেন৷ টিমটাকে খেলাচ্ছে৷ পির্লোর পায়েই যেন আজুরির রিমোট৷ কখনও দে রোসির সঙ্গে ছোট ছোট পাস খেলে পাগল করে দিল স্টার্লিংদের, কখনও আবার চেলিনির সঙ্গে স্কোয়্যার পাস খেলতে খেলতে চল্লিশ গজের মাপা থ্রু৷ শেষ দিকে ফ্রি-কিকটা ক্রসপিসে না-লাগলে সোনায় সোহাগা হত৷
সামনে একা বালোতেলিকে রেখে টিম সাজিয়েছিল ইতালি৷ এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ যতটা দেখলাম, তাতে বেশির ভাগ টিমই কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলছে৷ যে ছকে স্পেনকে উড়িয়ে দিয়েছিল ডাচরা, ইতালিও সেই পলিসি নিল৷ বালোতেলি তো সে ভাবে বলই পাচ্ছিল না৷ ওকে ডাবল কভারিংয়ে রেখেছিল কাহিল আর জাগিয়েলকা৷ সেখান থেকে হেডে যখন গোল করল, তখন দেখলাম সুপার মারিও একেবারে আনমার্কড৷ এটাই কিন্ত্ত একজন স্ট্রাইকারের আসল গুণ৷
যার কথাই বলি, সেই পির্লোর প্রসঙ্গই এসে পড়ছে৷ ম্যাচের শুরু থেকেই রাশটা নিজের পায়ে রেখেছিল৷ জেরার চেষ্টা করেছিল ঠিকই৷ ম্যাচের পর মার্গারেট নামে ইংল্যান্ডের তরুণীর মুখে যা শুনলাম সেটাই ঠিক, 'পির্লোর স্ট্যান্ডার্ডের কোনও প্লেয়ার নেই আমাদের টিমে৷' এখানে এসে বেশ কয়েকজন ইংল্যান্ডের বন্ধুও হয়ে গিয়েছে৷ চিরকাল শুনে এসেছি, ওদের সমর্থকরা খুব উগ্র৷ কিন্ত্ত যে ভাবে ওদের মুখে ইতালির প্রশংসা শুনছিলাম, তাতে ধারণাটা একটু হলেও বদলাল৷ বুঝলাম, প্রতিভাকে সবাই-ই কুর্নিশ জানায়৷
পির্লোর প্রেমে পড়ে গিয়েও একটা কথা খোলা মনেই বলছি, ইউরোপের দুই জায়েন্টের লড়াইটাও দারুণ জমল৷ এমন আপ অ্যান্ড ডাউন ফুটবল দেখার জন্যই তো এত দূর আসা৷ পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে গ্রাউন্ডারে মার্চিসিও ৩৫ মিনিটে ইতিালকে ১-০ এগিয়ে দিল৷ ওখানেই কিন্ত্ত পির্লোর 'অদৃশ্য' পা৷ ডামি রান দিয়ে বলটা ছেড়ে মার্চিসিওকে জায়গা তৈরি করে দিল৷ নিজে ফরোয়ার্ড বলে জানি, টিমে পির্লোর মতো একজন মিডফিল্ডার থাকলে ফরোয়ার্ডদের ফূর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ৷ জেরার ভালো৷ কিন্ত্ত স্টারিজ, রুনিদের জন্য সে রকম কোনও পাসের পসরা সাজিয়ে দিতে পারেনি ইংল্যান্ড মিডফিল্ডাররা৷
রুনির ক্রস থেকে স্টারিজের গোলে ১-১ হল ৩৭ মিনিটে৷ সেকেন্ড হাফেও প্রচুর অ্যাটাক করেছে ইংল্যান্ড৷ তবু স্টারিজ, রুনিকে নিয়ে আমি নাচানাচি করার মতো কিছু পাচ্ছি না৷ এই ধরনের ম্যাচে 'গেম চেঞ্জার' দরকার৷ সেটা কই? আগেই বলেছিলাম, ইংল্যান্ড বেশি দূর যেতে পারবে না৷ কারণ, ইপিএল-ও আমাদের দেশের ফুটবলের মতো বিদেশি নির্ভর৷ সুয়ারেজ, আগুয়েরোরা তফাত গড়ে দেয়৷ কিন্ত্ত বিশ্বকাপে তো আর সেটা হবে না৷
অন্য দিকে ইতালি অনেক প্ল্যানড৷ চিরকালই ওদের ডিফেন্স ভালো৷ এখন আর কাতানেচিও নেই, নেস্তা-কানাভারোরাও নেই৷ তবু ইতালির ডিফেন্ডারদের ট্যাকল সব সময়ই অপোনেন্ট অ্যাটাকারদের হাড় হিম করে দেয়৷ সেকেন্ড হাফে যখন চেপে ধরছে স্টারিজ-স্টার্লিং-ওয়েলবেকরা, তখনও বারজাগলি, পালেত্তারা বুক চিতিয়ে লড়ে ম্যাচটাকে বের করে নিল৷
দু'জনের কথা না বলে পারছি না৷ এক ইতালির গোলকিপার সিরিগু৷ বুফোঁ না-থাকায় ইতালি নিশ্চয়ই একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপে ছিল৷ আর সিরিগুর ক্ষেত্রে সেটা ছিল আকাশছোঁয়া৷ মানাউসের মাঠে প্যারিস সাঁ জাঁর গোলকিপার কিন্ত্ত একশোয় একশো৷ ম্যাচের প্রিভিউতে ইম্মোবিলের চমকে দেওয়ার কথা বলেছিলাম৷ শেষের দিকে নেমে তেমন কিছু করতে পারেনি৷ কিন্ত্ত আমি জানি, ইম্মোবিলে পারবে৷ সেটা যতটা না ওর নিজের ক্ষমতায়, তার চেয়েও বেশি দাদার মতো পির্লোর জন্য৷
আমার ফুটবল বোধ বলছে, ইতালি অনেক দূর যাবে৷ যত সময় যাবে, খেলা খুলবে৷ তবে ইতালির সাফল্য চাই, আমরা ছোট্ট ইতালিয়ান বন্ধু পাওলোর জন্যও৷ জানি না, পাওলোর সঙ্গে আর দেখা হবে কি না! বিশ্বকাপের এ-ও এক দস্ত্তর৷ কত বন্ধু হয়, আবার হারিয়ে যায়৷
http://eisamay.indiatimes.com/fifa-word-cup-2014/Dipendu-Biswas-World-Cup-experiences/articleshow/36618429.cms
No comments:
Post a Comment