Sunday, June 1, 2014

সরকারের নির্দেশেও বন্ধ হয়নি সালিশি সভা

সরকারের নির্দেশেও বন্ধ হয়নি সালিশি সভা

Rape
এই সময়: বীরভূমের মহম্মদবাজারে এক নাবালিকার গণধর্ষণে মোড়ল সালিশির নিদান দেওয়ায়, জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন৷ রবিবার বিকেলে এই ঘটনা জানাজানি হতেই স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশকে দ্রুত যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, 'এ ধরনের ঘটনায় আমাদের নীতি হল জিরো টলারেন্স৷' পাশাপাশি, রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা ঘটনা সম্পর্কে সোমবারের মধ্যে বিশদ রিপোর্ট তলব করেছেন৷ তাঁর কথায়, 'আমি জেলার সমাজকল্যাণ অফিসারকে একটি রিপোর্ট দিতে বলেছি৷ পাশাপাশি, একজন নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় আমি শিশু কল্যাণ কমিটিকেও আক্রান্ত ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট দিতে বলেছি৷ শিশু কল্যাণ কমিটি সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে দেখবে প্রটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্স্যুয়াল অফেন্সেস আইনে পুলিশ মামলা রুজু করেছে কি না৷ যদি তা না-হয়ে থাকে, তা হলে তারা সেটা পুলিশকে করতে বলবে৷'

রাজ্য সরকারের এই তত্‍পরতা সত্ত্বেও, কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ কারণ, মাত্র মাস চারেক আগে, জানুয়ারিতে এই বীরভূমেরই লাভপুরের একটি গ্রামের সালিশি সভার নির্দেশে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল৷ এ বার অভিযোগ, গণধর্ষণের ঘটনা যাতে জানাজানি না হয়, সে জন্য আক্রান্ত নাবালিকার পরিবারকে চাপ দিয়েছিল সালিশি সভা৷ অথচ, জানুয়ারি মাসে লাভপুরের ঘটনার পর রাজ্যের সর্বত্র সালিশি সভা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন৷ রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব৷ কিন্ত্ত, সেই নির্দেশে যে কোনও কাজ হয়নি, তা মহম্মদবাজারের ঘটনাতেই প্রমাণিত৷

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসন নির্দেশ দিলেও জেলার পুলিশ, প্রশাসন এ ব্যাপারে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি৷ বরং, প্রশাসনের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বীরভূমের একাধিক আদিবাসী সংগঠন৷ তাদের দাবি ছিল, 'মাঝি হারাম' নামে তাদের এই দীর্ঘ কাল ধরে চলে আসা সালিশি সভার প্রথাকে কোনও মতেই বন্ধ করা যাবে না৷ অথচ, ফের গণধর্ষণে মোড়ল সালিশির নিদান দেওয়ার অভিযোগ উঠল৷ এ ব্যাপারে জেলার এক আদিবাসী সংগঠন, বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা-র নেতা সুনীল সোরেনের দাবি, 'এই ঘটনায় সালিশি সভা কোনও নিদান দেয়নি৷ এই ধরনের ঘটনাতে দেয়ও না৷'

সালিশি সভা বন্ধ করা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ফের একই ঘটনা ঘটল? বাসুদেববাবুর জবাব, 'জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের কাছ থেকে বিশদ রিপোর্ট চেয়েছি৷ কাল সকালে রিপোর্ট পাওয়ার পর বলতে পারব৷ তবে ধর্ষণ তো একটা সামাজিক ব্যাধি৷ এ ধরনের ঘটনা রুখতে আগে থেকে পুলিশের কিছু করার থাকে না৷ তবে লাভপুরের ঘটনার পরে পুলিশ যে পদক্ষেপ করেছিল, তা প্রশংসিত হয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনের দেওয়া শেষ রিপোর্টে৷'
http://eisamay.indiatimes.com/state/Village-courts-flaunts-government-orders-at-Birbhum-West-Bengal/articleshow/35909347.cms

No comments:

Post a Comment