মেসি, নেইমারদের দেখতে গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকা
কৌশিক প্রধান
মনেপ্রাণে ব্রাজিলের সমর্থক বেলেঘাটার জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা নান্টু লোধ৷ গতবারের ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সবক'টা ম্যাচ টিভিতে গোগ্রাসে গিলেছিলেন৷ কিন্ত্ত এ বার কেবল অপারেটরকে বাড়তি টাকা না-দিলে ব্রাজিলের একটি ম্যাচও দেখতে পাবেন না৷ তিনি অবশ্য একা নন৷ শহর ও শহরতলিতে তাঁর মতো প্রায় দশ লক্ষ মানুষ পকেট থেকে বাড়তি টাকা না-খসালে ১২ জুন থেকে শুরু বিশ্বকাপের একটি ম্যাচও দেখতে পাবেন না৷ কেননা, শহরের একাধিক মাল্টি সিস্টেম অপারেটর যে চ্যানেলে (সোনি সিক্স) আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বকাপের খেলাগুলি দেখানো হবে, সেটিকে রাতারাতি ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে৷
ঝোপ বুঝে কোপ? অভিযোগ তো তেমনই৷ কেবল অপারেটররা বলছেন, বিশ্বকাপের মওকা বুঝে বাড়তি মুনাফার লোভে শহরের তিনটি বড় এমএসও সংস্থা, (হ্যাথওয়ে, জিটিপিএল-কেসিবিপিএল এবং ডেন) গত কয়েক দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটিকে শুধুমাত্র ২৩০ ও ২৮০ টাকার প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করেছে৷ আইনের মারপ্যাঁচ বাঁচিয়ে সুকৌশলে এমন ভাবে এ কাজটি করা হয়েছে যে, নিয়ামক সংস্থা ট্রাই-এরও কিছু করার নেই৷ ট্রাই-এর কলকাতা দপ্তরের উপদেষ্টা রূপা পালচৌধুরী বলেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে গ্রাহকদের থেকে কোনও অভিযোগ পাইনি৷ অভিযোগ পেলে দিল্লিতে আমাদের সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেব৷'
অন্য দিকে, এমএসও সংস্থাগুলির এই গ্রাহক-বিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কেবল অপারেটরদের একাংশ৷ তবে ঘটনার কথা জানতে পেরেই তত্পর হয়েছে রাজ্য সরকার৷ পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'বিশ্বকাপের আগেই আমি এমএসও-দের মিটিংয়ে ডাকছি৷' ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর আশ্বাস, 'মানুষ যাতে বিশ্বকাপ দেখতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমি নিজে এমএসও সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলব৷'
কলকাতা মেট্রোপলিটন অথরিটি এলাকায় কেবল টিভিতে সেট টপ বক্স বাধ্যতামূলক হয়ে যাওয়ার পরে চার রকমের চ্যানেল প্যাকেজ চালু রয়েছে৷ কর ব্যতীত সেগুলির দাম যথাক্রমে ১০০, ১৮০, ২৩০ ও ২৮০ টাকা৷ এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত শহরের চার মুখ্য এমএসও সংস্থা, সিটি কেবল, হ্যাথওয়ে, জিটিপিএল-কেসিবিপিএল এবং ডেন-এর ১৮০, ২৩০ ও ২৮০ টাকার প্যাকেজে সোনি সিক্স দেখা যেত৷ এখন একমাত্র সিটি বাদে বাকি তিনটি সংস্থাই ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে চ্যানেলটিকে সরিয়ে দিয়েছে৷ এর ফলে প্রায় দশ লক্ষ কেবল টিভি গ্রাহক সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটি দেখতে পাচ্ছেন না৷ উত্তর কলকাতার এক কেবল অপারেটর পিনাকী মজুমদারের কথায়, 'আগাম কিছু না-জানিয়ে সোমবার মাঝরাত থেকে আমার এমএসও ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে চ্যানেলটি হঠাত্ করে সরিয়ে দিল৷ মঙ্গলবার আমি ওদের ফোন করায় বলল, ২৩০ টাকার প্যাকেজের নীচে এই চ্যানেল পাওয়া যাবে না৷ গ্রাহকরা যদি ২৩০ টাকার প্যাকেজ না-নেন, তা হলে শুধুমাত্র এই চ্যানেলটি দেখতে হলে মাসে অতিরিক্ত ৩৫ টাকা দিতে হবে৷'
এই অবস্থায় মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের৷ ফুলবাগানের বাসিন্দা অসীম দে-র স্পষ্ট কথা, 'এ ভাবে তো টাকা বাড়ানো যায় না৷ রোজগার কমছে৷ কেবলে বাড়তি টাকা দেব কোথা থেকে? ভাবছি, টিভিটাই বেচে দেব৷' এমএসও সংস্থাগুলির অবশ্য এতে কোনও হেলদোল নেই৷ গ্রাহকদের হয়রানির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে হ্যাথওয়ের এক কর্তার জবাব, 'তাই নাকি! গ্রাহকদের বলুন কোর্টে কেস করে দিতে৷' অন্য দিকে জিটিপিএল-কেসিবিপিএল-এর কর্তা স্বরূপ চৌধুরীর দাবি, 'আমরা তো এখন নয়, অনেক আগেই চ্যানেলটিকে ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে সরিয়ে দিয়েছি৷'
এতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন বহু কেবল অপারেটর৷ কেবল অপারেটর সংগ্রাম কমিটির নেতা অপূর্ব ভট্টাচার্য বলেন, '২০০২ সালের বিশ্বকাপে টিভিতে ব্রাজিল-ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখতে না-পেয়ে শহরের অনেক জায়গায় কেবল অপারেটরদের অফিসে হামলা হয়েছিল৷ এ বারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না-হয়, সে কারণে আমরা ঠিক করেছি, যে করে হোক ১৮০ টাকার প্যাকেজে বিশ্বকাপের খেলা দেখাব৷ এমএসও সংস্থাগুলির এই তুঘলকি আচরণের প্রতিবাদে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলনেও নামব৷' উত্তর শহরতলির এক কেবল অপারেটর সংস্থার কর্ণধার মৃণাল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, 'মানুষকে যে ভাবে বেশি টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, তা কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না৷'
সিটি কেবলের কর্তা সুরেশ শেঠিয়া অবশ্য এমএসও-দের এই সিদ্ধান্তে দোষের কিছু দেখছেন না৷ তিনি বলেন, 'ট্রাই-এর নিয়ম অনুযায়ী, ৬ মাস অন্তর কোনও প্যাকেজে চ্যানেল বদল করতে কোনও সমস্যা নেই৷ এ ক্ষেত্রে সেই ৬ মাসের সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে৷ তা ছাড়া গ্রাহক পিছু কালেকশন বাড়ানোর জন্য বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্টের দিকেই তাকিয়ে থাকে সবাই৷ তা না-হলে ব্যবসা চলবে না৷'
মনেপ্রাণে ব্রাজিলের সমর্থক বেলেঘাটার জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা নান্টু লোধ৷ গতবারের ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সবক'টা ম্যাচ টিভিতে গোগ্রাসে গিলেছিলেন৷ কিন্ত্ত এ বার কেবল অপারেটরকে বাড়তি টাকা না-দিলে ব্রাজিলের একটি ম্যাচও দেখতে পাবেন না৷ তিনি অবশ্য একা নন৷ শহর ও শহরতলিতে তাঁর মতো প্রায় দশ লক্ষ মানুষ পকেট থেকে বাড়তি টাকা না-খসালে ১২ জুন থেকে শুরু বিশ্বকাপের একটি ম্যাচও দেখতে পাবেন না৷ কেননা, শহরের একাধিক মাল্টি সিস্টেম অপারেটর যে চ্যানেলে (সোনি সিক্স) আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বকাপের খেলাগুলি দেখানো হবে, সেটিকে রাতারাতি ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে৷
ঝোপ বুঝে কোপ? অভিযোগ তো তেমনই৷ কেবল অপারেটররা বলছেন, বিশ্বকাপের মওকা বুঝে বাড়তি মুনাফার লোভে শহরের তিনটি বড় এমএসও সংস্থা, (হ্যাথওয়ে, জিটিপিএল-কেসিবিপিএল এবং ডেন) গত কয়েক দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটিকে শুধুমাত্র ২৩০ ও ২৮০ টাকার প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করেছে৷ আইনের মারপ্যাঁচ বাঁচিয়ে সুকৌশলে এমন ভাবে এ কাজটি করা হয়েছে যে, নিয়ামক সংস্থা ট্রাই-এরও কিছু করার নেই৷ ট্রাই-এর কলকাতা দপ্তরের উপদেষ্টা রূপা পালচৌধুরী বলেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে গ্রাহকদের থেকে কোনও অভিযোগ পাইনি৷ অভিযোগ পেলে দিল্লিতে আমাদের সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেব৷'
অন্য দিকে, এমএসও সংস্থাগুলির এই গ্রাহক-বিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কেবল অপারেটরদের একাংশ৷ তবে ঘটনার কথা জানতে পেরেই তত্পর হয়েছে রাজ্য সরকার৷ পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'বিশ্বকাপের আগেই আমি এমএসও-দের মিটিংয়ে ডাকছি৷' ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রর আশ্বাস, 'মানুষ যাতে বিশ্বকাপ দেখতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমি নিজে এমএসও সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলব৷'
কলকাতা মেট্রোপলিটন অথরিটি এলাকায় কেবল টিভিতে সেট টপ বক্স বাধ্যতামূলক হয়ে যাওয়ার পরে চার রকমের চ্যানেল প্যাকেজ চালু রয়েছে৷ কর ব্যতীত সেগুলির দাম যথাক্রমে ১০০, ১৮০, ২৩০ ও ২৮০ টাকা৷ এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত শহরের চার মুখ্য এমএসও সংস্থা, সিটি কেবল, হ্যাথওয়ে, জিটিপিএল-কেসিবিপিএল এবং ডেন-এর ১৮০, ২৩০ ও ২৮০ টাকার প্যাকেজে সোনি সিক্স দেখা যেত৷ এখন একমাত্র সিটি বাদে বাকি তিনটি সংস্থাই ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে চ্যানেলটিকে সরিয়ে দিয়েছে৷ এর ফলে প্রায় দশ লক্ষ কেবল টিভি গ্রাহক সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটি দেখতে পাচ্ছেন না৷ উত্তর কলকাতার এক কেবল অপারেটর পিনাকী মজুমদারের কথায়, 'আগাম কিছু না-জানিয়ে সোমবার মাঝরাত থেকে আমার এমএসও ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে চ্যানেলটি হঠাত্ করে সরিয়ে দিল৷ মঙ্গলবার আমি ওদের ফোন করায় বলল, ২৩০ টাকার প্যাকেজের নীচে এই চ্যানেল পাওয়া যাবে না৷ গ্রাহকরা যদি ২৩০ টাকার প্যাকেজ না-নেন, তা হলে শুধুমাত্র এই চ্যানেলটি দেখতে হলে মাসে অতিরিক্ত ৩৫ টাকা দিতে হবে৷'
এই অবস্থায় মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের৷ ফুলবাগানের বাসিন্দা অসীম দে-র স্পষ্ট কথা, 'এ ভাবে তো টাকা বাড়ানো যায় না৷ রোজগার কমছে৷ কেবলে বাড়তি টাকা দেব কোথা থেকে? ভাবছি, টিভিটাই বেচে দেব৷' এমএসও সংস্থাগুলির অবশ্য এতে কোনও হেলদোল নেই৷ গ্রাহকদের হয়রানির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে হ্যাথওয়ের এক কর্তার জবাব, 'তাই নাকি! গ্রাহকদের বলুন কোর্টে কেস করে দিতে৷' অন্য দিকে জিটিপিএল-কেসিবিপিএল-এর কর্তা স্বরূপ চৌধুরীর দাবি, 'আমরা তো এখন নয়, অনেক আগেই চ্যানেলটিকে ১৮০ টাকার প্যাকেজ থেকে সরিয়ে দিয়েছি৷'
এতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন বহু কেবল অপারেটর৷ কেবল অপারেটর সংগ্রাম কমিটির নেতা অপূর্ব ভট্টাচার্য বলেন, '২০০২ সালের বিশ্বকাপে টিভিতে ব্রাজিল-ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখতে না-পেয়ে শহরের অনেক জায়গায় কেবল অপারেটরদের অফিসে হামলা হয়েছিল৷ এ বারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না-হয়, সে কারণে আমরা ঠিক করেছি, যে করে হোক ১৮০ টাকার প্যাকেজে বিশ্বকাপের খেলা দেখাব৷ এমএসও সংস্থাগুলির এই তুঘলকি আচরণের প্রতিবাদে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলনেও নামব৷' উত্তর শহরতলির এক কেবল অপারেটর সংস্থার কর্ণধার মৃণাল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, 'মানুষকে যে ভাবে বেশি টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, তা কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না৷'
সিটি কেবলের কর্তা সুরেশ শেঠিয়া অবশ্য এমএসও-দের এই সিদ্ধান্তে দোষের কিছু দেখছেন না৷ তিনি বলেন, 'ট্রাই-এর নিয়ম অনুযায়ী, ৬ মাস অন্তর কোনও প্যাকেজে চ্যানেল বদল করতে কোনও সমস্যা নেই৷ এ ক্ষেত্রে সেই ৬ মাসের সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে৷ তা ছাড়া গ্রাহক পিছু কালেকশন বাড়ানোর জন্য বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্টের দিকেই তাকিয়ে থাকে সবাই৷ তা না-হলে ব্যবসা চলবে না৷'
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/Cable-Operators-of-Kolkata-charge-extra-for-viewing-World-Cup-match-telecasts/articleshow/36010553.cms
No comments:
Post a Comment