Friday, June 27, 2014

মুন্নাভাইয়ের মতো নকল করে ধৃত ছাত্র

মুন্নাভাইয়ের মতো নকল করে ধৃত ছাত্র

142111375
এই সময়, সিউড়ি: ফিরে এল মুন্নাভাই এমবিবিএস৷ পরীক্ষার হল না কি সিনেমার পর্দা, ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক অধ্যাপকরা৷ 'মুন্নাভাই' সিনেমার কায়দায় পরীক্ষার হলে বসে ব্লু টুথ হেডফোন মারফত চলছিল উত্তর জানার পালা৷ এখানেই শেষ নয়, কানের ব্লু টুথ ঢাকতে পরচুলা পড়ে ও মাথায় হেডফোন লাগিয়ে পরীক্ষার হলে বসে দিব্যি পার্টওয়ান পরীক্ষা দিচ্ছিলেন কলেজ ছাত্র৷ কিন্ত্ত শেষ রক্ষা হল না৷ অভিনব কায়দায় নকল করতে গিয়েও ধরা পড়তে হল অধ্যাপকদের হাতে৷

বৃহস্পতিবার সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে পার্ট ওয়ানের পরীক্ষা ছিল৷ কলেজের অরবিন্দ ভবন বিল্ডিংয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন সাঁইথিয়া অভেদানন্দ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা৷ পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ছাত্র কথা বলছেন দেখে, বারণ করেন পরীক্ষক৷ ছাত্রটি সঙ্গে সঙ্গে জানায়, প্রশ্নপত্র পড়ছে সে৷ অধ্যপকরা তাঁকে শব্দ করতে বারণ করেন৷ তবে পরীক্ষা শুরুর পর চল্লিশ মিনিট হয়ে গেলেও, ছাত্রটি কথা থামায় না৷ পাশে বসা ছাত্রীটিও দেখতে পান, কারও সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছেন ওই ছাত্র৷ কিন্ত্ত শ্রোতাটি কে, তা বুঝতে পারেননি তিনি৷ কিছুক্ষণ পর সন্দেহ বশে অধ্যাপিকা তাঁকে চেপে ধরলে, বাথরুম যেতে চায় ওই পরীক্ষার্থী৷ বাকি দুই অধ্যাপিকা ও এক অধ্যাপককে সন্দেহের কথা জানাতেই, ওই ছাত্র ছুটে বাথরুমে চলে যেতে চান৷ অধ্যাপক তাঁকে আটকাতে গিয়ে দেখেন, পরচুলা পড়ে রয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী৷ তাঁর কানে ব্লু টুথ হেডফোন কালো ব্যান্ড দিয়ে ঢাকা৷ বাইরে থেকে মোবাইলে কেউ উত্তর বলে দিচ্ছে৷ এ দিকে, ছাত্রটি হলে বসে প্রশ্নগুলি বলে যাচ্ছিল৷ ক্লাসরুমেরই অপর এক ছাত্র বলে ওঠেন, 'স্যার, ও মুন্নাভাই এমবিবিএস-এর কায়দায় পরীক্ষা দিচ্ছিল৷'

এ দিন যে অধ্যাপিকা ওই ছাত্রকে চিহ্নিত করেন, তিনি বলেন, 'ছাত্রটি প্রথম থেকেই কথা বলছিল৷ প্রথমে বুঝতে পারিনি৷ পরে যখন দেখলাম একা একাই কথা বলছে, তখন সন্দেহ হল৷ অন্য অধ্যাপককে বিষয়টি জানাতে, তিনি সার্চ করতে গেলে, ছেলেটি বাথরুম যেতে চায়৷ পথ আটকাতেই সব ফাঁস হয়ে যায় ঘটনাটি৷ মাথার পরচুলা ও ব্যান্ডের ভেতরে ব্লুটুথ দিয়ে পরীক্ষার হলের বাইরের কারও কাছে উত্তর জেনে লিখছিল ছাত্রটি৷'

ঘটনায় সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ অধ্যক্ষ লক্ষ্মীনারায়ণ মণ্ডল বলেন, 'অধ্যাপনার জীবনে পরীক্ষার হলে নকল করার অনেক পদ্ধতি শুনেছি৷ কিন্ত্ত সিনেমার কায়দায় মাল্টিমিডিয়া মোবইল ব্যবহার করে পরচুলা পড়ে পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনা অভিনব৷ পরীক্ষক ছাত্রটিকে বিতাড়িত করেছেন৷ বাজেয়াপ্ত হওয়া সামগ্রী থানায় জমা দেওয়া হয়েছে৷ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কলেজ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়কেও জানানো হয়েছে৷'

খবরটি চাউড় হতেই কলেজের পরীক্ষা পরিচালন কমিটি ছেলেটির কাছ থেকে পরীক্ষার হলে পাওয়া ব্লু টুথ, হেডফোন, পরচুলা ও কালো ব্যান্ডটি বাজেয়াপ্ত করেন৷ কলেজের পক্ষ থেকে সিউড়ি থানায় অভিযোগ জানিয়ে বাজেয়াপ্ত করা সামগ্রী জমা দেওয়া হয়৷ ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই কলেজ চত্বর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়৷

No comments:

Post a Comment