এই সময়, সিউড়ি: ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এক আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল সেই বীরভূমে, যেখানে গত জানুয়ারিতে আরেক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ৷ তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল বিদেশেও৷ সালিশি সভার ফতোয়ায় ওই তরুণীকে গণধর্ষণের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল৷ আর এ বার গণধর্ষণের পর সালিশি সভায় গোটা ব্যাপারটি চেপে দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ৷ ধর্ষণে অভিযুক্ত তিনজনই নাবালক৷
বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটলেও রবিবারই মহম্মদবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীতার বাবা৷ তিনি জানান, 'সে দিন সন্ধ্যায় সঙ্গী চারজনের সঙ্গে বাড়ির কাছেই খেলছিল আমার মেয়ে৷ কিন্ত্ত রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় আমরা খুঁজতে বেরোই৷ কিন্ত্ত মেয়ে নিজেই ফিরে এসে আমাদের জানায় যে তাকে ধর্ষণ করেছে গ্রামেরই তিনটি ছেলে৷' পরদিন গ্রামের মোড়ল বঙ্গু মুর্মুর কাছে বিচার চান তিনি৷ অভিযুক্তদের একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, বাকি দু'জন নবম শ্রেণিতে পড়ে৷ নিগৃহীতা ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ওই তিনজনের কাছ থেকে ২-৩ হাঁড়ি হাঁড়িয়া (দেশি মদ) নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার ফতোয়া দিয়েছিল মোড়ল৷ ফতোয়া না মানলে নিগৃহীতার বাড়িঘর পুড়িয়ে গ্রামছাড়া করার নিদানও ঘোষণা করেছিল সে৷
অবশেষে রবিবার সাহস সঞ্চয় করে গ্রামেরই এক স্কুল শিক্ষকের সাহায্যে পরিবারটি মহম্মদবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করে৷ এর পরই ঘটনাটি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়৷ লাভপুরের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে ভত্র্সিত হওয়ায় এ বার আর ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ৷ সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে তারা৷ খবর পেয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ছুটে যান মহম্মদবাজার থানায়৷ যদিও অভিযুক্তরা তো বটেই, ওই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
সালিশিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন৷ রবিবার বিকেলে এই ঘটনা জানাজানি হতেই স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশকে দ্রুত যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, 'এ ধরনের ঘটনায় আমাদের নীতি হল জিরো টলারেন্স৷' পাশাপাশি, রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা ঘটনা সম্পর্কে সোমবারের মধ্যে বিশদ রিপোর্ট তলব করেছেন৷
গ্রামের ঘরে ঘরে তালা দেখে ফিরেছে পুলিশ৷ কিন্ত্ত নির্যাতিতার পরিবারটির উপর হামলার আশঙ্কায় তাদের গ্রাম থেকে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ৷ রবিবারই সিউড়ি জেলা হাসপাতালে কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ কয়েক মাস আগে ধর্ষিতা লাভপুরের সেই তরুণীটিকে এখনও বাড়িতে ফেরাতে পারেনি পুলিশ৷ তাঁর সঙ্গে তাঁর মায়েরও দিন কাটছে হোমের ঘেরাটোপে৷ এই কিশোরীকে নিয়েও তাই উদ্বেগে পুলিশ৷ সোমবার আদালতের নির্দেশ নিয়ে কিশোরী ও তার পরিবারের সুরক্ষার ব্যবস্থা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
নাবালিকার স্কুলের এক শিক্ষক জানান, 'আমার স্কুলেই ওই কিশোরী ও ওই তিনটি ছেলে পড়ে৷' নির্যাতিতার পরিবার রবিবার গ্রাম থেকে মহম্মদবাজারে এসে প্রথমে ওই শিক্ষকেরই শরণ নিয়েছিল৷ তিনিই কিশোরী ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে যান৷ কিশোরীটি জানায়, 'মুখে গামছা বেঁধে তিনজন আমাকে গ্রামের পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল৷ কাউকে বললে আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে ওরা ভয় দেখায়৷' তার বাবা জানিয়েছেন, 'পরদিন মোড়লকে বিচার দিলে তিনি সন্ধেয় গ্রামের মাঝি থানে সভা ডাকেন বটে, কিন্ত্ত ওই ছেলেদের কোনও সাজা না দিয়ে তিনি আমাদের বলেন, ৩-৪ হাঁড়ি হাঁড়িয়া নিয়ে ব্যাপারটি ভুলে যেতে৷ থানায় যেতে চাইলে মোড়ল বঙ্গু মুর্মু শাসায় যে পুলিশের কাছে গেলে আমাদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেবে৷ বাড়িঘর পুড়িয়ে দেবে৷'
মোড়লের ভয়ে শনিবার চুপ করে থাকলেও রবিবার পরিবারটি থানায় আসে৷ অভিযোগ গ্রহণ করেই বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায় ওই গ্রামে৷ কিন্ত্ত নির্যাতিতার পরিবার থানায় গিয়েছে টের পেয়েই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় পুরুষরা৷ পাওয়া যায়নি মোড়ল বঙ্গু মুর্মুকেও৷ গ্রামবাসী রাজু মার্ডি অবশ্য সালিশি সভায় হাঁড়িয়ার বিনিময়ে বিরোধ মীমাংসার ফতোয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'অভিযুক্ত তিনজনের কাছ থেকেই দুই হাঁড়ি করে হাঁড়িয়া নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মোড়ল৷' বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, 'অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷ শুরু হয়েছে তদন্তও৷' মহম্মদবাজারের বিডিও সুমন বিশ্বাস বলেন, 'বিষয়টি শুনেছি৷ এখনও রিপোর্ট পাইনি৷ তবে প্রশাসন নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকবে৷'
বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটলেও রবিবারই মহম্মদবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীতার বাবা৷ তিনি জানান, 'সে দিন সন্ধ্যায় সঙ্গী চারজনের সঙ্গে বাড়ির কাছেই খেলছিল আমার মেয়ে৷ কিন্ত্ত রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় আমরা খুঁজতে বেরোই৷ কিন্ত্ত মেয়ে নিজেই ফিরে এসে আমাদের জানায় যে তাকে ধর্ষণ করেছে গ্রামেরই তিনটি ছেলে৷' পরদিন গ্রামের মোড়ল বঙ্গু মুর্মুর কাছে বিচার চান তিনি৷ অভিযুক্তদের একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, বাকি দু'জন নবম শ্রেণিতে পড়ে৷ নিগৃহীতা ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ওই তিনজনের কাছ থেকে ২-৩ হাঁড়ি হাঁড়িয়া (দেশি মদ) নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার ফতোয়া দিয়েছিল মোড়ল৷ ফতোয়া না মানলে নিগৃহীতার বাড়িঘর পুড়িয়ে গ্রামছাড়া করার নিদানও ঘোষণা করেছিল সে৷
অবশেষে রবিবার সাহস সঞ্চয় করে গ্রামেরই এক স্কুল শিক্ষকের সাহায্যে পরিবারটি মহম্মদবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করে৷ এর পরই ঘটনাটি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়৷ লাভপুরের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে ভত্র্সিত হওয়ায় এ বার আর ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ৷ সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে তারা৷ খবর পেয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ছুটে যান মহম্মদবাজার থানায়৷ যদিও অভিযুক্তরা তো বটেই, ওই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
সালিশিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন৷ রবিবার বিকেলে এই ঘটনা জানাজানি হতেই স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশকে দ্রুত যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, 'এ ধরনের ঘটনায় আমাদের নীতি হল জিরো টলারেন্স৷' পাশাপাশি, রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা ঘটনা সম্পর্কে সোমবারের মধ্যে বিশদ রিপোর্ট তলব করেছেন৷
গ্রামের ঘরে ঘরে তালা দেখে ফিরেছে পুলিশ৷ কিন্ত্ত নির্যাতিতার পরিবারটির উপর হামলার আশঙ্কায় তাদের গ্রাম থেকে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ৷ রবিবারই সিউড়ি জেলা হাসপাতালে কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ কয়েক মাস আগে ধর্ষিতা লাভপুরের সেই তরুণীটিকে এখনও বাড়িতে ফেরাতে পারেনি পুলিশ৷ তাঁর সঙ্গে তাঁর মায়েরও দিন কাটছে হোমের ঘেরাটোপে৷ এই কিশোরীকে নিয়েও তাই উদ্বেগে পুলিশ৷ সোমবার আদালতের নির্দেশ নিয়ে কিশোরী ও তার পরিবারের সুরক্ষার ব্যবস্থা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
নাবালিকার স্কুলের এক শিক্ষক জানান, 'আমার স্কুলেই ওই কিশোরী ও ওই তিনটি ছেলে পড়ে৷' নির্যাতিতার পরিবার রবিবার গ্রাম থেকে মহম্মদবাজারে এসে প্রথমে ওই শিক্ষকেরই শরণ নিয়েছিল৷ তিনিই কিশোরী ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে যান৷ কিশোরীটি জানায়, 'মুখে গামছা বেঁধে তিনজন আমাকে গ্রামের পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল৷ কাউকে বললে আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে ওরা ভয় দেখায়৷' তার বাবা জানিয়েছেন, 'পরদিন মোড়লকে বিচার দিলে তিনি সন্ধেয় গ্রামের মাঝি থানে সভা ডাকেন বটে, কিন্ত্ত ওই ছেলেদের কোনও সাজা না দিয়ে তিনি আমাদের বলেন, ৩-৪ হাঁড়ি হাঁড়িয়া নিয়ে ব্যাপারটি ভুলে যেতে৷ থানায় যেতে চাইলে মোড়ল বঙ্গু মুর্মু শাসায় যে পুলিশের কাছে গেলে আমাদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেবে৷ বাড়িঘর পুড়িয়ে দেবে৷'
মোড়লের ভয়ে শনিবার চুপ করে থাকলেও রবিবার পরিবারটি থানায় আসে৷ অভিযোগ গ্রহণ করেই বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায় ওই গ্রামে৷ কিন্ত্ত নির্যাতিতার পরিবার থানায় গিয়েছে টের পেয়েই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় পুরুষরা৷ পাওয়া যায়নি মোড়ল বঙ্গু মুর্মুকেও৷ গ্রামবাসী রাজু মার্ডি অবশ্য সালিশি সভায় হাঁড়িয়ার বিনিময়ে বিরোধ মীমাংসার ফতোয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, 'অভিযুক্ত তিনজনের কাছ থেকেই দুই হাঁড়ি করে হাঁড়িয়া নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মোড়ল৷' বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, 'অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷ শুরু হয়েছে তদন্তও৷' মহম্মদবাজারের বিডিও সুমন বিশ্বাস বলেন, 'বিষয়টি শুনেছি৷ এখনও রিপোর্ট পাইনি৷ তবে প্রশাসন নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকবে৷'
No comments:
Post a Comment