Monday, June 30, 2014

দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাষ্ট্রের ৭৫৭ কর্মচারী

দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাষ্ট্রের ৭৫৭ কর্মচারী
সাঈদ আহমেদ
প্রকাশ : ০১ জুলাই, ২০১৪
প্রজাতন্ত্রের ৭৫৭ কর্মচারী দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এসব কর্মচারী অভিযুক্ত হন। খুব শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হবে। অবৈধভাবে অর্থ আয়ের জন্য এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন। এদের জন্য সরকারের বিপুল অংকের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
গত তিন বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রজাতন্ত্রের এক হাজার ২৭৪ কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে ৪৮৪টি মামলার চার্জশিট হয়েছে। এতে ৭৫৭ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এদের বিচার হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা ব্যাপক হারে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। অসাধু সচিব থেকে পিয়ন পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন তার প্রমাণ বহন করছে এসব মামলা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতির সুযোগ যেমন সবচেয়ে বেশি, তাদের ধরা পড়ার হার বেশি। দুদক দুর্নীতি দমনে কাজ করছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি রোধেও হাত দেয়া হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারী হোক, বেসরকারি হোক কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, যার সামান্যতম ক্ষমতা থাকে তিনি সেই ক্ষমতাকে অর্থে রূপান্তর করেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এ দেশেরই অংশ। শাস্তি পাওয়ার ভয় যতক্ষণ না থাকবে ততক্ষণ দুর্নীতির বিস্তার রোধ করা কঠিন। কাজেই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে অন্যরা শাস্তির ধরন দেখে ভয় পায়।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতরের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেমন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন, তেমনি খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও পিছিয়ে নেই। বিশেষ করে রাজউক, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ডেসকো, ওয়াসা, ভূমি অফিস, স্থানীয় প্রকৌশল, রেলওয়ে, যোগাযোগ, নৌ-বাণিজ্য, আইন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, ভূমি, বন, পরিবেশ, স্বাস্থ্যের মতো সেবা খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িয়ে পড়ছেন দুর্নীতির সঙ্গে। যাদের দায়িত্ব জনগণ তথা রাষ্ট্রের অর্থ সম্পদ সুরক্ষার-তারাই এসব লুট করছেন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এসব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ধরন প্রায় অভিন্ন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ অর্জন, দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় সম্পদের তথ্য গোপন বা সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদান, ২৭(১) ধারায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, দণ্ডবিধির ১০৯, ৪০৮, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৬, ৪৬৭ ধারায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন উৎস থেকে দুদকে অভিযোগ আসে কিংবা জমা পড়ে। প্রাপ্ত অভিযোগ কমিশনের হাত হয়ে যাচাই-বাছাই কমিটিতে আসে। অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত হলে কমিটি অনুসন্ধানের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিন সদস্যের কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দেয়। অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। অনুসন্ধান কর্মকর্তা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণে অভিযোগের সত্যতা প্রতীয়মান হলে প্রযোজ্য ধারায় মামলা রুজুর সুপারিশ করেন। সুপারিশ অনুযায়ী কমিশন মামলা রুজু কিংবা অভিযোগ নথিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেন। মামলার পক্ষে সিদ্ধান্ত হলে কমপক্ষে একজন উপ-সহকারী পরিচালককে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত হয়। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলেও চার্জশিট প্রদানের সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। কমিশন প্রতিবেদন অনুমোদন করলে সেটি চার্জশিট আকারে আদালতে দাখিল করা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে প্রজাতন্ত্রের ৭৫৭ কর্মচারীকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এখন বাকি আনুষ্ঠানিকতার পর তাদের বিচার শুরু হবে।
সূত্র মতে, প্রভাব খাটিয়ে একাধিক প্লট গ্রহণের অভিযোগে একজন পূর্ণাঙ্গ সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান চলছে। খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের একজন কানুনগোর বিরুদ্ধে চলছে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের অনুসন্ধান। এছাড়া হলমার্ক কেলেংকারির মতো চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির সঙ্গেও সংশ্লিষ্টতা মিলছে সরকারি কর্মকর্তাদের। ১৫ জুন হলমার্কের সহযোগী ৩ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। তাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ১১ কর্মকর্তা আসামি।
সূত্র জানায়, দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারাও। দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই উপপরিচালককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় ১১ মে। ১৭ জুন ভুয়া সম্পদ বিবরণী নোটিশ দিয়ে ৩৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয় উপপরিচালক জাহিদ হোসেন ও গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে। এর আগে ২০১২ সালে দুদকের ১৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তি দেয়া হয় দুর্নীতির অভিযোগে। গত বছর শাস্তি দেয়া হয়েছে ২০ জনকে। ২০০৮-২০০৯ সালে ট্রুথ কমিশনে (পরে অবৈধ ঘোষিত) দুর্নীতির দোষ স্বীকার করেন ৪৯১ ব্যক্তি। এর মধ্যে ৩০৩ জনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
দুদকের এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১১ সালে রাষ্ট্রের অর্থ-সম্পদ লুটের দায়ে ২৯৪ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২০১২ সালে মামলা করা হয়েছে ৪১৯ জনের বিরুদ্ধে। গত বছর মামলা করা হয়েছে ৪৫৩ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এছাড়া চলতি বছর মে পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় অন্তত ১০৮ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়েছে।
চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত দুদক ২৭২টি মামলার চার্জশিট দেয়। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৬৪ জন। মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ৩৩৬ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। চলতি বছর জানুয়ারিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ৫৭টি চার্জশিট হয়। এর মধ্যে ৫১টি চার্জশিট অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত। মামলাগুলোতে অভিযুক্ত ১১০ জনের মধ্যে ৬৮ জন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফেব্র“য়ারিতে অনুমোদিত ৫৭ মামলার চার্জশিটের মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলা রয়েছে ৪১টি। মামলায় অভিযুক্ত ৬৮ জনের মধ্যে ৩৮ জন সরকারি চাকরিজীবী। এর আগে গত বছর ডিসেম্বরে ৫৬টি মামলার মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলা রয়েছে ৩৯টি। মামলায় ১৩৬ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৯১ জন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। গত নভেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন ২৮টি মামলার চার্জশিট দেয়। এর মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলা ১৭টি। এসব মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা ৬১ জন। যার মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী ৪১ জন। ফেব্র“য়ারিতে দায়েরকৃত ৪১ মামলার মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলা ২৯টি। এসব মামলায় আসামি করা হয় ১০৯ জনকে। এদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৫০। একইভাবে গত বছর ফেব্র“য়ারি মাসে দুদক ২২টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে। এর মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলা হয় ১৭টি। এসব মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ৫৪ জনকে। এর মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ৩৬ জন। সে বছর জানুয়ারি মাসে দুদক ১১টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে। এর মধ্যে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলার সংখ্যা ১০টি। এছাড়া এসব মামলায় মোট অভিযুক্ত ২৬ জন। এর মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১২ জন।
চলতি বছর মার্চে ৩৭টি মামলা দায়ের করে দুদক। আসামি করে ৫৯ জনকে। এর মধ্যে ৩৪ জনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ মাসে দাখিলকৃত ৩৭ চার্জশিটে ৯২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৪৮ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিপ্রবণ হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, অপরাধ-অনিয়মগুলোর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার পেছনে কাজ করছে বিচারহীনতা। দুর্নীতির পেছনে আমরা রাজনীতিক-ব্যবসায়ী-প্রশাসনের ত্রিমুখী যোগসাজশ লক্ষ্য করি। দুর্নীতি রাজনৈতিক সুরক্ষা পাচ্ছে। ফলে সরকারি কর্মচারীরা ক্রমেই দুর্নীতিপ্রবণ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপরাধকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তি নিশ্চিত করলেই কেবল এ প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। হোসেন হাওলাদারসহ ভুয়া প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
- See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2014/07/01/117417#sthash.g93nl2Qi.dpuf

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞার হুমকি ফ্রান্স ও জার্মানির

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞার হুমকি ফ্রান্স ও জার্মানির
ইউক্রেনের অস্ত্রবিরতি চুক্তির মেয়াদ সোমবার উত্তীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপটে জার্মানি ও ফ্রান্স রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, রুশপন্থী বিদ্রোহীদের নিবৃত্ত না করলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে বলা হয়, ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ও জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল রবিবার রুশ লৌহমানব পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। ইউক্রেনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়া পাশ্চাত্যপন্থী প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কোও এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। ইউক্রেনের নয়া প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে বলা হয়, চার নেতা অস্ত্রবিরতি নিয়ে আবার কথা বলতে সম্মত হয়েছে। সোমবার গ্রীনিচমান সময় ১৯টায় এ অস্ত্রবিরতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। এ অবস্থায় ১৩ সপ্তাহের লড়াই থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সপ্তাহান্তে আরও পাঁচ সৈন্য হারিয়েছে। রবিবার টেলিকনফারেন্স ছিল চারদিনের মধ্যে দ্বিতীয় বার, ব্রাসেলসে শুক্রবার পোরোশেঙ্কো ইউরোপের সঙ্গে এক ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ চুক্তির ফলে কিয়েভের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ উপলক্ষে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কঠোর ভাষায় বিবৃতি দেন। -এএফপি।

রকেট উৎক্ষেপণে মোদির সন্তোষ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে পোলার স্যাটেলাইট লাঞ্চ ভেহিকেল বা পিএসএলভি-২৩ নামের রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে এ রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এ রকেটের সাহায্যে ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা পাঁচটি কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। উৎক্ষেপণের ১৭ থেকে ১৯ মিনিটের মধ্যেই এসব উপগ্রহকে নিজ নিজ কক্ষপথে বসানো হয়। উৎক্ষেপণের পর ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘দেশবাসীর গর্বের মুহূর্ত এটি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব ভারতের মহাকাশ সক্ষমতাকে মেনে নিয়েছে।’ ইসরোর বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘কম খরচে আধুনিক প্রযুক্তিতে কাজ করে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ইসরো। অগ্রগতি হয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণার। সার্ক উপগ্রহ উৎক্ষেপণেও ভারতকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। -ওয়েবসাইট।

বেকারত্ব জর্জরিত ইউরোপেও শ্রমিক আনতে হতে হচ্ছে বাইরে থেকে আন্তর্জাতিক বেলআউটও বদলে দিচ্ছে শ্রম বৈশিষ্ট্য

বেকারত্ব জর্জরিত ইউরোপেও শ্রমিক আনতে হতে হচ্ছে বাইরে থেকে
আন্তর্জাতিক বেলআউটও বদলে দিচ্ছে শ্রম বৈশিষ্ট্য
পর্তুগালে বেকারত্বের হার ১৫ শতাংশ। কিন্তু সেটা আমেরিকার ফল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেইটার এ্যাফিলিয়েটেডের কোম্পানির (আরএসি) জন্য বিশেষ কোন খবর নয়। পর্তুগালে ১৮৮ একর জায়গা নিয়ে কোম্পানির খামার অবস্থিত। বিশাল এ খামার থেকে ফল সংগ্রহ করার জন্য স্থানীয়ভাবে লোক নিয়োগ দিতে আগ্রহী নয় কোম্পানিটি। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস।
গত বছর আরএসি দেশব্যাপী লোক নিয়োগ দেয়ার এক কর্মসূচী হাতে নেয়ার পর শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪০ জন পর্তুগিজ নিয়োগ পেয়েছিল। একদিন চাকরি করার পরই এদের অর্ধেক কাজ ছেড়ে দেয়। এক সপ্তাহ পর দেখা গেল এদের একজনও অবশিষ্ট নেই। আরএসির উৎপাদন ব্যবস্থাপক আরনুলফো মুরিলো বলেছেন, ‘এই লোকগুলোর চাকরি দরকার। কিন্তু কোম্পানিটি যে ধরনের চাকরি সংস্থান করছে সেটি তাদের প্রয়োজন নেই। এখানে পরিশ্রম বেশি, মজুরি কম। তিনি বলছেন, পর্তুগালে চাষবাস করা যে আমেরিকার চেয়ে কঠিন তা নয়। তবে আমেরিকায় বেকার থাকা ও পর্তুগালে বেকার থাকার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। আমেরিকায় বেকার থাকলে অনেক কঠিন অবস্থায় পড়তে হয়। আরএসি মোট শ্রমশক্তির এক চতুর্থাংশ (৪৫০ জনের মধ্যে ১৬০ জনকে) নিয়োগ দিয়েছে থাইল্যান্ড থেকে। থাইল্যান্ড থেকে নিয়োগ পাওয়াদের জন্য এটি অনেক আকর্ষণীয় চাকরি। আরএসির মতো বিদেশী কোম্পানির উপস্থিতি পর্তুগালের অর্থনীতির জন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। প্রতিষ্ঠানটি তরুণ পর্তুগীজদের মধ্যে কোন সাড়া ফেলতে পারেনি। চলতি বছর মে মাসে পর্তুগাল ৭ হাজার ৮শ’ কোটি ইউরো (১০ হাজার ৬শ’ কোটি ডলার) আন্তর্জাতিক বেলআউট পেয়েছে। এই অর্থ পাল্টে দিয়েছে সহায়তা দেশটির সমাজ জীবন বিশেষ শ্রমবাজারের চরিত্র। কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত আছে দেশটির মোট শ্রমশক্তির ২৪ শতাংশ।

ইরাকে রুশ বিশেষজ্ঞ ও জঙ্গী বিমান তিকরিতে কপ্টার ভূপাতিত

ইরাকে রুশ বিশেষজ্ঞ ও জঙ্গী বিমান
তিকরিতে কপ্টার ভূপাতিত
ইরাকী সরকারী কর্মকর্তারা রবিবার বলেছেন, সুন্নী চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর জন্য ১২টি নতুন রুশ যুদ্ধ বিমান সরবরাহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য বাগদাদ পৌঁছেছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা। চরমপন্থীরা বিশ্বব্যাপী জিহাদী সংগঠনগুলোর জন্য তাদের নেতা ঘোষণা করেছে খলিফা বা নিরঙ্কুশ শাসককে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের।
সুন্নী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকের সহয়তা দিতে রাশিয়ার এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এক পরোক্ষ তিরস্কার। আমেরিকান এফ-১৬ এ্যাটাক হেলিকপ্টার সরবরাহ বিলম্বের জন্য এ রকম মনে করেছে ইরাকীরা যদিও যুক্তরাষ্ট্র এফ-১৬ ও এ্যাটাক হেলিকপ্টার, দুটোই সরবরাহের প্রক্রিয়ার চালাচ্ছে। ইরাকী বিমানবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আনোয়ার হামা আমিন বলেছেন, আইসিস-এর বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের বাহিনীর পক্ষে এ বিমানগুলোর তৎপরতা শুরু হবে আগামী তিন বা চারদিনের মধ্যে। রুশ কার্গো বিমানে শনিবার রাতে যে ৫টি এসইউ-টুয়েন্টি ফাইভ বিমান ইরাকে পাঠানো হয়েছে তার উল্লেখ করে তিনি ওই কথা বলেন। আরও দুটি বিমান রবিবার শেষেরদিকে ইরাক পৌঁছবার কথা।

কুর্দিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতি ইসরাইলের সমর্থন জ্ঞাপন তেল আবিবে নেতানিয়াহুর নীতিনির্ধারণীমূলক ভাষণ

কুর্দিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতি ইসরাইলের সমর্থন জ্ঞাপন
তেল আবিবে নেতানিয়াহুর নীতিনির্ধারণীমূলক ভাষণ
ইরাকী কুর্দিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ধারণাকে সমর্থন করেছে ইসরাইল। রবিবার তেল আবিবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘মুসলিম চরমপন্থীদের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জর্দানের হাতকে শক্তিশালী করার এবং ইরাকী কুর্দিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। খবর এএফপি ও গার্ডিয়ান অনলাইনের।
তেল আবিবে গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু বলেন, ‘জর্দানের হাত শক্তিশালী করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত এবং কুর্দিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণাকে সমর্থন করা উচিত। আমি মনে করি, জর্দানের মতো একটি মধ্যপন্থী, স্থিতিশীল দেশের নিজেকে রক্ষা করতে পারার মধ্যে আমাদের যৌথ স্বার্থ রয়েছে।
নেতানিয়াহু এমন এক সময় এমন মন্তব্য করলেন যখন ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এ্যান্ড সিরিয়া (আইসিস) নামে একটি চরমপন্থী গ্রুপের হাতে বর্তমানে ইরাকের একাধিক শহরের পতন ঘটার পর তারা এখানে জর্দানেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা সম্প্রসারণ করতে পারে বলে ইসরাইলী কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন। আইসিসের যোদ্ধারা ইতোমধ্যেই ইরাক সীমান্তের কাছাকাছি সিরিয়ার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় দিয়ার আজ জুর, রাকা ও আলেপ্পো বিস্তৃত এলাকার ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। নেতানিয়াহুর বক্তব্যের বিশেষ দিক ছিল তিনি ইরাকী কুর্দিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিষয়টাকে তিনি সমর্থন করেছেন। পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, ইসরাইল ১৯৬০ এর দশক থেকেই কুর্দিদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সামরিক ও গোয়েন্দা সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ইসরাইল মনে করে সংখ্যালঘু কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর কোন রাষ্ট্র হলে সেটি ইসরাইল ও অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাফার জোন হিসেবে কাজ করবে। নীতিনির্ধারণীমূলক এই ভাষণে নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনীদের সঙ্গে সমঝোতা হলেও তিনি পশ্চিম তীরে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবেন। আইসিসের সম্ভাব্য আক্রমণ ঠেকাতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দিস্তানে এখন কুর্দি নিরাপত্তা বাহিনী পেশমেরগাকে প্রস্তুত অবস্থায় রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি যেভাবে বদলে যাচ্ছে তাতে জর্দানে যে কোন সময়ই আইসিসের জঙ্গীরা ঢুকে পড়তে পারে।

সুন্নী জঙ্গীদের ॥ ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা ০ সিরিয়ার আলেপ্পো থেকে ইরাকের দিয়ালা পর্যন্ত খিলাফত শাসন চালু ০ আবু বকর আল বাগদাদী হলেন ‘আমীরুল মোমেমীন’

সুন্নী জঙ্গীদের ॥ ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা
০ সিরিয়ার আলেপ্পো থেকে ইরাকের দিয়ালা পর্যন্ত খিলাফত শাসন চালু
০ আবু বকর আল বাগদাদী হলেন ‘আমীরুল মোমেমীন’
ইরাক ও সিরিয়ায় বিরাট ভূখ-জুড়ে লড়াইরত ইসলামী জঙ্গীরা রবিবার এক আনুষ্ঠানিক ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের কথা ঘোষণা করেছে। তারা ওই দুটি দেশে তাদের দখল করা ভূখ-ে ৭ম শতকের খলিফার শাসন পুনরুদ্ধারের কথা জানিয়েছে। ওই চরমপন্থীরা তাদের দলের নাম বদল করে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এ্যান্ড সিরিয়া (আইসিস) থেকে ‘ইসলামিক স্টেট’ রেখেছে এবং এর নেতা আবু বকর আল বাগদাদীকে খলিফা (রাষ্ট্রপ্রধান) বলে ঘোষণা করেছে। দলটি এ খলিফার প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করতে বিশ্বের সব মুসলিম উপদলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দলটি ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইসিল) নামেও পরিচিত। রবিবার জিহাদীদের ওয়েসবসাইটে প্রচারিত এক অডিও বিবৃতি থেকে এ কথা জানা যায়। এ পদক্ষেপ হলো দলটির জিহাদ চালিয়ে যাওয়ার অভিলাষেরই সম্প্রসারণ। এটি আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বের প্রতিও এক প্রত্যক্ষ উচ্চভিলাষী চ্যালেঞ্জ। আল-কায়েদা ইতোপূর্বে সুন্নী জঙ্গীদল আইসিসের সঙ্গে কোন সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছিল। খবর এএফপি, ওয়াশিংটন পোস্ট অব ও অন্য ওয়েবসাইটের। আইসিল সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো প্রদেশ থেকে ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় দিয়ালা প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখ-ে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে রবিবার আইসিলের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ ধরনের ইসলামী শাসন অটোমান (উসমানিয়া) সাম্রাজ্যেই সর্বশেষ চালু ছিল। আইসিল ওই সব অঞ্চলে ক্ষমতাসীন শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। খিলাফত কায়েম করা আল-কায়েদার পক্ষত্যাগী আইসিসের দীর্ঘ ঘোষিত লক্ষ্য। দলটি চলতি বছরের প্রথমদিকে মূলধারার সংগঠনটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তখন থেকে ইরাক ও সিরিয়ার বিরাট ভূখ-ের ওপর কর্তৃত্ব কায়েম করে।
জিহাদীদের মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ আল-আদনানি বলেন, ওই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক জিহাদের এক নতুন যুগের সূচনা করছে। তিনি বলেন, আবু বকর আল-বাগদাদী সর্বত্রই মুসলমানের ইমাম ও খলিফা (আমীরুল মোমেমীন) সেই অনুযায়ী ইসলামিক স্টেট নামটিতে থাকা ইরাক ও শাম ‘(লেভান্ট) কথাগুলোর অফিসিয়াল আলোচনা ও চিঠিপত্র থেকে এখন হতে বাদ দেয়া হলো। এ ঘোষণার তারিখ থেকে দলটির অফিসিয়াল নাম হবে ইসলামিক স্টেট। তিনি বলেন, আইসিসের দিগি¦জয়ের ফলে আন্তর্জাতিক সীমানা ভেঙ্গে পড়ার স্বীকৃতিস্বরূপ আইসিস কেবল ইসলামিক স্টেট নামে পরিচিত হবে। কাতারের ব্রকিংস দোহা সেন্টারের ডিজিটিং ফেলো চার্লস লিস্টার ওই পদক্ষেপের উল্লেখযোগ্য তাৎপর্য রয়েছে বলে দেখতে পান। তিনি বলেন, খলিফার শাসন পুনরুদ্ধার করা হয়েছে একটি ঘোষণা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর আন্তর্জাতিক জিহাদ আন্দোলনের ক্ষেত্রে সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়েই এ ঘোষণার প্রভাব পড়বে। কারণ আল-কায়েদার সহযোগী এবং স্বতন্ত্র জিহাদী দলগুলোকে হয় এখন অবশ্যই ইসলামিক স্টেটকে সমর্থন বা এতে যোগদান করতে হবে, নয়তো এর বিরোধিতা করতে হবে। আইসিস যোদ্ধারা গত মাসে ইরাকী শহর মসুল দখল করে রাজধানী বাগদাদের দিকে এগিয়ে যায়। সিরিয়াতে তারা ইরাক-সংলগ্ন সীমান্ত বরাবর উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের ভূখ- অধিকার করে। জিহাদী ওয়েবসাইটের বিবৃতিতে বলা হয়, খলিফার প্রতি আনুগত্যের শপথ দেয়া এবং সমর্থন জানানো মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক।
সব আমিরশাসিত ভূখ-, দল, রাষ্ট্র ও সংগঠনের বৈধতাই তাদের এলাকাগুলোতে খলিফার কর্তৃত্বের সম্প্রসারণ এবং তার সৈন্যদের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে। ওই ঘোষণা আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরির প্রতি এক শক্তিশালী চ্যালেঞ্জ। তিনিও নিজেকে বৈশ্বিক জিহাদী আন্দোলনের সর্বোচ্চ নেতা বলে দাবি করে থাকেন। ইরাকী নেতা বাগদাদী অন্য জিহাদী দলকে অন্তর্ভুক্ত করতে আল-কায়েদার বার বার জানানো আহ্বান প্রত্যাখ্যান করার পর চলতি বছরের প্রথমদিকে বাগদাদীকে পরিত্যাগ করেন জাওয়াহিরি। লিস্টার বলেন, এটি বৈশ্বিক জিহাদের প্রতিনিধি হিসেবে আল-কায়েদার বৈধতার প্রতি অন্যতম হুমকি এবং বড় রকমেরই হুমকি। সহজভাবে বলতে গেলে, আবু বকর আল-বাগদাদী আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

কেশবপুরে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

কেশবপুরে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মধুসূদন একাডেমির উদ্যোগে রবিবার রাতে কেশবপুরের আবু শারাফ সাদেক অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও নাটক মঞ্চায়ন। মধুসূদন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে মধুসূদন স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা সরকারী ব্রজলাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম, ভারত থেকে আগত ড. রাসবিহারী দত্ত, ড. ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি অপূর্ব কর, কবি অরূপ পান্তী, কবি আনসারুল হক, সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক কানাইলাল ভট্টাচার্য, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মধুসূদন একাডেমির পরিচালক কবি খসরু পারভেজ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন মধুসূদন মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব মফিজুর রহমান নান্নু।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সুবহানের নির্দেশে চাচা জব্বার শেখকে গুলি করে হত্যা করা হয় সাক্ষী আলী রানার জবানবন্দী

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ সুবহানের নির্দেশে চাচা জব্বার শেখকে গুলি করে হত্যা করা হয়
সাক্ষী আলী রানার জবানবন্দী
স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের তারাইল উপজেলার রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মোঃ হাসান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। রবিবারই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশন শাখায় জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। তদন্ত সংস্থা রাজাকার কমান্ডার হাসান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনের মতো ৬টি অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষী আলী রানা শেখ জবানবন্দীতে বলেছেন, মসজিদের সামনে আমার চাচা জব্বার শেখ সুবহানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে সুবহানের নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। আজ ১৮তম সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। একই মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনপক্ষের ১৯তম ও সর্বশেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা এসএম ইদ্রিস আলীকে আসামিপক্ষের জেরা অব্যাহত রয়েছে। জেরা সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এ আদেশ প্রদান করেছে।
সৈয়দ হাসান আলী ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের তারাইল উপজেলার রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মোঃ হাসান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। রবিবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশন শাখায় জমাও দেয়া হয়েছে। রবিবার ধানমন্ডিস্ত তদন্ত সংস্থার সেফ হোমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করার পর দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তা হরিদেব নাথ প্রসিকিউশন শাখায় গিয়ে প্রসিকিউটর (জেলা জজ) হৃষিকেশ সাহার নিকট ঐ রিপোর্ট জমা দেন। এ সময় প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান জানান, হাসান আলীর বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে তদন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবারে তার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট প্রসিকিউশনে জমা দেয়া হবে। প্রসিকিউশন এই তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্র্রাইব্যুনালে দাখিল করবে। হাসান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনের মতো ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনকে হত্যা, ১২ জনকে অপহরণ ও আটক এবং ১২৫টি ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক সানাউল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিদেব নাথ ও প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজদসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুস সুবহান ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষী আলী রানা শেখ জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দী গ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে জেরা করেন। আজ ১৮তম সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম।
জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, আমার নাম আলী রানা শেখ, পিতা-শহীদ রুস্তম শেখ, মাতা-মোছাঃ রোকেয়া খাতুন (মৃত)। ঠিকানা-গ্রাম : ভাড়ারা পূর্ব জামুয়া, থানা ও জেলা পাবনা। আমার বর্তমান বয়স ৫৬ বছর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে আমার বয়স ছিল ১২-১৩ বছর। আমি লেখা পড়া জানি না। তবে নাম দস্তখত করতে পারি। আমি ব্যবসা করি।
প্রসিকিউশনের সাক্ষী আরও বলেন, মাওলানা সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী সেনারা আমাদের বাড়িতে ঢুকে বাবা রুস্তম শেখ, চাচা জব্বার শেখ, নুরুল শেখ, সিরাজ শেখ, আব্দুল মজিদ শেখ ও তালেব শেখকে ধরে ভাড়ারা শাহী মসজিদের সামনে নিয়ে যায়। এছাড়াও গ্রামের দিলবার শেখ, গেদম সরদার, খোকন শেখ ও তার ছেলে কাদের শেখ, হাকিম সরদার, কেতা সরদার, আকবর শেখ, হারুন অর রশিদ শেখসহ অনেককে ধরে এনে মসজিদের সামনে জড়ো করে।
মসজিদের সামনে আমার চাচা জব্বার শেখ সুবহানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে সুবহানের নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাক্ষী আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ৫ জ্যৈষ্ঠ সকাল আটটার দিকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদের গ্রাম ঘেরাও করে। মাওলানা সুবহানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী সেনারা তাদের বাড়িতে ঢুকে বাবা রুস্তম শেখ, চাচা জব্বার শেখ, নুরুল শেখ, সিরাজ শেখ, আব্দুল মজিদ শেখ, তালেব শেখকে ধরে ভাড়ারা শাহী মসজিদের সামনে নিয়ে যায়। এছাড়াও গ্রামের দিলবার শেখ, গেদম সরদার, খোকন শেখ ও তার ছেলে কাদের শেখ, হাকিম সরদার, কেতা সরদার, আকবর শেখ, হারুন অর রশিদ শেখসহ অনেককে পাকিস্তানী সেনারা ধরে এনে মসজিদের সামনে জড়ো করে। ভাড়ারা শাহী মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে এসব দেখেছেন। মসজিদের সামনে আমার চাচা জব্বার শেখ সুবহানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে সুবহানের নির্দেশে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাবা-চাচাদের ধরে আনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। এছাড়া সুবহানের নির্দেশে এদিন পাকিস্তানী সেনারা গ্রামের কালি কোমল পালকেও হত্যা করে। ভাড়ারা শাহী মসজিদের সামনে থেকে চাচা জব্বার শেখকে হত্যা করার পর আটক ১০-১২ জনকে সেখান থেকে পাকিস্তানী সেনারা গাড়িতে করে নূরপুর বিদ্যুতকেন্দ্রে পাকিস্তানী সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে রাতভর তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। পরদিন সেখান থেকে আটকদের আটঘরিয়া থানার দেবোত্তর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নির্যাতনের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়া সিরাজকে (অন্য একজন) ছেড়ে দেয়া হয় এবং বাকিদের বাঁশবাগানের কাছে নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলে ৬ জনের মৃত্যু হয়।
এটিএম আজহারুল ইসলাম ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের ১৯তম ও সর্বশেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা এসএম ইদ্রিস আলীকে আসামিপক্ষের জেরা অব্যাহত রয়েছে। জেরা আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইবুনালে অন্য দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
রবিবার সাক্ষী এসএম ইদ্রিস আলীকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আজহারের আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার। ১৫ জুন সাক্ষ্য দেয়ার পর ২২ জুন তাকে জেরা শুরু করেন একই আইনজীবী। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে এ পর্যন্ত আজহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও ১৮ সাক্ষী। তাঁদের মধ্যে সপ্তম সাক্ষী আমিনুল ইসলামকে বৈরী ঘোষণা করেছেন প্রসিকিউশনপক্ষ।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

সুষমার সফরে হতাশ বিএনপি

সুষমার সফরে হতাশ বিএনপি
সরদার সিরাজুল ইসলাম
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশ্বের বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতে দক্ষিণপন্থী বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির বিজয়ে বিএনপি উল্লসিত। তারা বিভিন্ন অবস্থান থেকে দাবি করছে, যেহেতু কংগ্রেস এদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়ক শক্তি এবং আওয়ামী লীগের মিত্র সেহেতু কংগ্রেস বিপক্ষ বিজেপি বিএনপির বন্ধু। তারা আরও দাবি করে যে, তারেক জিয়া নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মোদি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা সাধারণ এক চা বিক্রেতার সন্তান, ৪ বার গুজরাটের সফল মুখ্যমন্ত্রী। আর তারেক খুনী জিয়াপুত্র, অশিক্ষিত, সন্ত্রাসী, ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গী মদদদাতা এবং বর্তমানে বিভিন্ন মামলার ফেরার আসামি। আইএসআই-এর এজেন্ট। ভদ্রতার খাতিরে ভারত এর প্রতিবাদ করেনি বা এসব খবর ভারতের কোন মিডিয়া খায় না। সংবাদপত্রের বদৌলতে এখন একথা সবাই জানে, তারেক এবং তারেকের বন্ধু বিশ্বের সবচাইতে বড় অস্ত্র চোরাকারবারি পাকিস্তানী দাউদ ইব্রাহিম।
নরেন্দ্র মোদি ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে রামমন্দির বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন এবং এ বছর নতুন করে রামমন্দির বানানোর অঙ্গীকার করেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারে সাম্প্রদায়িকতা সবচাইতে বড় মাপে স্থান পেয়েছে। এবং এটাই তার ক্যারিশমা। তবে ১৯৪৭ সালের ভারতের একমাত্র প্রধান শক্তি ছিল কংগ্রেস। পরবর্তী অবস্থানে কমিউনিস্ট পার্টি যা এখন বিভক্ত হয়ে মুমুর্ষু অবস্থায় সোভিয়েত ও চীনপন্থী। পশ্চিমবঙ্গে চীনপন্থী জ্যোতিবসুরা ৩০ বছর প্রাদেশিক সরকার চালিয়েছিল। জ্যোতিবসুর সুযোগ ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কিন্তু তার কেন্দ্রীয় পার্টি তা হতে দেয়নি। আর কংগ্রেস বহুভাগে বিভক্ত। পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জি, তৃণমূল কংগ্রেস নাম দিয়ে কখনও বিজেপি। গত কংগ্রেস জোটে গিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী, পরে প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজয় হয়ে মুখ্যমন্ত্রী। এবার কেন্দ্রীয় নির্বাচনে প্রদেশের ৪২টির মধ্যে ৩৪টি (বিজেপি ২, কমিউনিস্ট ২, কংগ্রেস ৪) আসন কাক্সিক্ষত কিং মেকারের খায়েশ তো দূরে থাক বরং মোদির শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করে যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে তার খেসারত মমতাকে দিতে হবে। এখন নির্বাচনী বিজয়ী নরেন্দ্র মোদি কোন্দিকে যাবেন। তিনি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গেই আছেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, নেহরু এমনকি কংগ্রেসের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকেও। এও বলেছেন যে, তার সরকার প্রণব মুখার্জির মতো সফল অর্থমন্ত্রী পেলে ভাল হতো।
গান্ধী পরিবারের আরেক উত্তরাধিকার ইন্দিরা গান্ধীর কনিষ্ঠপুত্র সঞ্জয় গান্ধীর (’৭৬ সালে নিহত) স্ত্রীর মেনকা গান্ধীর সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর বনিবনা না থাকায় মেনকা এবং তৎপুত্র বরুণ গান্ধী এখন বিজেপির নীতিনির্ধারক পর্যায় অবস্থান নিয়েছেন। বিজিপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভার সদস্য বরুণ গান্ধী হিন্দুস্থান টাইস পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন যা প্রথম আলো ২১/০৬/১৪ তারিখে ভাষান্তর হয়ে প্রকাশিত হয়। সুলিখিত তথ্যবহুল জ্ঞানগর্ভ ‘প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের পুনরুজ্জীবন’ শিরোনামের এই নিবন্ধে ‘প্রথমেই, পাকিস্তানকে বরাবরের মতোই একটি বিরক্তিকর প্রতিবেশী হিসেবে থাকবে। নৌঘাঁটি ও করাচী বিমানবন্দরে জঙ্গীদের হামলার পর বোঝা যাচ্ছে সেখানে একটি ক্ষমতার লড়াই চলছে।’
বিএনপি ইতোপূর্বে বেশ ক’বার অপপ্রচার চালায় যে, আওয়ামী লীগ কংগ্রেস তথা ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করেছে। এটি মূর্খের ভাবনা। কারণ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের কোন ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে নয়। একথা সত্য যে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় কংগ্রেস ভারতের ক্ষমতায় ছিল, তবে সেই সময় কংগ্রেসের কোন প্রতিপক্ষ ভারতে ছিল না। উল্লেখ্য, ১৯৭৫-৮১ সময়কালে শেখ হাসিনা ভারত সরকারের মেহমান ছিলেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস প্রথমবারের মতো পরাজয় বরণ করলেও শেখ হাসিনার মর্যাদার ঘাটতি ছিল না। আরও উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গার পানি চুক্তির সময়ও কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। সে সময় বিজেপি ছিল না। কিন্তু প্রয়াত জিয়া এবং বিএনপি যে আসলে ভারত বিরোধী নয় এবং ছিল না বরং ভারতের ভয়ে ভীত এক তাঁবেদার দল সেটি তো ইতিহাসের অংশ যা বিগত ৩৭ বছরে খুবই লজ্জাজনক। এটি নিয়ে কিঞ্চিত আলোচনা হতে পারে।
১৯৭৪ সালের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যার বিচিত্রায় (পৃঃ ৫৩-৫৭) মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান একটি জাতির জন্ম শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছিলেন। এতে তার ভারত প্রীতির কথা বিধৃত ছিল এভাবেÑ ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হচ্ছে আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। সে সময়ে আমি ছিলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যার নামে গর্ববোধ করত। তেমনি একটা ব্যাটালিয়ানের কোম্পানি কমান্ডার। সেই ব্যাটালিয়ান এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীরও গর্বের বস্তু। খেমকারান রণাঙ্গনের বেদিয়ানে তখন আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। সেখানে আমাদের ব্যাটালিয়ান বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। এই ব্যাটালিয়ানই লাভ করেছিল পাক বাহিনীর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক বীরত্ব পদক। ব্যাটালিয়ানের পুরস্কার বিজয়ী কোম্পানি ছিল আমার কোম্পানি, আলফা কোম্পানি। এই কোম্পানি যুদ্ধ করেছিল ভারতীয় সপ্তদশ ইনফ্যান্ট্রি, ষোড়শ পাঞ্জাব ও সপ্তম লাইট ক্যাভারলির (সাঁজোয়া বহর) বিরুদ্ধে। এই কোম্পানির জওয়ানরা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, ঘায়েল করেছে প্রতিপক্ষকে। বহুসংখ্যক প্রতিপক্ষকে হতাহত করে, যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করে এই কোম্পানি অর্জন করেছিল সৈনিকসুলভ মর্যাদা, প্রশংসা পেয়েছিল তাদের প্রীতির। যুদ্ধ বিরতির সময় বিভিন্ন সুযোগে আমি দেখা করেছিলাম কিছুসংখ্যক ভারতীয় অফিসার ও সৈনিকের সঙ্গে। আমি তখন তাদের সঙ্গে কোলাকুলি করেছি, হাত মিলিয়েছি। আমার ভাল লাগত তাদের সঙ্গে হাত মেলাতে। কেননা আমি তখন দেখেছিলাম, তারাও অত্যন্ত উঁচুমানের সৈনিক। আমরা তখন মতবিনিময় করেছিলাম। সৈনিক হিসেবেই আমাদের মাঝে একটি হৃদ্যও গড়ে উঠেছিল, আমরা বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলাম। এই প্রীতিই দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে পাশাপাশি ভাইয়ের মতো দাঁড়িয়ে সংগ্রাম করতে উদ্বুদ্ধ করেছে আমাদের।
জিয়াউর রহমান ভারতের ভয়ে যে কত বেশি আতঙ্কিত ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় বেশ কিছু ঘটনায়। জিয়া ক্ষমতা দখলের পর ঢাকার রাজপথে কোরানের আয়াত লিখিত অসংখ্য বোর্ড স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৯ সালের ১৬ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোবাররজি দেশাইয়ের ঢাকা আগমনের পূর্বে ওই বিলবোর্ড মুছে ফেলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি করে আদায় করেছিলেন ৪৪ হাজার কিউসেক আর পরে চুক্তিবিহীন অবস্থায় শেষ পর্যন্ত জিয়া তার পরিবর্তে ৩৪ হাজার কিউসেক নিয়ে খুশি ছিলেন। ’৯৬ সালে শেখ হাসিনা ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি করেন। জিয়ার সময় দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপে ভারতীয় সৈন্য অবতরণের বিরুদ্ধে সংসদে আলোচনা পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। অথচ তালপট্টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু ভারতের ‘বড়ভাই’ সুলভ আচরণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। জেনারেল এরশাদের ভারত তোষণের প্রমাণ রয়েছে বিভিন্ন কর্মকা-ে; যার একটি প্রমাণ হচ্ছে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর এরশাদ ভারত যান এবং শোক প্রকাশ করে রাজীব গান্ধীকে বলেন, ‘শুধু আপনার নয়, আমার মাও মারা গেলেন।’
ম্যাডামের ভারত সফরের শুরু হয়েছিল ভারতের সংসদে বিরোধী দলনেতা বিজেপির সুষমা স্বরাজের সাক্ষাত দিয়ে। বিজেপি সভাপতি, ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বল্পতম সময়ের দর্শন মিললেও কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধীর দর্শন মেলেনি। অথচ সেটি তার ইচ্ছাসূচীর মধ্যে সর্বাধিকারেই ছিল।
ম্যাডামের সফরের শেষে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত কলামে সফরের মূল্যায়ন হয়েছে এবং আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে এই বলে যে, ম্যাডামের দল ভারত বিরোধীতা নীতি ত্যাগ করেছে এবং ভারতের স্বার্থ রক্ষায় আরও বেশি সুবোধ হওয়ার অঙ্গীকার করেছে। উদ্ধৃত কলামের শিরোনামই বলে দেয় সফরের সারকথা। অধিক মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
ম্যাডাম আবার ক্ষমতায় যাওয়ার দিবা স্বপ্ন দেখছেন। বরিশালের ১৯/১১/১২ তারিখের জনসভায় বলেন ‘আরেকবার সুযোগ দিন, দেশের চেহারা পাল্টে দেব। (প্রথম আলো/জনকণ্ঠ ২০/১১/১২)।’ পুত্র তারেকের জন্মদিনে বয়সে প্রবীণতার সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করে বরাবরের মতো ম্যাডাম একটি গাঢ় নীল শাড়ি পরে এই প্রথমবার পুত্র বন্দনায় নেমেছিলেন। সবাইকে স্তম্ভিত করে বলেছেন ‘তারেক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা।’ ‘তারেক সৎ’ ছেলে বলে ম্যাডাম যা বলেছেন তা তার দলের লোকরাও বিশ্বাস করে না। তারেকের দুর্নীতির তথ্য খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী দফতরে সুরক্ষিত। মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইন্টেলিজেন্টের কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে তারেকের দুর্নীতির সাক্ষী দিয়ে গেছে। আরাফাত কোকোর বিদেশে পাচারকৃত এবং সিঙ্গাপুর ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা ২০ লাখ ৪১ হাজার ডলার (প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা) দুদকের তহবিলে (ব্যাংকে) জমা হয়েছে (প্রথম আলো, জনকণ্ঠ ২৩/১১/১২)। তারেকের হিসেবটা আরও বড়। তারেক লন্ডনে জাঁকজমকভাবে আছেন। কি চিকিৎসা হচ্ছে, কে জানে!
লেখাটা শুরু হয়েছিল নরেন্দ্র মোদির বিজয় নিয়ে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সম্পর্ক কি হবে? স্বাভাবিকভাবেই তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। কিন্তু জাপান সফরের কারণে শেখ হাসিনা যেতে না পারলেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন সারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ ভারতীয় পদস্থ কর্মকর্তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আগামী ২৬ জুন বাংলাদেশ সফরে আসছেন। গত ১৩ জুন বিজেপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সুসম্পর্কের ওপর ‘নিজেই বাজারে গিয়ে শেখ হাসিনার জন্য শাড়ি কিনেছিলেন সুষমা স্বরাজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন লিখেছেন সিনিয়র সাংবাদিক নঈম নিজাম। এখানে লেখাটি থেকে খানিকটা উদ্ধৃত্তি করার লোভ সামলানো গেল না, ‘২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর প্রথম দিল্লি সফরে গেলেন শেখ হাসিনা। ২০০২ সালের কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধীদলীয় নেতা। এর মধ্যে এক সকালে শেখ হাসিনার তখনকার সহকারী একান্ত সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমকে ফোন করেন তথ্যমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের একান্ত সচিব। তিনি বললেন, সুষমা স্বরাজ ব্যক্তিগতভাবে তার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। আলাউদ্দিন নাসিম বললেন, নেত্রীর টাইট শিডিউল। তবুও সুষমা স্বরাজ হোটেলে এলে একটা টাইম নির্ধারণ করতে পারি বিকালের দিকে। তুমি আমাকে জানাও। কিছুক্ষণ পর আবার টেলিফোন এলো নাসিমের ফোনে। তবে এবার একান্ত সচিব নন, ফোনে সরাসরি কথা বললেন সুষমা স্বরাজ নিজেই। বললেন, মি. নাসিম আপনি হয়ত প্রটোকল চিন্তা করে আমাকে হোটেলে আমন্ত্রণ করেছেন। এটা প্রটোকলের বিষয় নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে। গত ২৬ বছর আমি শপিংয়ে যাইনি। কিন্তু গতকাল বাজারে গিয়ে তার জন্য একটি শাড়ি কিনেছি। আজ একটু পর তার জন্য বিকালের নাস্তা বানাব। আপনি তাকে এখনই এই বার্তাটি দিন। আলাউদ্দিন নাসিম ছুটে গেলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কক্ষে। বিস্তারিত জানালেন নেত্রীকে। শেখ হাসিনা প্রথম থেকে শেষ সব শুনলেন। তারপর বললেন, চলো আজ বিকালেই যাব সুষমার বাড়ি। যেমন কথা তেমন কাজ। বিকালেই সফরসঙ্গীদের নিয়ে ছুটে গেলেন সুষমার বাড়িতে। বাড়ির গেটে স্বামীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলনে সুষমা নিজেই। স্বাগত জানালেন বাংলাদেশের বিরোধীদলীয় নেতাকে। জম্পেশ আড্ডা জমে ওঠে দুই নেত্রীর মধ্যে। আলোচনা শুধু দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সব কিছু নিয়েই তারা কথা বলেন। দীর্ঘ আড্ডার পর শেখ হাসিনা ফিরে আসেন তার হোটেলে। বিদায়ের আগে সুষমা ভোলেননি নিজের হাতে কেনা শাড়িটি তুলে দিতে। এ সময় সুষমা বললেন, দেখো ২৫-২৬ বছর বাজারে যাই না। আমার সব কিছু কিনে দেয় বোন। কিন্তু অনেকদিন পর বাজারে গেলাম শুধু তোমার জন্য শাড়ি কিনতে। শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানালেন সুষমাকে। অনেক বছর পর শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে সুষমা স্বরাজ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোদি সরকারের প্রধান নীতিনির্ধারকদের একজন।’
সুষমা স্বরাজ প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সাক্ষাত করেছেন রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ এবং বিএনপি-জামায়াত জোটনেত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। সরকারের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় জঙ্গীবাদ দমন, দেশের উন্নয়ন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভূয়সী প্রশংসা করেন, তিস্তা চুক্তি এবং বর্ডারে সিটমহল সমস্যার সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সুষমার বাংলাদেশে অবস্থানকালেই (২৭.০৬.১৪) কলকাতায় আটক নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের আসামি নুর হোসেনকে ফেরত পাঠাতে ভারতের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে খবরে প্রকাশ। বিএনপি-জামায়াত জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকালে (বস্তুত ম্যাডামের উপদেষ্টা শমসের মুবিন চৌধুরীর বক্তব্যে) তিনি ক্ষমতায় যাওয়ার আকুতি প্রকাশ করে অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এর জবাবে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুষমা স্বরাজের সফরসঙ্গী সৈয়দ আকবার উদ্দিন বলেছেন, এগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হওয়ায় ভারতের হস্তক্ষেপ করার কোন সুযোগ নেই (২৭.০৬.১৪)। তবে শতব্যস্ততার মধ্যেও সুষমা স্বরাজ ২৭.০৬.১৪ তারিখ সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজায় অংশগ্রহণ করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি যেভাবেই ক্ষমতায় আসেন না কেন ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতন্ত্রী বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ। সেখানে জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সরকারের কোন মন্ত্রণালয়ের কোন কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়নি। রাষ্ট্রীয়, পররাষ্ট্রীয় নীতিমালায় পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই। কেননা, কংগ্রেস যে পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করেছিল তাতে বিজেপির দ্বিমত ছিল না।
লেখক : গবেষক
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

এবার আর্জেন্টিনার পালা, চোখ রাঙাচ্ছে সুইসরা

এবার আর্জেন্টিনার পালা, চোখ রাঙাচ্ছে সুইসরা
ভাগ্য আর খেলে-যেভাবেই হোক পার পেয়ে গেল পেলের ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ঘরের মাঠের নকআউটে হারিয়েছে একই মহাদেশের চিলিকে। এবার পালা ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার। তবে প্রতিপক্ষ মহাদেশীয় চেনা দল নয়। ইউরোপের সুইজারল্যান্ড। দুই মহাদেশের দু’দলের ‘ডু আর ডাই ম্যাচ।’ সাও পাওলোর আকাশটা কি আজও নীল-সাদায় রঙ্গিন হয়ে উঠবে? নাকি কেবলই লালে আর লাল। তবে গোটা বিশ্বে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ফুটবল মাঠমুখী হওয়ার ব্যাপারটা মায়াবী উচ্ছ্বাসে রঙ্গিন হওয়ার কথাই বলে। রূপসী ঝর্ণার অপার সৌন্দর্যের কলরবে আজও তারা অবগাহন করে, মেসিদের বলবে- এগিয়ে যাও। আমারা তো তোমাদের সঙ্গেই আছি। নাকআউটের ম্যাচ সামনে রেখে চিরাচরিত আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উজ্জ্বল উপস্থিতি চেহারাই পাল্টে দিয়েছে আয়োজক শহরটির। এখন মেসিদের পালা ম্যাচের চিত্রটায় নিজেদের আল্পনা এঁকে নেয়া। যার দীর্ঘ অপেক্ষায় গত দু’দিন ধরেই নেচে-গেয়ে স্টেডিয়াম চত্বরটায় এমন দৃশ্য তৈরি করেছেন দর্শকরা, যার অনাবিল সৌন্দর্য চোখে না দেখলে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। গায়ে আকাশী-সাদা জার্সি। মাথায় শিং লাগানো অদ্ভুত টুপি। তবে লালের মিশেলও চোখে পড়ার মতো। প্রিয় দলের সাফল্য কামনা আর খেলা দেখতে ইউরোপ থেকে ছুটে এসেছেন প্রায় পনের হাজার নারী-পুরুষ দর্শক। সে তুলনায় আর্জেন্টাইনরা অবশ্য কয়েকগুণ বেশি। পাশের দেশ বলে কথা। ব্রাজিলের সঙ্গে আর্জেন্টিার মূল সীমান্ত পোর্তো আলেগ্রে দিয়েই সড়ক পথে ছুটে আসা দর্শকের পদভারে মুখরিত সাও পাওলোর সড়ক, রেস্তরাঁ, আবাসিক হোটেল, রেলপথ-সবই। মনের খোরাক, তৃপ্তি আর প্রিয় দলের সাফল্যের জয়মাল্য নিয়ে ঘরে ফিরতে চান তারা। আর্জেন্টিনা-সুইজারল্যান্ডের ‘অঘোষিত ফাইনাল’ নিয়ে ব্রাজিলের আমজনতা আবার তাকিয়ে লিওনেল মেসির দিকে। তাদের কাছে আর্জেন্টিনা কি করল সেটা বড় নয়। মেসির জাদুমাখা পা দুটো আজ কি করবে এ নিয়েই যত উৎসাহ-উদ্দীপনা।
ইউরোপীয়দের মোকাবেলায় প্রস্তুত মেসিবাহিনী। বিকেলের প্রাণবন্ত অনুশীলনে পর আর্জেন্টিনার মায়াবী মহানায়কের উজ্জ্বল চেহারা প্রমাণ করছিল আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকার মহাকাব্যের কথা। যদিও মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ‘এল এম টেন’ বলছিলেন নকআউটের মঞ্চের সবদলই সমীহ জাগানো। কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এমন কি ভুল করারও। এ ধরনের ম্যাচে ভুলের মাসুুল মানেই বিদায়। বিপক্ষ সুইজারল্যান্ডকে সমৃদ্ধ প্রতিপক্ষ হিসেবেই মনে করছি। দর্শক-ভক্তরা যাই ভাবুক সুইসদের বিরুদ্ধে ম্যাচটা তত সহজ হবে না। তবে মানুষের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে মেসির দু’পাায়ের শৈল্পিকতা। প্রতি ম্যাচেই গোল করছেন। গোল করে দলকে জেতাচ্ছেন আর্জেন্টিনার সাদামাটা খেলার সময়েও। তাতেই যেন মেসি নির্ভরতা প্রচ-ভাবে সামনে এসে পড়েছে। এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে ক্লান্ত কোচ সাবেলা বলছিলেন, কি আর করা? অন্যরা এখনও নিজের সেরাটা তুলে ধরতে পারেনি। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ লীগের শেষ ম্যাচের ‘ক্লোজ’ জয়ে মেসি একাই করেছেন দুই গোল। আর রোজোর পা থেকে এক। কিন্তু হিগুয়াইন এখনও গোল খুঁজে চলেছেন। তার ওপর চিন্তা বাড়িয়েছে এ্যাগুয়োর চোট। সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ক্ল্যাশে এ্যাগুয়েরোর জায়গায় লাভেজ্জিকে খেলানোর পরিকল্পনা সাবেলার। এ্যাটলেটিকো মিনেইরোর বেসক্যাম্পে অনুশীলনের সময় হিগুয়াইন ও লাভেজ্জির সঙ্গে মাঠে আলাদা একটা পাঠশালা খুলতে দেখা গেল আর্জেন্টিনা কোচকে। সম্ভবত মেসির ওপর সারা ভুবনের ভারের চাপ কমাতে। আর তা কতটা কমল এ্যারেনা কোরিন্থিয়ান্সের মাঠে আজ সুইস ডিফেন্সের সামনে পড়লেই জানা যাবে। কোচ ওতমার হিজফিল্ডের দল অবশ্য এক-দুই জনের ওপর নির্ভর না। ম্যাচ জেতানো বা বাঁচানোর বেশ কয়েকজন তারকা সুইসদের আছে। হিজফিল্ডও তাই বলছিলেন, জিতার জন্য গোটা দলকেই খেলতে হবে। মেসিদের মতো আমার দল তারকায় ঠাসা না। গড়ে সবাই প্রায় সমমানের। সংঘবদ্ধ হয়ে টিমটা খেলতে পারলে আর্জেন্টিনাকে মোকাবেলা বেশ ভালভাবেই করা যাবে। দু’দলের ফর্মেশনটার সঙ্গে দারুণ মিল রয়েছে। মেসিরা যেমন ৪-৩-৩ ছকে, একই ছকে ইনলারাও খেলছেন। তবে সুইজারল্যান্ডের ওপর শিরোপার চাপ নেই, যা মাথায় নিয়ে খেলছে আর্জেন্টাইনরা। আজকের ম্যাচে সাবেলার একাদশে একটিই পবির্তন, এ্যাগুয়োর জায়গায় লাভেজ্জি। গোলপোস্টে রোমেরোর ওপরে ডিপ ডিফেন্সে ইনজাকুয়েল গ্যারি ও ফর্নান্ডেজের পাশে মার্কোস রোজো এবং জাবালেতা। মিডফিল্ডে ডি মারিয়া ও গ্যাগোর মাঝে মাশ্চেরানো। স্ট্রাইকিংয়ে মেসি ও লাভেজ্জির একটু ওপরে হিগুয়াইন। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের উত্তরে হিগুয়াইন একটু রুষ্ট হয়ে বলছিলেন ‘গোল পাচ্ছি না তো কি হয়েছে।’ দল তো জিতেই চলেছে। আর আমি যতক্ষণ গোল না পাচ্ছি অন্যদের সহযোগিতা করে যাব গোলের জন্য।
গত দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেয়া সুইজারল্যান্ড এবার নিয়ে দশবার মূলপর্বে খেলে সেরা সাফল্য তিনবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। দুইবার বিশ্বকাপ জয়ী ম্যারাডোনার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও খেলেছে আরও দুইবার। রানার্সআপ দুইবার, এবার নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে বারোবার। মেসিরদের ওজন তো আছেই। পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে সুইসদের বিরুদ্ধে নকআউটে আর্জেন্টিনা নকআউট হওয়ার দল নয়। তবে এ ম্যাচেও এক মেসি নির্ভর হয়ে পড়লে বিপদ। খোদ ব্রাজিলে বসে বার বার মনে হচ্ছে এক মেসিকে ঘিরে এমন এক পেশে নৈপুণ্য আর কতদিন খেলবে যাবে আর্জেন্টিনা। ভক্তরা আরও উজ্জ্বল দেখতে চান প্রিয় দলকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে। সত্যি কথা বলতে কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দেশের গ্রুপ পর্বের খেলায় মনে ভরেনি সমর্থকদের। নকআউটের ম্যাচে তাই উদ্ভাসিত নৈপুণ্য প্রত্যাশা সবার। এই ম্যাচকে ঘিরে তারা শুধু রঙ্গিন নন। হাজির হয়েছেন মনোরম সাও পাওলো শহরে বুকভরা আশা নিয়ে। মেসিকে উদ্দেশ্য করেই আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আনন্দ-উৎসবের চিত্র-আহ্বান, হাতের প্ল্যাকার্ড-ব্যানারই তা বলে দিচ্ছিল। তাদের ভাবখানা ছিল এমন মেসি পারফর্ম, না করতে পারলে ব্রাজিলে কেউ বাঁচাতে পারবে না আর্জেন্টিনাকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় স্পেনকে হারিয়ে চমৎকার সূচনা করলেও গ্রুপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার যখন নকআউটে উঠেই গেছি তখন আরও একধাপ এগোনোর স্বপ্ন দেখতেই পারি। বড় দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও চমক দেখাতে চাই। মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বলছিলেন অধিনায়ক গোকহান ইনলার। পাশাপাশি এও বলেন মেসিদের মোকাবেলা করা খুবই কষ্টের-কঠিন। সেটা হবে অসাধ্য সাধন করা। ফুটবলে সবই সম্ভব-এ মন্ত্রকে পুঁজি করেই মাঠে নামবে সুইসরা। আর্জেন্টিনার যেমন রয়েছে মেসি। সুইজারল্যান্ডেরও আছে জারদান শাকিরি নামক তুখোর প্লেমেকার। ব্রাজিল বিশ্বকাপে আলোচনায় চলে এসেছেন হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে। কোচ হিজফিল্ডের তুরুপের তাস শাকিরি আর সাবেলার মহাতারকা মেসির লড়াইটাও দেখতে উদগ্রীব বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ। জার্মান লীগ বুন্দেস লীগায় বেয়ার্ন মিউনিখের এই তারকাকে নিয়ে কোচ সাবেলা বললেন, ওকে আটকানোর জন্য বাড়তি পাহারাদার রাখা হবে। ছুটে গেলেই বিপদ। বিপক্ষ গোল সীমনায় ওর পা দুটো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।
সব কথার শেষ হচ্ছে, আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ এবারও খুব একটা আশা জাগাতে পারছে না। গ্রুপ লীগের তিন ম্যাচে ছয় গোল করলেও তিন গোল খেয়ে জানান দিচ্ছে মেসির দল। কাজেই বাঁচা-মরার নকআউটে রক্ষণ সতর্ক হয়ে খেলতে না পারলে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন শাকিরিরা। সাবেলা যেমন শাকিরিকে আটকানোর ছক তৈরি করেছেন, একইভাবে হিজফিল্ডও প্রস্তুত মেসিকে রুখতে। সুইস কোচ বলেছেন তিন ম্যাচে মেসির কাঁধে ভর করে পাড় পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। আমাদের বিরুদ্ধে সে সুযোগ তারা নাও পেতে পারে। জয়ের-গোলের জন্য অন্যদের চেষ্টা করতে হবে। হিজফিল্ড আরও বললেন, শুধু আমরা নই। বিশ্বের সবাই দেখেছে এক মেসিই টানছে গোটা দলকে। কাজেই আমাদের জায়গায় অন্য বিপক্ষ হলেও মেসির ওপর বাড়তি নজর রাখত। এক্ষেত্রে আমরাও সেটা করতে চাই।

রমজানে পেঁয়াজ থেকেই সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কারসাজি

রমজানে পেঁয়াজ থেকেই সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কারসাজি
এম শাহজাহান ॥ পেঁয়াজু ইফতারিতে শামীমার প্রথম পছন্দ। কালেভদ্রে কখনও খাওয়া হলেও ইফতারিতে এক টুকরো পেঁয়াজু তাঁর চাই-ই-চাই। শুধু শামীমা নয়, রমজানে রোজাদারদের কাছে সাধারণ এ খাবারটি হয়ে ওঠে অতি অসাধারণ। কিন্তু সেই পেঁয়াজুর প্রধান অনুষঙ্গ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে। রোজার মধ্যে শুধু পেঁয়াজ থেকেই সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপকৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে। এর পেছনে এক শ্রেণীর অসাধু ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, দেশে পেঁয়াজের কোন সঙ্কট নেই। তাই রমজানে পণ্যটির দাম বাড়বে না। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত সুবিধায় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দেয়া হতে পারে। কিন্তু সরকারের এসব পদক্ষেপ থাকার পরও দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন সাধারণ ভোক্তারা। তাঁদের প্রশ্ন পেঁয়াজের দাম ফের তিন অঙ্কের ঘর অতিক্রম করবে না তো?
সূত্রমতে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত রফতানি মূল্য বাড়ানোর পর থেকেই দেশে পেঁয়াজ নিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কারণ ভারত থেকে চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি হয়ে থাকে। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকেও কিছু পেঁয়াজ আনা হয়। বিশেষ প্রয়োজনে তুরস্ক, পাকিস্তান এবং চীন থেকেও ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির তথ্যমতে, গত এক মাসে আমদানিকৃত পেঁয়াজে ৩০ এবং দেশীটিতে প্রায় ১৬ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ভারত থেকে বাংলাদেশে রফতানিকৃত পেঁয়াজের মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ১৫০ মার্কিন ডলার থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করার পর থেকে বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
তবে রমজানে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, রোজায় পেঁয়াজের দাম যাতে না বাড়ে সে চেষ্টা করছে সরকার। দেশীয় মজুদ এবং আমদানির যে তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে তাতে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না। তার পরও যদিও দাম বাড়তে থাকে তাহলে সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করবে। তিনি বলেন, ভারত থেকে আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিদিন ভোমরা, হিলি, সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে অন্তত্ব ২শ’ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকছে। ভারত রফতানি মূল্য বাড়ালেও তার প্রভাব নেই আমদানিতে। ফলে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক থাকবে।
যদিও বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদের এ বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ না করে শ্যামবাজারের নবীন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও পেঁয়াজ আমদানিকারক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জনকণ্ঠকে বলেন, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের নাসিকের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে আমদানি কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। ফলে রোজায় দাম বাড়তেও পারে। বর্তমান দাম বাড়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, চাহিদা বাড়লে দামও বাড়ে।
সিন্ডিকেটের পকেটে যাচ্ছে সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা
রোজা সামনে রেখে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট চক্র অসাধু ব্যবসায়ীরা বসে নেই। দেশের শতাধিক পেঁয়াজ আমদানিকারক ও মজুদদার, লক্ষাধিক খুচরা ব্যবসায়ী পেঁয়াজ থেকে বাড়তি মুনাফা করতে বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। গত বছর রোজা ও কোরবানির আগে পেঁয়াজের দাম তিন অঙ্কের ঘর অতিক্রম করে। সে সময় ২০ টাকার পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ১২০-১৫০ টাকায়। ওই সময় ট্যারিফ কমিশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বেশি কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বেশি নেয়ার প্রমাণ পায়। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হিসেব করে দেখেছে এবারও কারসাজির আশ্রয় নিয়ে শুধু রোজায় পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের পকেটে যাচ্ছে ৪৫০ কোটি টাকা।
কারণ ভারত থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ প্রায় ১২ টাকা দরে আমদানি করা হয়। আমদানি থেকে খুচরা বিক্রি পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের সুদসহ সব ধরনের খরচ এবং মুনাফা বাবদ আরও ৭ টাকা যোগ হয়ে প্রায় ১৯ টাকা খরচ পড়ছে। কিন্তু খুচরা বাজার থেকে ক্রেতারা কিনছেন ৩৫-৪০ টাকা দরে। এক কেজি পেঁয়াজে সিন্ডিকেটের পকেটে চলে যাচ্ছে ২০ টাকা। ওই হিসাবে শুধু রোজায় সিন্ডিকেটের সদস্যরা কমপক্ষে ৪৫০ কোটি টাকা পেঁয়াজের ব্যবসা থেকে হাতিয়ে নেবে।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

দেবযানীকে আদালতে পেশ করে বিতর্কে রাজ্য পুলিশই

দেবযানীকে আদালতে পেশ করে বিতর্কে রাজ্য পুলিশই

debjani

এই সময়: সিবিআইয়ের হাতে থাকা সারদা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে আদালতে পেশ করল রাজ্য পুলিশ৷ এ ঘটনায় হতচকিত আইনজীবীমহল৷ যে তদন্ত সিবিআইয়ের আওতাধীন, সেই মামলায় কী করে রাজ্য পুলিশ অভিযুক্তকে আদালতে তোলে, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি সারদা-তদন্তে রাজ্য সরকার গঠিত সিটের সদস্যরা৷ বিধাননগরের কমিশনার রাজীব কুমার ফোন ধরেননি৷ এখানকার গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ জানিয়ে দেন, 'কিছু বলব না৷' এই অবস্থায় দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আজ, মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে পুলিশের এই বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন৷ এদিকে এদিনই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মামলায় ধৃত ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ আবার থানা থেকে জানানোয় এদিন বিডিও অফিসে সারদার ক্ষতিপূরণের চেক নিতে এসে তা না-পেয়ে বিক্ষোভ দেখান উলুবেড়িয়ার হাজার খানেক ক্ষতিগ্রস্ত৷ 

তৃণমূল সাংসদ থাকাকালীন সেমেন মিত্র যে ভাবে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সম্পর্কে সমালোচনা করেছিলেন, এ বার প্রায় সে ভাষাতেই মুখ খুললেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী৷ তবে রাজ্য সরকারকে বিপাকে না-ফেলে তিনি এদের বাড়বাড়ন্তের দায় চাপিয়েছেন কেন্দ্রের উপর৷ এদিন চণ্ডীপুরে একটি সমবায় ব্যাঙ্কের শাখার নতুন ভবনের উদ্বোধনে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি অনেক আগেই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলাম৷ কিন্ত্ত তখন কেউ আমার কথায় কান দেয়নি৷ ইডি, সেবির উদাসীনতায় এদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে৷' নাম না-করে এদিন কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন শুভেন্দু৷ 

প্রায় আড়াই লাখ টাকা সারদায় লগ্নি করে প্রতারিত হয়েছেন বলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আরামবাগ থানায় অভিযোগ করেন এক এজেন্ট৷ সেই মামলায় অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষ, সোমনাথ দত্তকে ইতিমধ্যে আদালতে হাজির করেছিল পুলিশ৷ তাঁদের দু'জন জামিন পেয়ে যান৷ সেই মামলায় এর আগে তিনবার আদালতে তোলা হয়েছিল দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে৷ গত ৯ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সারদা মামলার দায়িত্ব নেয় সিবিআই৷ 

সিবিআই সূত্রে খবর, আলিপুর আদালতে সারদার ৫৫টি মামলা একসঙ্গে করে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার মধ্যেও আরামবাগের এই মামলাটি যুক্ত রয়েছে৷ এই অবস্থায় সেই ঘটনার অভিযুক্তকে কী করে পুলিশ এদিন আদালতে তুলল, তা নিয়ে ধন্দে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররাও৷ তবে এখনই এ ব্যাপারে তাঁরা মুখ না-খুলে কীসের ভিত্তিতে পুলিশ এটা করল, তা বোঝার চেষ্টা করছেন৷ এদিন আরামবাগের এসিজেএম শ্রীময়ী কুণ্ডুর এজলাসে তোলা হলে বিচারক দেবযানীকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন৷ সরকারি আইনজীবী নবকুমার মজুমদার বলেন, 'এ নিয়ে চার বার দেবযানীকে এই মামলায় আরামবাগ আদালতে তুলল পুলিশ৷' 

উলুবেড়িয়ার ১,২৯৭ জন সারদার ক্ষতিগ্রস্তকে থানা থেকে জানানো হয়েছিল, ৩০ জুন বিডিও অফিস থেকে চেক দেওয়া হবে৷ সেই অনুযায়ী এদিন ভোর থেকে তাঁরা ভিড় জমান বিডিও অফিসের সামনে৷ বেলা বাড়ার সঙ্গে চেক না-পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে৷ সে সময় বিডিও অফিসে ছিলেন না৷ জয়েন্ট বিডিও স্বাতী দত্ত মুখোপাধ্যায় কিছু না-বললেও বিডিও অফিস জানিয়েছে, সারদার চেক দেওয়ার ব্যাপারে তাদের কেউ কিছু জানায়নি৷ এর পরেই ক্ষোভে আমানতকারীরা বিডিও অফিসের বিদ্যুত্‍সংযোগ ছিন্ন করে দেন৷ উত্তেজনা বাড়তে থাকায় উলুবেড়িয়ার এসডিপিও শ্যামল সামন্তের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পাঠানো হয় বিডিও অফিসে৷ পরে অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত হয়৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুল বোঝাবুঝির জন্যই সমস্যা হয়েছে৷ কমিশন ৩০ জুনের মধ্যে ভেরিফিকেশন শেষ করতে বলেছিল৷ কিন্ত্ত ভুল করে ওই দিন চেক দেওয়া হবে বলে জানানোয় বিপত্তি৷

তাপস পালের দাদাগিরি

তাপস পালের দাদাগিরি

tapas

এই সময়: গব্বর সিংও এমন হুমকি দেননি, যা দিলেন সাংসদ তাপস পাল৷ অশালীন মন্তব্যে তিনি এক ঝটকায় পিছনে ফেলে দিলেন অনিল বসু, বিনয় কোঙার, আনিসুর রহমানদের৷ এমনকি অনুব্রত-মনিরুলদেরও তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, 'গালিগালাজে আপনারা ভাই নিতান্তই শিশু৷' 

'আমি অনেক মস্তানি করেছি' দিয়ে শুরু, চরমে পৌঁছে তাঁর উক্তি, 'বাড়ি বাড়ি ঢুকে ছেলে পাঠিয়ে রেপ করে দেব৷' গুষ্টি শেষ করে দেব বা বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেব গোছের হুঙ্কারও শোনা গেল তাপসের মুখে৷ বিশ্বকাপের বাজারেও গোটা দেশে আলোচ্য বিষয়, তাপসের এই সব হাড়হিম করা সুভাষিত৷ বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি তাপসকে শো-কজ করেছে তৃণমূল৷ তাঁকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে৷ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমি জানি না, উনি কী বলেছেন৷ যদি সত্যিই এসব বলে থাকেন, দল নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে৷' 

তাপস এই মন্তব্য করেছিলেন নদিয়ার চৌমাহা গ্রামে৷ তাঁর হুমকির লক্ষ্য ছিল সিপিএম৷ রীতিমতো হাত-পা নেড়ে তিনি বলেন, 'আমি প্রচুর মস্তানি করেছি৷ আমি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরি৷ আমি নিজে রিভলভার দিয়ে গুলি করে চলে যাব৷ সিপিএমকে গুলি করে মারব৷' 

এখানেই থেমে থাকেননি৷ সিনেমার সংলাপেও তিনি যা বলেননি, সেটাই বেরিয়ে এল তাঁর মুখ থেকে৷ বললেন, 'আমার মা, বোন, বাবা, বাচ্চা কারও গায়ে যদি হাত পড়ে, আমি ছেড়ে কথা বলব না৷ বাড়ি বাড়ি ঢুকে ছেলে পাঠিয়ে রেপ করে দেব৷ তৃণমূলের কারও গায়ে যদি কোনও সিপিএম হাত দেয়,তাদের গুষ্টি শেষ করে দেব৷ বাড়ি, ঘর জ্বালিয়ে দেব৷' 

সোমবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাপসের এই বক্তব্য সম্প্রচারিত হতেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়৷ কেউ কেউ তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন৷ আবার কেউ চেয়েছেন তাঁর ইস্তফা৷ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'তাপস পালের যা স্ট্যান্ডার্ড, তাতে ওঁর সম্পর্কে কথা বলতেই রুচিতে বাধে৷' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, 'দিদির শিক্ষায় তাঁর ভাইরা শিক্ষিত৷ তাই দিদির সুরেই তাঁরা কথা বলে৷ ওই সাংসদ যা বলেছেন, তার নিন্দার কোনও ভাষা নেই৷ এরা রাজ্যটাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাইছে কে জানে৷' বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহার বক্তব্য, 'তৃণমূল আমলে এই রাজ্য ধর্ষণে চ্যম্পিয়ন হয়েছে৷ এই দলের নেতাদের পক্ষে এই ধরনের কথাই মানায়৷ মুখ্যমন্ত্রী যদি ধর্ষিতাকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে চুপ থাকতে বলেন, মহিলা আইপিএস অফিসার ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে যদি তাঁকে বদলি হতে হয়, তা হলে আর কী হবে৷' 

শাসক দল মহাসঙ্কটে পড়ে তাপসের বিবৃতির মধ্যে নিজেদের জড়াতে চায়নি৷ তড়িঘড়ি দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েন লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন, 'ওই সব মন্তব্য অত্যন্ত অবিবেচনাসুলভ৷ কয়েক সপ্তাহ আগে দলীয় সাংসদের করা ওই মন্তব্য, যা টিভি চ্যানেলগুলি সম্প্রচার করছে, তা দল অনুমোদন করে না৷' তবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় দলীয় সাংসদের মন্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি৷ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও একান্ত আলোচনায় তাপসের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন৷ যাঁর মন্তব্য নিয়ে এত কাণ্ড, সেই তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের দাবি, তিনি গত ১২ মে ভোটের দিন চোখের সামনে একটি বাচ্চাকে সিপিএমের হার্মাদদের হাতে মার খেতে দেখেছেন, এক জন সন্তানসম্ভবা মহিলার পেটে লাথি মারতে দেখেছেন৷ তাই উত্তেজনার বশে কিছু কথা বলে ফেলেছিলেন৷ সাংসদের অভিযোগ, টিভি চ্যানেলগুলি তাঁর মন্তব্য সম্পাদিত (এডিট) এবং বিকৃত করে সম্প্রচারিত করছে৷ এটা পুরোনো ভিডিও৷ তিনি বলেন, 'আমি যা বলার, মুকুল রায়কে জানিয়েছি৷ আমার বিরুদ্ধে কুত্‍সা প্রচারের জন্যই এ সব করা হচ্ছে৷' তাপসবাবু ওই ঘটনা ১২ মে-র বলে দাবি করলেও নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, তিনি চলতি মাসেই নাকাশিপাড়ায় দলের এক সভায় ওই সব কথা বলেন৷ লোকসভা ভোটের দিন কৃষ্ণনগরের অদূরে এক বুথের সামনে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছিল তাপসের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ, তখন তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন৷ যদিও তাপস সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন৷ 

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে তত্‍কালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে প্রবীণ সিপিএম নেতা কুরুচিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন৷ সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসও মমতা সম্পর্কে অশালীন কথা বলেছিলেন৷ তিনি অবশ্য তার পরের দিনই তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন৷ ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের প্রচারে তখনকার সিপিএম সাংসদ অনিল বসু মমতাকে নিয়ে খুবই কুরুচিকর কথা বলে দলের অন্দরেই সমালোচিত হন৷ পরে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ক্ষমা চান৷ গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমে সিপিএমের প্রবীণ বিধায়ক আনিসুর রহমানও মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বাজে কথা বলে ভত্‍র্‌সিত হন৷ তাঁকেও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে দুখঃপ্রকাশ করতে হয়েছিল৷ 

ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই বিধানসভার ভিতরে এবং বাইরে তৃণমূল নেতারা তখনকার মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে নানা কুকথা কথা বলতেন৷ ক্ষমতায় এসে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরাও বামেদের পথই ধরেন৷ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্র, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীরা সিপিএমকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেছেন৷ গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল বিরোধীদের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন৷ বিরোধীদের হুমকি দিয়েছেন বীরভূমেরই তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম৷ তবে তাপস বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি সকলেই ঊর্ধ্বে৷

মেয়ে হওয়ায় রাগ, আছড়ে মারল বাবা

মেয়ে হওয়ায় রাগ, আছড়ে মারল বাবা

bloody-hand-print-crime-sce
এই সময়: প্রথম বার কন্যাসন্তান হয়েছিল৷ মাস দেড়েক আগে দ্বিতীয় বারও কন্যাসন্তান হওয়ার পর থেকেই গোলমাল চলছিল স্ত্রীর সঙ্গে৷ শেষমেশ দ্বিতীয় সন্তানকে আছাড় মেরে খুনই করলেন মদ্যপ বাবা৷ সোমবার সকালে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় তারাতলা থানার ব্রেসব্রিজ রেল কলোনি এলাকায়৷ অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ যুগ্মকমিশনার (অপরাধদমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, 'ধৃতের নাম অমর বিশ্বাস৷ বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে৷ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, আর্থিক সমস্যার জন্যই তিনি মেয়েকে খুন করেছেন৷ ময়না-তদন্তের রিপোর্টের পরেই শিশুটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরিষ্কার হবে৷'

পুলিশ সূত্রের খবর, অমর রিকশাচালক৷ বেশ কয়েক বছর আগে মীনা বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়৷ তাঁরা আদতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা৷ কয়েক মাস আগে তাঁরা ব্রেসব্রিজের কাছে ঝুপড়িতে এসে ওঠেন৷ স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দম্পতির দেড় বছরের একটি মেয়ে আছে৷ অমর প্রতি রাতেই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরতেন৷ স্ত্রীর সঙ্গে বচসাও হত নিয়মিত৷ এর মধ্যেই আরও এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মীনাদেবী৷ তার পর থেকে গোলমাল চরমে ওঠে৷ মীনাদেবী বলেন, 'ওর বাবা (অমরবাবু) বলেছিল, এই মেয়েটাকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে৷ আমি বলেছিলাম, কাউকে দিয়ে দিতে হলে এমনিই দেব৷ এ নিয়ে আমার সঙ্গে প্রতি দিনই গোলমাল হত৷'

পুলিশ জানতে পেরেছে, রবিবার রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড বচসা হয়৷ ভোরে মীনাদেবী কোনও কারণে বাড়ির বাইরে গেলে ঘুমন্ত শিশুটিকে মাটিতে আছাড় মেরে খুন করেন অমর৷ মীনাদেবীর কথায়, 'আমি ফিরলে ও কাঁথায় মুড়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেয়৷ বলে, ওকে নিয়ে স্টেশনে যেতে৷ আমি স্টেশনে গিয়ে কাঁথা খুলে দেখি, মেয়ের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে৷ গালে আঁচড়ের দাগ৷ কোনও সাড় নেই৷' মহিলার চিত্‍কারে পড়শিরা দৌড়ে আসেন৷ তাঁরাই হাতেনাতে ধরেন অমরকে৷ মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে৷ কাঁথায় মোড়া শিশুটির দেহ বেশ কিছুক্ষণ স্টেশনের সামনেই পড়ে থাকে৷ পুলিশ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়৷ ব্রেসব্রিজে যিনি ওই দম্পতিকে ছোট্ট ঘরটি ভাড়া দিয়েছিলেন, সেই মালা দাস বলেন, 'সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি, বাচ্চাটাকে খুন করে দিয়েছে বলে মা চিত্‍কার করছে৷ এ রকম যে ঘটতে পারে, তা ভাবতে পারিনি৷' রূপা মোতি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'কাল রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল হয়েছিল বলে শুনেছি৷ তবে কেন নিষ্পাপ শিশুটিকে খুন করা হল, জানি না৷'

ছুটির খোঁজে ধরানো আগুন প্রাণ কাড়ল সেই পড়ুয়ার

ছুটির খোঁজে ধরানো আগুন প্রাণ কাড়ল সেই পড়ুয়ার

FireBIG_28
এই সময়: শেষ পর্যন্ত মারাই গেল স্কুলের শৌচালয় থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ক্লাস ফোরের সেই ছাত্রটি৷ রবিবার সকালে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়৷ স্কুলের শৌচালয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগাতে গিয়ে সে অগ্নিদগ্ধ হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ৷ এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে মৃত ছাত্রের পরিবারের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি৷

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব কলকাতার তিলজলায় একটি স্কুলের শৌচাগার থেকে চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশে৷ প্রথমে একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রকে৷ পরে সেখান থেকে ই এম বাইপাস লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয় তাকে৷ তদন্তে জানা যায়, পেট্রল ছড়ানোর পর বাথরুমে আগুন লাগায় ওই ছাত্র৷ এর জেরেই তার গায়ে আগুন লেগে যায়৷ তার কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, কিছু দিনের জন্য যাতে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়--এমন কোনও পরিকল্পনা করছিল ছাত্রটি৷ সে কারণেই শৌচাগারে আগুন লাগানোর চেষ্টা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ স্কুলে যেতে ভালো না-লাগা থেকেই এই ইচ্ছে, না এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে--খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও৷ চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্র কোথা থেকে, কী ভাবে পেট্রল জোগাড় করল, সে ব্যাপারে তদন্তকারীরা এখনও অন্ধকারে৷

রবিবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের৷ ছেলে স্কুলে যেতে চাইত না, এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রটির বাবা৷ তাঁর কথায়, 'আমার ছেলে পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো ছিল৷ স্কুলে না-যাওয়ার ব্যাপারে কখনও কিছু বলতে শুনিনি ওকে৷ তবে মাস খানেক আগে এক বার বলেছিল, 'স্যর, বহুত মারা হ্যায়৷' এর পর অবশ্য ওই ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি৷' তাঁর অভিযোগ, 'ছেলেকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷' কিন্ত্ত এ দিন পর্যন্ত তিনি কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি৷ কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি৷ ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে স্কুল-কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাহায্য বা উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলেও অভিযোগ তাঁর৷ মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

ইতিমধ্যে ফরেন্সিক তদন্তে স্কুলের শৌচাগারে পেট্রলের নমুনা মিলেছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে পেট্রল এল ওই ছাত্রের কাছে? পুলিশের একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই ছাত্রের এক ঘনিষ্ঠ জানতেন যে, তার সঙ্গে পেট্রল রয়েছে৷ তা হলে কেন তিনি ওই ছেলেটিকে স্কুলে পেট্রল নিয়ে যেতে বারণ করলেন না, তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ আর যদি অন্য কেউ এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য দায়ী হয়, তা হলে এর পিছনে কী কারণ রয়েছে--তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷

ইলিয়াস মোল্লার গ্রাসে তুরাগ

ইলিয়াস মোল্লার গ্রাসে তুরাগ
রাজধানীর রূপনগর থানায় তুরাগ নদের একটি অংশ দখল করে মাটি ভরাট করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও তাঁর ব্যবসায়িক পার্টনার সাইদুর রহমান সজল। মিরপুর বেড়িবাঁধের বিরোলিয়া সাভার সেতুর দক্ষিণ পাশে অন্তত তিন একর জায়গা দখল করে এ ভরাটকাজ চলছে। ভরাট করা জমির বেশির ভাগই পানি উন্নয়ন বোর্ডের আর কিছু অংশ বিআইডাব্লিউটিএ। নদী দখল বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও দখলকারীরা এসব কিছুই আমলে নেয়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার প্রতাপে দিনে-দুপুরেই চলছে এ দখলকাজ।

কালিমাটি অনলাইন / ১৬

কালিমাটি অনলাইন / ১৬ 

প্রকাশিত হলো ‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিনের ১৬তম সংখ্যা। এই সংখ্যায়   'কবিতার কালিমাটি', 'কালিমাটির ঝুরোগল্প', 'কালিমাটির কথনবিশ্ব', 'চারানা আটানা'  এবং 'অণুরঙ্গ--  বিভাগগুলিতে আছে বাংলা সাহিত্য ও  সংস্কৃতির বিভিন্ন আঙ্গিক এবং বিষয়ের ওপর কবিতা, নাটক, গদ্য ও বহুমাত্রিক আলোচনা। প্রবীণ ও তরুণ কবি-সাহিত্যিকদের অসামান্য লেখার সম্ভার। আর ‘ছবিঘর’ ও ‘ছবিটিকা’ বিভাগে কিছু অসাধারণ আলোকচিত্র। 

লগ অন করুন :www.kalimationline.blogspot.in   

`দাদার কীর্তি`, শালীনতার সব সীমা ছাড়িয়ে প্রকাশ্য জনসভায় বিরোধীদের ধর্ষণের হুমকি দিলেন তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল

`দাদার কীর্তি`, শালীনতার সব সীমা ছাড়িয়ে প্রকাশ্য জনসভায় বিরোধীদের ধর্ষণের হুমকি দিলেন তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল

`দাদার কীর্তি`, শালীনতার সব সীমা ছাড়িয়ে প্রকাশ্য জনসভায় বিরোধীদের ধর্ষণের হুমকি দিলেন তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল


২৪ ঘণ্টার ক্যামেরায় ধরা পড়ল তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের রংবাজি। নদিয়ার চৌমাহা গ্রামে বিরোধীদের গুলি করার হুমকি দিলেন তৃণমূল সাংসদ। দিলেন ধর্ষণের হুমকিও। তাপস পাল বললেন, তিনি চন্দননগরের ছেলে। অনেক রংবাজি করেছেন। বেগরবাই করলেই বিরোধীদের গুষ্ঠিশুদ্ধু নিকেশ করে দেবেন। শুধু তাই নয়, বাড়ি বাড়ি ঢুকে, ছেলে পাঠিয়ে ধর্ষণের হুমকি দিলেন তিনি। 

মণিরুল ইসলাম, অণুব্রত মণ্ডলের পর তাপস পাল। কৃষ্ণনগরের সাংসদ প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বললেন ``আমি প্রচুর মস্তানি করেছি। আমি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরি, ...আমি নিজে রিভলবার দিয়ে গুলি করে চলে যাব। সিপিআইএমকে গুলি করে মারব। আমার মা, বোন, বাবা, বাচ্চা কারোর গায়ে যদি হাত পরে আমি ছেড়ে কথা বলব না। বাড়ি, বাড়ি ঢুকে ছেলে পাঠিয়ে রেপ করে দেব। তৃণমূলের কারোর গায়ে যদি কোনও সিপিএম হাত দেয় তাদের গুষ্টি শেষ করে দেব। বাড়ি, ঘর জ্বালিয়ে দেব।`` 

লোকসভা ভোটের প্রচারের সময়ও বিরোধীদের প্রতি অশ্লীল মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের এই অভিনেতা সাংসদ। এবার নিজেই তাঁর অশ্লীলতার সীমাকে ছাপিয়ে গেলেন। এর আগে এ রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক নেতা সরাসরি ধর্ষণের হুমকি দেননি। যে দলের সাংসদ তাপস পাল সেই দলের শীর্ষে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন মহিলা যে দলের সুপ্রিমো সেই দলের সাংসদ কী ভাবে ধর্ষণের প্ররোচনা দেন সেই নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। 
First Published: Monday, June 30, 2014, 16:36

এবার অনলাইনে সবজি বেচবেন আম্বানি!

এবার অনলাইনে সবজি বেচবেন আম্বানি!

grocery
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ঘরে বসে মর্জি মাফিক ফল, সবজি মায় মুদির দোকানের হরেক জিনিস কিনতে দরকার শুধু মাউসের একটি ক্লিক। ই-কমার্স বাজার ধরতে এবার অনলাইনে সংসারের খুঁটিনাটি প্রয়োজন মেটানোর ব্যবসায় নামতে চলেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

ই-কমার্স দুনিয়ায় সাড়া জাগানো আবির্ভাব ঘটতে চলেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের। আর এই কাজে গৃহস্থের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর ব্যবসাকেই হাতিয়ার করতে চলেছে সংস্থা। চলতি বছরে মুম্বইয়ে অনলাইন শাক-সবজি আর ফল বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে রিলায়েন্স। উল্লেখ্য, দেশের কোনও প্রথম সারির খুচরো বিক্রেতা সংস্থা এর আগে এমন পদক্ষেপ করেনি।

জানা গিয়েছে, নিজের ই-কমার্স গ্রাহকদের জন্য পণ্যের অঢেল অপশন রাখার কথা ভাবছে রিলায়েন্স। এই মুহূর্তে ভারতের অনলাইন ব্যবসায় প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলেছে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন ও ই-বে-র মধ্যে। রিলায়েন্সের আগেই অবশ্য অনলাইনে সবজি ও ফল বিক্রি করার ব্যবসা শুরু করে localbanya.com ও bigbasket.com-এর মতো ওয়েবসাইটগুলি। তবে সীমিত কয়েকটি শহরেই এদের পরিষেবা মেলে।

নভি মুম্বইয়ের রিলায়েন্স কর্পোরেট পার্ক অফিসে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। গত এক বছর ধরে রিলায়েন্স ফ্রেশ প্রোজেক্ট ওয়েবসাইট মারফত সংস্থার ১০,০০০ কর্মী খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি, হোম কেয়ার, পার্সোন্যাল ও ফার্মা প্রোডাক্টসও কিনছেন। জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরের শেষেই মোবাইল ফোন এবং কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক গুড্সও এই ওয়েবসাইটে বিক্রি করা হবে তবে সংস্থার নিজস্ব মার্কেটপ্লেস ভেঞ্চার শুরু হবে আগামী আর্থিক বছরে। এই মুহূর্তে এ দেশে নিজের মার্কেটপ্লেস তৈরির ব্যাপারে কাজ শুরু করে দিয়েছে অ্যামাজনও। 

মার্কেটপ্লেস ভেঞ্চার আদতে কি? আসলে এটি একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিক্রেতারা সরাসরি নিজস্ব পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে এ দেশে অনলাইনে বিদেশি লগ্নিকারীদের সরাসরি অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হয়েছে অ্যামাজন। একই কারণে অ্যামাজনের পিছু পিছু ফ্লিপকা র্টের মতো কিছু সংস্থাও এই পথ অবলম্বন করতে চলেছে। অন্য দিকে, ই-কমার্সে সরাসরি বিদেশি লগ্নির জন্য ভারত সরকারের কাছে তদ্বির শুরু করেছে বেশ কিছু বিদেশি সংস্থা। অনুমতি পেলে গ্রাহকদের সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে সমর্থ হবেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, ফিউচার গ্রুপকে টপকে চলতি আর্থিক বছরে দেশের বৃহত্তম রিটেল চেন হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। 

পদত্যাগ করলেন এম কে নারায়ণন

পদত্যাগ করলেন এম কে নারায়ণন

narayanan
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: এবার রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এম কে নারায়ণন। এমনকি রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েও দিয়েছেন তিনি। অন্তত এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে। জল্পনা ছিলই। কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার কথা মাথায় রেখে মেয়াদ শেষের সাত মাস আগে পদত্যাগ করলেন নারায়ণন। আগামী ৩ জুলাই নারায়ণনের বিদায় সংবর্ধনা।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্ব নেন ১৯৫৫-র ব্যাচের এই আইএএস অফিসার৷ আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ ছিল তাঁর৷ কিন্তু, তার আগেই পদত্যাগ করলেন তিনি৷ তাঁর আগে পদত্যাগ করেছেন উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল বি এল জোশী।

কেরলে গণধর্ষিতা বাঙালি যুবতী, দোষীদের যাবজ্জীবন

কেরলে গণধর্ষিতা বাঙালি যুবতী, দোষীদের যাবজ্জীবন
jail
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: গণধর্ষণে অভিযুক্ত চার যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কেরলের একটি আদালত। পশ্চিমবঙ্গের এক যুবতীকে ধর্ষণের ঘটনায় পি সি বিজু, মহম্মদ শরীফ, মহম্মদ সালিহ এবং এন এ জামশীরকে দোষী সাব্যস্ত করে থালাসেরির প্রিন্সিপাল সেশন কোর্ট। ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর ওই চারজনের লালসার শিকার হন তিনি। নিজের প্রেমিককে খুঁজতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কান্নুর এসেছিলেন ওই যুবতী।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪.৭৫ লক্ষ টাকার জরিমানাও করা হয় ওই চার দোষীকে। ৪ লক্ষ টাকা নিগৃহীতাকে দেওয়া হবে। পি সি বিজু, মহম্মদ শরীফ এবং মোহম্মদ সালিহ-- এই তিন দোষীর কাছ থেকে ১.২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আবার এন এ জামশীর নামে চতুর্থ দোষীকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আবার গণধর্ষণের ৩৭৬ (২)(জি) ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন ছাড়াও, প্রথম তিন অভিযুক্তকে ৩৬৬ এ (অপহরণ) ধারা অনুযায়ী ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার ৩২৩ এবং ৩৪২ ধারা অনুযায়ী তাঁদের ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জেলা সেশন জাজ ভি শিরসি জানিয়েছেন, একই সময়ে এই সাজা কাটবে দোষীরা।

উল্লেখ্য, ওই যুবতী পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর চলন্ত লরিতে ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে রাস্তায় ফেলে দেয় ওই চার জন।

শেয়ার বাজারের বাজেট পূর্ববর্তী দৌড় এ সপ্তাহে

শেয়ার বাজারের বাজেট পূর্ববর্তী দৌড় এ সপ্তাহে

সোমবার থেকেই প্রাক-বাজেট দৌড় শুরু করতে পারে শেয়ার বাজার, মনে করছেন বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা৷ বিদেশি বিনিয়োগের কাঁধে ভর করে চলতি মাসে শেয়ার সূচক সেনসেক্স বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ৷ জুন মাসে ভারতের শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে ৩১,৯৫২ কোটি টাকা লগ্নি করেছে বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্কগুলি৷ 

শেয়ার বাজারে তেজি ভাব সোমবার থেকে আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ তাঁদের অনুমান, দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হার বাড়াতে মোদী সরকার বাজেটে বেশ কিছু সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত নেবে এই আশায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারে তাদের বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখবে এবং এ সপ্তাহেও শেয়ার সূচক সেনসেক্স ও নিফটি যথাক্রমে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট ও ১৫০ পয়েন্ট বাড়বে৷ সিএনআই রিসার্চের প্রধান কিশোর ওসওয়াল বলেন, '১০ জুলাই বাজেট পেশ করার সময় আর্থিক ক্ষেত্রের সংস্কার এবং দেশের প্রতিরক্ষা ও রেল ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো নিয়ে সরকার নতুন নীতি ঘোষণা করতে পারে৷ এই আশায় শেয়ার সূচকের ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকবে৷' 

জিওজিট বিএনপি পরিবা-র রিসার্চ হেড অ্যালেক্স ম্যাথু বলেন, 'একটি সংস্কারমুখী বাজেটের প্রত্যাশা করছেন বিনিয়োগকারীরা৷ নরেন্দ্র মোদীর সরকার সম্প্রতি যে সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছে তার জের বিনিয়োগকারীদের মানসিকতার উপর পড়বে৷' উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই রেলে যাত্রীভাড়া ১৪.২ শতাংশ এবং পণ্যমাসুল ৬.৫ শতাংশ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক সমীক্ষায় বিশ্বের ২৪ জন শেয়ার বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ সেনসেক্স ২৭,৭৫০ পয়েন্ট ছোঁবে৷ গত শুক্রবার সেনসেক্স ২৫,০৯৯.৯২ পয়েন্টে বন্ধ হয়৷ ২০১৫ সালের জুন মাসের মধ্যে সেনসেক্স ৩০,০০০ পয়েন্ট ছুঁতে পারে বলেও রয়টার্সের সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন৷ মার্চ মাসেও শেয়ার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একই রকম একটি সমীক্ষা করেছিল রয়টার্স৷ সেই সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস ছিল মার্চে সেনসেক্স ২৩,০০০ পয়েন্টে থাকবে এবং বছরের শেষে তা ২৪,৫০০ পয়েন্টে উঠবে৷ কিন্ত্ত, সাম্প্রতিক সমীক্ষায় প্রত্যেককেই তাঁদের আগের অবস্থান বদলেছেন৷ 

রেটিং সংস্থা কেয়ার-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ মদন সবনভিস বলেন, 'সরকার ইতিমধ্যেই যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছে তা বিনিয়োগকারীদের মনে বেশ কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে৷ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলির বিনিয়োগের উপর ভর করেই শেয়ার বাজারের এই উত্থান৷ ইউরোপ ও আমেরিকা যতদিন উদার অর্থনীতি অনুসরণ করবে ততদিন এই ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকবে৷' তবে, বাজেট পেশের পর মুনাফা ঘরে তোলার জেরে কিছুটা থিতু হতে পারে শেয়ার বাজার৷ জিওজিট বিএনপি পরিবা-র ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ভি কে বিজয়কুমার বলেন, 'জুলাই মাসে বাজেটের পরে আর কোনও বড় ঘটনা নেই৷ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই শেয়ার বাজার থেকে বিপুল মুনাফা তুলে নিয়েছেন এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে৷' সেপ্টেম্বরে শেয়ার সূচক নীচে নেমে আসবে বলেই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মত৷ আগামী বছর মার্চে প্রত্যাশিত সর্বোচ্চ মাত্রা ছোঁয়ার আগে শেয়ার সূচক প্রায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত পড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ 
http://eisamay.indiatimes.com/business/share-market-trend-before-budget/articleshow/37509464.cms