Friday, May 2, 2014

মমতা-মোদী তরজার নয়া ব্যাখ্যায় সিপিএম

মমতা-মোদী তরজার নয়া ব্যাখ্যায় সিপিএম

biman
এই সময়: তৃতীয় দফার লোকসভা ভোটের আগে থেকে নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে চাপানউতোরে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি৷ বিজেপি-মমতা 'আঁতাঁতে'র বাম তত্ত্বকে ভেঙে শ্রীরামপুরের জনসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন মোদী৷ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর আক্রমণে দমে না গিয়ে পাল্টা নজিরবিহীন আক্রমণ শানান মমতাও৷ রাজ্যে আরও দু'দফার ভোটগ্রহণ বাকি৷ ইতিমধ্যেই রাজনীতি অনেকাংশে মোদী-মমতা দ্বন্দ্বের আবর্তে চলে যাওয়ায় কিছুটা পাশে চলে গিয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি বামেরা৷ এই প্রেক্ষাপটেই নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে মোদী-মমতা 'আঁতাঁতে'র তত্ত্বকে নয়া মোড়কে হাজির করল সিপিএম৷

বুধবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মোদী-মমতা তরজা নিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর নতুন ব্যাখ্যা, 'গত কয়েক দিন ধরে রাজনীতি বাদ দিয়ে যে ভাবে তৃণমূল ও বিজেপি একে অন্যকে আক্রমণ করছে, সেটা দু'দলের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই হচ্ছে৷' এই 'বোঝাপড়া'র চরিত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার বিভিন্ন উদাহরণও তুলে ধরেন বিমানবাবু৷ গুজরাট দাঙ্গার পর সংসদে বিজেপি-বিরোধী যে প্রস্তাব আনা হয়েছিল, তৃণমূল তার বিরোধিতা করে বাজপেয়ী সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি৷

বিমানবাবুর বক্তব্য, '২০০২-এর ১৫ এপ্রিল মোদীর বিরোধিতায় সংসদ উত্তাল হয়েছিল৷ বিরোধীদের আনা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়৷ কিন্ত্ত তৃণমূল বিজেপি সরকারের পক্ষেই ভোট দিয়েছিল৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজপেয়ীকে চিঠি লিখেছিলেন৷ গুজরাটে সংখ্যালঘু নিধনের পরেও বিজেপির পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি৷' ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০৪-এর লোকসভা ভোট এবং ২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-বিজেপি সমঝোতার কথাও মনে করিয়ে দেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক৷ ২০০৩-এ আরএসএসের সভাতেও তৃণমূল নেত্রী হাজির ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি৷ কয়েক দিন আগে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরিও বড়বাজারে এক সভায় একই ভাবে মমতা-মোদী চাপানউতোরকে 'গটআপ' বলে উল্লেখ করেছিলেন৷

এখন বিজেপি-তৃণমূল সংঘাত চললেও ভোটের পর দু'পক্ষ হাত মেলাবে বলেও প্রচার করতে চাইছে সিপিএম৷ বিমানবাবুর মন্তব্য, 'ভোটের পর তৃণমূল অবশ্যই বিজেপির হাত ধরবে৷ এখন যা চলছে তা গটআপ৷ একেই বলে ম্যাচ-ফিক্সিং৷' প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপি-তৃণমূল তরজার মধ্যে বামেরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার কারণেই কি সিপিএম নয়া তত্ত্ব হাজির করছে? এ প্রসঙ্গে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের সাফাই, '১২ বছর চুপ থাকার পর এখন বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার সমালোচনা মানেই ভোটের উদ্দেশ্যে, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের উদ্দেশ্যে পথ চলা৷ আমরা দেশের মানুষকে এই সাম্প্রদায়িকতার হাত থেকে রক্ষা করতে চাই৷'

No comments:

Post a Comment