Saturday, May 31, 2014

শিরোপা কলকাতা না পাঞ্জাবের ফয়সালা আজ

শিরোপা কলকাতা না পাঞ্জাবের ফয়সালা আজ
স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক দলের শিরোপা জেতার স্বাদ একবার পূরণ হয়ে গেছে। দলটি কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। ২০১২ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হয়। আরেক দল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, যারা এবারই প্রথম ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) ফাইনালে খেলছে। চ্যাম্পিয়ন হলে প্রথমবার শিরোপা জেতার স্বাদ পূরণ হবে পাঞ্জাবের। আর কলকাতা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি জিতলে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে। এ দুই দল আজ আইপিএলের সপ্তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি রাত সাড়ে আটটায় ব্যাঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে।
শিরোপা জিতবে কে? শিরোপা হবে কার? এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। আর মেলানো হচ্ছে অনেক সমীকরণ। ‘করবো, লড়বো, জিতবো’Ñ কলকাতার এ সেøাগান কি শেষ পর্যন্ত কাজে দেবে? নাকি রানার্সআপ হয়েই খুশি থাকতে হবে? সবার মনের কোঠায় এ প্রশ্নই ঘুর ঘুর করছে।
ম্যাচটিতে অনেক সমীকরণ আছে। কারো কাছে ম্যাচটি জিতবে কলকাতাই। কারণ, গ্রুপপর্বে একবার ও কোয়ালিফায়ার ম্যাচে পাঞ্জাবকে হারিয়েছে কলকাতা। কারো কাছে আবার জয়ী দলটি হচ্ছে পাঞ্জাব। কারণ, কোয়ালিফায়ার-২ ম্যাচে যেভাবে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে খেলেছে পাঞ্জাব, তাতে কলকাতার ক্রিকেটারদের মনে ভয় ধরিয়ে দেয়ার মতো বিষয়ই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খেলা হবে ব্যাঙ্গালোরে। এ স্টেডিয়ামটি আবার পাঞ্জাবের পক্ষই নিচ্ছে। এখানে ইডেন গার্ডেনের মতো বল ঘুরবে না। থেমে থেমে যাবে না। ব্যাটিং সহায়ক। তাই বল সরাসরিই ব্যাটে আসবে। চাইলেই ব্যাটসম্যান উইকেটে থাকতে পারবে, রানও স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারবে। এখানেই কলকাতার ভয়। স্পিনার সুনীল নারিনে ম্যাচটি খেলবেন। এ জন্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাঁর স্থান হবে না। এর পরও খেলবেন নারিনে। কিন্তু তাঁর বল এ স্টেডিয়ামে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে আছে সংশয়। সঙ্গে সাকিব আল-হাসান, পীযুষ চাওলারাও কার্যকরী হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে মাঠটিতে যেমন ব্যাটসম্যানরা ভাল স্কোর গড়তে পারবেন, ঠিক তেমনি পেসাররাও সুবিধা পাবেন। মরনে মরকেল, উমেশ যাদবরাই তাই কলকাতার ভরসা হয়ে থাকছেন। ম্যাচটি যেন, ‘পাঞ্জাবের ব্যাটিং বনাম কলকাতার বোলিং’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বীরেন্দর সেবাগ শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠেছেন। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ৫৮ বলে ১২২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন। তাঁর সঙ্গে ম্যাক্সওয়েল, মিলারদের ব্যাটিং যে কতটা ভয়ঙ্কর তা এরই মধ্যে সবাই বুঝে গেছে। এ তিনজনের একজন যদি খেলে ফেলেন তাহলে হু হু করে পাঞ্জাবের স্কোরবোর্ডে রান জমা হতেই থাকবে। তখন গৌতম গাম্ভীর, উথাপ্পা, সাকিব, ডেসকাট, মানিশ পা-ে, ইউসুফ পাঠানদের মিলে বিশেষ কিছু করে দেখাতে হবে। সেখানেও আবার বাধা আছে। পাঞ্জাবেও যে আছে মিচেল জনসন, সন্দ্বীপ শর্মা ও পারভিন্দর আওয়ানাদের মতো পেসার। সবদিক থেকেই তাই পাঞ্জাবের সম্ভাবনা উজ্জ্বল থাকছে।
তবে যেভাবে কলকাতা একের পর এক ম্যাচ হারের পর একের পর এক ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে গেছে, এ ছন্দই কলকাতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কলকাতার এ ছন্দ ধরে রাখার সবচেয়ে বড় কারিগর হতে পারেন ওয়াসিম আকরাম। কলকাতার বোলিং কোচ। বিশেষ করে পেস বিভাগটি দেখেন। আর সেই পেসারদের ভালভাবে শিক্ষা দিয়ে মাঠে নামাতে পারলেই বাজিমাত ঘটতে পারে আজ। কোনভাবে পাঞ্জাবের ব্যাটিং-দুর্গে হানা দিতে পারলেই জয় আসবে।
ওয়াসিমও সেই দিকটি নিয়েই ভাবছেন। আর তাইতো উমেশ যাদবকে নিয়ে বলেছেন, ‘উমেশ এখন নতুন উদ্যমে বোলিং করছে। এখন গতির পাশাপাশি খুব ভাল সেøায়ার দিতে শিখেছে। আমি খুব খুশি উমেশকে এখন ফর্মে দেখে। সবচেয়ে বড় কথা ও নিজের বোলিং ছন্দ ফিরে পেয়েছে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ আরেক পেসার বিনয় কুমারকে নিয়েও আশাবাদী ওয়াসিম, ‘আগে বিনয় শুধু জোরের দিকে মাথা ঘামাত। আমি শুধু ওকে বলেছি জোর ছাড়াও বলের গতিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। তবেই ব্যাটসম্যানকে বোকা বানানো সহজ। শুধু গতি দিয়ে এখনকার আধুনিক ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের সহজে বোকা বানানো যায় না।’
ব্যাঙ্গালোরের উইকেটকে প্রাধান্য দিয়ে ওয়াসিম যেন আরও বেশি প্রস্তুত করছেন পেসারদের। কাবু করতে হলে যে পেস আক্রমণকে আরও বুদ্ধিদীপ্ত হতে হবে। তাহলেই না আসবে চূড়ান্ত ফল। নয়ত শেবাগ, ম্যাক্সওয়েল, মিলাররা যদি ব্যাটিং তকমা দেখিয়ে দেন, তাহলে শিরোপা স্বপ্নই ভেস্তে যাবে। ‘বীর বনাম জারা’ যুদ্ধও দেখা যাবে। যেখানে গ্যালারিতে পাঞ্জাবের পক্ষে গলা ফাটাবেন প্রীতি জিনতা ও কলকাতার পক্ষে শাহরুখ খান। এখন দেখার বিষয় শিরোপা হয় কার?
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment