Friday, May 30, 2014

প্রেমের ফাঁদ পেতে হিন্দু কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে নির্যাতন

প্রেমের ফাঁদ পেতে হিন্দু কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে নির্যাতন
নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ৩০ মে ॥ জেলার পৌরসভার বেলের ভিটায় এবার এক হিন্দু অনার্স পড়ুয়া ছাত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ পেতে বগুড়া থেকে বাড়িতে ডেকে এনে ৭ দিন আটকে রেখে তাকে ভোগ করে। পরে নির্যাতন করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি সম্পর্কে শুক্রবার মাঠপর্যায়ে ১টি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নেমেছে।
জানা গেছে, জেলা সদরের লালমনিরহাট পৌরসভার নয়ারহাট গ্রামের ভাটিবাড়ি (বেলের ভিটা) গ্রামের রেলওয়ে ট্রেনের ড্রাইভার শহীদুল ইসলামের পুত্র রায়হান (২৮) মোবাইল ফোনে বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অনার্স পড়ুয়া জনৈকা ছাত্রী কেয়ার সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক তৈরি করে। তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বগুড়া হতে ঢেকে নিয়ে আসে। প্রেমিক রায়হান তার বন্ধু ও স্বজনদের মাধ্যমে মেয়েটিকে নিয়ে শহরে বিয়ের কেনাকাটা পর্যন্ত করে। এভাবে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৭ দিন ধরে অজ্ঞাত স্থানে রেখে তাকে ভোগ করে। পরে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
ছেলের বাবা ড্রাইভার শহীদুল ইসলাম এ ব্যাপারে শুক্রবার এই প্রতিবেদককে জানান, মেয়েটি হিন্দু তাকে বিয়ে করলে জাত নষ্ট হয়ে যাবে। মেয়েটি লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিল। সেখানে জনৈক হিন্দু এ্যাডভোকেটের সহায়তা নিয়ে মেয়েটিকে বুঝিয়ে বগুড়ায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বেলের ভিটা গ্রামের জাহাঙ্গীর (৫৫) জানান, হিন্দু মেয়েটিকে নির্যাতন ও প্রতারণা করে বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়ার ঘটনা গ্রামের শত শত লোক প্রত্যক্ষ করেছে। পুলিশও এসে ছিল। সব কিছু ম্যানেজ হয়ে গেছে।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঐ হিন্দু আইনজীবীর সহায়তায় মেয়েটিকে ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে প্রেমিক রায়হান অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোট দেয়ার অভিযোগে বেলের ভিটায় এক হিন্দু পরিবারকে নির্যাতন করে রেলওয়ের কর্মী সামছুল ইসলাম। হিন্দু পরিবারটি বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে একটি ইংরেজি দৈনিকে খবর প্রকাশ হলে উচ্চ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণে পুলিশকে নির্দেশ দেয়। সদর থানার ওসি জমির উদ্দিন ও এসপি হাবিবুর রহমানকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। ঘটনাস্থল আইন সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপার্সন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল পরিদর্শন করেন। নির্যাতিত পরিবারটিকে সহায়তা করেন। এই ঘটনার দাগ কাটতে না কাটতে একই গ্রামে পাশের বাড়িতে এক হিন্দু অনার্স পড়ুয়া কলেজছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=27&dd=2014-05-31&ni=174522

No comments:

Post a Comment