Saturday, May 31, 2014

সদয় অক্ষরেখায় ঝড়-বৃষ্টি

সদয় অক্ষরেখায় ঝড়-বৃষ্টি

Kolkata-rains-001
দু'দিন যেতে না-যেতেই আবার বৃষ্টির বার্তা৷

এক নিম্নচাপ মায়ানমার উপকূল থেকে পথ বদলে একেবারে বাংলার ভিতরে ঢুকে এসেছিল৷ যার আশীর্বাদে দফায় দফায় প্রায় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে যায় তাপদগ্ধ বাংলার পারা৷ চার দিন মেঘলা আকাশ, বৃষ্টিভেজা বাংলা৷ নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে আসামের দিকে সরে যেতে রোদ উঁকি দিতে শুরু করেছিল৷ সবে চেপে বসতে শুরু করেছিল বাতাসের অত্যধিক জলীয় বাষ্প৷ কিন্ত্ত গরম মাথা তোলার আগেই বৃষ্টির হাজিরা সুনিশ্চিত করে তুলছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা৷ আলিপুর আবহাওয়া দন্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন , 'পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে৷ শনিবার সেটি দক্ষিণবঙ্গের উপর নেমে আসবে৷ ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই ঝড় -বৃষ্টির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে৷ 'এ বার অবশ্য ক'দিন আগের নিম্নচাপের ঢঙে বৃষ্টি হবে না৷ নিম্নচাপ অক্ষরেখার টানে জলীয় বাষ্প ছুটে যাবে ঝাড়খণ্ডের মালভূমির দিকে৷ গরম হাওয়ার সঙ্গে জোট বাঁধবে সেখানে৷ তৈরি হবে বজ্রগর্ভ মেঘ , যা ধেয়ে যাবে কলকাতা -সহ উপকূলের দিকে৷ এমন পরিস্থিতিতেই জন্ম নেয় কালবৈশাখী৷ সেই সম্ভাবনাও কি উজ্জ্বল ? গোকুলবাবুর কথায় , 'আমরা কালবৈশাখীর সতর্কতা জারি করেছি৷ তবে এত আগে থেকে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া যায় না৷ কারণ , সেই মেঘ সৃষ্টি হয় দ্রুত৷ তবে এটুকু বলা যেতে পারে , পরিস্থিতি যথেষ্ট অনুকূল৷ ' চলতি মরসুমে এপ্রিল মাসে একটিও কালবৈশাখী পায়নি কলকাতা৷

শিকে ছেঁড়ে মে মাসের শুরুতে৷ তার পর অবশ্য ঝড় -বৃষ্টির অভাবে ফের হানা দেয় তাপপ্রবাহ৷ ১৯৫৪ -পরবর্তী ৬০ বছরে মধ্যে এ বারের এপ্রিল যেমন উষ্ণতম তকমা ছিনিয়ে নিয়েছে , মে মাসেও তেমন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে ভেঙে গিয়েছে পাঁচ বছরের রেকর্ড৷ আবহবিদরা বলছেন , শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার যা বাড়বাড়ন্ত তা একেবারে অস্বাভাবিক নয়৷ কিন্ত্ত যে ভাবে অসহ্য গরম একটানা দাপিয়ে বেরিয়েছে , তা কিছুটা বিরলই৷ এর জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর কালবৈশাখীর হাজির না -হওয়াকেই দায়ী ঠাওরেছেন আবহবিদরা৷ বর্ষা আসার আগে তার দেখা পাওয়ার সুযোগ মিলেছে , এ বার অপেক্ষা পূর্বাভাস সত্যি হওয়ার৷

ঝড় -বৃষ্টি হোক বা না -হোক , অক্ষরেখার প্রভাবে যে জলীয় বাষ্প ঢুকবে , তার জেরে আজ , শনিবার সকাল থেকে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে৷ ফলে রোদের দাপট সহ্য করতে হবে না আমজনতাকে৷ গোকুলবাবুও বলছেন , 'মেঘ থাকায় গরম তেমন থাকবে না৷ তা ছাড়া , অক্ষরেখার অবস্থানের জন্য দখিনা বাতাস বইছে৷ ফলে অস্বস্তিও কম হবে৷ ' আজ শেষ দিন মে মাসের৷ নিয়ম মানলে কাল , ১ জুনের মধ্যে বর্ষা ঢুকে পড়ার কথা কেরালায়৷ কিন্ত্ত মৌসম ভবনের আবহবিদরা জানিয়ে রেখেছেন , আরব সাগর উপকূলে বর্ষা ঢুকতে ঢুকতে অন্তত ৫ জুন৷ কেরালার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর -পূর্ব ভারতের কিছুটা অংশেও ১ জুন নাগাদ দক্ষিণ -পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হাজির হয়ে যায়৷ কিন্ত্ত কাল , রবিবারের মধ্যে সে সম্ভাবনাও নেই৷ মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগর শাখা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম লাগোয়া মায়ানমার পর্যন্ত ঢুকে পড়লেও , এখনই তার নড়াচড়ার আশা কম , বলছেন আলিপুরের আবহবিদরা৷ 

No comments:

Post a Comment