Saturday, May 31, 2014

হাসপাতালের ফি জোগাড়ে সদ্যোজাতকে বিক্রি প্রসূতির

হাসপাতালের ফি জোগাড়ে সদ্যোজাতকে বিক্রি প্রসূতির

20140530_115533
জলপাইগুড়ি: প্রসবযন্ত্রণা অসহ্য হয়ে উঠলেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না হাসপাতালে৷ ভর্তির নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা ছিল না প্রসূতির কাছে৷ মাত্র ২৫ টাকা সম্বল করে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এসেছিলেন শহরের উপকণ্ঠে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা গৌরী দাস৷ হাসপাতাল চত্বরেই মুশকিল আসান হয়ে দেখা দেয় এক অচেনা মানুষ৷ প্রসবের পর নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়ার শর্তে গৌরী দেবীকে ভর্তির ফি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় সে৷ নিরুপায় প্রসূতি শর্ত মেনে তার দেওয়া ১০০ টাকা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়৷ প্রসবের পর শুক্রবার তাঁর হাতে নগদ ১৩ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে সদ্যোজাতকে নিয়ে নেন ওই অচেনা লোকটি৷

গৌরীদেবী বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর তাঁর ওই সন্তান বিক্রির খবর চাউর হয়৷ সন্তান কেনাবেচার চক্র যে সরকারি হাসপাতাল চত্বরেই সক্রিয় রয়েছে, তা মানতে বাধ্য হন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার৷ তিনি বলেন, 'এই খবর আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জা ও উদ্বেগের৷ সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের তত্‍পরতা ভাবতে পারছি না৷ অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি৷' যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই দালাল বা নবজাতকটির হদিস পায়নি পুলিশ৷

প্রসূতির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দালালের মাধ্যমে তাঁর সন্তানকে যে দম্পতি কিনে নিয়ে গিয়েছে, তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলারই বেলাকোবার বাসিন্দা৷ কথাবার্তার সময় বেলাকোবার কথা শুনেছিলেন গৌরীদেবী৷ সেই দম্পতিরও কোনও খোঁজ মেলেনি৷ পাহাড়পুরের বাড়িতে বসে গৌরীদেবী বলেন, 'প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বিক্রি করে দেওয়ার শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া আমার আর উপায় ছিল না৷'
http://eisamay.indiatimes.com/state/mother-sold-baby-to-arrange-hospital-fee/articleshow/35796438.cms

আরও তিন কন্যাসন্তান আছে গৌরীদেবীর৷ কিন্ত্ত আবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মাস ছয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে যান তাঁর স্বামী৷ এখন ওই মেয়েদের নিয়ে তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকেন৷ রেলের জমিতে বসবাসকারী পরিবারটিকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে অভাব৷ ভিক্ষা করে কোনও রকমে পাঁচটি পেটের জন্য দানাপানি জোগাড়ের চেষ্টা করেন গৌরী দাসের অশীতিপর মা মণিকুমারী সিং৷ তিনি বলেন, 'এমন অবস্থা যে মারাত্মক প্রসবযন্ত্রণা উঠলেও গতকাল মেয়েকে হাঁটিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম৷ টাকা পেলে কয়েকটা দিন বাঁচা যাবে ভেবে সন্তান বিক্রির প্রস্তাবে আমিও আপত্তি করিনি৷'

No comments:

Post a Comment