Friday, May 30, 2014

তৃণমূলের চাপে পরীক্ষা পিছোল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে

তৃণমূলের চাপে পরীক্ষা পিছোল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে

Trinamool_Chhatra_Parishad
স্নেহাশিস নিয়োগী

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের চাপে শেষ পর্যন্ত পিছিয়েই গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা৷ এর ফলে বিপাকে বহু পড়ুয়া৷ গত তিন দশক ধরে জুনের প্রথম কাজের দিন ইংরেজি এমএ-র পার্ট-টু পরীক্ষা হওয়া রুটিনে দাঁড়িয়েছিল৷ এ বার একমাস পিছিয়ে সেই পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে ২ জুলাই৷

পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক, ছাত্র এবং আধিকারিকদের বড় অংশ৷ তবে টিএমসিপি পরিচালিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কুণাল সামন্তর দাবি, 'আমরা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও আর্জি জানাইনি৷ পড়ুয়ারাই এই আবেদন করেছিলেন৷ তাতে ছাত্র প্রতিনিধিরা থাকতেই পারেন৷ ওঁরাও তো সাধারণ পড়ুয়া৷ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠির প্রতিলিপি দেখলেই বুঝতে পারবেন৷'

এক পড়ুয়ার কথায়, 'অনেকেই জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) গবেষণার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলাম৷ কিন্ত্ত পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় ভর্তি হওয়া হবে না৷ কারণ জুনে পরীক্ষা হলে রেজাল্ট বের হতে অক্টোবর, নভেম্বর হয়ে যায়৷ জেএনইউয়ে মে মাসে পরীক্ষা হয়েছে৷ জুলাইয়ে ফল প্রকাশ৷ অগস্টে ভর্তি৷ কিন্ত্ত আমাদের তো ফল বের হতে নভেম্বর, ডিসেম্বর হয়ে যাবে৷' একই মত ভিন রাজ্য ও বিদেশে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের৷ শুধু তাই নয়, অনেকেই রাজ্যের সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বি-এড কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন৷ নির্ধারিত সময়ে রেজাল্ট দেখাতে না পারলে তাঁদের ভর্তি প্রক্রিয়াই বাতিল হয়ে যেতে পারে৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, 'পরীক্ষা পিছনোয় ফলপ্রকাশে কোনও সমস্যা হবে না৷ বরং তাড়াতাড়ি যাতে ফল বের করা যায়, সে জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে৷'

কেন পিছোল পরীক্ষা?

ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান শান্তনু মজুমদার বলেন, 'এটা পড়ুয়াদের দাবি ছিল৷ ওদের নাকি পর্যাপ্ত প্রস্ত্ততি নেওয়া হয়নি৷ সে জন্য আরও সময় দরকার৷ তাই আমরা সহ উপাচার্যকে (শিক্ষা) লিখিত ভাবে সব জানিয়েছি৷ উনিই এখন কার্যনির্বাহী উপাচার্য৷' যদিও টিএমসিপির একাংশের অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকারা সিলেবাস শেষ না করেই ফাইনাল পরীক্ষা নিতে চাইছেন৷ এ ব্যাপারে ছাত্র প্রতিনিধিদের কাছে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছিল৷ তাই পাঠ্যক্রম শেষেই যাতে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়, তার আর্জি জানানো হয়েছিল৷ যদিও শিক্ষক এবং আধিকারিকরা এই যুক্তি মানতে রাজি নন৷ এক কর্তার কথায়, 'গত ২৫-৩০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রেওয়াজ ছিল না৷ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাঠ্যক্রম শেষ করেই জুনের প্রথম কাজের দিন স্নাতকোত্তর পরীক্ষা হত৷ তা না হলে তো ওরা এমফিল বা পিএইচডি করতে পারবে না৷ ভিন রাজ্যর নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির দরজাও চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে৷' ধ্রুবজ্যোতিবাবুর মতে, স্নাতকোত্তরের পড়ুয়াদের আবেদনের ভিত্তিতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সর্বসম্মত ভাবে বৈঠকে করে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কিছু করার নেই৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/calcutta-university-exam-has-been-postponed-due-to-tmcp/articleshow/35738884.cms

No comments:

Post a Comment