Saturday, May 31, 2014

চার নদী তীরের ইজারা বাতিল দাবি ২৭ বুদ্ধিজীবীর

চার নদী তীরের ইজারা বাতিল দাবি ২৭ বুদ্ধিজীবীর
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চার নদীর দখল দূষণরোধে নদী তীরবর্তী এলাকায় সকল ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ ও পরিবেশকর্মীসহ ২৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। একই সঙ্গে তারা নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নদী দূষণ রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার চার নদী রক্ষার জন্য যে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তাঁরা।
শনিবার এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় ও আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বিভিন্ন নদীতীর ইজারা প্রদান করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির অসাধু কর্মকর্তারা আইন লঙ্ঘন করে নদী তীরবর্তী এলাকা একের পর এক ইজারা দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে তারা আদালতের রায়ের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন ও সরকারি নির্দেশনা অমান্য করছেন যা ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য। একই সঙ্গে নদী ইজারা প্রদানের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, রাজধানীর লালকুঠি এলাকায় বাকল্যান্ড বাঁধের ভেতরে ৪০০ বর্গফুট করে ১১টি ট্রানজিট শেড, গাবতলী এলাকায় ৪/৫/৭ শতাংশের ৬৮টি প্লট, আমিন বাজার ল্যান্ডিং স্টেশনের দক্ষিণে প্রায় পাঁচ একর এবং শোয়ারীঘাট এলাকায় ৬৭ শতাংশ জমিসহ বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীতীরের দুইশতাধিক একর জমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ইজারা দেয়া হয়েছে যা আদালতের রায়ের অবমাননা। এছাড়া বছিলা এলাকায় দুটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে বিশাল আয়তনের জমি ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। অথচ হাইকোর্টের রায়ের আলোকে গঠিত নদীবিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্সের ২০০৯ সালের ১৫ নবেম্বরের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদীতীর ইজারা প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে এসব আইন ও আদালতের রায় পর্যন্ত বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না।
নদীর তীরবর্তী এলাকা ইজারা বাতিলের দাবিতে যাঁরা বিবৃতি দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছে সিপিবির উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মনজুরুল আহসান খান, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক ড. মীর তারিক আলী, প্রাক্তন শিক্ষক ড. আব্দুর রহিম, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, নৌ, সড়ক ও রেল খাত রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আশীষ কুমার দে, রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান মুন্না, বাসদের সম্পাদকম-লীর সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, ন্যাপের (মোজাফ্ফর) সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম রসুল, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এস এম এ সবুর, মাসুদা রেহেনা, বেগম রোজী ও ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, খিলগাঁও আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও সাবেক জেলা জজ বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ইনিশিয়েটিভ ফর পিসের (আইএফপি) চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার কল্যাণ পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার, পরিবেশসম্মত বাসযোগ্য ঢাকা বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব হাজী মোহাম্মদ শহীদ, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, সেভ দ্য কোস্টাল পিপলের নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েতুর রহিম শিবলু, পিসের মহাসচিব ইফমা হুসেইন, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ নাজিম, সুরক্ষা ও অগ্রগতি ফাউন্ডেশনের (পিপিএফ) প্রধান নির্বাহী জীবনানন্দ জয়ন্ত এবং নদী রক্ষা শপথের (নরশ) আহ্বায়ক জসী শিকদার প্রমুখ।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html

No comments:

Post a Comment