অশনি সঙ্কেত? বাম 'চোখের বালি' রাকেশ
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ এবং মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তাকে অপসারণের দাবি জানাল বামফ্রন্ট। তাদের অভিযোগ, রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটে ব্যাপক কারচুপি হওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি নির্বাচন কমিশনের এই দুই শীর্ষ আধিকারিক।
প্রথম দুই দফার নির্বাচনে সুধীরকুমার রাকেশের ঢালাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন বামফ্রন্ট-সহ বিরোধী শিবির। কিন্তু তৃতীয় দফায় এসেই সুর বিগড়োল তাঁদের। বুধবার নির্বাচনের পরে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যাপক রিগিং ও সন্ত্রাসের অভিযোগে মুখর হয় সিপিএম ও বিজেপি। এতেই থেমে না থেকে, খোদ নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠিও পাঠানো হয় বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানান রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। দাবি, কর্তব্যে বিচ্যুতি ও পক্ষপাতিত্বের জেরে অবিলম্বে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক ও বিশেষ নির্বাচন পর্যবেক্ষককে অপসারণ করা হোক।
কিন্তু হঠাত্ কী কারণে রাকেশের উপর রুষ্ট বামেরা? ঘটনা হল, শ্রীরামপুরে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। নমোর বিরুদ্ধে সেদিনই ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও 'শয়তান' বলে সম্বোধন করেন মমতাও। এই চাপান-উতোরের মধ্যেই বিহারে নির্বাচন পরিস্থিতি দেখতে পাটনায় পাড়ি দেন সুধীরকুমার রাকেশ। মমতার মোদীকে আক্রমণের পরদিনই বিজেপি নেতাকে তুলোধনা করেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবও। তিনি মোদীকে সরাসরি 'কসাইয়ের চেয়েও নিম্নস্তরের' বলে বর্ণনা করেন।
গত বুধবার রাজ্যে তৃতীয় দফার লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং, সন্ত্রাস ও আইনভঙ্গের অভিযোগে উত্তাল হয় বামফ্রন্ট। সঙ্গী হয় বিজেপি শিবির। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বুথ থেকে পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া, বামফ্রন্ট সমর্থকদের হুমকি ও মারধর করা এবং ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে শাসক দল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলেন তাঁরা। কিন্তু সেই অভিযোগ বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি কমিশন। ভোটদান পর্বের শেষে রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে বিবৃতি দেন সুধীরকুমার রাকেশ। শুধু তাই নয়, পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি 'শান্তিপূর্ণ' ভোট হয়েছে বলেও দাবি করেন।
আর এতেই মেজাজ হারান বাম নেতারা। মে দিবসের যাবতীয় কার্যসূচীর মাঝে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দুই শীর্ষ নির্বাচন আধিকারিকের অপসারণ দাবি করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানোর কথা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু দাবি করেন, কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ। একই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তার বিরুদ্ধে সরাসরি তৃণমূলের পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগে সোচ্চার হন তিনি। তাঁর বক্তব্য, বার বার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি কমিশনের প্রতিনিধিরা। রাজ্যের বহু বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনী ছিল না বলেও অভিযোগ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, প্রথম দু' দফার ভোটে এই দুই নির্বাচনী আধিকারিকের স্বতঃস্ফূর্ত প্রশংসা করেন বিরোধীরা। বলা হয়, তাঁদের কৃতিত্বেই রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব হয়েছে। অথচ, এবার অভিযোগে সাড়া না দেওয়ার ফলে তাঁদেরই অপসারণের দাবিতে মুখর বামেরা। প্রশ্ন উঠছে, বুধবারের ভোটের পরে লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের হার অবশ্যম্ভাবী বুঝেই কি কমিশন আধিকারিকদের বিরোধিতায় নামল বিরোধী শিবির?
বামফ্রন্ট সম্পাদকের অভিযোগ অবশ্য এবারও উড়িয়ে দিয়েছেন সুধীরকুমার। তাঁর মতে, রাজ্যে তৃতীয় দফাতেও অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। অবশ্য দু'-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সে-সব বিশেষ ছাপ ফেলেনি বলেই তাঁর বক্তব্য।
এদিকে চতুর্থ ও পঞ্চম দফা নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তার কাছে দরবার করল বাম বুদ্ধিজীবী মহলের প্রতিনিধিরা। এঁদের মধ্যে ছিলেন নাট্যকার চন্দন সেন, প্রাক্তন সাংসদ মালিনী ভট্টাচার্য এবং কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
অন্যদিকে, বিরোধীদের দাবি শুনে মুচকি হাসছে তৃণমূল শিবির। শুক্রবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ব্যাখ্যা, নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ তৈরি করে বিশেষ পর্যবেক্ষক এনেও ভরাডুবি আটকাতে ব্যর্থ বামেরা। তাই সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের শংসাপত্র দেওয়ার পর নির্বাচনী আধিকারিক ও পর্যবেক্ষকের উপর দারুণ চটেছে বামেরা।
এখনও বাকি রয়েছে চতুর্থ ও পঞ্চম দফার নির্বাচন। তার আগেই কমিশনের কাছে আধিকারিক হঠানোর দাবি তুলে কি নিজেদের বিপন্নতাই প্রকাশ্যে আনলেন বাম নেতারা? উত্তরের জন্য অপেক্ষা ১৬ মে পর্যন্ত।
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ এবং মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তাকে অপসারণের দাবি জানাল বামফ্রন্ট। তাদের অভিযোগ, রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটে ব্যাপক কারচুপি হওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি নির্বাচন কমিশনের এই দুই শীর্ষ আধিকারিক।
প্রথম দুই দফার নির্বাচনে সুধীরকুমার রাকেশের ঢালাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন বামফ্রন্ট-সহ বিরোধী শিবির। কিন্তু তৃতীয় দফায় এসেই সুর বিগড়োল তাঁদের। বুধবার নির্বাচনের পরে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যাপক রিগিং ও সন্ত্রাসের অভিযোগে মুখর হয় সিপিএম ও বিজেপি। এতেই থেমে না থেকে, খোদ নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠিও পাঠানো হয় বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানান রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। দাবি, কর্তব্যে বিচ্যুতি ও পক্ষপাতিত্বের জেরে অবিলম্বে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক ও বিশেষ নির্বাচন পর্যবেক্ষককে অপসারণ করা হোক।
কিন্তু হঠাত্ কী কারণে রাকেশের উপর রুষ্ট বামেরা? ঘটনা হল, শ্রীরামপুরে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। নমোর বিরুদ্ধে সেদিনই ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও 'শয়তান' বলে সম্বোধন করেন মমতাও। এই চাপান-উতোরের মধ্যেই বিহারে নির্বাচন পরিস্থিতি দেখতে পাটনায় পাড়ি দেন সুধীরকুমার রাকেশ। মমতার মোদীকে আক্রমণের পরদিনই বিজেপি নেতাকে তুলোধনা করেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবও। তিনি মোদীকে সরাসরি 'কসাইয়ের চেয়েও নিম্নস্তরের' বলে বর্ণনা করেন।
গত বুধবার রাজ্যে তৃতীয় দফার লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং, সন্ত্রাস ও আইনভঙ্গের অভিযোগে উত্তাল হয় বামফ্রন্ট। সঙ্গী হয় বিজেপি শিবির। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বুথ থেকে পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া, বামফ্রন্ট সমর্থকদের হুমকি ও মারধর করা এবং ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে শাসক দল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলেন তাঁরা। কিন্তু সেই অভিযোগ বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি কমিশন। ভোটদান পর্বের শেষে রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে বিবৃতি দেন সুধীরকুমার রাকেশ। শুধু তাই নয়, পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি 'শান্তিপূর্ণ' ভোট হয়েছে বলেও দাবি করেন।
আর এতেই মেজাজ হারান বাম নেতারা। মে দিবসের যাবতীয় কার্যসূচীর মাঝে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দুই শীর্ষ নির্বাচন আধিকারিকের অপসারণ দাবি করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানোর কথা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু দাবি করেন, কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ। একই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তার বিরুদ্ধে সরাসরি তৃণমূলের পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগে সোচ্চার হন তিনি। তাঁর বক্তব্য, বার বার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি কমিশনের প্রতিনিধিরা। রাজ্যের বহু বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনী ছিল না বলেও অভিযোগ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, প্রথম দু' দফার ভোটে এই দুই নির্বাচনী আধিকারিকের স্বতঃস্ফূর্ত প্রশংসা করেন বিরোধীরা। বলা হয়, তাঁদের কৃতিত্বেই রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব হয়েছে। অথচ, এবার অভিযোগে সাড়া না দেওয়ার ফলে তাঁদেরই অপসারণের দাবিতে মুখর বামেরা। প্রশ্ন উঠছে, বুধবারের ভোটের পরে লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের হার অবশ্যম্ভাবী বুঝেই কি কমিশন আধিকারিকদের বিরোধিতায় নামল বিরোধী শিবির?
বামফ্রন্ট সম্পাদকের অভিযোগ অবশ্য এবারও উড়িয়ে দিয়েছেন সুধীরকুমার। তাঁর মতে, রাজ্যে তৃতীয় দফাতেও অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। অবশ্য দু'-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সে-সব বিশেষ ছাপ ফেলেনি বলেই তাঁর বক্তব্য।
এদিকে চতুর্থ ও পঞ্চম দফা নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তার কাছে দরবার করল বাম বুদ্ধিজীবী মহলের প্রতিনিধিরা। এঁদের মধ্যে ছিলেন নাট্যকার চন্দন সেন, প্রাক্তন সাংসদ মালিনী ভট্টাচার্য এবং কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
অন্যদিকে, বিরোধীদের দাবি শুনে মুচকি হাসছে তৃণমূল শিবির। শুক্রবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ব্যাখ্যা, নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ তৈরি করে বিশেষ পর্যবেক্ষক এনেও ভরাডুবি আটকাতে ব্যর্থ বামেরা। তাই সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের শংসাপত্র দেওয়ার পর নির্বাচনী আধিকারিক ও পর্যবেক্ষকের উপর দারুণ চটেছে বামেরা।
এখনও বাকি রয়েছে চতুর্থ ও পঞ্চম দফার নির্বাচন। তার আগেই কমিশনের কাছে আধিকারিক হঠানোর দাবি তুলে কি নিজেদের বিপন্নতাই প্রকাশ্যে আনলেন বাম নেতারা? উত্তরের জন্য অপেক্ষা ১৬ মে পর্যন্ত।
No comments:
Post a Comment