ধুন্ধুমার শুনেও বিশ্রামে বাহিনী
কৌশিক প্রধান, প্রদীপ চক্রবর্তী ও দিব্যেন্দু সরকার
'স্যাটাস্যাট, ফটাফট!'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন৷ কথাটা একযোগে বলছেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ধনিয়াখালি এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা৷ সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আড়াই ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই এখানে ভোটদানের হার ৫০ শতাংশে পৌঁছে গেল কী ভাবে? ধনিয়াখালিতে বোসো প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের বুথে প্রশ্নটা করতেই তৃণমূলের এজেন্টের উত্তর, 'একটাই তো ভোট৷ মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার৷ একদম শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে এখানে৷'
শান্তিপূর্ণ ভোট তো বটেই! হুগলি জেলার গ্রামাঞ্চল তো বটেই, শহরাঞ্চলের এলাকার অনেক বুথেও ছিল না কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ শাসকদলের শাসানিতে বহু বুথে বিরোধী দলগুলির এজেন্ট ছিল না৷ নিজেদের শাসনকালে যে কায়দায় সিপিএম ভোট করত, সেই কৌশলই এ বার তৃণমূল প্রয়োগ করেছে ধনিয়াখালি, আরামবাগ, পুরশুড়া, গোঘাট, খানাকুল, জাঙ্গিপাড়া-সহ হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে৷ কোথাও রাজ্য পুলিশ, কোথাও আবার হোমগার্ড দিয়ে ভোট৷ বুথের ভিতরে তৃণমূল কর্মীদের ভিড়৷ আগে থেকেই ভোটারদের ভয় দেখানো৷ অতীতের ভোট-ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি৷
শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জাঙ্গিপাড়া রাজবলহাটের দু'টি বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করে ব্যাপক রিগিং ও ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ জাঙ্গিপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও বুথে বিরোধীদের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ ডোমজুড়ের ১০৭ নম্বর বুথে কংগ্রেস এজেন্ট শেখ নাসিরউদ্দিনকে মেরে বুথ থেকে বের করে দেয় তৃণমূল৷ বাঁকড়ার জেকে মার্কেটের সামনে পথ অবরোধে বসেন শ্রীরামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল মান্নান৷ সেই সময়ে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ৷ পরে সিআরপিএফ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়৷ ডোমজুড়ের কদমতলায় শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায়কে তৃণমূল হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ কোন্নগরের ন-পাড়ায় শাসকদলের হাতে মার খেয়েছেন অরিন্দম পাল নামে সিপিএমের এক কর্মী৷ যদিও জেলার তিন কেন্দ্রের ভোট নিয়ে হুগলির জেলাশাসক মনমিত নন্দার দাবি, 'উত্সবের মেজাজে মানুষ ভোট দিয়েছেন৷'
এদিন শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সবথেকে বেশি অভিযোগ উঠেছে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে৷ মঙ্গলবার মাঝরাত থেকেই আরামবাগের পুইনা গ্রামে সিপিএম সমর্থকদের ভয় দেখাতে তৃণমূল বোমাবাজি করেছে বলে অভিযোগ৷ আরামবাগের তিবোল, রতনপুরের মতো এলাকায় সিপিএম এবং বিজেপি এজেন্টকে তৃণমূল বুথ থেকে জোর করে বের করে দেয়৷ রতনপুরে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা এর বিরোধিতা করলে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট সাত জন আহত হয়েছেন৷ শ্রীরামপুর হাটি এলাকায় সিপিএমের এজেন্ট প্রবীর ঘোষকে মারধর করে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার পর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে৷ প্রতিবাদে সিপিএম আরামবাগ-তারকেশ্বর সড়ক কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করে৷
কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না ধনিয়াখালির প্রায় সমস্ত বুথেই৷ সেই সুযোগে এখানেও তৃণমূল একতরফা ভোট করেছে বলে সিপিএম ও বিজেপি-র অভিযোগ৷ ভোটের কাজে নির্বাচন কমিশন এখানে মোতায়েন করেছিল ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসকে৷ বুথের পরিবর্তে সকাল ১০টা নাগাদ বাহিনীকে পাওয়া গেল শরত্ সেন্টিনারি কলেজে৷ সেখানে তখন তাঁরা বিশ্রামে ব্যস্ত৷ বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা অফিসার দীপঙ্কর পালের কথায়, 'ভোটে খুব খাটুনি যাচ্ছে৷ ত্রিপুরার পর কোচবিহারে ভোট সেরে এখানে এসেছি৷ শরীর আর দিচ্ছে না৷ তাই একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম৷' শরত্ সেন্টিনারি কলেজের ঢিলছোড়া দূরত্বে হারপুর আশুতোষ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে তখন ধুন্ধুমার কাণ্ড৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট লুঠের অভিযোগ উঠেছে৷ খবর পেয়ে ছুটে এসেছে সেক্টর মোবাইল৷ সব দেখে সেক্টর মোবাইলের দায়িত্বে থাকা অফিসার বললেন, 'ভাবা যায়! হোমগার্ড দিয়ে ভোট হচ্ছে এখানে৷'
ধনিয়াখালির ২৩৫টি বুথের প্রায় সবকটিতেই এই চিত্র ছিল এদিন৷ তবে জেলার শহরাঞ্চলের বেশ কিছু বুথে এসএসবি ছাড়াও নাগাল্যান্ড আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল৷ ভোট নিয়ে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তর দাবি, 'অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে৷'
'স্যাটাস্যাট, ফটাফট!'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন৷ কথাটা একযোগে বলছেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ধনিয়াখালি এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা৷ সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আড়াই ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই এখানে ভোটদানের হার ৫০ শতাংশে পৌঁছে গেল কী ভাবে? ধনিয়াখালিতে বোসো প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের বুথে প্রশ্নটা করতেই তৃণমূলের এজেন্টের উত্তর, 'একটাই তো ভোট৷ মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার৷ একদম শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে এখানে৷'
শান্তিপূর্ণ ভোট তো বটেই! হুগলি জেলার গ্রামাঞ্চল তো বটেই, শহরাঞ্চলের এলাকার অনেক বুথেও ছিল না কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ শাসকদলের শাসানিতে বহু বুথে বিরোধী দলগুলির এজেন্ট ছিল না৷ নিজেদের শাসনকালে যে কায়দায় সিপিএম ভোট করত, সেই কৌশলই এ বার তৃণমূল প্রয়োগ করেছে ধনিয়াখালি, আরামবাগ, পুরশুড়া, গোঘাট, খানাকুল, জাঙ্গিপাড়া-সহ হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে৷ কোথাও রাজ্য পুলিশ, কোথাও আবার হোমগার্ড দিয়ে ভোট৷ বুথের ভিতরে তৃণমূল কর্মীদের ভিড়৷ আগে থেকেই ভোটারদের ভয় দেখানো৷ অতীতের ভোট-ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি৷
শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জাঙ্গিপাড়া রাজবলহাটের দু'টি বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করে ব্যাপক রিগিং ও ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ জাঙ্গিপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও বুথে বিরোধীদের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ ডোমজুড়ের ১০৭ নম্বর বুথে কংগ্রেস এজেন্ট শেখ নাসিরউদ্দিনকে মেরে বুথ থেকে বের করে দেয় তৃণমূল৷ বাঁকড়ার জেকে মার্কেটের সামনে পথ অবরোধে বসেন শ্রীরামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুল মান্নান৷ সেই সময়ে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ৷ পরে সিআরপিএফ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়৷ ডোমজুড়ের কদমতলায় শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায়কে তৃণমূল হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ কোন্নগরের ন-পাড়ায় শাসকদলের হাতে মার খেয়েছেন অরিন্দম পাল নামে সিপিএমের এক কর্মী৷ যদিও জেলার তিন কেন্দ্রের ভোট নিয়ে হুগলির জেলাশাসক মনমিত নন্দার দাবি, 'উত্সবের মেজাজে মানুষ ভোট দিয়েছেন৷'
এদিন শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সবথেকে বেশি অভিযোগ উঠেছে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে৷ মঙ্গলবার মাঝরাত থেকেই আরামবাগের পুইনা গ্রামে সিপিএম সমর্থকদের ভয় দেখাতে তৃণমূল বোমাবাজি করেছে বলে অভিযোগ৷ আরামবাগের তিবোল, রতনপুরের মতো এলাকায় সিপিএম এবং বিজেপি এজেন্টকে তৃণমূল বুথ থেকে জোর করে বের করে দেয়৷ রতনপুরে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা এর বিরোধিতা করলে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়৷ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট সাত জন আহত হয়েছেন৷ শ্রীরামপুর হাটি এলাকায় সিপিএমের এজেন্ট প্রবীর ঘোষকে মারধর করে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার পর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে৷ প্রতিবাদে সিপিএম আরামবাগ-তারকেশ্বর সড়ক কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করে৷
কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না ধনিয়াখালির প্রায় সমস্ত বুথেই৷ সেই সুযোগে এখানেও তৃণমূল একতরফা ভোট করেছে বলে সিপিএম ও বিজেপি-র অভিযোগ৷ ভোটের কাজে নির্বাচন কমিশন এখানে মোতায়েন করেছিল ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসকে৷ বুথের পরিবর্তে সকাল ১০টা নাগাদ বাহিনীকে পাওয়া গেল শরত্ সেন্টিনারি কলেজে৷ সেখানে তখন তাঁরা বিশ্রামে ব্যস্ত৷ বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা অফিসার দীপঙ্কর পালের কথায়, 'ভোটে খুব খাটুনি যাচ্ছে৷ ত্রিপুরার পর কোচবিহারে ভোট সেরে এখানে এসেছি৷ শরীর আর দিচ্ছে না৷ তাই একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম৷' শরত্ সেন্টিনারি কলেজের ঢিলছোড়া দূরত্বে হারপুর আশুতোষ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে তখন ধুন্ধুমার কাণ্ড৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট লুঠের অভিযোগ উঠেছে৷ খবর পেয়ে ছুটে এসেছে সেক্টর মোবাইল৷ সব দেখে সেক্টর মোবাইলের দায়িত্বে থাকা অফিসার বললেন, 'ভাবা যায়! হোমগার্ড দিয়ে ভোট হচ্ছে এখানে৷'
ধনিয়াখালির ২৩৫টি বুথের প্রায় সবকটিতেই এই চিত্র ছিল এদিন৷ তবে জেলার শহরাঞ্চলের বেশ কিছু বুথে এসএসবি ছাড়াও নাগাল্যান্ড আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল৷ ভোট নিয়ে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তর দাবি, 'অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে৷'
http://eisamay.indiatimes.com/election-news/absence-of-central-force-in-west-bengal-polling-booths/articleshow/34439073.cms?
No comments:
Post a Comment