Thursday, May 29, 2014

নজরুলের প্রগতি ও ধর্মবোধ সাইম রানা

নজরুলের প্রগতি ও ধর্মবোধ

সাইম রানা
বাংলাদেশের জাতিগত ভিত্তিতে নানাধর্মের যোগ রয়েছে। কয়েক হাজার বছর ধরে প্রধান প্রধান ধর্মের ফাঁকে ফাঁকে অজস্র লোকধর্ম ও লোকবিশ্বাস নানামুখি সংস্কারের তত্পরতা দেখিয়েছে। তা সত্ত্বেও কোন্দল, দাঙ্গা, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন কখনো নিশ্চিত থেমে যায়নি। এ কারণে বাংলা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে লোকধর্মের নামে এত অজস্র মানবতাবাদী ও সমন্বয়বাদী ধর্মের উত্পত্তি হয়েছে তার হিসাব মেলানো কঠিন। ধর্ম রাজনীতির বাইরে থাকবে এরকম ব্যাখ্যা আধুনিক বুদ্ধিবৃত্তির নতুন সবক হলেও ধর্ম কখনোই রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা, অর্থনৈতিক সাফল্যের ইচ্ছানুশীলন থেকে দূরে সরে থাকেনি। প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্য যেকোনো অঞ্চলেরই সাধারণ মানুষ তার মনের বিশ্বাসে যে যে পথের অনুসারীই হোক না কেন, কিছু স্বার্থান্বেষী, সৃজনবিমুখ অন্ধ ও সামপ্রদায়িক মহল ধর্মের চাদরে সমাজকে বিভক্ত ও অসহিষ্ণু করে তুলেছে কালে কালে। 

ধর্ম সবসময়ই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তা সত্ত্বেও ধর্মের পরতে পরতে বর্ণবাদিতা, শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এমন ভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা থাকে যে শেষ পর্যন্ত ধর্ম মানুষের জন্য—এ কথাটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এর ফলে দুই ধরনের মানুষ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, এক ধরনের মানুষ ধর্মের নীতি ও পালনীয় বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দিতে গিয়ে মূল্যবোধের দিকটি গৌণ করে তোলে, অন্যদিকের মানুষ ধর্মের মর্মার্থকে মানবজীবনের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি হিসেবে সময়ের প্রয়োজনে অভিনব ব্যাখা দান করে। ফলে কবির, লালন, আল ফারাবি, রুমি, হাফিজ, স্বামী হরিদাস, আমীর খসরু, তানসেন, আলাওল, মানসিংহ তোমর সকলের আদর্শে একই চিন্তাধারা এসে ধরা দেয়। তা হলো ধর্ম মানুষের জন্য, ধর্ম অজস্র কিন্তু প্রভু বা জগত্ নিয়ন্তা এক। সংগীত সেই নিয়ন্তাকে জানার এক আলোকিত পথরেখা। ফলে মানবতাবাদী ও সৃজনশীল ধারার মানুষেরা সংগীতের মধ্যদিয়ে সকল মানুষের অন্তরের শক্তিকে নাড়াতে চেয়েছেন।

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই ধারারই একজন সফল স্রষ্টা যিনি মানুষের মনের আবেগকে মন্থন করতে গিয়ে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেছেন এবং তার প্রকাশ করেছেন গানে। ফলে একদিকে গণমানুষের গান রচনা করেছেন, এর পাশাপাশি ধর্মীয় ভাবধারার গান লিখে উদার ও সমন্বয়বাদী মানসিকতার সঞ্জীবন দিয়েছেন। ভারতীয় সংগীতের প্রাচীন ইতিহাস সেই আর্যদের আগমন থেকে বৈদিক এবং বেদোত্তর সংগীতের ঐতিহ্যের ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত। পরবর্তী কালে মহামানব গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাবের পর সংগীতের রূপরেখা মনস্তত্ত্বের দিকে গড়ায়, মধ্যযুগে মুসলমানদের আগমনের ফলে পার্সীয় সুফি সংগীতের প্রভাবে ভারতীয় সংগীত প্লাবিত হয় এবং ধ্রুপদের বিস্তার লঘু হয়ে পড়ে। কিন্তু পার্সিয় সংগীতের যে অজস্র ফর্ম বা কাঠামো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তা আধুনিক কালে বাংলায় এনে হাজির করেন কাজী নজরুল ইসলাম। হামদ অর্থ খোদার প্রশংসাস্তুতি হলেও এর সুরের এবং গায়কীর যে স্বতন্ত্র রূপ রয়েছে, একইভাবে রাসুলে নাত, কাওয়ালি, ক্কাসিদা, নাশিদ, মাওলিদ, তাজিয়া, আসুরা, মার্সিয়া, সিকিরি-এর মতো ভিন্ন ভিন্ন কাঠামো ও স্বতন্ত্র সংগীত ধারা রয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাগানের ধারা নজরুলের আগে পরিশোধিত হয়নি। নজরুলের এই রচনাকর্মের ধারাকে বাংলাগানের সুরের ভুবনে নতুন পাখির আগমন বললে অত্যুক্তি হবে না।

অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসংগীত ও কীর্তনসুর বিধৌত বাংলায় কাজী নজরুল দেখতে পেলেন লোকসংগীতের বিপুল ঐশ্বর্য, মধ্যযুগের বৈষ্ণবীয় ধারার ভাব ও প্রেমমগ্নতা এবং মাতৃরূপিনী শক্তির অপ্রতিরোধ্য ভাবপ্লাবন। কোথাও কোথাও আধুনিক রোমান্টিসিজমের প্রভাব। ব্যক্তির সূক্ষ্ম অভিব্যক্তি প্রকাশের পাশাপাশি স্বদেশ, জাতীয়তা, সমাজতন্ত্রের পরিচ্ছন্ন ধারণা এবং অন্যদিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার পরাকাষ্ঠার জটিল প্রেক্ষাপটে নজরুল হাজির করেন ধর্মস্তুতিকে দেশমাতৃকার চরিত্রে। দেশ, মাটি, মনন ও ঈশ্বর এই চার কনসেপ্টকে এক আসনে বসিয়ে অসামপ্রদায়িকতার নন্দিত নজির স্থাপন করেছেন। তাই ইসলামি গান যেমন শুধু মুসলমানের থাকেনি আবার অন্যদিকে কীর্তন-শ্যামাগানও শুধু হিন্দুর থাকেনি। বাংলার প্রতিটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বস্তু হিসেবে এই গানগুলো ধরা দিয়েছে। তার প্রমাণ মিলবে নজরুল ইসলামের গ্রামোফোন রেকর্ডের দিকে তাকালে। যেমন—'নামাজ রোজা হজ্জ জাকাতের পসারিনী আমি' গানটির এলপি-তে লিখা আছে সাকিনা বেগম। 'হে প্রিয় নবী রসুল আমার/ পরেছি আবরণ নামেরই তোমার', 'আমার ধ্যানের ছবি আমার হযরত' এবং 'নতুন চাঁদের তকবীর শোনো' গানগুলোর শিল্পীর নাম রওশন আরা বেগম হলেও আসলে কোনো হিন্দু শিল্পীর ছদ্মনাম। তারা কেউ হয়তো সাকিনা, রওশন আরা বেগম, আমিনা বেগম হলেও সত্যিকার অর্থে তাদের আসল নাম হরিমতি, কেউবা আশ্চর্যময়ী দাসী, অথবা কেউ সীতা দেবী। গ্রামোফান কোম্পানী তার ব্যবসার খাতিরে এই কাজটি করে থাকলেও নজরুলের অসামপ্রদায়িক মনোভাব এই কার্যক্রমের মধ্যে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। ধীরেন দাসের গাওয়া গান গনি মিয়া নামে পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি গানে। যেমন—'ফুরিয়ে এলো রমজানের এই মোবারক মাস/

আজ বাদে কাল ঈদ তবু মন করে উদাস'

'লহ সালাম লহ দীনের বাদশাহ জয় আখেরী নবী/ পীড়িত জনগণে মুক্তি দিতে এল হে নবী কুলের রবি।'

কাসেম মল্লিক নাম সংক্ষিপ্ত করে রেখেছিলেন 'কে মল্লিক' নামে। হিন্দুদের কাছে কীর্তন গান ও ভজন গানকে জনপ্রিয় করে তুলতে তিনি গেয়েছেন 'আমার উমা কই, আমার আনন্দিনী উমা', 'কৃষ্ণ কৃষ্ণ বল রসনা', 'কে তোরে কি বলেছে মা', 'মা আমার হাতে কালি', 'তোমার মেয়ে যদি থাকতো উমা'। 

নজরুল এই বিভিন্ন ধারার ধর্মীয় সংগীত রচনা করেছেন শিল্পবোধের তাড়নায়। এ কারণের অসংখ্য রূপক উপমা, প্রতীক, সংকেতগুলো ইসলামি গান কিংবা ভজন-কীর্তনে অভিনব আকারে ধরা দিয়েছে। যেমন—উপরোল্লিখিত গানে পসারিনীর মতো শব্দ নামাজ রোজা হজে যুক্ত হওয়া প্রবল সাহসিকতার দিকটিই বহন করে।

আবার 'আয় অশুচি আয়রে পতিত এবার মায়ের পূজা হবে/ যেথা, সকল জাতির সকল মানুষ নির্ভয়ে মা'র চরণ ছোঁবে' এই ধরনের গান না লিখা হলে এমন প্রশ্ন মনে জাগা স্বাভাবিক যে, নজরুল না এলে বাংলা গানের গতি-প্রকৃতি কোনদিকে মোড় নিত। হিন্দুস্থানি রাগ-রাগিনীর চর্চা কি আরো বেড়ে যেত? নাকি বাউল-ভাটিয়ালি-ভাওয়াইয়া এই প্রচলিত ধারার মধ্যে ঘুরেফিরে চর্চিত হতো বাংলা গান? অথবা হিন্দি-উর্দু, বিদেশি গানের ধারা এসে জুড়ে বসত (এখন যেমন কিছুটা বসে আছে)? অনেক সম্পদশালী দেশ আছে, তাদের বৈচিত্র্যহীন শিল্প-পরিবারে ভিনদেশীয় সংগীত প্রভাব বিস্তার করে ধীরে ধীরে তা একটা বলিষ্ঠ কাঠামো পেয়েছে। যেমন জাপানে চীনা সংস্কৃতির আধিপত্য প্রায় দুহাজার বছরের। কোনো শিল্পমাধ্যম স্বজাতির ঐশ্বর্যের ব্যাপ্তি যখন পূর্ণরূপে না পায়, তখন ভিন্ন কোনো সংস্কৃতির আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এতে হয়তো দেশজ শিল্পের আদিরূপ ঠিকই থাকে কিন্তু নতুন সৃষ্টির চরিত্রের মধ্যে এসে দাঁড়ায় আমদানির নেশা। 

শ্যামার গানে নজরুল যে স্বাতন্ত্র্যের রূপ দেখিয়েছেন, সেখানে শ্যামা বা কালি হিন্দু-শাস্ত্রের শক্তির দেবী অপেক্ষা দেশমাতৃকারূপে প্রধানত রূপায়িত হয়েছে। ১৮৬৭ সালের ১২ এপ্রিল হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও স্বদেশি চেতনার জাগরণ ঘটে। (গীতা চট্টোপাধ্যায়, বাংলা স্বদেশী গান, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮) বাংলাদেশে সেই সময়ে দেশপ্রেমের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এর আগে তেমন কোনো গানের চিহ্নই পাওয়া যায় না দেশমাতৃকার বন্দনারূপে। স্বদেশি গানে দেশকে 'মা', 'মাতা' সম্বোধন করে তত্কালে বহুগান রচিত হয়েছে; নজরুলের শ্যামাসংগীতেও সেই বিষয়ই এসেছে মূলত। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো অন্যান্য গীতিকারদের স্বদেশি গানের মধ্যে সরাসরি দেশকে বিষয় করে পদ রচিত হয়েছে, আর নজরুল-রচিত শ্যামাসংগীত হিসেবে প্রচলিত গানের মধ্যে এসেছে প্রত্যক্ষ স্বদেশি ভাব। এর সাথে বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ রূপ জনমানসকে সরাসরি বিপ্লবী ও প্রতিবাদী করে তুলতে সাহায্য করেছিল। এজন্য তাঁকে হুলিয়া কাঁধে নিয়ে ঘুরতে হয়েছে বারংবার। তাই তিনি প্রতীক আকারে বেছে নিয়েছিলেন শ্যামাকে, যিনি অশুভনাশিনী পরাক্রমশক্তি। সর্বোপরি তিনি শ্যামাকে তাঁর অসংখ্য গানে বিভিন্ন রূপ ও চরিত্রে, ভাবে ও প্রেমে দাঁড় করিয়েছেন। কখনো কাঠুরিয়ার মেয়ে, যিনি অহংকারের মূল কেটে দেন :'আমার অহংকারের মূল কেটে দে কাঠুরিয়ার মেয়ে/ কত নিরস তরু হলো মুঞ্জরিত তোর চরণ পরশ পেয়ে'

এই গানে মুণ্ডমালাধারী শ্যামা যেন বার বার কেটে পরিষ্কার করে যায় সকল আগাছাকে, যারা সর্বদা সমাজের শিষ্ঠাচার ও সততাকে বিনষ্ট করে। কাঠুরিয়া যে কাঠ কাটে, সেটাও তো ফলহীন বৃক্ষ। সেখানে ফলবান বৃক্ষের আবাদ হোক এটাই প্রত্যাশা করে কবি পরগাছা-আগাছা নিধনে প্রত্যয়ী হয়ে উঠেছিলেন। আরেকটি গানে দেখা যায়, কালীকে বিদ্যাদাত্রীর আসনে বসিয়ে তিনি লিখেছেন :'আজই না হয় কালই তোরে কালী কালী বলবে লোকে/ (তুই) কালি দিয়ে লিখলি হিসাব কেতাব পুঁথি, শিখলি পড়া/ তোর মাঠে ফসল ফুল ফোটালো কালো মেঘের কালি-ঝরা/ তোর চোখে জ্বলে কালির কালো/ তাই জগতে দেখিস আলো/ (কালী)-প্রসাদ গুণে সেই আলো তুই হূদ-পদ্মে দেখবি কবে?'

এই গানে 'কালী' শব্দটিকে গুরুত্ব প্রদান করে দেশপ্রেমের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন কবি। কালি অর্থে বিদ্যা (কলমের কালি), কালী অর্থে আদিমাতা (ভূমি ও স্বদেশ) যেখানে শ্যামা মায়েরও জন্ম। কালি অর্থে জল (জীবন-জীবিকার ও প্রাণ ধারণের উপাদান), কালি অর্থে আপন সৌন্দর্য, কালি অর্থে আলোদানকারী। এভাবে শ্যামার গানে হিন্দু-পুরাণের দেবী কালী থেকে সরে তাকে আরো মহিয়সী করে তুলতে এমন গুণের বিন্যাস দেখিয়েছেন নজরুল।

শ্যামাকে কাজী নজরুল ইসলাম আত্মসচেতনা, নিরহংকারী, বিনয়ী, ভালো-মন্দের বিচারকারী, অশুভনাশিনী, আমিত্ববিনাশিনী ইত্যাদি গুণের ধারক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আবার কখনো সর্বধর্মের ঊর্ধ্বে ওঠে সামপ্রদায়িকতা বিনাশিনী, শ্যামল দেশকে শ্যামারূপে, এমনকি সমাজতন্ত্রের আদর্শ রূপকার হিসেবে আহ্বান করেছেন। বাংলাগানের যে প্রাচুর্য তার মধ্যে শ্যামাকে বিশেষভাবে চেনার জন্য শিল্পী নজরুল 'কালো মেয়ের পায়ের তলায় আলোর নাচন' খুঁজে পেয়েছেন, যে আলোর ঝলক দেখে রুদ্র প্রতীক শিব পর্যন্ত বুক পেতে দেয় তাঁর চরণতলে, যে শিবের হাতেই কালীর মরণ-বাঁচন। শিব ধ্বংসের দেবতা হলেও কালীর উন্মত্ত হয়ে ওঠা বীরত্বের কাছে হার মানার প্রতীক হিসেবে বাংলার শোষিত জনগণের বীরত্ব ও আন্দোলনকে নির্দেশ করেছেন নজরুল। গানটি হলো : 'আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায়/ দেখে যা আলোর নাচন।/ মায়ের রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব/ যার হাতে মরণ বাঁচন / আমার কালো মেয়ের আঁধার কোলে/ শিশু রবি শশী দোলে;/ মায়ের একটু খানি রূপের ঝলক/ ঐ স্নিগ্ধ বিরাট নীল গগন '

বাংলাকে বিদেশি বেনিয়ারা হাজার বছর ধরে লুণ্ঠন করে এসেছে। তারা এদেশের মানুষকে দ্বিধা-বিভক্ত করে, শাসনের নামে সম্পদ কুক্ষিগত করেছে। এর ভিতর দিয়েই অসংখ্য ছোট-বড় বিদ্রোহ হয়েছে। মানুষের ত্যাগ ও বীরত্বের কারণেই অশুভ অধিপতিরা পরাজিত হয়েছে বার বার। নজরুল সেই ইতিহাসের সত্যকে শ্যামার মাধ্যমেই প্রতীকায়ন করেছেন। 

বাঙালির অসামপ্রদায়িকতা ধর্মবিরোধিতা করে সম্ভব নয় জেনে নজরুল প্রত্যেকের জীবনচেতনার সাথে ধর্মবীক্ষণকে মূল্যায়ন করেছেন তাঁর গানের মধ্যদিয়ে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে তিনি প্রথম দিকে সাম্যবাদ ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের মধ্যদিয়ে বিচার করলেও পরিণত বয়সে 'যার যার ধর্ম তার তার' এই আদর্শকে গুরুত্বপূর্ণ করে দেখেছেন। নজরুলের এই প্রগতি ভাবনা বাঙালির আসামপ্রদায়িক চেতনার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে তাত্পর্য বহন করে।
The Daily Ittefaq

No comments:

Post a Comment