Thursday, May 29, 2014

আজ বসিরহাটে বন‌ধের ডাকে বামেরাও

আজ বসিরহাটে বন‌ধের ডাকে বামেরাও

01978A72-E08F-4644-B066-01C
এই সময়, কলকাতা এবং বারাসত: নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে না-বসতেই রাজ্য বিজেপি সন্দেশখালির ঘটনাকে ইস্যু করে রাজ্য সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্তরে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালিতে আনার ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্ব চিন্তাভাবনা করছেন৷ দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বুধবার রাতে জানান, ঘটনাটি জাতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংকে জানানো হয়েছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথের নেতৃত্বেই সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠাতে বলা হয়েছে৷ মঙ্গলবার রাত থেকে এ দিন বিকেল পর্যন্ত মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র তাঁদের ফোন ধরেননি বলে রাহুলের অভিযোগ৷ তিনি রাজনাথকে সেটাও জানিয়েছেন৷

মঙ্গলবার সন্দেশখালিতে বিজেপি সমর্থকদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে দল আজ বসিরহাট মহকুমায় বন্্ধের ডাক দিয়েছে৷ বন্ধ ডেকেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্টও৷ এর পাশাপাশি বিজেপি আজ বৃহস্পতিবার সারা রাজ্যে থানা অবরোধেরও ডাক দিয়েছে৷ বুধবার রাতে নবান্নে গিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের একটি প্রতিনিধি দল ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করে৷ রাজ্য বিজেপি নেতারা দিনভর নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর কাছে দরবার করতে যেতে চান৷ কিন্ত্ত সন্ধ্যা পর্যন্ত তা সফল হয়নি৷ পরে মুখ্যসচিবই বিজেপি রাজ্য দপ্তরে ফোন করে নেতাদের আসতে বলেন৷ সেইমতো সাতটা নাগাদ দলের চার নেতা নবান্নে যান৷ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের ঘটনার প্রেক্ষিতে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বিজেপির রাজ্য নেতাদেরও একই কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব সঞ্জয়বাবু৷ বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, যাদের ধরা হয়েছে, তাদের নাম এফআইআর-এ নেই৷ তাঁরা আরও জানতে চান, অন্য রাজ্যে যেখানে ভোটপরবর্তী হিংসা হানাহানি হচ্ছে না, সেখানে এই রাজ্যে এত হানাহানি কেন? বিজেপি নেতাদের দাবি, মুখ্যসচিব তার কোনও জবাব দিতে পারেননি৷

এদিকে এ দিন সিপিএম এবং বিজেপির দু'টি দল আলাদা ভাবে সন্দেশখালির আক্রান্ত গ্রামগুলিতে যায়৷ তার আগে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কয়েক জন জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে স্মারকলিপি দেন৷ পরে তাঁরা ওই সব গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এখনও তৃণমূল হুমকি দিয়ে চলেছে৷ বিকেলে শমীকবাবুরা চলে যেতেই সন্দেশখালিতে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য কমিটির সদস্য কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, রেখা গোস্বামী প্রমুখ৷ সুজনবাবুর অভিযোগ, পুলিশের সামনেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলিবৃষ্টি করেছে৷

এ দিন গোটা তল্লাট ছিল থমথমে৷ বসিরহাট থেকে সন্দেশখালি যাওয়ার ৭২ নম্বর রুটের বাস ছিল বন্ধ৷ অন্যান্য যানবাহনও তেমন চলেনি৷ মঙ্গলবারের ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহান-সহ ২৮ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে৷ শাসকদলও ২৮ জন গ্রামবাসীর নামে থানায় অভিযোগ করেছে৷ পুলিশ প্রথম অভিযোগের ভিত্তিতে তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে৷ যদিও তৃণমূল নেতারা তাঁদের দলীয় কর্মী বলে মানতে নারাজ৷ জেলা তৃণমূল সভাপতি নির্মল ঘোষ জানান, সন্দেশখালির ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়৷ দুষ্কৃতীদের দু'টি দল বোমা-গুলির লড়াই চালায়৷ আজকের বন্্ধে দলীয় কর্মীদের সংযত থাকার আবেদন জানান নির্মলবাবু৷

No comments:

Post a Comment