Saturday, May 3, 2014

টাকা পাননি, এমপিএসে আমানতকারীরা আদালতে

টাকা পাননি, এমপিএসে আমানতকারীরা আদালতে

এই সময়: সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই হলেও আর একটি অর্থলগ্নি সংস্থা এমপিএস নিয়ে উদাসীন রাজ্য সরকার৷ এমনটাই অভিযোগ ওই সংস্থায় আমানতকারীদের৷ 

সরকারের এহেন উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ এই আমানতকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ প্রায় এগারোশো আমানতকারী এমপিএস-এ বিনিয়োগ করে টাকা না-পেয়ে ইনভেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন গড়ে আন্দোলনে নামছেন৷ ইতিমধ্যেই সংগঠনটি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে লগ্নি করা টাকা ফেরত পেতে তাঁদের হস্তক্ষেপ চেয়েছে৷

বিনিয়োগকারীদের টাকা না-পাওয়ার দাবি অবশ্য মানতে চাননি এমপিএসের চেয়ারম্যান প্রমথনাথ মান্না৷ উল্টে, টাকা ফেরত দিতে না-পারার দায় তিনি চাপিয়ে দিচ্ছেন রাজ্য সরকারের ঘাড়েই৷ তাঁর দাবি, সারদা কেলেঙ্কারির পরই রাজ্য সরকার এমপিএস-এর সম্পত্তি বিক্রির উপর নিষেধজ্ঞা জারি করে৷ ফলে ব্যবসায় টাকা আমানত কমে যাওয়ায় সম্পত্তি বিক্রি করে আমানতকারীদের পাওনা মেটানো যাচ্ছে না৷ কলকাতা হাইকোর্ট এ ব্যাপারে তাঁদের পক্ষে রায় দিলেও রাজ্য সরকার সম্পত্তি বিক্রিতে সম্মতি না-দেওয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে৷

ইনভেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অরুণ চক্রবর্তী ও সম্পাদক কিঞ্জল ভট্টাচার্য শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, এমপিএসএ-এ প্রায় ১৮ লক্ষ আমানতকারী রয়েছে৷ এজেন্টের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ আশি হাজার৷ কৃষিজ শিল্পের নামে এই টাকা তোলা হয়েছিল৷ দেখা যাচ্ছে, গত বছর এপ্রিলের পর থেকে যাঁদের আমানতের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাঁরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না৷ বহু আমানতকারীর মেয়ের বিয়ে আটকে গিয়েছে৷ বিনা চিকিত্‍সায় মরতে বসেছেন অনেকে৷ এমনকি, মাসিক আয় প্রকল্পে টাকা রেখেও বিপাকে পড়েছেন বহু আমানতকারী৷ প্রথমে সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, মাসিক আয় প্রকল্পে যাঁদের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাঁদের এখনই মূলধন ফেরত দেওয়া হবে না৷ তবে ফেরত দিতে না-পারার জন্য ৮ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হবে৷ কিন্ত্ত তা-ও দেওয়া হয়নি৷

কিঞ্জলবাবু বলেন, টাকা পেতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম৷ গত ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিদেশ দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্ত্ত কোনও জবাব মেলেনি৷

প্রমথনাথ মান্না বলছেন, 'সারদা কেলেঙ্কারির পর টাকার জোগান কমে যাওয়ায় আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে সমস্যা হয়েছে৷ এ জন্য কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় আমাদের যে সম্পত্তি রয়েছে, তা বিক্রি করতে উদ্যোগ নিয়েছিলাম৷ কলকাতা হাইকোর্ট আমাদের হয়ে রাজ্য সরকারকে সম্পত্তি বিক্রির অনুমতি দিতে নির্দেশ দিলেও, রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞায় তা করা যাচ্ছে না৷' তাঁর দাবি, 'এরই মধ্যে আমরা এখনও পর্যন্ত ২৫০ কোটি টাকা আমানতকারীদের মিটিয়েছি৷ আরও ৮০ কোটি টাকা রয়েছে৷ সম্পত্তি বিক্রি করতে পারলে এমপিএস-এর কৃষিজাত শিল্পের উত্‍পাদন বাড়ানো সম্ভব হত৷ এতে আমানতকারীদের লাভ হত৷' আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেছেন, 'আমরা তো সারদার মতো এমপিএস অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যাইনি৷ আমানতকারীরা এলে তাঁদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করি৷'

No comments:

Post a Comment