ডাক্তারিতে ৭৫০ আসন কমল, উদ্বিগ্ন ছাত্রছাত্রীরা
অনির্বাণ ঘোষ
দিন কয়েক আগেই যাঁরা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ৷ রাজ্যে ডাক্তারির আসন কমল৷ এ বার আর ২২০০ নয়, মাত্র ১৪৫০ জন পড়ুয়া ডাক্তারি পড়তে পারবেন এ রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে৷ অর্থাত্ , সাড়ে সাতশো সম্ভাব্য ডাক্তারি পড়ুয়ার কপাল পুড়ল৷ পরিকাঠামোর ভয়াবহ ঘাটতি আর শিক্ষক-চিকিত্সকের অভাবের জেরে রাজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এমবিবিএস আসনের স্বীকৃতি কেড়ে নিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)৷ এই আসনগুলি গত তিন বছরে বেড়েছিল৷ কিন্তু স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিষয়ক দেশের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা এমসিআই-এর এই সিদ্ধান্তের জেরে সেই আসনগুলির প্রায় সব ক'টিই অনুমোদন হারাল৷ এর ফলে, এ রাজ্যে স্নাতক পর্যায়ে চালু মেডিক্যাল কলেজগুলির ৭৫০ আসনে চলতি বছর থেকে আর ছাত্রভর্তি সম্ভব হবে না বলে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য-শিক্ষা মহল৷ শুক্রবারই এ সংক্রান্ত চিঠি দিল্লি থেকে স্বাস্থ্যভবনে এসে পৌঁছেছে বলে জানান রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়৷
যদিও 'ছাত্রভর্তি শুরু হতে এখনও মাস তিনেক দেরি আছে' যুক্তি দিয়ে, এ বিষয়ে রাজ্যের তরফে এমসিআই-এর কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সুশান্তবাবু৷ কিন্তু জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকা প্রকাশিত হওয়ার নির্ধারিত সময় যেহেতু ক্রমেই এগিয়ে আসছে, তাই কেরিয়ার নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ডাক্তারি পড়তে আগ্রহী ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা৷ তাঁদের আশঙ্কা, এ বছর এমবিবিএসে ভর্তি হওয়ার উপযোগী আসনের সংখ্যা রাজ্যে কমে গিয়ে ১৪৫০ হয়ে যাওয়ায় ডাক্তারি পড়ার সুযোগও সঙ্কুচিত হয়ে পড়ল৷ চলতি মাসের শেষে অথবা জুনের গোড়াতেই সম্ভবত মেধাতালিকা প্রকাশিত হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, পরিদর্শনের উপর ভিত্তি করে এমবিবিএস আসনগুলিতে ছাত্রভর্তির অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত এমসিআই-এর এগজিকিউটিভ কমিটি আগেই নিয়ে নিয়েছিল৷ গত সোমবারের বৈঠকে এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়, সেই সিদ্ধান্তই চূ.ডান্ত৷ কারণ, এ বিষয়ে এমসিআই-এর গৃহীত যে সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছিল, তাতে কেন্দ্রীয় সরকারও সম্মতি জানিয়েছে সম্প্রতি৷ এর পরই রাজ্যকে চিঠি পাঠায় এমসিআই৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যমহল যে কারণে আরও উদ্বিগ্ন তা হল, এ রাজ্যের যে-সব মেডিক্যাল কলেজ সম্পূর্ণ বা আংশিক রূপে এমবিবিএস আসনের অনুমোদন হারিয়েছে, তার মধ্যে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, সাগর দত্তের মতো নতুন কলেজ যেমন আছে, তেমনই এনআরএস, বাঁকুড়া সম্মিলনী, বর্ধমানের মতো পুরোনো মেডিক্যাল কলেজের নামও রয়েছে৷ ২০১৩-তে বাঁকুড়া-বর্ধমানে যে ৫০টি করে এবং ২০১১ থেকে এনআরএসে যে ১০০টি এমবিবিএস আসন বেড়েছিল, সেগুলিরও অনুমোদন কেড়ে নিয়েছে এমসিআই৷ ছাত্রভর্তির অনুমতি হারিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ জোকার ইএসআই এবং বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি-ও৷
সরকারি চিকিত্সকেরা মনে করছেন, এতগুলি এমবিবিএস আসনে অনুমোদন হারানোর ঘটনা আদতে স্বাস্থ্য-শিক্ষা কর্তাদের অপদার্থতাই প্রমাণ করে৷ উল্লেখ্য, গত দু'-তিন বছর ধরেই কখনও স্বাস্থ্যসচিব, কখনও বা রাজ্যের মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা পরিকাঠামো শোধরানোর মুচলেকা দিয়ে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ছাত্রভর্তির ছাড়পত্র হাসিল করে এসেছেন৷ কিন্ত্ত এত বেশি সংখ্যক আসনের অনুমোদন হারানোর নজির স্মরণকালে নেই৷ এতে স্পষ্ট, আমলাদের দেওয়া মুচলেকা অনুযায়ী পরিকাঠামো উন্নয়ন আদৌ হয়নি এ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ক্ষেত্রে৷ একই কারণে (শিক্ষক ও পরিকাঠামার ঘাটতি) পিজি-তে গ্যাস্ট্রো-সার্জারি, আরজি করে গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি এবং কলকাতা মেডিক্যালে কার্ডিওলজি বিষয়ে পোস্ট-ডক্টরাল পাঠ্যক্রম শুরুর অনুমতি দেয়নি এমসিআই৷
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্তবাবুর অবশ্য বক্তব্য, শুধু এ রাজ্যের নয়, অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে৷ তাঁর কথায়, 'এমসিআই যা বাড়াবাড়ি শুরু করেছে পরিকাঠামো নিয়ে, তাতে দেশ থেকে মেডিক্যাল কলেজ উঠে যাওয়ার জোগাড়!' যদিও তিনি জানান, এতগুলি আসন জলে যেতে দেবে না রাজ্য৷ আপাতত শুধুমাত্র অনুমোদন খারিজের চিঠিটাই এসেছে৷ কারণ কিছু জানায়নি এমসিআই৷ 'ঠিক কী কী কারণ দর্শিয়ে অনুমোদন বাতিল করা হল, সেগুলো জানার পরই পরিকাঠামো সংশোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে এমসিআই-কে,' মন্তব্য অধিকর্তার৷ তাঁর আশা, এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে জুলাই-অগস্টের আগে ছাত্রভর্তি হয় না৷ যে মাস তিনেক সময় এর মধ্যে মিলছে, তার মধ্যে 'একটা কোনও ব্যবস্থা' ঠিক হয়ে যাবে৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/medical-students-in-trouble-as-seats-are-reduced/articleshow/34570176.cms?
অনির্বাণ ঘোষ
দিন কয়েক আগেই যাঁরা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ৷ রাজ্যে ডাক্তারির আসন কমল৷ এ বার আর ২২০০ নয়, মাত্র ১৪৫০ জন পড়ুয়া ডাক্তারি পড়তে পারবেন এ রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে৷ অর্থাত্ , সাড়ে সাতশো সম্ভাব্য ডাক্তারি পড়ুয়ার কপাল পুড়ল৷ পরিকাঠামোর ভয়াবহ ঘাটতি আর শিক্ষক-চিকিত্সকের অভাবের জেরে রাজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এমবিবিএস আসনের স্বীকৃতি কেড়ে নিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)৷ এই আসনগুলি গত তিন বছরে বেড়েছিল৷ কিন্তু স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিষয়ক দেশের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা এমসিআই-এর এই সিদ্ধান্তের জেরে সেই আসনগুলির প্রায় সব ক'টিই অনুমোদন হারাল৷ এর ফলে, এ রাজ্যে স্নাতক পর্যায়ে চালু মেডিক্যাল কলেজগুলির ৭৫০ আসনে চলতি বছর থেকে আর ছাত্রভর্তি সম্ভব হবে না বলে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য-শিক্ষা মহল৷ শুক্রবারই এ সংক্রান্ত চিঠি দিল্লি থেকে স্বাস্থ্যভবনে এসে পৌঁছেছে বলে জানান রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়৷
যদিও 'ছাত্রভর্তি শুরু হতে এখনও মাস তিনেক দেরি আছে' যুক্তি দিয়ে, এ বিষয়ে রাজ্যের তরফে এমসিআই-এর কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সুশান্তবাবু৷ কিন্তু জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকা প্রকাশিত হওয়ার নির্ধারিত সময় যেহেতু ক্রমেই এগিয়ে আসছে, তাই কেরিয়ার নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ডাক্তারি পড়তে আগ্রহী ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা৷ তাঁদের আশঙ্কা, এ বছর এমবিবিএসে ভর্তি হওয়ার উপযোগী আসনের সংখ্যা রাজ্যে কমে গিয়ে ১৪৫০ হয়ে যাওয়ায় ডাক্তারি পড়ার সুযোগও সঙ্কুচিত হয়ে পড়ল৷ চলতি মাসের শেষে অথবা জুনের গোড়াতেই সম্ভবত মেধাতালিকা প্রকাশিত হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, পরিদর্শনের উপর ভিত্তি করে এমবিবিএস আসনগুলিতে ছাত্রভর্তির অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত এমসিআই-এর এগজিকিউটিভ কমিটি আগেই নিয়ে নিয়েছিল৷ গত সোমবারের বৈঠকে এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়, সেই সিদ্ধান্তই চূ.ডান্ত৷ কারণ, এ বিষয়ে এমসিআই-এর গৃহীত যে সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছিল, তাতে কেন্দ্রীয় সরকারও সম্মতি জানিয়েছে সম্প্রতি৷ এর পরই রাজ্যকে চিঠি পাঠায় এমসিআই৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যমহল যে কারণে আরও উদ্বিগ্ন তা হল, এ রাজ্যের যে-সব মেডিক্যাল কলেজ সম্পূর্ণ বা আংশিক রূপে এমবিবিএস আসনের অনুমোদন হারিয়েছে, তার মধ্যে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, সাগর দত্তের মতো নতুন কলেজ যেমন আছে, তেমনই এনআরএস, বাঁকুড়া সম্মিলনী, বর্ধমানের মতো পুরোনো মেডিক্যাল কলেজের নামও রয়েছে৷ ২০১৩-তে বাঁকুড়া-বর্ধমানে যে ৫০টি করে এবং ২০১১ থেকে এনআরএসে যে ১০০টি এমবিবিএস আসন বেড়েছিল, সেগুলিরও অনুমোদন কেড়ে নিয়েছে এমসিআই৷ ছাত্রভর্তির অনুমতি হারিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ জোকার ইএসআই এবং বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি-ও৷
সরকারি চিকিত্সকেরা মনে করছেন, এতগুলি এমবিবিএস আসনে অনুমোদন হারানোর ঘটনা আদতে স্বাস্থ্য-শিক্ষা কর্তাদের অপদার্থতাই প্রমাণ করে৷ উল্লেখ্য, গত দু'-তিন বছর ধরেই কখনও স্বাস্থ্যসচিব, কখনও বা রাজ্যের মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা পরিকাঠামো শোধরানোর মুচলেকা দিয়ে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ছাত্রভর্তির ছাড়পত্র হাসিল করে এসেছেন৷ কিন্ত্ত এত বেশি সংখ্যক আসনের অনুমোদন হারানোর নজির স্মরণকালে নেই৷ এতে স্পষ্ট, আমলাদের দেওয়া মুচলেকা অনুযায়ী পরিকাঠামো উন্নয়ন আদৌ হয়নি এ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ক্ষেত্রে৷ একই কারণে (শিক্ষক ও পরিকাঠামার ঘাটতি) পিজি-তে গ্যাস্ট্রো-সার্জারি, আরজি করে গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি এবং কলকাতা মেডিক্যালে কার্ডিওলজি বিষয়ে পোস্ট-ডক্টরাল পাঠ্যক্রম শুরুর অনুমতি দেয়নি এমসিআই৷
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্তবাবুর অবশ্য বক্তব্য, শুধু এ রাজ্যের নয়, অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে৷ তাঁর কথায়, 'এমসিআই যা বাড়াবাড়ি শুরু করেছে পরিকাঠামো নিয়ে, তাতে দেশ থেকে মেডিক্যাল কলেজ উঠে যাওয়ার জোগাড়!' যদিও তিনি জানান, এতগুলি আসন জলে যেতে দেবে না রাজ্য৷ আপাতত শুধুমাত্র অনুমোদন খারিজের চিঠিটাই এসেছে৷ কারণ কিছু জানায়নি এমসিআই৷ 'ঠিক কী কী কারণ দর্শিয়ে অনুমোদন বাতিল করা হল, সেগুলো জানার পরই পরিকাঠামো সংশোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে এমসিআই-কে,' মন্তব্য অধিকর্তার৷ তাঁর আশা, এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে জুলাই-অগস্টের আগে ছাত্রভর্তি হয় না৷ যে মাস তিনেক সময় এর মধ্যে মিলছে, তার মধ্যে 'একটা কোনও ব্যবস্থা' ঠিক হয়ে যাবে৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/medical-students-in-trouble-as-seats-are-reduced/articleshow/34570176.cms?
No comments:
Post a Comment