Saturday, May 31, 2014

দিনটা শুরু হোক নাচ দিয়ে

দিনটা শুরু হোক নাচ দিয়ে

স্যান্ড্রা বুলাক |

অস্কার বিজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী স্যান্ড্রা বুলাক। ১৯৬৪ সালের ২৬ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে স্পিড (১৯৯৪), দ্য লেক হাউস (২০০৬), দ্য প্রোপোজাল, দ্য ব্লাইন্ড সাইড (২০০৯), গ্র্যাভিটি (২০১৩) ইত্যাদি। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ২০১২ সালে তাঁকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে৷ ২০১৪ সালের ১৯ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিয়ন্সের ওয়ারেন ইস্টোন চার্টার স্কুলের সমার্বতনে স্যান্ড্রা বুলাক এই বক্তব্য রাখেন৷
স্যান্ড্রা বুলাকপ্রথমেই আমি ২০১৪ সালের স্নাতকদের অভিনন্দন জানাতে চাই। এমন দিনে আমি বারবার আমার সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কথা মনে করার চেষ্টা করছি। অদ্ভুত কথা হলো, গতকাল পর্যন্ত আমি সেদিনের কোনো কথাই মনে করতে পারছিলাম না৷ আমি সেদিন কেমন সেজেছিলাম, দেখতে কেমন লাগছিল—কিছুই মনে করতে পারছিলাম না। আমি গ্র্যাজুয়েশনের ছবিগুলো বের করে স্মৃতিচারণা করতে চেষ্টা করেছি।
সম্প্রতি আমার এক ভক্ত আমাকে একটি প্রশ্ন করে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল, আমি যদি অতীতে ফিরে যাই এবং তাঁকে আমার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে আমি কী বলব? প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হয়েছিল, ইশ্! এমন সুযোগ যদি আসত। আমার সেই ‘তরুণ আমি’কে অনেক কিছু বলতাম। গল্পের ঝাঁপি খুলে বসতাম। আমি তাকে দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিতাম।
যেকোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করো। অজানা কিছু নিয়ে ভয় পাওয়া বন্ধ করো। সত্যি বলতে, আমি যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতাম তা কখনোই ঘটেনি। দুনিয়ায় অন্য সব কিছুই নিয়মমাফিক ঘটে, কিন্তু আমি যা নিয়ে মাথার চুল ছিঁড়েছি তার কোনো অস্তিত্বই নেই। অজানা সব কিছু নিয়েই আমাদের ভয়। আমি যখন দুশ্চিন্তা নিয়ে কোনো কাজ করতাম, তার কিছুই আমার মনে থাকেনি। আমি সব ভুলে গেছি। দুশ্চিন্তায় আমার জীবনের অনেকগুলো মূল্যবান সময় হারিয়ে গেছে।
আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি তোমাদের বলতে চাই, তা হলো, লক্ষ্য যতটা পারো বড় মাত্রায় চিন্তা করবে। হু, অনেক বড়, অনেক উঁচু। যখন তুমি লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকবে, চারপাশে অনেক শব্দ আর কোলাহল শুনতে পাবে। এগুলো কিন্তু স্বাভাবিক। অন্যরা তোমাকে ব্যর্থ হিসেবে দেখতে চায়। এটা কিন্তু তোমার সমস্যা নয়, সমস্যাটি অন্যদের। তুমি কেন চিন্তা করবে। চেষ্টা করে যাও৷ আমি সব সময় আমার চেষ্টাগুলোর কথাই মনে রাখি। আমি ব্যর্থতার কথা মনে রাখি না। কারণ, সেই ব্যর্থতা তো আমার নয়। কোনো কিছুর চেষ্টা কখনোই ব্যর্থ হয় না। সব সময় সব কিছু ঠিক সময় হতেই হবে বলে কি কোনো কথা আছে? এখন হয়নি কিন্তু সামনে যে বড় কিছু হবে না তা কি তুমি নিশ্চিত জানো? অপেক্ষা করো, সুড়ঙ্গের শেষে আলো আছে। 
প্রতিদিন সকালে আমরা ঘরে যখন কোনো কাজ করি, বলো তো তখন আমরা কী করি? আমরা অনেকেই প্রতিদিন সকালে জোরে জোরে গান শুনি। আশপাশের কারও কথা চিন্তা না করেই পছন্দের সব গান শুনি। তুমি কেন এই কাজটি ঘরের বাইরে করতে পারো না? ‘তরুণ আমি’ এবং আজকের আমি তোমাদের তৃতীয় যে পরামর্শ দিতে চাই তা খুব সাধারণ। প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে একটু হলেও নাচানাচি করো। ঘর থেকে বাইরের পৃথিবীতে পা রাখার আগে এই কাজটি নিয়মিত করবে। সেই নাচানাচিই কিন্তু তোমার পদক্ষেপ বদলে দেবে। ফুরফুরে সেই মেজাজ তোমার চারপাশের দুনিয়াকে বদলে দেবে। তো, নাচো। প্রতিবেলা খাবারে সুস্বাস্থ্যের জন্য একটু হলে সবুজ কিছু গ্রহণ করো।
সমাজ বদলে দেওয়ার জন্য সামান্য কিছু হলেও করার চেষ্টা করো। সবার সামনে নাকের সর্দি না ঝেড়ে, একটু আড়ালে গিয়ে নাক পরিষ্কার করো। নিজেকে দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে পারো। যখন কেউ তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করবে, তুমিও তাকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরো। তাঁর ওপর হেলান দাও৷ তাঁর ওপর নির্ভর করো৷ সব সময় মনে রেখো, আমাদের জীবনে নির্ভর করার জন্য, হেলান দেওয়ার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন। 
খেলার মাঠে কেউ যদি তোমার সঙ্গে খেলতে না চায়, তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা কোরো না৷ এটা স্বাভাবিক ধরে ‘ইটস ওকে’ বলে মেনে নাও। তুমি তো জানোই, সবাই তোমাকে ভালো নাই বাসতে পারে। কিন্তু তুমি তো যারা তোমাকে ভালোবাসে তাদের খুঁজে বের করতে পারো। খেলার মাঠে কে তোমার সঙ্গে খেলবে তাকে খুঁজে বের করো। যারা তোমাকে উৎসাহ দেবে, বিপদে ভরসা দেবে, তাদের থেকে কখনোই দূরে যাবে না।
আর একটা কথা তোমাদের না বললেই নয়, তোমার কিসে আনন্দ তা খুঁজে বের করো। আজকের দিনটি তোমার জন্য খারাপ হবে না ভালো হবে তা কিন্তু নির্ধারণ করছে তোমার ওপরেই। তোমার এই প্রচেষ্টাই কিন্তু তোমার আজীবন মনে থাকবে। তোমাকে যেসব ‘কী, কেন, যদি’ বিরক্ত করে তা কিন্তু তোমার কখনোই মনে থাকবে না। মাস দুয়েক পরেই তুমি ব্যস্ত হয়ে পড়বে নতুন কিছু নিয়ে। তোমার সঙ্গে সব সময় ছায়ার মতো পিছে লেগে থাকবে তোমার আনন্দ। তাই আনন্দ পাও এমন কিছুর সঙ্গে সব সময় যুক্ত থাকো৷ ধন্যবাদ৷
ইংরেজি থেকে ভাষান্তর জাহিদ হোসাইন খান
Prothom Alo

মন্ত্রীদের প্যানেল পদ্ধতি ভেঙে দিলেন মোদি

মন্ত্রীদের প্যানেল পদ্ধতি ভেঙে দিলেন মোদি


ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল শনিবার সে দেশের গ্রুপস অব মিনিস্টারস (জিওএম) ও এমপাওয়ার্ড গ্রুপস অব মিনিস্টার্স (ইজিওএম) পদ্ধতি ভেঙে দিয়েছেন৷ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন গত ইউপিএ সরকারের সময়ে মন্ত্রীদের এ প্যানেল দুটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷ খবর এনডিটিভির৷
সূত্র জানায়, মন্ত্রীদের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত প্যানেল পদ্ধতি ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷
জিওএম পদ্ধতি ভেঙে দেওয়ার পর এখন থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মিন্ত্রপরিষদ সচিব কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনে দায়িত্ব পালন করবেন৷
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ গত ইউপিএ সরকারের সময় বেশির ভাগ নীতিনির্ধারণী ইস্যু এসব প্যানেলের কাছে পাঠানো হতো৷ ফলে নানা জনের নানা মত আর মন্ত্রীদের সীমিত ক্ষমতার কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হতো৷
জিওএম পদ্ধতির কারণে ইউপিএ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল৷

উত্তর প্রদেশে ধর্ষণ ‘ক্ষতিপূরণ নয় বিচার চাই’

উত্তর প্রদেশে ধর্ষণ

‘ক্ষতিপূরণ নয় বিচার চাই’


ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গতকাল উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে বিক্ষোভ করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নারী শাখার কর্মীরা৷ তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন l ছবি: রয়টার্সধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গতকাল উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে বিক্ষোভ করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নারী শাখার কর্মীরা৷ তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন l ছবি: রয়টার্সভারতের উত্তর প্রদেশে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার দুই কিশোরীর একজনের বাবা সরকারের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বলেছেন, ‘ক্ষতিপূরণ আমার দরকার নেই, আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই৷ তাঁরা আমার মেয়েকে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে, আমিও তাঁদের ফাঁসি চাই৷’ খবর এনডিটিভির৷
এদিকে, নিহত কিশোরীর পরিবারের এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য পরিবর্তনের জন্য পুলিশ চাপ দিচ্ছে৷ এই অবস্থায় ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার ন্যায়বিচার নিয়ে তাঁদের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে৷
রাজ্যের বাদাউন শহরের কারতা গ্রামের ওই ব্যক্তির ১৫ বছরের কিশোরী মেয়ে ও মেয়েটির চাচাতো বোন (১৪) গত মঙ্গলবার রাতে নিখোঁজ হয়৷ পরদিন গ্রামের একটি গাছে তাঁদের লাশ ঝুলে থাকতে দেখা যায়৷ লাশের ময়নাতদন্তে দুজনকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রমাণ মেলে৷ এ ঘটনার পর গতকাল শনিবার পর্যন্ত পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে৷ এঁদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্যও আছেন৷
কিশোরীদের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে কিশোরীদের জীবিত উদ্ধার করা যেত৷ তারা থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও পুলিশ প্রথমে গ্রহণ করেনি৷ পরে এলাকাবাসীর চাপে তারা ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা নেয়৷
দুই কিশোরীকে গণধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদ ও অপরাধীদের বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবার রাজধানী নয়াদিল্লি ও উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ হয়েছে৷ উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে ভারতীয় জনতা পার্টির নারী কর্মীরা বিক্ষোভ করেন৷ এ সময় তাঁরা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন ও তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন৷
রাহুলের সাক্ষাৎ: ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির সহসভাপতি রাহুল গান্ধী গতকাল উত্তর প্রদেশে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার দুই কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন৷ এ সময় রাহুলের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও তাঁর একান্ত সহযোগী মধুসূদন মিস্ত্রি৷

বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে, বেড়েছে অন্যান্য খাদ্যশস্যের

বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে, বেড়েছে অন্যান্য খাদ্যশস্যের


মাঠে ধান কাটা ও ঝাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত ফিলিপাইনের কৃষকেরা l ছবি: বিশ্বব্যাংকআন্তর্জাতিক বাজারে আবার গম, ভুট্টা, চিনি, সয়াবিন প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। তবে যাদের প্রধান খাদ্য ভাত তাদের জন্য সুখবর হলো, একই সময়ে চালের দাম ১২ শতাংশ কমেছে।
চলতি বছরের প্রথম চার মাস জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে সার্বিকভাবে খাদ্যপণ্যের দাম আগের চার মাসের চেয়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গম ও ভুট্টার দাম। এই দুটি পণ্যের মূল্য যথাক্রমে ১৮ ও ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালের আগস্টের পর এই প্রথম এমনটি ঘটেছে। বিশ্বব্যাংক এই তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ও দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে চাহিদা বৃদ্ধি, শীর্ষস্থানীয় খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে খরা পরিস্থিতি ও ইউক্রেন সংকটের কারণেই মূলত অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদেরা বলেন, ২০১৩ সালে বিশ্বে বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। তবে তাঁরা চলতি ২০১৪ সালে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন ও ব্যাপক হারে মজুত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বিশ্বব্যাংক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে অব্যাহত খরায় উৎপাদনে হ্রাস ও দেশে দেশে আমদানি চাহিদা বৃদ্ধি (প্রধানত চীনে) পাওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
একই সঙ্গে পূর্ব ইউরোপের ব্রেড বাস্কেট ‘খাদ্যভান্ডার’ খ্যাত ইউক্রেনে রাজনৈতিক সংকট-অনিশ্চয়তা এবং মুদ্রার বিনিময় হার পড়ে যাওয়াটাও আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। কারণ, দেশটি হলো বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম গম ও তৃতীয় বৃহত্তম ভুট্টা রপ্তানিকারক। সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেই যখন আগের বছরের তুলনায় গমের দাম ৩৭ শতাংশ ও ভুট্টার দাম ৭৩ শতাংশ বেড়ে যায়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তো প্রভাব পড়বেই। সে অনুযায়ীই বিশ্ববাজারে আগের প্রান্তিক অর্থাৎ গত বছরের শেষ তিন মাসের চেয়ে গমের দাম ১৮ শতাংশ ও ভুট্টার দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে।
তবে ইউক্রেনকে ঘিরে বিরাজমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা অনিশ্চয়তায় রূপ নিলে ভবিষ্যতে দেশটির উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হবে—এমন আশঙ্কাতেই পণ্য দুটির দাম বাড়ে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১২ সালের গ্রীষ্মে বিশ্বের প্রধান খাদ্যপণ্যগুলোর দাম বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার পরে আর কখনো এতটা বেশি দেখা যায়নি।’
আন্তর্জাতিক বাজারে অন্য খাদ্যপণ্যগুলোর মধ্যে আগের তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চিনির দাম ১৩ শতাংশ ও সয়াবিনের ৬ শতাংশ বেড়েছে।
একই সময়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামও ৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১০৪ মার্কিন ডলারে উঠেছে।
এদিকে জাতিসংঘও (ইউএন) গত মাসে জানিয়েছে, গত মার্চে বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। এই সংস্থাও তখন বলেছে, খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রধান দেশগুলোতে বৈরী আবহাওয়া ও ইউক্রেন সংকটের কারণেই মূলত দাম বেড়েছে।
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) তাদের মার্চ মাসের খাদ্যসূচকেও গত বছরের মে মাসের পর থেকে খাদ্যপণ্যের দাম ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধির তথ্য উল্লেখ করেছে।
এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, খাদ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি বিশ্বের সবচেয়ে ঝঁুকিপূর্ণ দেশগুলোতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এতে খাদ্য নিয়ে দাঙ্গা ও সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যপণ্যকে কেন্দ্র করে ৩৭টি দেশে ৫১টি দাঙ্গার ঘটনা দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আনা রেভেঙ্গা বলেন, ‘আগামী কয়েক মাস আমাদের খাদ্যপণ্যের দামের ওপর নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে যে দাম বাড়ার কারণে বিশ্বব্যাপী স্বল্প আয়ের মানুষজনের ওপর অতিরিক্ত প্রভাব পড়ছে না।’
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতেও বলা হয়েছে, ‘খাদ্যের দাম সংঘাত ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াবে। সে জন্য খাদ্যের দাম বাড়ার প্রভাব মোকাবিলায় নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।’
সূত্র: বিশ্বব্যাংক ও এএফপি

মেসির রক্তেই রয়েছে ফুটবল

মেসির রক্তেই রয়েছে ফুটবল

মো. মনিরুল ইসলাম |

লিওনেল মেসিলিওনেল মেসিস্নিতজেল নাপোলিতানা৷ আর্জেন্টাইনরা বলেন মিলানেসা এ লা নাপোলিতানা৷ বার্সেলোনায়ও পাওয়া যায়৷ মেসির সবচেয়ে প্রিয় খাবার৷ গরুর মাংস, ডিম, টমেটো, পনির প্রভৃতি দিয়ে তৈরি সুস্বাদু পুষ্টিকর খাবার ৷ বার্সেলোনায় গেলে ছেলের জন্য সপ্তাহে অন্তত দু-তিনবার খাবারটি তৈরি করতেই হয় সেলিয়াকে৷ মায়ের বিশ্বাস, এই স্নিতজেল নাপোলিতানা ও মেইট (আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী চা) খায় বলেই তাঁর ছেলে গোলের পর গোল করতে পারে৷ 
চকোলেট ও বিস্কুটও পছন্দ৷ বিশেষ করে আলফাজোরস (ক্যারামেলযুক্ত বিস্কুট) খুব পছন্দ মেসির৷ এতই পছন্দ যে শৈশবে আলফাজোরসের লোভ দেখিয়ে কোচরা তাঁকে দিয়ে গোল করিয়ে নিতেন৷ শর্ত ছিল, প্রতি গোলে একটি আলফাজোরস৷ একবার তো সেই লোভে এক ম্যাচে আট গোল করে বসল ছোট্ট মেসি৷ কোচও কথা রাখলেন৷ একসঙ্গে আটটি আলফাজোরস পেয়ে ছোট্ট মেসির সে কী আনন্দ!
সেলিয়া মারিয়া কুসিত্তিনি ওলিভেরা ডি মেসি৷ পুরো নামটা লম্বা। তবে মেসির মা সবার কাছে সেলিয়া নামেই পরিচিত৷ তাঁর বোনের নামও কম লম্বা নয়, মার্সেলা কুসিত্তিনি ডি বিয়ানকুচ্চি৷ মেসির সবচেয়ে প্রিয় খালা, ধর্ম মাও ৷ তাঁরই দুই ছেলে ম্যাক্সিমিলিয়ানো ও ইমানুয়েল এবং মেসি ও তাঁর দুই বড় ভাই মাতিয়াস ও রদ্রিগো ছিলেন শৈশবের খেলার সাথি৷ সুযোগ পেলেই বল নিয়ে বেরিয়ে পড়ত পাঁচজনের দলটি৷ সেলিয়া বলেন, ‘রোববারে আমি ও আমার বোন যখন আমাদের মায়ের বাড়িতে যেতাম, তখন এই পাঁচ ভাই বল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ত৷ দুপুরের খাবারের আগ পর্যন্ত তারা ফুটবলেই মেতে থাকত৷’
মেসির তখনো ১০ বছর হয়নি৷ তাঁর প্রিয় দাদিমা মারা যান৷ মেসির আজকের ‘মেসি’ হয়ে ওঠার পেছনে যদি গোড়াতে কারও প্রত্যক্ষ ভূমিকা থেকে থাকে, তা ওই দাদির৷ নাতিকে নিয়ে তিনিই মাঠে যেতেন। ছোট্ট বলে কেউ দলে নিতে চাইত না৷ কিন্তু কোচদের সঙ্গে পীড়াপীড়ি করে মেসিকে মাঠে নামিয়ে দিতেন দাদিই। খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতেন আর চিৎকার করে বলতেন, ‘লিওকে পাস দাও, ছোট্ট ছেলেটাকে পাস দাও—সে গোল করতে পারে৷’ সেই ছোট্ট মেসিই আজ কত বড় তারকা! ফুটবলে সম্ভাব্য প্রায় সব অর্জন তাঁর পায়ের তলায় লুটোপুটি খাচ্ছে৷ স্বর্গ থেকে নাতির এত সাফল্য দেখে নিশ্চয়ই আনন্দাশ্রু ঝরে দাদিমার!
খুব ছোট্টটি থেকেই মেসি ছিলেন অবিশ্বাস্য। তখনো বয়স পাঁচ বছর হয়নি, কিন্তু তিনি এমনভাবে বল নিয়ন্ত্রণ করতেন যা অন্য কেউ পারত না। তা নিয়ে ঝামেলাও কম হয়নি। খালা মার্সেলার ভাষায়, ‘রাস্তায় খেলার সময় সে সব সময় বাড়ির সদর দরজায় বল মারত। প্রতিবেশীরা যেত চটে। তারা তাকে আস্তে খেলতে বলত।’
বোনের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সেলিয়া বললেন, ‘এ জন্য মেসির বড় শাস্তি ছিল, তাকে খেলতে যেতে না দেওয়া। তারপর শুরু হতো মেসির পীড়াপীড়ি। “না, মা প্লিজ, চিন্তা কোরো না, আমি সত্যিই ভালোভাবে খেলব। আমি কথা দিচ্ছি...আমাকে খেলতে যেতে দাও”।’
ফুটবলার হিসেবে যেমন, মানুষ হিসেবেও অনন্য মেসি। ছেলের আচার-স্বভাবে মুগ্ধ সেলিয়া, ‘আটলান্টিকের এপার-ওপার দুপারের মানুষই তাকে খুবই ভালোবাসে। কারণ, সে যেমন সাদামাটা, আন্তরিক, ভালো মানুষ; তেমনি সব সময় অন্যকে নিয়ে ভাবে। মা-বাবা, ভাই-বোন, ভাতিজা-ভাতিজি, কাজিন— সবাইকে নিয়েই তার চিন্তা। নিজের চারপাশের সবাইকেই খুশি দেখতে চায় সে।’
শুধু স্বভাব নয়, মেজাজেও অসম্ভব রকমের শান্ত ফুটবল জাদুকর। শৈশব থেকেই তিনি কারও সঙ্গে ঝামেলায় যান না। যেমন শান্তশিষ্ট, তেমিন পরিশ্রমীও। কখনো আলসেমি করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
ভদ্রতা, বিনয়, লজ্জা—সেই ছোটবেলা থেকেই। আজও কোনো পরিবর্তন নেই। তারকাখ্যাতি তাঁকে মোটেও পাল্টাতে পারেনি। এটা তাঁর কাছে পাত্তাই পায় না। এ কারণেই ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলা, তাঁদের অটোগ্রাফ দেওয়া—কোনো কিছুতেই তাঁর বিরক্তি নেই।
ছেলেকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই সেলিয়ার, ‘বাড়িতে ফিরলে রাতে আমি ওর পাশে গিয়েই শুয়ে পড়ি। আমরা অনেকক্ষণ গল্প করি। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। রসিকতাও করি। বলি, পৃথিবীর সব মেয়েও তোকে এমন প্রশান্তি দিতে পারবে না। তখন সে লজ্জায় লাল হয়ে বলে, “কী যে বলো না মা!”’
মেসির ফুটবলের হাতেখড়িটা কোথায়, কার কাছে? এত ফুটবলশৈলী তিনি কোত্থেকে শিখেছেন? এটা কি ওর জিনের মধ্যেই ছিল? প্রশ্নগুলো অন্য সবার কাছে যেমন উত্তরহীন, তেমনি সেলিয়ার কাছেও, ‘আমি নিজেও জানি না, ওর বাবা নাকি দুই ভাই, না কাজিনদের কাছ থেকে রপ্ত করেছে। তবে আমাদের পরিবারের সবাই ফুটবল ভালোবাসে। আমি নিজেও একজন দারুণ ভক্ত। আমার আদর্শ ম্যারাডোনা। তার গড়ে ওঠা, গোল সবকিছু আমাকে গভীরভাবে টানে। তার সঙ্গে যখন সাক্ষাৎ হয়, আমি বলেছিলাম, আমার ছেলেও একদিন মস্ত বড় ফুটবলার হবে। তুমি তাকে প্রশিক্ষণ দিতে পারো। দেখুন, আজ সত্যিই তা হয়েছে। সে কতদূর এসেছে...৷’
অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যের মতো মেসির প্রথম ফুটবল পাঠটাও কেমন রহস্যে ঘেরা!
সূত্র: বিভিন্ন সময়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন, একাধিক ওয়েবসাইট ও লুকা কাইয়োনির বই মেসি৷

Prothom Alo

এসপিজি প্রয়োজন প্রিয়াঙ্কার, মন্তব্য শত্রুঘ্ন সিনহার

নতুন বার্তা ডেস্ক
নয়া দিল্লি: বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে একের পর এক মন্তব্য করে চলেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা৷ শুক্রবারের পর শনিবারও ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন অভিনয় জগত থেকে রাজনীতিতে পা রাখা এই বিজেপি নেতা৷এদিন তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কা বঢড়ার পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা পাওয়া উচিত৷ অতীতে একসময় তার পরিবার দেশের জন্য প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছে৷ তিনি এই নিরাপত্তার দাবিদার৷

শত্রুঘ্ন সিনহার এধরমের মন্তব্য যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব৷ যদিও, গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি৷বিমানবন্দরে  সিকিউরিটি চেকিংয়ে কোনো রকম বিশেষ সুবিধা চান না বলে শুক্রবারই এসপিজি ডিরেক্টরকে চিঠি লেখেন সোনিয়া তনয়া৷ বিমানবন্দরে সিকিওরিটি চেকিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ সুবিধা পেতেন প্রিয়াঙ্কা ও তার স্বামী রবার্ট বঢড়া৷ কিন্তু, এদিন সেই সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন প্রিয়াঙ্কা৷ বিমানবন্দরে রবার্টি বঢ়ড়ার ‘বিশেষ মর্যাদা’ অপসারিত হতে পারে বলে  গতকালই অসমারিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন৷ তারপরই এসপিজি প্রধানকে চিঠি লেখেন প্রিয়াঙ্কা৷ আর তার প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য এই শত্রুঘ্ন সিনহার৷

বৃহস্পতিবারও একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে দলবিরোধী মন্তব্য করে বসেন এই বিজেপি নেতা৷বয়স ৭৫ বছরের উর্ধ্বে হওয়ায় মোদীর মন্ত্রিসভায় আডবাণী-জোশীর ব্রাত্য থাকাকে তিনি সমর্থন করেন না বলে সাফ জানিয়েছিলেন৷তিনি বলেছিলেন,বয়সের থেকেও অনেক বেশি মূল্যবান অভিজ্ঞতা৷৪৫ বছরের কোনো নেতার থেকে লালকৃষ্ণ আদবানি ও মুরলী মনোহর জোশী অনেক বেশি দক্ষ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি৷- ওয়েবসাইট।

ভারতে সাত কোটি শিশু চিকিৎসা-সেবা থেকে বঞ্চিত

Sat, 31 May, 2014 03:02:32 PM
নতুন বার্তা ডেস্ক
নিউ ইয়র্ক: পাঁচ বছরের কম বয়স, এমন ভারতীয় ছেলে-মেয়েদের ৫৩ শতাংশই নানা রোগভোগের নূন্যতম চিকিৎসা অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভারতে এই মুহূর্তে এরকম ছেলেপুলের সংখ্যা ছয় কোটি ৭০ লক্ষ।

গোটা বিশ্বে যত শিশু বেসিক হেলথ কেয়ার থেকে বঞ্চিত তার এক তৃতীয়াংশেরই বাস ভারতে।
বিশ্বের ৫৫টি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে ‘স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড মাদারস’ শীর্ষক রিপোর্টে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ঘানা ও ইরিত্রিয়ার মতো দেশে এই বয়সীদের যে হাল, ভারতেও তাই। ফলে পাঁচের নীচে বয়স- এরকম গরীব ছেলে-মেয়েরা, উন্নত দেশগুলোর এই বয়সীদের তুলনায় নিমোনিয়া, ডাইরিয়ায় ভুগে মারা যান তিনগুণ বেশি। প্রতিষেধক পায় না বলেও মরে। ছেলে সন্তানদের তুলনায় মেয়ে সন্তানরা মারা যান বেশি। যত্ন অবহেলার কারণে ছেলে সন্তানদের তুলনায় মেয়ে সন্তানদের মৃত্যুর হার ৬১ শতাংশ বেশি।

এক থেকে পাঁচ বছর বয়সীদের মধ্যে সমীক্ষা করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আর গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের যথার্থ যত্ন না পাওয়া, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় দক্ষ ধাত্রী পরিষেবা না মেলায় জন্মের এক মাসের মধ্যে ফি বছর মারা যায় ১০ লাখ ছেলে-মেয়ে।

‘স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড মাদারস’ শীর্ষক রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গোটা বিশ্বে পাঁচের কম বয়সীদের সংখ্যা যেসব দেশ মিলিয়ে ৫৯ শতাংশ, সেরকম ৫৫টি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে এই প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, এইসব দেশগুলোতেই শিশু মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অন্য সব দেশ মিলিয়ে যখন এইরকম মৃতুর হার ১০০-তে ১৭; তখন এইসব দেশগুলিতে ৮৩। এই রুগ্ন শিশুদের চিকিৎসাবঞ্চনার নিরিখে ভারত ৫৫টি দেশের মধ্যে আছে ২৭তম স্থানে।–ওয়েবসাইট।

একটি বিশ্বাসের মুত্যু

Sun, 01 Jun, 2014 12:36:57 AM
নতুন বার্তা ডেস্ক
বারো বছর আগে আজকের দিনেই প্রয়াত হন হ্যান্সি ক্রোনিয়ে৷

বিমান দুর্ঘটনায়৷ একই দিনে একটা বিশ্বাসেরও অপমৃত্যু ঘটে! কেরিয়ার  শুরুর আগেই ক্রোনিয়ের অধিনায়কত্ব নিয়ে ভাবনার শুরু৷ সেই ব্যক্তিই একদিন ম্যাচ ফিক্সিং-এর স্বীকারোক্তি দিলেন! ধরে নেওয়া হলো-নোবডি ইজ অ্যাবাভ গ্রিড৷

সাল ২০০০৷ ততখন গভীর রাত৷ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট-সুপ্রিমো আলি বাখার-এর কাছে একটি ফোন এল৷ অঝোরে কাঁদছেন অপর প্রান্তে ফোনে থাকা ব্যক্তি৷ যার হাতের ব্রেসলেটে খোদাই করা চারটি অক্ষর সবসময়ের মতো তখনও বোধহয় চকচক করছিল-‘ডব্লিউ ডব্লিউ জে ডি' অর্থাৎ হোয়াট উড জেসাস ডু৷ আলি বাখারের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র, গোটা দক্ষিণ আফ্রিকার গৌরব তথা প্রাণ এবং তত্কালীন সর্বাপেক্ষা আলোচিত ব্যক্তি- হ্যান্সি ক্রোনিয়ে৷ কথা শুনে হতবাক বাখার!

এই ঘটনার প্রকৃত বিবরণের জন্য ফিরে যেতে হয় আরও কিছুকাল আগে৷ ১৯৮৩-তে প্রথম ক্রিকেটের ময়দানে ওয়ার্ল্ড কাপ জেতে ভারত৷ সেই থেকে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা যেন বহুগুণ বেড়ে যায় এদেশে, যেটা আগে অতটা ছিল না৷ কিছু লোক ভালোবাসত ঠিকই, কিন্ত্ত ওরকম পাগলামি ছিল না৷ শুধু ভারত নয়, সেই একই সময়ে পাকিস্তানও মেতে উঠল ক্রিকেট নিয়ে৷ দেশের মাটিতে তো বটেই, এমনকী বিদেশে ভারতীয় ও পাকিস্তানি প্রবাসীদের উপস্হিতির ওপর নির্ভর করে সিঙ্গাপুর, টরণ্টো, হংকং-সহ বিশ্বের অদ্ভুত অদ্ভুত সব জায়গায়, যেখানকার সঙ্গে ক্রিকেটের কোনও যোগাযোগ নেই, সেইসব জায়গাতেও আয়োজিত হতে লাগল আজব সব ক্রিকেট টুর্নামেণ্ট৷ উদ্দেশ্য একটাই– ভারত ও পাকিস্তানকে একসঙ্গে খেলিয়ে মুনাফা অর্জন করা৷ আমরা, যারা এই খেলাগুলো ফলো করেছি, কিছুদিনের মধ্যেই, কোথাও একটা অসুবিধা আছে, মনে হত৷ এই যেমন, কোনও দল জেতা ম্যাচ হেরে যাচ্ছে, কোথাও একটা ইনিংস-এ তিনটে পরপর রান আউট৷ আবার কোথাও যেখানে মেরে খেলার দরকার, খেলা হচ্ছে ঠুকে ঠুকে৷ সকলের মধ্যেই সৃষ্টি হল আশঙ্কা৷ আদৌ হচ্ছেটা কী?কিন্তু তখন আমাদের কর্মকর্তারা অর্থাত্ বিসিসিআই বসে ছিল চুপটি করে, কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে৷ ব্যতিক্রম পাকিস্তান৷ ‘জাস্টিস কায়ুম' বলে একটা কমিশন গঠন করল ওরা৷ ন'য়ের দশকের শেষের দিকে একটি রিপোর্ট বেরল৷ সেখানে উল্লেখ করা হল–ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, সেলিম মালিক-এর নাম, বলা হল এরা খেলোয়াড় হিসাবে ভালো হতে পারে, কিন্তু নিজেদের দেশের হয়ে খেলার যোগ্যতা নেই৷ এদের বিরুে ব্যবস্হা নেওয়া হল৷ প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার সাহসের জন্য আই স্যালুট পাকিস্তান৷ এবার এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল ভারত৷ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হল মহম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজা, অজয় শর্মার বিরুদ্ধে, যদিও সেটা ছিল কে কতটা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসম্পন্ন্, তার ওপর৷ অদ্ভুতভাবে ন'য়ের দশকের মাঝামাঝির দিকে  খুব সখ্য গড়ে উঠেছিল আজহারউদ্দিন ও হ্যান্সি ক্রোনিয়ের৷ তবে তা নিয়ে কখনও বিচলিত হয়নি আইসিসি৷ আর হবেই বা কীভাবে? ক্রোনিয়ের ওপর ছিল প্রতিটা মানুষের অগাধ বিশ্বাস৷ এমনই ছিল ওনার ইমেজ৷

১৯৯১-এ বিসিসিআই-এর প্রেসিডেণ্ট গোয়ালিয়র-এর মহারাজ সিন্ধিয়ার ডাকে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দেশের বাইরে ক্রিকেট খেলতে আসে এদেশে৷ পরপর তিনটে ম্যাচ৷ প্রথমটা কলকাতা, তারপর গোয়ালিয়র আর দিল্লি৷ তখন টিমের সঙ্গে ওদের তরফ থেকে এদেশে এসেছিল চারজন খুদে খেলোয়াড়৷ খেলতে নয়, আন্তর্জাতিক খেলা কেমন হয় দেখতে, শিখতে৷ ওদের মধ্যে একজন ছিল হ্যান্সি ক্রোনিয়ে৷ সে বছরই কিছুদিনের মধ্যেই ওয়ান ডে ক্রিকেটে ডেবিউ হয় ক্রোনিয়ের, তারপর টেস্ট ক্রিকেট৷ কিন্ত্ত আজব ঘটনা, প্রথম থেকেই মনে হত দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট কর্মকর্তাদের ওর প্রতি যেন অন্য রকমের টান ছিল৷ শুরু থেকেই যেন নির্ধারিত ছিল অধিনায়ক করা হবে ক্রোনিয়েকে৷ একটা মানুষ কেরিয়ার শুরু করার আগেই তার ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে ভাবনাচিন্তা! অবাক লাগে৷

আলি বাখারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার খাতিরে খেলা শুরুর বছর দুই-তিনেকের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে ক্রোনিয়ে৷ খেলোয়াড় হিসাবে ভালো হলেও কখনও আউটস্ট্যান্ডিং কিছু ছিল না ও৷ মিডিয়াম অ্যাটাকিং ব্যাটসম্যান, সাদামাঠা পেস বোলার কিন্ত্ত ব্রিলিয়াণ্ট ফিল্ডার৷ অনেকের মতেই, ক্রোনিয়ে ছিল অসাধারণ অধিনায়ক৷ সবাইকে নিয়ে চলার এবং নেতৃত্বদানের ক্ষমতা ছিল অনবদ্য৷ তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত একটু অন্যরকম৷ আমার মনে হয় না ওর অধিনায়কত্ব ছিল অসামান্য৷ কারণ সে সময় কোনো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেণ্ট জেতেনি দক্ষিণ আফ্রিকা৷ আর খেলোয়াড়? তারা এমনিতেই প্রত্যেকে ছিল বাঘা-বাঘা৷ তার জন্য ক্যাপ্টেনসির দোহাই দেওয়া ঠিক হবে না৷ সেই সময় দলের প্রত্যেকে না কি একবাক্যেই মেনে নিত ক্রোনিয়ের কথা৷ অনেকের মতে এটা অধিনায়কের প্রতি সম্মান বলে মনে হলেও আমার মনে হয়, এর কারণ ছিল ভয়৷ দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করত ক্রোনিয়ে৷ নিজেকে ‘কড়া' ধাতের অধিনায়ক হিসাবে জাহির করত৷ এক কথায় বলতে গেলে দাঁড়ায় ‘ভালোনারেব্ল'৷ তার ওপর আলি বাখারের সঙ্গে ছিল ওর অসম্ভব ভালো সম্পর্ক৷ পাছে দল থেকে বাদ পড়তে হয় সেই ভীতি কাজ করত প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে৷ কিন্তু আর যাই হোক খেলার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হিসাবেই নিজের ইমেজটা সকলের সামনে তুলে ধরেছিল ক্রোনিয়ে৷ যেন কখনও কোনও অন্যায় করতেই পারে না ও৷ এই ধারণার জন্যই অন্য দলের ওপর যখন ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠছিল, তখন কেউ ঘুরেও তাকায়নি দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে৷ আজহারউদ্দিনের সঙ্গে ক্রোনিয়ের দহরম-বহরম নিয়ে কখনও মাথা ঘামায়নি আইসিসি ও বিসিসিআই৷

ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে যখন চারিদিকে হইহই পড়ে গিয়েছে তখন দিল্লির ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চের ডিটেকটিভ ঈশ্বর সিং ফোন ট্যাপ করেছিলেন মুকেশ গুপ্তা নামে এক ক্রিকেট বুকির৷ একদিন হঠাত্ শুনতে পেলেন ফোনের অপর প্রান্তে চেনা একটা গলা৷ তারপর বারে বারেই শুনতে পেলেন সেই চেনা আওয়াজটা৷ প্রথমটায় নিজের কানকে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, কিন্ত্ত আস্তে আস্তে তাঁর ভুল ভাঙতে লাগল৷ হাতে আসতে লাগল একের পর এক তথ্য৷ কত টাকা, কোন ম্যাচ, কীভাবে সাজাতে হবে ছক? জানা গেল বিশদভাবে৷ বিসিসিআই নয় বরং মিডিয়াই প্রথম ফাঁস করল সেই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ যদিও ভারতীয় ডিটেকটিভ এবং মিডিয়ার দিকে আঙুল তুলেছিল সকলেই৷ আলি বাখারের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় সব কিছুকেই মিথ্যে বলেছিল ক্রোনিয়ে৷ কিন্ত্ত তার কিছুদিন বাদেই গভীর রাতে বাখারের কাছে গেল হঠাত্ ক্রোনিয়ের ফোন৷ স্বীকারোক্তি৷ শুধু আলি বাখারই নয়, এই ঘটনায় অবাক হওয়ার থেকেও বেশি দুঃখ পেয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা৷ ক্রোনিয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয় ‘কিংস কমিশন' গঠন করে৷ ‘প্যারাগন অফ ভার্চু' হিসাবে দেখা মানুষটা বদলে দিয়েছিল সকলের দৃষ্টিভঙ্গি৷ সেদিন থেকে ধরে নেওয়া হয়েছিল ‘নোবডি ইজ অ্যাবাভ গ্রিড'৷

কিন্ত্ত আজব চরিত্রের মানুষ ছিল বটে ক্রোনিয়ে৷ তাই মৃত্যুটাও ঘটল অবৈধভাবেই সকলকে অবাক করে দিয়ে৷ বিনা পারমিশনে কোনওভাবে দুই পাইলটকে রাজি করিয়ে চেপে বসেছিল কার্গো বিমানে৷ যা কখনওই মানুষের যাতায়াতের জন্য নয়৷ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেল ক্রোনিয়ে৷ এটাই বোধহয় নিয়তি!

ক্রোনিয়ের ফিউনেরালে গিয়ে গ্যারি কার্স্টেন বলেছিল ‘ক্রোনিয়ে ওয়াজ আ গ্রেট লিডার'৷ কিন্তু সত্যিই কি তাই! শুধু ক্রোনিয়েই ইস্যু নয়৷ আরও বাকি যারা ঘুষ নিয়ে এভাবে ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করছে এবং নিজের দেশকে অপমান করছে তাদের কি সত্যিই বিচার হচ্ছে? পরবর্তীতে কেউ ক্রিকেট কোচ হচ্ছে তো কেউ রাজনীতিতে নেমে দেশসেবাও করছে! যারা নিজেরাই চুরির দায়ে অভিযুক্ত তাদের পক্ষে আদৌ এটা সম্ভব? ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে আমরা কী শিক্ষা দেব?- ওয়েবসাইট।

দুই দলিত-কন্যা হত্যায় উত্তাল উত্তর প্রদেশ, চাপে অখিলেশ


Sat, 31 May, 2014 09:41:01 AM
নতুন বার্তা ডেস্ক
লৌখনো: বাদাউন ও আজমগড়: ভারতের উত্তর প্রদেশে বাদাউনে দুই দলিত-কন্যাকে পরপর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর প্রদেশ। প্রবল রাজনৈতিক চাপে পড়ে ঘটনার দু’দিন পরে শুক্রবার উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির সরকার দু’জন পুলিশ কনস্টেবলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে। আরো এক অভিযুক্তকেও এদিন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই নিয়ে সাত অভিযুক্তের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারলো উত্তর প্রদেশ পুলিশ।

এই বর্বরোচিত ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে আজমগড় জেলার সরাইমীর এলাকায় আরো এক নাবালিকা দলিত-কন্যাকে দল বেঁধে ধর্ষণ করেছে চার দুষ্কৃতী। তাদের একজনকেও শুক্রবার সারা দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাতে পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের অশুভ যোগাযোগের অভিযোগ আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে একদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাদাউনের ঘটনার রিপোর্ট তলব করে এবং আরেকদিকে রাজ্যের দুই প্রধান বিরোধী দল বি এস পি এবং বি জে পি-র পাশাপাশি বাদাউনের নিহত দুই কন্যার পরিবার সি বি আই তদন্তের দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদবের অস্বস্তি চতুর্গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। কার্যত সেই ধাক্কা, সঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিদলের বাদাউনে গিয়ে ঘটনার সরজেমিন তদন্ত এবং প্রচার মাধ্যমের হইচইয়ের পরিণতিতে দেরিতে হলেও ঘুম ভেঙেছে অখিলেশ সিং যাদবের। অবশেষে শুক্রবার তার মনে হয়েছে, সমস্ত অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া দরকার পুলিশকে। তিনি দিয়েছেনও সেই নির্দেশ। সেই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, অপরাধীদের শাস্তি দিতে তার সরকার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট বা দ্রুত বিচারের আদালত তৈরি করবে। প্রকৃতপক্ষে, তারপরেই কিছুটা হলেও তৎপর হয়েছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, বাদাউনের উষায়িত এলাকার একটি গ্রামের ১৪ ও ১৫ বছরের দুই নাবালিকা দলিত কন্যার খোঁজ মিলছিল না গত মঙ্গলবার রাত থেকে। সম্পর্কে তারা চাচাতো বোন। পরের দিন অর্থাৎ বুধবার সকালে ওই এলাকারই একটি আম গাছে তাদের দু’জনের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, খুন করার আগে দুই বোনকেই দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছিল। পেশায় খেতমজুর তাদের একজনের বাবা। তিনি এদিন তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের জন্য পুলিসী নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই বোনকেই পাপ্পু যাদব নামে একজন ও তার দুই ভাইয়ের সঙ্গে কাছাকাছি একটি আমবাগানে দেখা গিয়েছিল। তাদের এক আত্মীয় তা দেখে দু’জনকে বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তখন যাদবদের একজন পিস্তল বের করে তার ওই আত্মীয়র মাথায় ঠেকিয়ে তাকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। ভয়ে তিনি পালিয়ে বাড়ি চলে আসেন।

সেই ঘটনা শুনেই তিনি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে যান এবং পাপ্পু যাদবদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাদের দুই মেয়েকে উদ্ধার করতে বলেন। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। পরের দিন সকালে তারা দেখেন, দুই বোনের মৃতদেহ ঝুলছে একটি আমগাছে। তিনি এই ঘটনায় সরাসরি জাতপাতের বিভাজনের দিকে আঙুল তুলেছেন।

ওই খেতমজুরের অভিযোগ, অপরাধীরা যাদব সম্প্রদায়ের, পুলিশকর্মীরাও একই সম্প্রদায় ভুক্ত। তাই ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা তাদের দুই মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে অপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে। পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক। পুলিশ ঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে তাদের দুই মেয়েকে বাঁচানো যেতো। স্থানীয় কাটরা সদতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা এই অপরাধ করতে সম্পূর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে পাপ্পু যাদবদের।

বস্তুত, বাদাউনের এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তর প্রদেশের জাতপাতের রাজনীতি আবার সামনে চলে এসেছে। এমন অভিযোগ উঠেছে যে, অপরাধীরা এবং মুখ্যমন্ত্রী একই সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায় রাজ্য প্রশাসন তদন্তের কাজে প্রথমে ব্যাপক গাফিলতি দেখিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বুধবার দুই বোনের দেহ উদ্ধারের পরেই কেন অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশকে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিলেন না, কেনই বা তার ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগলো সেই নির্দেশ দিতে, উঠেছে সেই প্রশ্নও। তবে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্ত পাপ্পু যাদব ও পুলিশকর্মী সরবেশ যাদবকে গ্রেফতার করে দায় সেরেছিল পুলিশ। শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে আরেক অভিযুক্ত অওধেশ যাদবকে। সে পাপ্পুর ভাই। আরো চার অভিযুক্ত পলাতক। তারা হলো পুলিশকর্মী ছত্রপাল যাদব, পাপ্পু ও অওধেশের ভাই উরবেশ যাদব এবং আরো দুই অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। তাতেও অভিযোগ উঠেছে, পুলিশই এই চারজনকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বুধ ও বৃহস্পতিবার যথাযথ তৎপরতা না দেখিয়ে। এই জঘণ্য অপরাধে যুক্ত থাকার জন্য এদিন দুই পুলিশকর্মী ছত্রপাল যাদব ও সরবেশ যাদবকে চাকরি থেকে বরখাস্তও করেছে উত্তর প্রদেশ সরকার। এদিন এই খবর দিয়ে বাদাউনের এসপি অতুল কুমার সাক্সেনা জানিয়েছেন, বাকি অপরাধীদের গ্রেফতার করার জন্য সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে, বাদাউনের অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদব এদিন রাজ্য পুলিশের ডিজি এ এল ব্যানার্জি এবং অন্যান্য পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসে তদন্তের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেছেন। তিনি নিহত দুই দলিত-কন্যার পরিবারবর্গকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সহায়তা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে। সেই সঙ্গে তিনি দু’জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন।

পুলিসী নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সামাল দিতে তিনি এদিন অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। তারপরেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় দুই পুলিশকর্মী ছত্রপাল যাদব ও সরবেশ যাদবকে। তবে তাতে সমালোচনার হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না অখিলেশ। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী এদিন বলেছেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক। রাজ্যপালের এখনই উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির জন্য সুপারিশ পাঠানো উচিত কেন্দ্রের কাছে। তিনি বাদাউনের ঘটনার সি বি আই তদন্তও দাবি করেছেন। একই দাবি তুলেছে বিজেপি-র রাজ্য শাখাও। এদিনই বাদাউনে নিহত দুই কন্যার একজনের বাবাও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেছেন, রাজ্য পুলিশের উপর তাদের কোনো আস্থা নেই। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মানেক গান্ধীও এদিন পিলিভিটে বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় এই নৃশংস ঘটনার সি বি আই তদন্তের জন্য সুপারিশ পাঠাতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। অন্যদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে এদিন নয়াদিল্লিতে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার মন্ত্রণালয় ঘটনার রিপোর্টও চেয়ে পাঠায় উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে। এদিনই তা পৌঁছেছেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সব মিলিয়ে প্রবল চাপে পড়েছেন অখিলেশ সিং যাদব। শনিবার এই ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রতিবাদে নয়া দিল্লির ইউপি ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডিওয়াইএফআই, এসএফআই, ডিটিএফ, জেএলএস, এএমএস, জনমসহ বেশ কিছু গণসংগঠন। - সংবাদ সংস্থা

চরম দারিদ্র্য নির্মূলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দরকার

চরম দারিদ্র্য নির্মূলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দরকার

ইত্তেফাক রিপোর্ট
চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য সম্পদের অভাব কোন বিষয় নয়। এজন্য সঠিক নীতি দরকার। তবে বন্টন ও এর অর্থ যাদের পাবার দরকার তাদের কাছে পৌঁছানোটা সহজ কাজ নয়। তার জন্য দরকার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। তাহলেই ২০২১ সালের মধ্যে অতিদরিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব। গতকাল রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবীদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা বলেন। সিঁড়ি মানুষের জন্য এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম যৌথভাবে অতিদারিদ্র্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যবিমোচনের লক্ষ্যকে বাস্তবে পরিণত করতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ কাজ করতে হবে। দরিদ্রদের দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে অবশ্যই ক্ষমতায়ন করতে হবে এবং তাদেরকে অবশ্যই মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য আমাদের যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে। দেশের সকল মানুষকে ব্যাংকিং সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ২০২১ সালের মধ্যে অতিদরিদ্রসহ দেশের সকল লোক আর্থিক সেবার অন্তর্ভুক্ত হবে। ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমরা ব্যাংকগুলোকে উত্সাহিত করছি যাতে অতিদরিদ্ররা এ সেবার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার-২ এ মেলায় সরকার, দাতাসংস্থা, এনজিও, প্রাইভেট সেক্টর ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মেলায় ১০০টি স্টল ছিল। অতিদারিদ্র্য দূরীকরণে ম্যানুফেস্টোর লক্ষ্য ও বাস্তবতা বিষয়ে আলোচনায় মডারেট করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক বিনায়ক সেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাক চৌধুরী, আইসিডিডিআরবি এর উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. আব্বাস ভুঁইয়া, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা র্যাডার, ডিএফআইডি'র আবাসিক প্রতিনিধি সারাহ কুক, সিআরআইয়ের পরিচালক শামস সাব্বির এবং এপেক্স ফুটওয়্যারের নির্বাহী পরিচালক মমিনুল আহসান।

সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা পাবেন মোদীর স্ত্রী যশোদাবাঈ

সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা পাবেন মোদীর স্ত্রী যশোদাবাঈ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবনসঙ্গী হিসাবে সেভেন-রেইস কোর্স রোডের সরকারি বাসভবনে না উঠলেও ২৪ ঘণ্টা পুলিশী নিরাপত্তা পাবেন তার স্ত্রী যশোদাবাঈ। মোদির স্ত্রী যশোদাবাঈ উত্তর গুজরাটের মহাসেনায় ঈশ্বরবাদ গ্রামে দুই ভাইয়ের সঙ্গে বাস করছেন।

তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন চারজন সশস্ত্র পুলিশ। তার বাড়ির আশপাশ পাহারা দেয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে একটি টহল গাড়ি। এছাড়া একজন কনস্টেবল সার্বক্ষণিকভাবে তার পাশে থাকবেন। -ইন্ডিয়া টাইমস

মতুয়া জীবন কেমআন হওয়া উচিৎ -কালিদাস বারুরী সংগৃহীত-মতুয়া দর্পণ ১৪বর্ষ, ৫৬ সংখ্যা,জানুয়ারী -মার্চ' ২০১৪ ,মাঘ-চৈত্র'১৪২০,২০২ হরিচাঁদাব্দ।

মতুয়া জীবন কেমআন হওয়া উচিৎ -কালিদাস বারুরী
সংগৃহীত-মতুয়া দর্পণ ১৪বর্ষ, ৫৬ সংখ্যা,জানুয়ারী -মার্চ' ২০১৪ ,মাঘ-চৈত্র'১৪২০,২০২ হরিচাঁদাব্দ।
(১) শ্রী শ্রী হরিচাঁদ কল্পতরু আগমনের দু-শোটি বছর পার করে এসেছি। এবার আত্ম সমীক্ষা। দীর্ঘ মতুয়া জীবনচক্রে ত্রুটি বিচ্যুতির চুলচেরা অঙ্ক কষে পাশ ফেলের ফলাফল জেনে নেবার সময় এসেছে । আলোচনা পর্বটি বিচক্ষণ দৃষ্টি দিয়ে হরি-গুরুচাঁদীয় বিপ্লবী শিক্ষা সামাজিক চরিত্রায়নে আমরা নিজেদেরকে কতটুকু সংগঠিত করতে পেরেছি তারই বিচার্য বিষয় ।
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ অভেদাত্মা রাজর্ষি গুরুচাঁদ ঠাকুর প্রবর্তিত মতুয়া ধর্ম দর্শন সমাজের সর্বস্তরের বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া বৃহৎ সংখ্যক মানুষের অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই । মুষ্টিমেয় এক শ্রেনীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কুটকৌশলী দেবদোহায়ী বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই । মুষ্টিমেয় এক শ্রেণীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কূটকৌশলী দেবদোহায়ী বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে শিক্ষা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার থেকে হাজার যোজন দূরে সরিয়ে রেখেছে ।
এমনি এক যুগ সন্ধিক্ষণে পতিত পাবন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব(১৮১২-১৮৭৮) । শিক্ষা-জ্ঞান জীবে প্রেম, কর্ম-সাম্য এবং স্বাধীন আধ্যাত্মিক তত্ব ও দর্শন সংম্পৃত্ত "মতুয়া ধর্ম" উপহার দিলেন মৃতপ্রায় পতিত জাতিকে । ভেঙ্গে দিলেন ব্রাহ্মণ্য ষড়যান্ত্রিক মানুষ দলনীতি বিধি বিধান । যুগ পুরুষ হরিচাঁদ ভারতের নবীনতম ঐতিহাসিক ধর্ম ও কর্মের স্রষ্টা ও দ্রষ্টা । ঘৃণক আর দোলকদের ফতোয়াকে অগ্রাহ্য করে শুরু করলেন বহুজন মুক্তির আপোষহীন সংগ্রাম ।
তাঁর প্রবর্তিত প্রেমভক্তির পূর্ণ মায়া মমতা ভরা মত ও পথ 'মতুয়া ধর্মের' ছায়াছত্রতলে লক্ষ কোটি মানুষ পেল মুক্তি মোক্ষ, জীবনের বিকাশ-শক্তিতে চেতনা । মন্ত্র দিলেন নিজ নাম, 'হরিবোল' ।
ভক্তি ভাবের পশরা সাজিয়ে ভক্ত আর ভগবানের কথা লিখেছেন মহানন্দ হালদার এবং রসরাজ তারকচন্দ্র ।
"নাহি চেনে কোন দেবী, ঘট পট বিম্বা ছবি ।
জানে, মনে প্রাণে শুধু হরিচাদে ।।'
দীক্ষা নেই করিবে না তীর্থ পর্যটন ।
মুক্তি স্পৃহাশূন্য নেই সাধন ভজন ।
যাগ-যজ্ঞ তন্ত্র মন্ত্র দীক্ষা
কোন কিছুর নাহি প্রয়োজন ।
'হরিনাম মহামন্ত্র জান সর্বজন ।।"
ঠাকুরের বাণীর মধ্যে লুকিয়ে আছে আমার জীবনের দিক নির্ণয়ের নিশানা এবং ঠিকানা । যাঁর কৃপা ও করুণায় আমি শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিন প্রতিষ্ঠা পেয়েছি -সেই করুণার সাগর পরিত্রাতা হরিচাঁদ ভিন্ন আমার জীবনে অন্য কোন দেব দেবী , ঘট পট পূজা নেই, থাকতে পারে না । দীক্ষা নেই, তীর্থ পর্যটন নেই, যাগ-যজ্ঞ, তন্ত্র-মন্ত্র কিছুই নেই । একমাত্র হরিচাঁদই আমার উপাস্য ।
দীক্ষা-শিক্ষা মন্ত্রের অসারতার কথাও তিনি জোরের সঙ্গে ঘোষণা করলেন-
"দীক্ষা মন্ত্র দেয় গুরু কর্ণে মুখ রাখি ।
হরিনাম মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি ।।"
তা সত্ত্বেও মতুয়াদের মধ্যে দীক্ষা মন্ত্রের প্রচলন সর্বত্র দেখতে পাই । হরিচাঁদ দৃঢ়তার সঙ্গে ভক্তদের সাবধান করলেন এবং অভয় দিয়ে বললেন-
"হরিনাম মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি।"
-অর্থাৎ হরিনাম-ই একমাত্র মহৌষধ-এর উপরে কোন ঔষধ নেই ।
তিনি পূর্ণ ভরসা দিয়ে বললেন-"আমার নাম অর্থাৎ 'হরিনাম' উচ্চারণে জীবনীয় শক্তি ও মুক্তি পাবে, আর কিছুর প্রয়োজন নাই । তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মতুয়া পরিবারে বেশ ঘটা করে বিভিন্ন দেব-দেবী পূজার প্রচলন বিদ্যমান। পাশাপাশি কৃষ্ণনাম যজ্ঞ সহ অন্যান্য অনেক(ব্রাহ্মণ্যবাদী) গুরু পূজাও বিদ্যমান । কাউকে আঘাত দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়, আমার প্রশ্ন "বিশ্বাসের" । আমার 'বিশ্বাস' যদি বহুমুখি হয় সে ক্ষেত্রে আমার ভক্তি-শ্রদ্ধা-পূজা সবই বহুমুখি হবে এবং জনে জনে বিভক্ত হতে থাকবে । ফলে হরি পূজা পূর্ণতা লাভ করবে না । আমার 'বিশ্বাস' ও একমাত্র 'হরি' কেন্দ্রীক হবে না, আমার উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ একজনের উপরে আমি বিশ্বাস রাখতে পারছি না, ভুলে গেছি তিনিই আমার উদ্ধারকর্তা । বর্তমান প্রতিষ্টা তিনিই আমাকে দিয়েছেন । লক্ষী, সরস্বতী ,কালী, দুর্গা, রামকৃষ্ণ, অনুকুল, নিগমানন্দ, জগদানন্দ এঁনারা আমার উদ্ধারকর্তা নন । অতএব মতুয়াদের ভাবতে হবে, দ্বি-চারিতা হচ্ছে না তো ? যেখানে হরিঠাকুর নিজের স্বরূপ প্রকাশ করে বলেন-
"পূর্ণ আমি হরিচাঁদ অপূর্ণের পিতা
সাধনা আমার কন্যা, আমি জন্মদাতা ।"
এতবড় প্রমাণ আর ভরসা থাকা সত্তেও মতুয়াদের বহুমুখি হওয়া মানেই তো হরিচাঁদে বিশ্বাসের অভাব । পক্ষান্তরে মনগড়া ব্যবসা বিত্তিক দেব-দেবী ও মূর্তি পূজায় অগাধ বিশ্বাস, এর অর্থ ব্রাহ্মণ্য নীতি -বিধি বিধানে আমার বেশী বিশ্বাস । অথচ এই বিধানের বি রুদ্ধাচারণ করে শ্রীহরি বললেন-
"তিন বেলা সন্ধ্যা কর আর সন্ধাহ্নিক ।
স্নান পূজা সন্ধাহ্নিক মোর নাহি ঠিক ।।
কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই ।
বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
আমি কি মতুয়া হতে পেরেছি ? আমি কি মতুয়া বিধি বিধান মেনে চলছি ? আমি কি একমাত্র শ্রীহরিতে বিশ্বাস রাখতে পেরেছি ? আমি কি পরিবারে হরি-গুরুচাদের ধর্ম-দর্শন প্রতিষ্টা করতে পেরেছি ? আমি কি হীনমন্য হিন্দু ধর্মের প্রতিবাদী 'মতুয়া' ধর্মাবলম্বী হতে পেরেছি ? আমি কি ভেদাভেদহীন "স্বয়ং সম্পুর্ণ মতুয়া ধর্মকে" জনমানসে প্রতিষ্ঠা কল্পে প্রচারে ও প্রসারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে পেরেছি ?
যদি না পেরে থাকি তবে আর সময় নষ্ট না করে এখনই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে যথার্থ মতুয়া হওয়ার লক্ষ্যে । এটা করতে পারলেই মুক্তি ও প্রাপ্তি । মহাশক্তি ও স্বস্তির পথ সুগম হবেই হবে ।
(২) (মতুয়া ধর্মে নারীর মর্যাদা ও অধিকার)
নারী মাত্রই মাতৃসমা । শ্রদ্ধা-ভক্তি ভালবাসা বা স্নেহের পাত্রী । মতুয়া ধর্মে ব্রাহ্মণ্য নীতি বিধি অনুযায়ী নারী জাতিকে মর্যাদাশীল পরনির্ভরশীল 'নরকের দ্বার' করে রাখা হয় নাই । নারী ও পুরুষের সমান অধিকার, একথা মতুয়াধিপতি হরি গুরুচাঁদ ধর্মীয় ও মানবীয় ব্যাখ্যায় প্রথম জাতিকে প্রকাশ্যে দিবালোকের অক্সিজেন যোগান দিয়ে হরি-গুরুচাঁদ গড়লেন এক নয়া ইতিহাস । মায়েদের হাতে ধুপ-দ্বীপ-শঙ্খ দিয়ে, দিলেন পূজার অধিকার, ধর্মের অধিকার । নারী শিক্ষা বিদ্যালয় গড়ে, দিলেন শিক্ষার অধিকার । ঘটল মাতৃত্বের পূর্ণ বিকাশ । হরি-গুরুচাঁদ কল্পবৃক্ষে সোনার মানুষ, সাধু -সাধক, শিক্ষিত যুবক-যুবতীর ফসল ফলল । নারী জাতিকে মতুয়া কি নজরে দেখবেন তাও বলে দিলেন প্রাণারাম-
"পর নারী মাতৃজ্ঞানে দূরেতে থাকিবে ।
পরিহাস বাচালতা কভু না করিবে ।।
মেয়ে পুরুষেতে বসি একপাতে খায় ।
মেয়েদের এঁটো খায় পদধুলা লয় ।।
----------------------------
পুরুষ ঢলিয়া পড়ে মেয়েদের পায় ।
এক নারী ব্রহ্মচারী সৎচরিত্র রবে ।
------------------------------
নিজ নারী ভিন্ন অন্য নারীতে গমন ।
মহাপাপী ব্যভিচারী সেই একজন ।।
প্রশ্ন থেকে যায়,-
আমরা নারী জাতিকে মাতৃজ্ঞানে সম্মান করি তো ? আমি নিজ নারী সহ ব্রহ্মচারীর ন্যায়
সৎ চরিত্র বহন করছি তো ? আমি হরিনামামৃত পান করে দেহের ইন্দ্রিয় নিজের করায়াত্বে এনেছি তো ? আমি নারী মাত্রই 'মা' সম্বোধন করি তো ? মায়েদের সুখ-দুঃখের সমান ভাগীদার হই তো ?

যদি না করে থাকি তবে আমার মতুয়া জীবন বৃথা ।মনে রাখবেন, হরি-গুরুচাঁদ প্রবর্তিত ধর্ম-দর্শন অতি উচ্চমার্গের । একে জীবনদায়ী ঔষধ মেনে গ্রহন করতে পারলে আমি নিশ্চিত করে বলছি, আপনার উন্নয়নের জন্য আপনাকে ভাবতে হবে না ।
"সর্ব্ধধর্ম লঙ্ঘি এবে করিলেন স্থূল ।
শুদ্ধ মানুষেতে আর্তি এই হয় মূল ।।"
(প্রেমবন্ধনের দৃঢ়তা কেন এত ঠুনকো ?)
শ্রীহরি বাসরে সরল অনাড়ম্বর জীবন সঞ্জাত 'হরিবোল' নামে ভাবোন্মোত্ত মতুয়াদের মমত্ত্বের ও সমত্বের প্রেমপ্রক্ষালনি অশ্রুসজল বাহু বেষ্টিত ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে দৃশ্যায়ন, আকর্ষণীয় প্রেমভক্তি ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায় । কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলছি, এই ভাব ও সম্পর্ক স্ব-স্ব এলাকায় দেখা যায় না । সেখানে সগোত্রীয় হয়েও মেলামেশায় বহুলাংশে ফারাক । হিংসা-দ্বেষ, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব হাম বড়াই ভাবের অবাধ বিচরণ । চোখা চোখা বিশেষণ (গালাগালি) প্রয়োগে পারদর্শিতা যথেষ্ট । বাহু যুদ্ধেও পিছিয়ে নাই । মুখ দেখাদেখি বন্ধ থাকে , প্রতিশোধ স্পৃহা ঘুম কেড়ে নেয় । পড়শিদের ভীতি প্রদর্শনে ভীত নয় । অথচ এরাই হরিবাসরে হরিনামের অমৃত ভাব ও প্রেমের বন্যা বইয়ে দেয় । পদধুলি সংগ্রহে কাড়াকাড়ি হয় । কোলাকুলি অশ্রুবন্যায় হরিবাসর প্রেমের সাগর হয়ে ওঠে । ভাবি এই বন্ধন চিরস্থায়ী নয় কেন ? এই প্রেম সর্বত্র সর্বদা সমানভাবে সংঘবদ্ধ হয় না কেন ? যেখানে দয়াধীশ ভবিষ্যৎ বাণী দিয়েছেন-
"সর্বজাতি সমন্বয় হবে তাঁর মতে ।
ভাই ভাই হয়ে সব চলিবে সে পথে ।।"
(গুরুগিরি)
অনেকে গুরুগিরি করেন । গুরুগিরি ব্যবসা করেন, সংসার চালান, দীক্ষা দেন, শিষ্য তৈরীতে পারদর্শিতা দেখান । যে সাধন- ভজন অধ্যাবসায় দক্ষতা থাকা দরকার-ইদানিং গুরুদের মধ্যে তেমন উপযুক্ত একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না । গোপাল সাধু, তারক গোঁসাই, লোচন, অশ্বিনী, নাটু, ব্রজনাথ ডাঃ তারিনী বলের মতো সাধক পুরুষ আছে কি ? এঁনারা জীবন দিয়ে জাতির উন্নতির জন্য গুরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেছেন । বর্তমান গুরুকূল পরিবার পোষা গুরুগিরি ছেড়ে "হাতে কাম মুখে নাম" করলে উভয়ের মঙ্গল । নচেৎ মহান মতুয়া ধর্ম অদূর ভবিষ্যতে বহুধা বিভক্ত হবে সন্দেহ নেই । নিছক ব্যক্তি স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সমগ্র জাতির কল্যাণ চিন্তা করাই শ্রেষ্ঠ পথ ।
"জাতির উন্নতি লাগি, হও সবে স্বার্থত্যাগি,
জাতি ধর্ম জাতি মান, জাতি মোর ভগবান,
জাতি ছাড়া অন্য চিন্তা নাই ।"
বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে গুরুচাঁদ ঠাকুরের এই আত্মসচেতনী উদার আহ্বান বাণী । তিনি ছত্রিশটি বিচ্ছিন্ন জাতিকে একত্রিত করে যে পথ ও পাথেয় দিয়ে মতুয়া ধর্মকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন, নিছক ব্যক্তি স্বার্থে এই মহান ধর্মের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না । ঠাকুরের আসনে ঠাকুরকেই বসান । গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে হৃদয় মন্দির হরি গুরুকে প্রতিষ্ঠা করুন। তাঁর নাম মনন করুন তাতে নিজের দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে তো হবেই । গুরুর আসনে ভুল করে গরুকে বসাবেন না । গুরু-গুরুই হয় আর গরু-গরুই হয় । গরু কখনো গুরু হতে পারে না ।
"মতুয়ার এক গুরু ভিন্ন গুরু নাই ।
ভিন্ন ভিন্ন দল কেহ করো না গোসাঁই ।।"
পাগল দলপতিদের যত্র-তত্র ছুতো-নাতায় আস্ফালন করা বা ক্রোধ প্রদর্শন শোভনীয় নয় । 'বিজ্ঞতা' প্রদর্শন অপেক্ষা 'বিজ্ঞ' হয়ে ওঠা শ্রেষ্ঠ পথ । আমার কি করা উচিৎ, ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে শুভ বিবেকী সিদ্ধান্ত আমাকেই নিতে হবে ।

(৩)(মতুয়া পদ্ধতিতে (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজার প্রচলন করা ।)
বৈশ্যসাহা কন্যার সঙ্গে মুসলমান যুবক তিনকড়ি মিঞাঁর বিয়ে দিয়ে সেদিন গুরুচাঁদ ঠাকুর যে সেতু বন্ধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণ্যবাদকে পদদলিত করে বিজয় নিশান উড়িয়ে আমাদের বোঝালেন, "তোমরাও মতুয়া ধর্ম-দর্শন মেনে নিজেদের ক্রিয়াকাজ নিজেরাই সম্পন্ন কর" । অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষায় রচিত দুর্বোধ্য পদ্ধতি বিসর্জন দিয়ে শুদ্ধ সহজ বাংলা ভাষায় রচিত (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজা ইত্যাদি ক্রিয়াকাজ প্রতি ঘরে ঘরে তোমরা চালু কর ।
অথচ এই কাজটিও আমরা সঠিক ভাবে সর্বত্র চালু করতে পারিনি বরং এখনও অধিকাংশ মতুয়া পরিবার ব্রাহ্মণ্য নীতিতেই বিশ্বাসী । আমরা অনেক গল্পভরা কথা বলি কিন্তু স্বীকার করতে হবে, গুরুচাঁদ ঠাকুরের যাবতীয় নির্দেশের মধ্যে একটি নির্দেশও আজ পর্যন্ত আমরা সঠিক ভাবে পালন করতে পারিনি ।
(ঠাকুর নির্দেশিত মত-পথ ও আদর্শকে কিভাবে পালন করতে হবে । )
প্রসঙ্গক্রমে গুরুচাঁদ ঠাকুরের একটি নির্দেশ বাণী
যেমন-
"সবাকারে বলি আমি যদি মানো মোরে ।
অবিদ্বান পুত্র যেন নাহি থাকে ঘরে ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মান্য করতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অন্তর দৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ মত চলছি ? আমরা কি তাঁর দেওয়া রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষানীতি সংস্কার নীতি অর্থনীতি রূপায়ণ করার জন্য নিজেদেরকে সংগঠিত করতে পেরেছি ?
যদি গুরুচাঁদের গুরুভার বহন না করে থাকি তবে আমি মতুয়া হলাম কি করে ? একটাই সমাধান, আসুন আমরা প্রথমে মতুয়া হই, তার পর মেতে উঠি হরি-গুরুচাঁদের প্রদর্শিত এবং নির্দেশিত কর্মকান্ড পরিপূরণে ও রূপায়ণে ।
পরিচ্ছন্নতা মতুয়া ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ । বাহ্য ও অন্তরঙ্গ শারীরিক পরিচ্ছন্নতা সহ পরিপাটি বসন ভূষণ ব্যবহার পবিত্রতার পরিচায়ক । দেহশ্রীকারক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বেশভূষা পরিধান করা মতুয়াধিরাজ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ । এই নির্দেশ পালনের মধ্যে মনে প্রাণে শুদ্ধ নিঃষ্কলুষ শ্রী মন্ডিত ভক্তের ভক্তিযুক্ত আত্মনিবেদন আত্মপ্রসাদ লাভ করে সন্দেহ নাই । বহুক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতার অভাব আছে । গৃহাদি দেবতার মন্দির ভেবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিৎ ।
"ধন চাই বসন ভূষণ চাই, হতে চাই জজ ম্যাজিস্ট্রেট ।
----------------------------------------
সবখানে থাকা চাই, তা ভিন্ন উপায় নাই ।
রাজ বেশে সাজ রাজ সাজে ।।
------------------
গৃহে কিংবা শ্রীহরি কীর্তনে ।
পরিচ্ছন্ন বেশ -ভূষা পর যতনে ।।
আপন গৃহকে কর শ্রীলক্ষ্মী আগার ।
ধর্ম-কর্ম মিলেমিশে ভব পারাবার ।।"
হরিকীর্তন আসরে আমরা নির্দিধায় পান-তামাক-বিড়ি সেবন করি । সম্মুখে শ্রীহরির প্রতিকৃতি বা ছবি থাকে । বিড়ির ধুম্ররাশি ঘুরপাক খেতে খেতে শ্রীহরির অঙ্গে মিশে যায় । আমার হুঁশ নাই । এটা কি ঠিক ? শ্রীহরি-গুরুচাঁদ যদি আমার জীবন দেবতা হন তবে তাঁদের সামনে ধুম পান করা লজ্জাস্কর এবং নিন্দনীয় নয় কি ? ঠাকুরকে যদি ছবি বানিয়ে ফেলি বা ছবি ভাবি তবে আমার কিছু বলার নেই । তবে তিনি অজর অমর অক্ষয় যুগপ্রহরী, আমার চতুর্দিকে বিরাজ করছেন-এমনটি ভাবলে তিনি আমার কাছে জীবন্ত প্রতিমূর্তি হয়ে আমাকে সর্বদা রক্ষা করবেন সন্দেহ নাই । তদুপরি ধুমপানে আসরের পবিত্রতা নষ্ট হয় এবং অ-ধুমপায়ীদের অসহ্য কষ্ট হয় । তাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন । অতএব নেশা পরিত্যাগ করাই বিধেয় ।
প্রায় সর্বত্র হরিকীর্তন আসরে, পাগল-গোসাঁই ও দলপিতিদের গান সর্বস্ব হয়ে ওঠে । প্রথমত গাঙ্গুলি অযথা দীর্ঘায়িত করে বহু সময় নষ্ট হয়, তদুপরি গায়কদের অপটু অতি দীর্ঘ্যস্বর যুক্ত কাটা কাটা সুর ও লয়ে শব্দার্থ বা মূল শব্দ আদৌ বোধগম্য হয় না । ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় । বর্তমান বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে সময়ের এবং বোধচয়নার মূল্যায়ন একান্ত প্রয়োজন । ত ও পথ প্রত্যেকের সঠিক ভাবে জানা প্রয়োজন । এতে মতুয়া ধর্মের প্রচার ও প্রসার বাড়বে এবং গানগুলি ছোট করে সহজ বোধগম্যযুক্ত সুর ও তালে গীত হউক এবং আসরে গানের সংখ্যা হ্রাস করে বক্তাদের সুযোগ দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন । কারন হরি-গুরুচাঁদ প্রদর্শিত ম জনমানসে সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব জ্ঞান করা যাবে । শুধু তাই নয়, হরিচাঁদের প্রেম, জ্ঞান, আর সাম্য স্বাধীনতার 'তত্ত্বদর্শন' সবাই সঠিক ভাবে জানতে ও বুঝতে পারলে তাদের জীবন প্রবাহ হরিপ্রেম মাধুর্যে গঠন করতে পারবেন । এতে, দেশ-জাতি ও সমাজের প্রভুত কল্যাণ হবে, জোর দিয়ে বলছি । (চলবে)

ঠিকই তো বলছে, চীনা 'সাম্যবাদে'র থেকে ভারত আর খুব দূরে কই দাঁড়িয়ে! 'বিপ্লব' এলো বলে!!!!!!!! .


ঠিকই তো বলছে, চীনা 'সাম্যবাদে'র থেকে ভারত আর খুব দূরে কই দাঁড়িয়ে! 'বিপ্লব' এলো বলে!!!!!!!! ..."The opposition to the BJP holds this view (that Modi could be autocratic) out of the need for partisan competition, while as for Western critics, their attack on Modi is out of ideological concerns, because Modi's governance style and philosophy are very close to Chinese practices," Liu wrote in the Communist Party mouth piece, Global Times. ...
A Chinese government thinktank has welcomed prime minister-designate Narendra Modi as "India's Nixon" who would hugely expand...
THE TIMES OF INDIA
Like ·  · 
  • Sushanta Kar "Yet even hundred Bangalore and Hyderabads will not, on their own, solve India's tenacious poverty and deep-seated inequality. The very poor in India get a small -and basically indirect -share of the cake that information technology and related developments generate. The removal of poverty, particularly of extreme poverty, calls for more participatory growth on a wide basis, which is not easy to achieve across the barriers of illiteracy, ill health, uncompleted land reforms and other sources of sever societal inequality. The process of economic advances cannot be divorced from the cultivation and enhancement of social opportunities over a broad front"--Amartya Sen , The argumentative Indian, page 199
    4 hrs · Like · 1

হাসপাতালের ফি জোগাড়ে সদ্যোজাতকে বিক্রি প্রসূতির

হাসপাতালের ফি জোগাড়ে সদ্যোজাতকে বিক্রি প্রসূতির

20140530_115533
জলপাইগুড়ি: প্রসবযন্ত্রণা অসহ্য হয়ে উঠলেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না হাসপাতালে৷ ভর্তির নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা ছিল না প্রসূতির কাছে৷ মাত্র ২৫ টাকা সম্বল করে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এসেছিলেন শহরের উপকণ্ঠে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা গৌরী দাস৷ হাসপাতাল চত্বরেই মুশকিল আসান হয়ে দেখা দেয় এক অচেনা মানুষ৷ প্রসবের পর নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়ার শর্তে গৌরী দেবীকে ভর্তির ফি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় সে৷ নিরুপায় প্রসূতি শর্ত মেনে তার দেওয়া ১০০ টাকা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়৷ প্রসবের পর শুক্রবার তাঁর হাতে নগদ ১৩ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে সদ্যোজাতকে নিয়ে নেন ওই অচেনা লোকটি৷

গৌরীদেবী বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর তাঁর ওই সন্তান বিক্রির খবর চাউর হয়৷ সন্তান কেনাবেচার চক্র যে সরকারি হাসপাতাল চত্বরেই সক্রিয় রয়েছে, তা মানতে বাধ্য হন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার৷ তিনি বলেন, 'এই খবর আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জা ও উদ্বেগের৷ সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের তত্‍পরতা ভাবতে পারছি না৷ অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি৷' যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই দালাল বা নবজাতকটির হদিস পায়নি পুলিশ৷

প্রসূতির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দালালের মাধ্যমে তাঁর সন্তানকে যে দম্পতি কিনে নিয়ে গিয়েছে, তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলারই বেলাকোবার বাসিন্দা৷ কথাবার্তার সময় বেলাকোবার কথা শুনেছিলেন গৌরীদেবী৷ সেই দম্পতিরও কোনও খোঁজ মেলেনি৷ পাহাড়পুরের বাড়িতে বসে গৌরীদেবী বলেন, 'প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বিক্রি করে দেওয়ার শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া আমার আর উপায় ছিল না৷'
http://eisamay.indiatimes.com/state/mother-sold-baby-to-arrange-hospital-fee/articleshow/35796438.cms

আরও তিন কন্যাসন্তান আছে গৌরীদেবীর৷ কিন্ত্ত আবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মাস ছয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে যান তাঁর স্বামী৷ এখন ওই মেয়েদের নিয়ে তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকেন৷ রেলের জমিতে বসবাসকারী পরিবারটিকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে অভাব৷ ভিক্ষা করে কোনও রকমে পাঁচটি পেটের জন্য দানাপানি জোগাড়ের চেষ্টা করেন গৌরী দাসের অশীতিপর মা মণিকুমারী সিং৷ তিনি বলেন, 'এমন অবস্থা যে মারাত্মক প্রসবযন্ত্রণা উঠলেও গতকাল মেয়েকে হাঁটিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম৷ টাকা পেলে কয়েকটা দিন বাঁচা যাবে ভেবে সন্তান বিক্রির প্রস্তাবে আমিও আপত্তি করিনি৷'