দিনটা শুরু হোক নাচ দিয়ে
স্যান্ড্রা বুলাক |
অস্কার বিজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী স্যান্ড্রা বুলাক। ১৯৬৪ সালের ২৬ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে স্পিড (১৯৯৪), দ্য লেক হাউস (২০০৬), দ্য প্রোপোজাল, দ্য ব্লাইন্ড সাইড (২০০৯), গ্র্যাভিটি (২০১৩) ইত্যাদি। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ২০১২ সালে তাঁকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে৷ ২০১৪ সালের ১৯ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিয়ন্সের ওয়ারেন ইস্টোন চার্টার স্কুলের সমার্বতনে স্যান্ড্রা বুলাক এই বক্তব্য রাখেন৷
প্রথমেই আমি ২০১৪ সালের স্নাতকদের অভিনন্দন জানাতে চাই। এমন দিনে আমি বারবার আমার সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কথা মনে করার চেষ্টা করছি। অদ্ভুত কথা হলো, গতকাল পর্যন্ত আমি সেদিনের কোনো কথাই মনে করতে পারছিলাম না৷ আমি সেদিন কেমন সেজেছিলাম, দেখতে কেমন লাগছিল—কিছুই মনে করতে পারছিলাম না। আমি গ্র্যাজুয়েশনের ছবিগুলো বের করে স্মৃতিচারণা করতে চেষ্টা করেছি।
সম্প্রতি আমার এক ভক্ত আমাকে একটি প্রশ্ন করে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল, আমি যদি অতীতে ফিরে যাই এবং তাঁকে আমার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে আমি কী বলব? প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হয়েছিল, ইশ্! এমন সুযোগ যদি আসত। আমার সেই ‘তরুণ আমি’কে অনেক কিছু বলতাম। গল্পের ঝাঁপি খুলে বসতাম। আমি তাকে দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিতাম।
যেকোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করো। অজানা কিছু নিয়ে ভয় পাওয়া বন্ধ করো। সত্যি বলতে, আমি যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতাম তা কখনোই ঘটেনি। দুনিয়ায় অন্য সব কিছুই নিয়মমাফিক ঘটে, কিন্তু আমি যা নিয়ে মাথার চুল ছিঁড়েছি তার কোনো অস্তিত্বই নেই। অজানা সব কিছু নিয়েই আমাদের ভয়। আমি যখন দুশ্চিন্তা নিয়ে কোনো কাজ করতাম, তার কিছুই আমার মনে থাকেনি। আমি সব ভুলে গেছি। দুশ্চিন্তায় আমার জীবনের অনেকগুলো মূল্যবান সময় হারিয়ে গেছে।
আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি তোমাদের বলতে চাই, তা হলো, লক্ষ্য যতটা পারো বড় মাত্রায় চিন্তা করবে। হু, অনেক বড়, অনেক উঁচু। যখন তুমি লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকবে, চারপাশে অনেক শব্দ আর কোলাহল শুনতে পাবে। এগুলো কিন্তু স্বাভাবিক। অন্যরা তোমাকে ব্যর্থ হিসেবে দেখতে চায়। এটা কিন্তু তোমার সমস্যা নয়, সমস্যাটি অন্যদের। তুমি কেন চিন্তা করবে। চেষ্টা করে যাও৷ আমি সব সময় আমার চেষ্টাগুলোর কথাই মনে রাখি। আমি ব্যর্থতার কথা মনে রাখি না। কারণ, সেই ব্যর্থতা তো আমার নয়। কোনো কিছুর চেষ্টা কখনোই ব্যর্থ হয় না। সব সময় সব কিছু ঠিক সময় হতেই হবে বলে কি কোনো কথা আছে? এখন হয়নি কিন্তু সামনে যে বড় কিছু হবে না তা কি তুমি নিশ্চিত জানো? অপেক্ষা করো, সুড়ঙ্গের শেষে আলো আছে।
প্রতিদিন সকালে আমরা ঘরে যখন কোনো কাজ করি, বলো তো তখন আমরা কী করি? আমরা অনেকেই প্রতিদিন সকালে জোরে জোরে গান শুনি। আশপাশের কারও কথা চিন্তা না করেই পছন্দের সব গান শুনি। তুমি কেন এই কাজটি ঘরের বাইরে করতে পারো না? ‘তরুণ আমি’ এবং আজকের আমি তোমাদের তৃতীয় যে পরামর্শ দিতে চাই তা খুব সাধারণ। প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে একটু হলেও নাচানাচি করো। ঘর থেকে বাইরের পৃথিবীতে পা রাখার আগে এই কাজটি নিয়মিত করবে। সেই নাচানাচিই কিন্তু তোমার পদক্ষেপ বদলে দেবে। ফুরফুরে সেই মেজাজ তোমার চারপাশের দুনিয়াকে বদলে দেবে। তো, নাচো। প্রতিবেলা খাবারে সুস্বাস্থ্যের জন্য একটু হলে সবুজ কিছু গ্রহণ করো।
সমাজ বদলে দেওয়ার জন্য সামান্য কিছু হলেও করার চেষ্টা করো। সবার সামনে নাকের সর্দি না ঝেড়ে, একটু আড়ালে গিয়ে নাক পরিষ্কার করো। নিজেকে দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে পারো। যখন কেউ তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করবে, তুমিও তাকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরো। তাঁর ওপর হেলান দাও৷ তাঁর ওপর নির্ভর করো৷ সব সময় মনে রেখো, আমাদের জীবনে নির্ভর করার জন্য, হেলান দেওয়ার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন।
খেলার মাঠে কেউ যদি তোমার সঙ্গে খেলতে না চায়, তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা কোরো না৷ এটা স্বাভাবিক ধরে ‘ইটস ওকে’ বলে মেনে নাও। তুমি তো জানোই, সবাই তোমাকে ভালো নাই বাসতে পারে। কিন্তু তুমি তো যারা তোমাকে ভালোবাসে তাদের খুঁজে বের করতে পারো। খেলার মাঠে কে তোমার সঙ্গে খেলবে তাকে খুঁজে বের করো। যারা তোমাকে উৎসাহ দেবে, বিপদে ভরসা দেবে, তাদের থেকে কখনোই দূরে যাবে না।
আর একটা কথা তোমাদের না বললেই নয়, তোমার কিসে আনন্দ তা খুঁজে বের করো। আজকের দিনটি তোমার জন্য খারাপ হবে না ভালো হবে তা কিন্তু নির্ধারণ করছে তোমার ওপরেই। তোমার এই প্রচেষ্টাই কিন্তু তোমার আজীবন মনে থাকবে। তোমাকে যেসব ‘কী, কেন, যদি’ বিরক্ত করে তা কিন্তু তোমার কখনোই মনে থাকবে না। মাস দুয়েক পরেই তুমি ব্যস্ত হয়ে পড়বে নতুন কিছু নিয়ে। তোমার সঙ্গে সব সময় ছায়ার মতো পিছে লেগে থাকবে তোমার আনন্দ। তাই আনন্দ পাও এমন কিছুর সঙ্গে সব সময় যুক্ত থাকো৷ ধন্যবাদ৷
ইংরেজি থেকে ভাষান্তর জাহিদ হোসাইন খান
সম্প্রতি আমার এক ভক্ত আমাকে একটি প্রশ্ন করে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল, আমি যদি অতীতে ফিরে যাই এবং তাঁকে আমার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে আমি কী বলব? প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হয়েছিল, ইশ্! এমন সুযোগ যদি আসত। আমার সেই ‘তরুণ আমি’কে অনেক কিছু বলতাম। গল্পের ঝাঁপি খুলে বসতাম। আমি তাকে দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিতাম।
যেকোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করো। অজানা কিছু নিয়ে ভয় পাওয়া বন্ধ করো। সত্যি বলতে, আমি যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতাম তা কখনোই ঘটেনি। দুনিয়ায় অন্য সব কিছুই নিয়মমাফিক ঘটে, কিন্তু আমি যা নিয়ে মাথার চুল ছিঁড়েছি তার কোনো অস্তিত্বই নেই। অজানা সব কিছু নিয়েই আমাদের ভয়। আমি যখন দুশ্চিন্তা নিয়ে কোনো কাজ করতাম, তার কিছুই আমার মনে থাকেনি। আমি সব ভুলে গেছি। দুশ্চিন্তায় আমার জীবনের অনেকগুলো মূল্যবান সময় হারিয়ে গেছে।
আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি তোমাদের বলতে চাই, তা হলো, লক্ষ্য যতটা পারো বড় মাত্রায় চিন্তা করবে। হু, অনেক বড়, অনেক উঁচু। যখন তুমি লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকবে, চারপাশে অনেক শব্দ আর কোলাহল শুনতে পাবে। এগুলো কিন্তু স্বাভাবিক। অন্যরা তোমাকে ব্যর্থ হিসেবে দেখতে চায়। এটা কিন্তু তোমার সমস্যা নয়, সমস্যাটি অন্যদের। তুমি কেন চিন্তা করবে। চেষ্টা করে যাও৷ আমি সব সময় আমার চেষ্টাগুলোর কথাই মনে রাখি। আমি ব্যর্থতার কথা মনে রাখি না। কারণ, সেই ব্যর্থতা তো আমার নয়। কোনো কিছুর চেষ্টা কখনোই ব্যর্থ হয় না। সব সময় সব কিছু ঠিক সময় হতেই হবে বলে কি কোনো কথা আছে? এখন হয়নি কিন্তু সামনে যে বড় কিছু হবে না তা কি তুমি নিশ্চিত জানো? অপেক্ষা করো, সুড়ঙ্গের শেষে আলো আছে।
প্রতিদিন সকালে আমরা ঘরে যখন কোনো কাজ করি, বলো তো তখন আমরা কী করি? আমরা অনেকেই প্রতিদিন সকালে জোরে জোরে গান শুনি। আশপাশের কারও কথা চিন্তা না করেই পছন্দের সব গান শুনি। তুমি কেন এই কাজটি ঘরের বাইরে করতে পারো না? ‘তরুণ আমি’ এবং আজকের আমি তোমাদের তৃতীয় যে পরামর্শ দিতে চাই তা খুব সাধারণ। প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে একটু হলেও নাচানাচি করো। ঘর থেকে বাইরের পৃথিবীতে পা রাখার আগে এই কাজটি নিয়মিত করবে। সেই নাচানাচিই কিন্তু তোমার পদক্ষেপ বদলে দেবে। ফুরফুরে সেই মেজাজ তোমার চারপাশের দুনিয়াকে বদলে দেবে। তো, নাচো। প্রতিবেলা খাবারে সুস্বাস্থ্যের জন্য একটু হলে সবুজ কিছু গ্রহণ করো।
সমাজ বদলে দেওয়ার জন্য সামান্য কিছু হলেও করার চেষ্টা করো। সবার সামনে নাকের সর্দি না ঝেড়ে, একটু আড়ালে গিয়ে নাক পরিষ্কার করো। নিজেকে দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে পারো। যখন কেউ তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করবে, তুমিও তাকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরো। তাঁর ওপর হেলান দাও৷ তাঁর ওপর নির্ভর করো৷ সব সময় মনে রেখো, আমাদের জীবনে নির্ভর করার জন্য, হেলান দেওয়ার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন।
খেলার মাঠে কেউ যদি তোমার সঙ্গে খেলতে না চায়, তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা কোরো না৷ এটা স্বাভাবিক ধরে ‘ইটস ওকে’ বলে মেনে নাও। তুমি তো জানোই, সবাই তোমাকে ভালো নাই বাসতে পারে। কিন্তু তুমি তো যারা তোমাকে ভালোবাসে তাদের খুঁজে বের করতে পারো। খেলার মাঠে কে তোমার সঙ্গে খেলবে তাকে খুঁজে বের করো। যারা তোমাকে উৎসাহ দেবে, বিপদে ভরসা দেবে, তাদের থেকে কখনোই দূরে যাবে না।
আর একটা কথা তোমাদের না বললেই নয়, তোমার কিসে আনন্দ তা খুঁজে বের করো। আজকের দিনটি তোমার জন্য খারাপ হবে না ভালো হবে তা কিন্তু নির্ধারণ করছে তোমার ওপরেই। তোমার এই প্রচেষ্টাই কিন্তু তোমার আজীবন মনে থাকবে। তোমাকে যেসব ‘কী, কেন, যদি’ বিরক্ত করে তা কিন্তু তোমার কখনোই মনে থাকবে না। মাস দুয়েক পরেই তুমি ব্যস্ত হয়ে পড়বে নতুন কিছু নিয়ে। তোমার সঙ্গে সব সময় ছায়ার মতো পিছে লেগে থাকবে তোমার আনন্দ। তাই আনন্দ পাও এমন কিছুর সঙ্গে সব সময় যুক্ত থাকো৷ ধন্যবাদ৷
ইংরেজি থেকে ভাষান্তর জাহিদ হোসাইন খান