‘দিল্লিতে সরকার গড়ার পর সারদা-কাণ্ডের যথার্থ তদম্ত হবে৷ দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না৷’ রবিবার শ্রীরামপুরের জনসভায় এ কথা বললেন বি জে পি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি৷ সারদা-দুর্নীতি নিয়ে তিনি এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকায় কিনল কে? কেন কিনল? দেশের লোক জানতে চায়, তিনি কার কার ছবি কত টাকায় কিনেছেন? বাংলার মানুষ তো শিল্পের কদর করেন৷ শিল্পের পেছনে যদি কালো হাত থাকে, তা হলে কি মানুষ সেটা মেনে নেবেন? মা সারদাকে কীভাবে চিটফান্ড বানালেন? দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মমতা-চিদম্বরম৷ মোদি বলেন, বাংলার মানুষের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন মমতা৷ বামেরা এত বছরে রাজ্যের যা ক্ষতি করেছে, এই সরকার ৩৫ মাসে তার থেকে বেশি ক্ষতি করেছে৷ ক্ষমতার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন৷ ক্ষমতার এত লোভ! মুখ্যমন্ত্রী আপনি বদলে গেছেন৷ পুলিসকে দিয়ে কাউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে আপনি জনপ্রিয় হবেন না৷ এখানে অন্য রাজ্যের লোক এলে আপনার খারাপ লাগে৷ কিন্তু বাংলাদেশ থেকে লোক এলে আপনার ভাল লাগে৷ অন্য রাজ্যের লোক তো আমার দেশেরই লোক৷ আপনার খারাপ লাগার কী আছে? ১৬ মে-র পর যাঁরা প্রতিবেশী দেশ থেকে আসছেন, তাঁদের বলব, আপনারা বিছানাপত্র গুছিয়ে নিন৷ মমতাকে কটাক্ষ করে মোদি বলেন, আপনাকে বাংলার মানুষ ভালবেসে এনেছে৷ তাঁদের প্রতি আপনার মমতা কোথায় গেল? মোদি বলেন, যাঁরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন, গরিবি কী, তা তাঁদের জানার কথা নয়৷ যাঁরা তাজমহল আগে দেখেননি, তাঁরা যেমন তাজমহলের ছবি তোলেন, বন্ধুদের দেখান, রাহুলও তেমনি গরিবকে দেখতে যান৷ তাঁর কাছে গরিব দেখতে যাওয়া এক পর্যটনের মতো! উনি গিয়ে দেখেন, গরিবেরও দুটো হাত, দুটো পা, পেট আছে কি না! আপনি গরিবের কাছে যান ভোট নেওয়ার জন্য৷ রাহুল ভাই, ভারত আমার কাছে মা৷ আমাদের মাতৃভূমি৷ আপনার কাছে ভারত শুধুই ভূমি৷
কংগ্রেস পর্দার আড়ালে খেলছে৷ তারা বলছে কিছু কর৷ যে যা চায় দিয়ে দাও৷ কিন্তু মোদিকে আটকাও৷ মোদিকে এত ভয় কেন৷
এদিন শ্রীরামপুরে ৭টা ৪৫ মিনিটে মঞ্চে ওঠেন নরেন্দ্র মোদি৷ তার সঙ্গেই আসেন বি জে পি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা৷ এদিন মঞ্চে ছিলেন বি জে পির পাঁচ প্রার্থী৷ ভাষণ দেন শ্রীরামপুরের প্রার্থী বাপি লাহিড়ী, হুগলির চন্দন মিত্র, হাওড়ার জর্জ বেকার, আরামবাগের মধূসুদন বাগ, উলুবেড়িয়ার আর কে মোহাম্তি৷ ১৮ থেকে ২৮ বছরের ভোটারদের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি আপনাদের বন্ধু, ভাই৷ জীবনের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমন এই বয়সটাও গুরুত্বপূর্ণ৷ তরুণ-তরুণীদের বলছি, দেশের কথা, মোদির কথা না-ই বা ভাবলেন, আগে নিজের কথা ভাবুন৷ যদি দিল্লিতে নিকম্মা সরকার আসে, তা হলে আপনাদের জীবনের পাঁচটা বছর নষ্ট হবে৷ আমাকে ৬০ মাসের জন্য সময় দিন৷ আমি আপনাদের জীবন বদলে দেব৷ মোদি এদিন মঞ্চ থেকে বলেন, আপনারা যাঁরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, এ রাজ্যের জন্য আপনারা যাকে ভোট দিয়ে এনেছেন, তাদের ঝামেলা তো আপনাদের পোহাতেই হবে৷ কিন্তু দয়া করে দিল্লিতে এদের আর পাঠাবেন না৷ এদিন মোদির নিশানায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ বলেন, ১০ বছরে বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি ওঁর নজরে আসেনি৷ কিছুই দেখতে পান না৷ মোদির ‘তরঙ্গ’ কীভাবেই বা দেখবেন? আপনি তো মা আর ছেলের চোখ দিয়ে দেখেন৷
বাপি লাহিড়ী সভায় গান করেন৷ তিনি বলেন, মুম্বইয়ের পর শ্রীরামপুর আমার প্রথম বাড়ি৷ জনতাকে গানের সুরের সঙ্গে গলা মেলাতে বলেন৷ চন্দন মিত্র স্লোগান তোলেন, ‘নো দাদা, নো দিদি, ওনলি মোদি৷’ এদিন সভায় একসময় জনতা ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে চলে আসে৷ পুলিস এবং দলীয় কর্মীরা পরিস্হিতি সামাল দেন৷
|
No comments:
Post a Comment