Wednesday, April 30, 2014

মোদীর সভা নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি মমতার

মোদীর সভা নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি মমতার


mamata
এই সময়, আসানসোল এবং কুলতলি: নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর আরও এক ধাপ চড়িয়ে এ বার তাঁর সভা নিষিদ্ধ করার হুমকি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বুধবার আসানসোলে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি মোদীর নাম না-করে বলেন, 'বাংলা বলে এখনও আপনার সভা-সমিতি নিষিদ্ধ করিনি৷ এটা আমাদের ভদ্রতা, সৌজন্যতা৷ যে ভাবে এই রাজ্যে এসে আপনি জাতিদাঙ্গা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাতে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আমি আপনার সভাগুলো নিষিদ্ধ করতে পারতাম৷' এদিনও তিনি মোদীকে 'দাঙ্গাবাজ' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'আপনার মতো একজন দাঙ্গাবাজ কখনও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না৷' বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মমতার আরও কটাক্ষ, 'আপনি তো মুসলমানদের দেখতে পারেন না৷ ২০০২ সালে গুজরাটে আপনার সরকার ধরে ধরে মানুষ খুন করেছে৷'

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পেতেই মমতা বিজেপির এই নেতার বিরুদ্ধে 'মুসলিম আবেগে সুড়সুড়ি দেওয়া' কথাবার্তা আরও বেশি করে বলছেন৷ তৃণমূলের অন্দরের খবর, এ বারের ভোটে মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে৷ মুখ্যমন্ত্রী গত দু'বছর ধরেই বিভিন্ন সভা-সমিতিতে দাবি করছেন, তিনি মুসলিমদের উন্নয়নের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ করে ফেলেছেন৷ বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা মুখ্যমন্ত্রীর ওই দাবির সঙ্গে একমত নন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই মমতার ওই দাবিকে প্রকাশ্যেই অসত্য বলে বর্ণনা করেছেন৷ এ সব কারণেই মুসলিম সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রী মোদীকে 'মুসলিম বিরোধী' তকমা দিচ্ছেন৷

আসানসোলের আগে মমতা এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি এবং ক্যানিংয়ে দুটি সভায় ভাষণ দেন৷ তিন সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার দেখতে অনেকে হাজির হয়েছিলেন৷ আকাশ থেকে তাঁর হেলিকপ্টার নামার পরই বহু মানুষ মাঠ ছাড়তে শুরু করেন৷ আসানসোলে মমতার সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টেতে৷ তিনি সভাস্থলে আসেন ৪টে ৪০ মিনিটে৷ তখন মাঠে মাত্র হাজার তিনেক লোক৷ তাঁকে মঞ্চে বসিয়েই একে একে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রার্থী দোলা সেন প্রমুখ ভাষণ দেন৷ এক সময় দোলাকে নেত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যায়, 'আরও লোক হবে৷ তার পর আপনি বলবেন৷' মমতা প্রায় এক ঘণ্টা ঠায় বসে থাকেন৷ পরে ৫টা ৩৮ মিনিটে তিনি বলতে ওঠেন৷ তখন মেরেকেটে লোক হাজার ছয়েক৷ শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের তো কপালে ভাঁজ৷ তাঁদের অনেককে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যায়৷ জেলার এক বড় মাপের তৃণমূল নেতার দাবি, ভোটের জন্য অধিকাংশ বাস তুলে নেওয়ায় অন্য এলাকা থেকে লোক আনা যায়নি৷ এত কম লোক দেখে মঞ্চ থেকেই মমতাকে দলের নেতাদের ধমকধামক দিতে শোনা গিয়েছে৷

মোদী ছাড়া কংগ্রেস এবং সিপিএমকেও মমতা যথারীতি একহাত নেন৷ কুলতলি এবং ক্যানিংয়ের সভায় মুখ্যমন্ত্রী নেতাই-কাণ্ডে সিআইডির প্রশংসা করে বলেন, 'নেতাইয়ের গণহত্যার ঘটনায় সিবিআই পলাতক সিপিএম নেতাদের ধরতে পারল না৷ অথচ সিআইডি তাঁদের ধরে ফেলল৷'

No comments:

Post a Comment